কালো রঙের খেযাব নিষিদ্ধ
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ১৭ জানুয়ারি, ২০২১, ০৭:২৪:০৫ সন্ধ্যা
#কালো_খিযাব_ব্যবহার_করা_নিষেধ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَكُونُ قَوْمٌ يَخْضِبُونَ فِي آخِرِ الزَّمَانِ بِالسَّوَادِ، كَحَوَاصِلِ الْحَمَامِ، لَا يَرِيحُونَ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ
#বাংলা: ইবনু আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: শেষ যুগে এমন সম্প্রদায়ের আর্বিভাব হবে, যারা কবুতরের বুকের মত কালো খিযাব লাগাবে, তারা জান্নাতের গন্ধও পাবে না। (সুনানে আবু দাউদ:৪২১২)
#আলোচনা: চুল বা দাড়িতে কালো খিযাব ব্যবহার করার কঠিন পরিণতি বর্ণনা করে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, শেষযুগে এমন সম্প্রদায় আসবে যারা কবুতরের পেটের মতো কালো রঙ ব্যবহার করবে, তারা জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। (كَحَوَاصِلِ الْحَمَامِ) অর্থ কবুতের পেট, তবে এখানে উদ্দেশ্য বুক। অর্থাৎ কবুতরের বুক যেমন কালো হয় তারা কালো রঞ্জক দিয়ে খিযাব করে চুল ও দাড়িকে তেমন করবে। আবার সব কবুতরের বুক কালো হয় না। তাই এখানে সব কবুতর উদ্দেশ্য নয়। অর্থাৎ কিছু কিছু কবুতরের বুক, যেমন কুচকুচে কালো থাকে তারা এমন কালো রঙ ব্যবহার করবে। অন্য বর্ণনায় পাখির কথা বলা হয়েছে। পাখির বুক যেমন কালো হয় তেমনি কালো রঙ তারা ব্যবহার করবে।
হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, জান্নাতের সুঘ্রাণ পাঁচশত বছরের দূরত্বের পথ থেকে পাওয়া যায়। তাই আলোচ্য হাদীসটিতে কঠিন ধমক রয়েছে যে, তারা জান্নাত থেকে এতো দুর থাকবে। অথবা এখানে উদ্দেশ্য হতে পারে, জান্নাতে যাওয়ার পূর্বে কবরে থাকা অবস্থায় সে সুঘ্রাণ পাবে না।
কালো খিযাব ব্যবহার করা নিষিদ্ধ বা হারামের পক্ষে এ হাদীসটি একটি দলীল। কারো মতে, কালো খিযাব ব্যবহার করা হারাম নয়। তবে হারামের মতটাই অধিক শক্তিশালী ও রাসূলের অন্যান্য হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন আবু কুহাফাকে আনা হলে তাঁর মাথা সাগামা (সাদা রঙের ফল বিশেষ)-এর মত সাদা ছিল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এই রঙকে কোনো কিছু দ্বারা পরিবর্তিত করে দাও কিন্তু কালো রং দ্বারা নয়। (সহীহ মুসলিম:২১০২, সহীহ ইবনে হিব্বান:৫৪৭১)
কালো ছাড়া অন্য যে কোনো রঙে রাঙানো যায় এবং সাদা চুল বা দাড়িতে খিযাব লাগানো মুস্তাহাব। যেমন হাদীসে দেখতে পাই রাসূলুল্লাহ সা. সাদা চুল বা দাড়িকে পরিবর্তন করতে উৎসাহিত করতেন। তিনি লাল ও হলুদ রঙে রাঙাতে পছন্দ করতেন। (ফাতহুল বারী:৫৮৯৯)
আবূ হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত আছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইয়াহূদী এবং নাসারাগণ খিযাব লাগায় না। সুতরাং তোমরা তাদের বিপরীত করো (অর্থাৎ- খিযাব লাগাও)। (বুখারী: ৩৪৬২, ৫৮৯৯; মুসলিম: ২১০৩)
আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বার্ধক্যকে পরিবর্তন করার জন্য সবচেয়ে উত্তম বস্তু হলো মেহেদী ও কাতাম (ঘাস)।(তিরমিযী: ১৭৫৩, আবূ দাঊদ: ৪২০৫)
পুনশ্চ: ইয়াহুদী-খৃষ্টানদের বিপরীত আচরণস্বরূপ সাদা চুল ও দাড়িকে পরিবর্তন করা উত্তম। এক্ষেত্রে কালো রঙ পরিহার করা এবং মেহেদি দিয়ে পরিবর্তন করা উত্তম।
হাদীসটির অন্য ভাষ্য-
" يكون في آخر الزمان قوم يخضبون بالسواد كحواصل الطير ، لا يريحون رائحة الجنة " . (তাবারানী:১২২৫৪, বাইহাকী)
বর্ণনাকারী: আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.)
#মান: সহীহ
#গ্রন্থ: আবু দাউদ, চুল আঁচড়ানো অধ্যায়, হা:৪২১২, নাসাঈ: ৫০৭৫, মুসনাদে আহমাদ:২৪৬৬, বাইহাকীর সুনানুল কুবরা: ১৪৩৫৬, সহীহ আততারগীব:২০৯৭, সহীহুল জামে': ৮১৫৩, তাবারানীর মু'জামুল কাবীর:১২২৫৪, মুসনাদে আবু ই'য়ালা:২৬০৩, শরহে সুন্নাহ:৩১৮০
#সংকলন ও সম্পাদনায়: সামসুল আলম (নীল মুসাফির)
#দরসে_হাদীস
বিষয়: বিবিধ
৬১৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন