বন্ধু নির্বাচন
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ২১ জানুয়ারি, ২০২১, ০৭:২৪:৪৫ সন্ধ্যা
#বন্ধুত্ব_ও_সঙ্গী_নির্বাচন
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الرَّجُلُ عَلَى دِينِ خَلِيلِهِ فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلُ "
#বাংলা: আবূ হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "মানুষ তার বন্ধুর রীতিনীতির অনুসারী হয়। কাজেই তোমাদের প্রত্যেকেই যেন লক্ষ্য করে, সে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে।" (তিরমিযী:২৩৭৮)
#আলোচনা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মাতকে পার্থিব ও পারলৌকিক জীবনের যাবতীয় কল্যাণকর বিষয় বর্ণনা করে গেছেন। মুসলমানদের মাঝে সুসসম্পর্ক গড়ে ওঠা এবং ঐক্যবদ্ধ সমাজ বিনির্মাণে তিনি পারস্পরিক যোগাযোগ, বন্ধুত্ব ও সাহচর্যের গুরুত্ব দিয়েছেন। একজন মানুষ তার জীবনে ও অভ্যাসে বন্ধু বা সঙ্গীর সাদৃশ্যের অনুসারী। তা হলো, তার রীতি-নীতি, চাল-চলন, আচার-আচরণ।
আল্লাহ বলেন-
"হে মু’মিনগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো"। (সূরা তাওবা,১৯:১১৯)
সুতরাং বিশ্বাসীরা কেবল বিশ্বাসীদের বন্ধু বানাবে, তার চরিত্রগত দিক বিবেচনা করে ও দেখেশুনে বন্ধুত্ব করবে। কোনো ফাসিক, পাপী, মুনাফিক বা দুনিয়ালোভী ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্ব করা যাবে না। মুত্তাকি ও দুনিয়াবিমুখ ব্যক্তির সাথে চলাফেরা করলে দুনিয়ার প্রতি নিজের আকর্ষণ কমে আখিরাতের কথা বেশি মনে হবে। কারো অনুসরণ করাটা নিজের জ্ঞানকে সেদিকেই নিয়ে যায়। অনুসরণকারী তার অনুসরণীয় ব্যক্তির প্রতি ভক্তির কারণে নিজের চিন্তাশক্তিকে হারিয়ে ফেলে।
আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মানুষ (দুনিয়াতে) যাকে ভালবাসে (কিয়ামতে) সে তারই সাথী হবে।’’ (রিয়াদুস সালেহীন:৩৭২)
#কার_বন্ধু_হবে: এমন লোকের বন্ধুত্ব গ্রহণ করতে হবে যার মাধ্যমে দ্বীনের কল্যাণ সাধিত হয়, নিজের দ্বীনদারি বৃদ্ধি পায়। সুতরাং মানুষের দ্বীনদারি, আল্লাহভীতি, চরিত্র দেখে বন্ধুত্ব করা আবশ্যক। আল্লাহ বলেন- "বন্ধুরা সেই দিন হয়ে পড়বে একে অপরের শত্রু, তবে মু’মিনরা ব্যতীত।" (সূরা যুখরুফ, ৪৩:৬৭)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "আর সৎলোকের সংসর্গ হলো কস্তুরী বিক্রেতার সদৃশ, তুমি কস্তুরী না পেলেও তার সুবাস পাবে এবং অসৎ লোকের সংসর্গ হলো কামারের সদৃশ। যদিও কালি ও ময়লা না লাগে, তবে ধুমা থেকে রক্ষা পাবে না।" (আবু দাউদ:৪৮২৯, সহীহ আল জামে': ৫৮৩৯)
#কাকে_বন্ধু_বানাবে: এমন লোককে বন্ধু বানাবে না, যার জন্য পরকালে আফসোস করতে হয়। বিচারের দিন জালিম বা জাহান্নামীরা বলবে- "হায় দুর্ভোগ আমার! আমি যদি অমুককে বন্ধু রূপে গ্রহণ না করতাম! আমাকে তো সে বিভ্রান্ত করেছিল আমার কাছে উপদেশ পৌছার পর। আর শয়তান তো মানুষের জন্য মহাপ্ৰতারক।" (সূরা ফুরকান, ২৫:২৮-২৯)
হাদীসে এসেছে-
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি মু‘মিন ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো সঙ্গী হবে না এবং তোমার খাদ্য যেন পরহেযগার লোকে খায়।(তিরমিযী:২৩৯৫, আবু দাউদ:৪৮৩২)
পুনশ্চ: হাদীসটির ভিন্ন ভাষ্য-
الْمَرْءُ عَلَى دِينِ خَلِيلِهِ فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلْ (আহমাদ:৮২১২)
#বর্ণনাকারী: আবু হুরাইরা (রা.)
#মান: হাসান, সহীহ
#গ্রন্থ: তিরমিযী, যুহদ অধ্যায়, হা:২৩৭৮, আবু দাউদ: ৪৮৩৩, আহমাদ: ৮৩৯৮/ ৭৯৬৮, ৮২১২,রিয়াদুস সালেহীন:৩৭১, সহীহাহ: ৯২৭, সহীহ আল জামে':৩৫৪৫, বাইহাকীর "শুয়াবুল ঈমান":৯৪৩৮, আল মুসতাদরাক:৭৩১৯/৭৩৯৯, ৭৪০০ হিলইয়াতুল আউলিয়া:৩/১৯৪, শরহে সুন্নাহ:৩৪৮৬
#সংকলন ও সম্পাদনায়: সামসুল আলম (নীল মুসাফির)
#দরসে_হাদীস
বিষয়: বিবিধ
৬১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন