সারাবিশ্বে একসাথে চন্দ্রমাস গণনা এবং চাঁদের আকার পর্যালোচনা

লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ০৯ জুন, ২০১৯, ০৩:৪৬:৫৯ রাত

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

সারাবিশ্বে একসাথে রোযা পালন বা ঈদ উদযাপন করা নিয়ে অনেক হইচই বা আলোচনা হচ্ছে। এই বিতর্কটা নতুন নয়। সলফে সালেহীনদের যুগ থেকেই অনেক আলোচনা হচ্ছে এবং সর্ব সম্মত কোনো সমাধান আসে নি। তবে অধিকাংশ ইমাম, ফকীহ, আলেমদের মতে প্রত্যেক অঞ্চলের লোকদের জন্য তাদের চাঁদ দেখাই ধর্তব্য। তারা কুরাইব রহ.-এর হাদীসকে দলীল দেন। যেখানে ইবনে আব্বাস রা. 'রাসূলুল্লাহ সা.-এর চাঁদ দেখা' বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যার বিপরীত ব্যাখ্যা অন্য কোনো সাহাবী থেকে আসে নি। সুতরাং বিতর্ক এড়াতে অধিকাংশের মত গ্রহণ করটাই উত্তম এবং এতে সাহাবী কর্তৃক আমলের মিল পাওয়া যায়।

অনেকের যুক্তি হলো, চাঁদের জন্ম পৃথিবীতে একদিনেই হয় সুতরাং সারাবিশ্বে একসাথেই(সূর্যের ক্যালেন্ডারের মতো) চন্দ্র ক্যালেন্ডার শুরু করতে বাঁধা কোথায়?

তারা আসলে বুঝতে ভুল করেছেন, রাসূলুল্লাহ সা. আমাদের চাঁদ দেখার শর্ত দিয়েছেন, চাঁদের জন্ম কবে তা দেখতে বলেন নি!

চাঁদ দেখা:

আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের কথা আলোচনা করে বললেনঃ চাঁদ না দেখে তোমরা সাওম (রোযা) পালন করবে না এবং চাঁদ না দেখে ইফতার করবে না (রোযা শেষ করবে না)। যদি মেঘাছন্ন থাকে তাহলে তাঁর সময় (ত্রিশ দিন) পরিমান পূর্ণ করবে। (বুখারী:১৮০৭, মুসলিম: ১০৮০)

সহীহ মুসলিমের অপর বর্ণনায়, আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) আরম্ভ করবে এবং চাঁদ দেখে ইফতার করবে। যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যায় তবে ত্রিশ দিন পুরা করবে। (মুসলিম: ১০৮১)



হুযাইফাহ (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা চাঁদ না দেখে কিংবা শা‘বানের মেয়াদ (ত্রিশ দিন) পূর্ণ না করে (রমাযানকে) এগিয়ে আনবে না। আর (শাওয়াল মাসের) চাঁদ না দেখা পর্যন্ত অথবা রমাযানের ত্রিশ দিন পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তোমরা সওম পালন করতে থাকবে। (আবু দাউদ:২৩২৬)



এই রকম বর্ণনা আবু হুরাইরা, আবু বাকরা ও ইবনু উমর (রাঃ) থেকে এসেছে হাদীসের প্রায় সবগুলো গ্রন্থেই।

আলেমদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত এই যে, সিয়াম পালন করার জন্য প্রত্যেকেরই চাঁদ দেখা শর্ত নয়। বরং কতক লোকের চাঁদ দেখাই যথেষ্ট। তবে কোনো এক অঞ্চলে চাঁদ দেখা সাব্যস্ত হলেই সকল মুসলিমের ওপর সিয়াম পালন আবশ্যক কিনা তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে সলফে সালেহীনদের যুগ থেকেই।



১. প্রত্যেক অঞ্চলের লোকদের জন্য পৃথকভাবে চাঁদ দেখা জরুরী। সহীহ মুসলিমে কুরায়ব সূত্রে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস, এ অভিমতের সাক্ষ্য বহন করে। ‘ইকরিমাহ্, কাসিম, সালিম, ইসহাক এবং শাফি‘ঈদের একটি অভিমত এ রকম।

২. কোন এক অঞ্চলে চাঁদ দেখা সাব্যস্ত হলেই সব অঞ্চলের লোকের ওপর সিয়াম পালন করা আবশ্যক। মালিকী মাযহাবের প্রসিদ্ধ মত এটিই। ইমাম কুরতুবী বলেনঃ আমাদের শায়খগণ বলেন যে, কোন জায়গায় যদি অকাট্যভাবে চাঁদ দেখা সাব্যস্ত হয়, অতঃপর এ সংবাদ দু’জন সাক্ষীর মাধ্যমে অন্যত্র পৌঁছে যায় যেখানে চাঁদ দেখা যায়নি তাদের বেলায়ও সিয়াম পালন আবশ্যক।

৩. কিছু শাফি‘ঈদের মতে যদি দেশসমূহ পরস্পর নিকটবর্তী হয়, তাহলে এক দেশের চাঁদ দেখা পার্শ্ববর্তী দেশের জন্য প্রযোজ্য হবে আর দূরবর্তী দেশের জন্য তা প্রযোজ্য নয়।

৪. মুহাক্কিক হানাফী, মালিকী ও অধিকাংশ শাফি‘ঈদের অভিমতে যদি দুই দেশের দূরত্ব এত নিকটবর্তী হয় যে, যাতে উদয়স্থলের কোন ভিন্নতা না থাকে যেমন বাগদাদ ও বাসরা- তাহলে এমন দুই দেশের মধ্যে একদেশে চাঁদ দেখা গেলে তা অন্য দেশের জন্যও প্রযোজ্য হবে। আর যদি দুই দেশের মধ্যে এত দূরত্ব হয় যাতে উদয়স্থলের ভিন্নতা থাকে তাহলে একদেশে চাঁদ দেখা গেলে অন্য দেশের জন্য তা প্রযোজ্য নয়; যেমন- ইরাক ও হিজায। এক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেকের নিজ নিজ দেশের জন্য চাঁদ দেখা যাওয়া আবশ্যক। আর উদয়স্থলের ভিন্নতার জন্য কমপক্ষে এক মাসের দূরত্ব হওয়া প্রয়োজন।

পশ্চিমের কোন দেশের চাঁদ দেখা গেলে পূর্বদেশের কত দূরত্বের জন্য তা প্রযোজ্য এ নিয়ে ‘আলিমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে।

১. অধিকাংশ ফুকাহাদের মতে একমাসের দূরত্বের পূর্ব দেশের জন্য তা প্রযোজ্য।

২. পাঁচশত ষাট মাইল পূর্ব পর্যন্ত তা প্রযোজ্য, কেননা আকাশে চাঁদ দেখা যাওয়ার পর তা যদি বত্রিশ মিনিট স্থায়ী হয়, অর্থাৎ- চাঁদ উদয় হওয়ার বত্রিশ মিনিট পরে যদি তা অস্ত যায় তাহলে চাঁদ দিগন্তে এতটুকু উপরে থাকে যে, তা পাঁচশত ষাট মাইল পূর্বে অবস্থিত এলাকা দেখে তা দেখা যাবে যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন না থাকে। অতএব এটা সাব্যস্ত হল যে, পশ্চিমের কোন দেশে চাঁদ দেখা গেলে তা পাঁচশত ষাট মাইল পূর্বে অবস্থিত দেশের জন্য তা প্রযোজ্য হবে। আর পূর্বে অবস্থিত কোন দেশে চাঁদ দেখা গেলে পশ্চিমে অবস্থিত সকলের জন্য তা প্রযোজ্য হবে।

প্রত্যেক অঞ্চলের লোকদের জন্য তাদের চাঁদ দেখাই ধর্তব্য:

আমরা জানি, সূর্যের উদয় আর অস্তাচলের পার্থক্যের মতো চাঁদের উদয় ও অস্তাচলেরও পার্থক্য রয়েছে। সারাবিশ্বে একই সাথে চাঁদ দৃশ্যমান হয় না। লোনার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চাঁদ সর্বপ্রথম দৃশ্যমান হয় আমেরিকা মহাদেশে। কখনো সারাবিশ্বে চন্দ্রমাসের পার্থক্য তিনদিনের হতে পারে। আমরা যেমন সালাত আদায় করে থাকি স্থানীয় মান সময়ে তেমনি রোযা বা ঈদ পালন করবো চন্দ্রের স্থানীয় মান তারিখে। বেশ কয়েকটি কারণে সারাবিশ্বে একসাথে রোযা বা ঈদ পালন করা যাবে না। এর মাঝে প্রধান কয়েকটি কারণ হলো,

১. #চাঁদ_দেখা" শর্তটি আদায় হবে না। কেননা সারাবিশ্বে একসাথে নতুন চাঁদ দৃশ্যমান হয় না।

২.# চাঁদের_উদয়-অস্তাচলের পার্থক্য: সারাবিশ্বে একসাথে চাঁদ ওঠেও না বা ডুবে না।

৩. #মানদন্ড নির্ধারণে ঝামেলা: সারাবিশ্বে একসাথে চন্দ্রমাস শুরু করতে প্রথম বিতর্কটা হবে কোন স্থানকে চন্দ্রমাসের মানদন্ড নির্ধারণ করা হবে? যুক্তি আর বিজ্ঞান মতে, আমেরিকার আলাস্কা অঙ্গরাজ্যকে মানদণ্ড ধরতে হবে কেননা এটাই সর্বপশ্চিমের চাঁদের উদয়স্থল আর এতে পূর্বাঞ্চলের লোকদের রোযা বা ঈদ পালনে (বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া ও পূর্ব এশিয়া) পরেরদিন সকাল বা দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অথচ ইসলামে চন্দ্রমাস শুরু হয় সন্ধ্যারাত থেকে।

আর যদি মক্কা বা মদীনার ফযিলতের কথা বলে (যদিও নবচন্দ্রের দৃশ্যমান এই অঞ্চল থেকে শুরু হয় না) কোনো একটাকে মানদন্ড ধরা হয় তাহলে পশ্চিমাঞ্চলের জন্য কোনো অসুবিধা নেই কিন্তু পূর্বাঞ্চলের জন্য অসুবিধা।

৪. #চাঁদ দেখার ব্যাখ্যা: চাঁদ দেখা বিষয়টি কতদুর বা স্থান পর্যন্ত ধর্তব্য তার ব্যাখ্যা পাওযা যায় ইবনে আব্বাস রা.-এর কথাতেই। আর তার বিপরীত কোনো ব্যাখ্যা কোনো সাহাবী দেন নি।

কুরাইব (রাহঃ) হতে বর্ণিত আছে, মুআবিয়া (রাঃ)-এর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে উম্মুল ফাযল বিনতুল হারিস (রাঃ) তাকে শামে (সিরিয়ায়) প্রেরণ করেন। কুরাইব (রাহঃ) বলেন, সিরিয়ায় পৌছার পর আমি উম্মুল ফাযল (রাঃ)-এর কাজটি শেষ করলাম। আমি সিরিয়ায় থাকা অবস্থায়ই রামাযান মাসের চাঁদ দেখতে পাওয়া গেল। আমরা জুমুআর রাতে (বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়) চাঁদ দেখতে পেলাম। রামাযানের শেষের দিকে আমি মাদীনায় ফিরে আসলাম। ইবনু আব্বাস (রাঃ) আমাকে (কুশলাদি) জিজ্ঞাসা করার পর চাঁদ দেখা প্রসঙ্গে উল্লেখ করে বললেন, কোন দিন তোমরা চাঁদ দেখতে পেয়েছিলে? আমি বললাম, জুমুআর রাতে চাঁদ দেখতে পেয়েছি। তিনি বললেন, জুমুআর রাতে তুমি কি স্বয়ং চাঁদ দেখতে পেয়েছ? আমি বললাম, লোকেরা দেখতে পেয়েছে এবং তারা রোযাও পালন করেছে, মুআবিয়া (রাঃ)-ও রোযা পালন করেছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, কিন্তু আমরা শনিবার (শুক্রবার দিবাগত) রাত্রে চাঁদ দেখেছি। অতএব ত্রিশ দিন পুরো না হওয়া পর্যন্ত অথবা চাঁদ না দেখা পর্যন্ত আমরা রোযা পালন করতে থাকব। আমি বললাম, মুআবিয়া (রাঃ)-এর চাঁদ দেখা ও তার রোযা থাকা আপনার জন্য কি যথেষ্ট নয়? তিনি বলেন, না। আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। (মুসলিম: ১০৮৭, তিরমিযী: ৬৯৩, আবু দাউদ:২৩৩২)



ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তাদের মতে প্রত্যেক অঞ্চলের লোকদের জন্য তাদের চাদ দেখাই ধর্তব্য হবে।



#সমাধান: যেহেতু এটা নতুন বিতর্ক নয় তাই এটা নিয়ে অহেতুক বাড়াবাড়ি না করাটাই শ্রেয়। উত্তম হলো প্রত্যেক শাসিত অঞ্চলের জন্য আলাদা চাঁদ দেখা। আর শাসকের উপর কতর্ব্য হলো, রোযা বা ঈদ পালনের জন্য চাঁদ দেখার বিষয়টি ফয়সালা করা তথা ঘোষণা দেয়া। আর জনগণের উপর কর্তব্য হলো, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের উপর আনুগত্য করা। এতেই উম্মাহর মাঝে বিশৃঙ্খলা-বিভেদ রোধ করে ঐক্য স্থাপন করা সম্ভব।

যারা মনে করেন যে, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত যদি সঠিক না হয় (নতুন চাঁদ দেখা, না-দেখা নিয়ে) তা হলে নিজেদের আলাদাভাবে রোযা রাখা ঈদ পালন করতে হবে, তাদের জন্য নিচের হাদীসটি-

আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যেদিন তোমরা সবাই রোযা পালন কর সে দিন হল রোযা। যেদিন তোমরা সবাই রোযা ভঙ্গ কর সে দিন হল ঈদুল ফিতর। আর যেদিন তোমরা সবাই কুরবানী কর সে দিন হল ঈদুল আযহা। (তিরমিযী: ৬৯৭, আবু দাউদ:২৩২৪)

কোনো গোষ্ঠী যদি এর বিপরীত করে তাহলে তাদের ব্যাপারটি তাদের উপরই ছেড়ে দেয়া, এই নিয়ে পরস্পরে বাক্যবাণের বিষ না ছড়ানোই কর্তব্য ও কল্যাণকর।

#চাঁদের আকার: ইদানীং অনেককেই (আলেম/জাহেল) বলতে দেখা যায়, এই চাঁদ এতোদিনের বা চাঁদের বয়স এতো। বিশেষ করে এই বছর শাওয়ালের চাঁদ নিয়ে বিতর্ক করার সময় বলে থাকে এটা অমুক দিনের চাঁদ! আর যারা ৩০ রোযা পালন করেছে তাদের সম্পর্কে বলছে, তারা নাকি ঈদের দিন রোযা রেখেছে। আফসোস! তাদের জ্ঞানের বহরের জন্য। দেখি হাদীস কী বলে?

আবূল বাখতারী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা ‘উমরাহ্ করার জন্য বের হলাম। অতঃপর যখন আমরা ‘বাত্বনি নাখলাহ্’ নামক (মক্কা আর ত্বয়িফের মধ্যবর্তী একটি স্থানের নাম) স্থানে পৌঁছে আমরা (নতুন) চাঁদ দেখলাম। কিছু লোক বলল, এ চাঁদ তৃতীয় রাতের (তৃতীয়ার), কিছু লোক বলল, এ চাঁদ দু’ রাতের (দ্বিতীয়ার) চাঁদ। এরপর আমরা ইবনু ‘আব্বাস-এর সাক্ষাত পেলাম। তাঁকে বললাম, আমরা নতুন চাঁদ দেখেছি। আমাদের কেউ কেউ বলেন, এ চাঁদ তৃতীয়ার চাঁদ। আবার কেউ বলেন, দ্বিতীয়ার চাঁদ। ইবনু ‘আব্বাস জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কোন্ রাতে চাঁদ দেখেছ? আমরা বললাম, ঐ ঐ রাতে। তখন ইবনু ‘আব্বাস বললেন, নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযানের সময়কে চাঁদ দেখার উপর নির্দিষ্ট করেছেন। অতএব এ চাঁদ সে রাতের যে রাতে তোমরা দেখেছ।

এ বর্ণনাকারী হতেই অন্য একটি বর্ণনায় বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, আমরা ‘যা-তি ‘ইরক্ব’ নামক স্থানে (বাত্বনি নাখলাহ্’র কাছাকাছি একটি স্থান) রমাযানের চাঁদ দেখলাম। অতএব আমরা ইবনু ‘আব্বাসকে জিজ্ঞেস করার জন্য লোক পাঠালাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা শা‘বানমাসকে রমাযানের চাঁদ দেখা পর্যন্ত দীর্ঘ করেছেন। যদি তোমাদের ওপর আকাশ মেঘলা থাকে, তাহলে গণনা পূর্ণ করো (অর্থাৎ- শা‘বান মাসের সময় ত্রিশদিন পূর্ণ করো)। (মুসলিম:১০৮৮, মিশকাত:১৯৮১)

এই হাদীসের শিক্ষা হলো, আকাশে চাঁদ ছোট আকৃতির কিংবা বড় আকৃতির দেখতে পাওয়া কোন ধর্তব্য বিষয় নয়। ধর্তব্যের বিষয় হল, চাঁদ দেখতে পাওয়া আর চাঁদ দেখা না গেলে মাস ত্রিশদিন পূর্ণ করা।

ইমাম মুসলিম তার হাদীস গ্রন্থে অনুচ্ছেদের শিরোনাম হলো, "চাঁদ বড়-ছোট হওয়ার বিষয়টি ধার্তব্য নয়; দেখার সুবিধার্থে আল্লাহ্‌ তাকে বর্ধিত আকারে উদিত করেন, যদি চাঁদ মেঘে ঢেকে যায় তবে ত্রিশ দিন পূর্ণ করা হবে"



আসুন বিতর্ক নয়, পরমতসহিষ্ণু হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দ্বীন পালনে সক্রিয় হই। বেশি করে পড়ি, জানি ও বুঝার চেষ্টা করি।

ঈদের দুই মাস ঘটতি হয় না:

আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দু’টি মাস কম হয় না। তা হল ঈদের দু’মাস রমযানের মাস ও যুলহজের মাস। (বুখারী: ১৮১৩, মুসলিম: ১০৮৯)

আবূ ‘আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী রহঃ) বলেছেন, আহমদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) বলেন, রমযান ঘাটতি হলে যুলহাজ্জ পূর্ন হবে। আর যুলহাজ্জ ঘাটতি হলে রমযান পূর্ন হবে।

বিভেদ নয় ঐক্য চাই। পরমতকে সম্মান করে নিজের মতামত ব্যক্ত করুন। আমাদের একতার জন্য সর্বপ্রথম দরকার পরমতসহিষ্ণূতা।

আল্লাহ আমাদের ধৈর্যধারণ ও পরমতসহিষ্ণূ হওয়ার তাওফিক দিন। আমীন

সংকলন ও সম্পাদনা: সামসুল আলম

বিষয়: বিবিধ

৬৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File