সুখ-সম্মৃদ্ধ জীবনের পথে- ৫
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ২৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ০১:৩৩:৫৬ রাত
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
বাক সংযম:
পাপের অধিকাংশই সৃষ্টি হয় মুখের দ্বারা। এই জন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী (অঙ্গ জিভ) এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী (অঙ্গ গুপ্তা-ঙ্গ) সম্বন্ধে নিশ্চয়তা দেবে, আমি তার জন্য জান্নাতের নিশ্চয়তা দেব।” (বুখারী: ৬১০৯) পৃথিবীতে ভালো থাকা এবং অধিকাংশ পাপ থেকে বেঁচে থাকতে বাক সংযম জরুরী। অনর্থক এবং ফালতু কথা থেকে দুরে থাকা মুমিনের কর্তব্য। বেশি কথার দ্বারা নিজের ব্যক্তিত্ব ও গাম্ভীর্য্য নষ্ট হয়।
আল্লাহ বলেন-
"মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে (তা লিপিবদ্ধ করার জন্য) তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে।" (সূরা ৫০ ক্বাফ: ১৮)
ইমাম নববী রহ. বলেন- যে কথায় উপকার আছে বলে স্পষ্ট হয়, সে কথা ছাড়া অন্য সব (অসঙ্গত) কথা হতে নিজ জিহ্বাকে সংযত রাখা প্রত্যেক ভারপ্রাপ্ত মুসলিম ব্যক্তির উচিত। যেখানে কথা বলা ও চুপ থাকা দুটোই সমান, সেখানে চুপ থাকাটাই সুন্নত। কেননা, বৈধ কথাবার্তাও অনেক সময় হারাম অথবা মাকরূহ পর্যায়ে পৌঁছে দেয়। অধিকাংশ এরূপই ঘটে থাকে। (দ্রষ্টব্য: রিযাদুস সালেহীন)
আল্লাহ বলেন-
'যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হইয়ো না। নিশ্চয় কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে'। (সূরা ১৭ বনী ইসরাইল: ৩৬)
অর্থ্যাৎ অনুমান দ্বারা বা আন্দাজে কোনো কথা বলা বা কারো সম্পর্কে ধারণা করা ঠিক নয়। তেমনি জ্ঞান ছাড়া কোনো কিছুর উপর আমল করাও বৈধ নয়।
আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে; নচেৎ চুপ থাকে।” (বুখারী:৫৬৭২ ও মুসলিম: ৪৭)
আবূ মুসা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! সর্বোত্তম মুসলিম কে?’ তিনি বললেন, “যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমরা নিরাপদ থাকে।” (বুখারী: ১১, মুসলিম: ৪২)
আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, “মানুষ চিন্তা-ভাবনা না করে এমন কথাবার্তা বলে ফেলে, যার দ্বারা তার পদস্খলন ঘ’টে পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যবর্তী দূরত্ব থেকে বেশি দূরত্ব দোযখে গিয়ে পতিত হয়।” (বুখারী: ৬১১২, মুসলিম: ২৯৮৮)
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ আল্লাহর অসন্তুুষ্টিমূলক কথা বলে এবং তাকে দূষণীয় মনে করে না। অথচ এই কথার দরুন সত্তর বছর ধরে সে জাহান্নামে পতিত হতে থাকবে। (তিরমিযী: ২৩১৪, ইবনে মাজাহ: ৩৯৭০)
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয় বান্দা কখনও আল্লাহর সন্তুষ্টির কোন কথা বলে অথচ সে কথা সম্পর্কে তার চেতনা নেই। কিন্তু এ কথার দ্বারা আল্লাহ্ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আবার বান্দা কখনও আল্লাহর অসন্তুষ্টির কথা বলে ফেলে যার পরিণতি সম্পর্কে তার ধারণা নেই, অথচ সে কথার কারণে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। (বুখারী: ৬১১৩, মুসলিম: ২৯৮৮)
বাহয ইবনু হাকীম (রাহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত আছে, তার দাদা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি বলতে শুনেছিঃ সেই লোক ধ্বংস হোক যে মানুষদের হাসানোর উদ্দেশ্যে কথা বলতে গিয়ে মিথ্যা বলে। সে নিপাত যাক, সে নিপাত যাক। ( আবু দাউদ:৪৯৯০, তিরমিযী: ২৩১৫, আল মুসতাদরাক: ১৪৯)
আলী (যাইনুল আবিদীন) ইবনুল হুসাইন (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অর্থহীন কথা বা কাজ ত্যাগ করা। (তিরমিযী: ২৩১৮, মুওয়াত্তা-ইমাম মালেক:১৬৭২)
বিলাল ইবনুল হারিস আল-মুযানী (রাঃ) নামীয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবী বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি কখনো আল্লাহ্ তা'আলার সন্তুষ্টির কথা বলে, যার সম্পর্কে সে ধারণাও করে না যে, তা কোথায় গিয়ে পৌছবে, অথচ আল্লাহ তা’আলা তার এ কথার কারণে তার সাথে মিলিত হওয়ার দিন পর্যন্ত তার জন্য স্বীয় সন্তুষ্টি লিখে দেন। আবার তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি কখনো আল্লাহ্ তা'আলার অসন্তুষ্টির কথা বলে, যার সম্পর্কে সে চিন্তাও করে না যে, তা কোন পর্যন্ত গিয়ে পৌছবে। অথচ এ কথার কারণে আল্লাহ তা'আলা তার সাথে মিলিত হওয়ার দিন পর্যন্ত তার জন্য অসন্তুষ্টি লিখে দেন। (তিরমিযী: ২৩১৯)
সুফয়ান ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন কথা বাতলে দিন, যা মজবুত-ভাবে ধরে রাখব।’ তিনি বললেন, “তুমি বল, আমার রব আল্লাহ, অতঃপর তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাক।” আমি পুনরায় নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমার জন্য আপনি কোন জিনিসকে সব চাইতে বেশি ভয় করেন?’ তিনি স্বীয় জিহ্বাকে (স্বহস্তে) ধারণ-পূর্বক বললেন, “এটাকে।” (তিরমিযী :২৪১০)
উক্ববাহ ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! কিসে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব?’ তিনি বললেন, “তুমি নিজ রসনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখ। তোমার ঘর তোমার জন্য প্রশস্ত হোক। (অর্থাৎ অবসর সময়ে নিজ গৃহে অবস্থান কর।) আর নিজ পাপের জন্য ক্রন্দন কর।” (তিরমিযী: ২৪০৬)
মুসলমানদের সম্ভ্রম রক্ষা করা:
একজন মুসলমানের উপর অপর মুসলমানের সম্ভ্রম হারাম। অপরের মান-সম্মান হানীকর কোনো কথা বা কাজ সে করতে পারে না। যখন প্রত্যেক মুসলমান অপর মুসলমানকে ভাই জ্ঞান করবে এবং তার প্রাণ, সম্ভ্রম ও ধন-সম্পদকে নিজের উপর হারাম গণ্য করবে তখন মুসলমানদের পরস্পরে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিন (ব্যক্তিগন) ইমারত সদৃশ, যার এক অংশ আরেক অংশকে মযবুত করে। (বুখারী: ৪৮১, মুসলিম: ২৫৮৬)
আল্লাহ বলেন-
"সকল বিশ্বাসীরা তো পরস্পর ভাই ভাই, সুতরাং তোমরা তোমাদের দুই ভাই-এর মধ্যে সন্ধি স্থাপন করো এবং আল্লাহকে ভয় করো; যাতে তোমরা করুণাপ্রাপ্ত হও।
হে বিশ্বাসীগণ! একদল পুরুষ যেন অপর একদল পুরুষকে উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হয়, তারা উপহাসকারী দল অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং একদল নারী যেন অপর একদল নারীকেও উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হয়, তারা উপহাসকারিণী দল অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। আর তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না; কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাকে মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা (এ ধরনের আচরণ হতে) নিবৃত্ত না হয় তারাই সীমালংঘনকারী।" (সূরা ৪৯ হুজুরাত: ১০-১১)
আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “প্রত্যেক মুসলিমের রক্ত, সম্ভ্রম ও ধন-সম্পদ অন্য মুসলিমের উপর হারাম।” (মুসলিম:২৫৬৪)
আবূ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের সম্ভ্রম রক্ষা করবে, কিয়ামতের দিনে আল্লাহ তা'আলা জাহান্নামের আগুন থেকে তার চেহারাকে রক্ষা করবেন।’’ (তিরমিযী:১৯৩১)
মুসলমানের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা
সালিমের পিতা থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক মুসলমান আরেক মুসলমানের ভাই। সে তার প্রতি যুলুম করে না এবং তাকে দুশমনের হাতে সোপর্দও করে না। যে ব্যক্তি তার ভাই এর প্রয়োজন পূরণ করবে আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণের দায়িত্ব গ্রহন করবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ তায়ালা তার বিনিময়ে কিয়ামত দিবসে তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন। যে ব্যক্তি মুসলমানের দোষক্রটি গোপন রাখবে, আল্লাহ তা’আলা কিয়ামত দিবসে তার দোষক্রটি গোপন রাখবেন। ( বুখারী: ২৩১০, মুসলিম: ২৫৮০)
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক কোন মুসলমান লোকের দুনিয়াবী বিপদাপদের মধ্যে একটি বিপদও দূর করে দেয়, আল্লাহ তা'আলা তার পরকালের বিপদাপদের কোন একটি বিপদ দূর করে দিবেন। যে লোক দুনিয়াতে অন্য কারো অভাব দূর করে দেয়, তার দুনিয়া ও আখিরাতের অসুবিধাগুলোকে আল্লাহ তা'আলা সহজ করে দিবেন। যে লোক দুনিয়ায় কোন মুসলমানের দোষ-ক্রটিকে গোপন রাখে, আল্লাহ তা'আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। যে পর্যন্ত বান্দাহ তার ভাইয়ের সাহায্য-সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকে, সে পর্যন্ত আল্লাহ তা'আলাও তার সাহায্য-সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকেন। (তিরমিযী: ১৯৩০)
পরচর্যা, পরনিন্দা, ছিদ্রান্বেষণ, চুগলী করা ও সম্পর্ক ছিন্ন করা হারাম:
আল্লাহ বলেন-
তোমরা একে অপরের পশ্চাতে নিন্দা (গীবত) করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভ্রাতার গোশত ভক্ষণ করতে চাইবে? বস্তুতঃ তোমরা তো এটাকে ঘৃণাই কর। তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ তাওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু। (সূরা হুজুরাত: ১২)
আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, একদা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তোমরা কি জান, গীবত কাকে বলে?” লোকেরা বলল, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক জানেন।’ তিনি বললেন, “তোমার ভাই যা অপছন্দ করে, তাই তার পশ্চাতে আলোচনা করা।” বলা হল, ‘আমি যা বলি, তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে, তাহলে আপনার রায় কি? (সেটাও কি গীবত হবে?)’ তিনি বললেন, “তুমি যা (সমালোচনা করে) বললে, তা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলেই তার গীবত করলে। আর তুমি যা (সমালোচনা করে) বললে, তা যদি তার মধ্যে না থাকে, তাহলে তাকে অপবাদ দিলে।” (মুসলিম: ২৫৮৯, তিরমিযী: ১৯৩৪, আবূ দাউদ: ৪৮৭৪)
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যখন আমাকে মি‘রাজে নিয়ে যাওয়া হল, সে সময় এমন ধরনের কিছু মানুষের নিকট দিয়ে অতিক্রম করলাম, যাদের নখ ছিল তামার, তা দিয়ে তারা নিজেদের মুখমণ্ডল খামচে ক্ষত-বিক্ষত করছিল। আমি, প্রশ্ন করলাম, ওরা কারা? হে জিবরীল! তিনি বললেন, ওরা সেই লোক, যারা মানুষের গোশত ভক্ষণ করত ও তাদের সম্ভ্রম লুটে বেড়াত।” (আবূ দাউদ: ৪৮৭৮)
হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘চুগলখোর জান্নাতে যাবে না।’’ (বুখারী: ৬০৫৬, মুসলিম: ১০৫)
ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মিথ্যা ও অপবাদ’ কি জিনিস আমি কি তোমাদেরকে বলে দেব না? তা হচ্ছে চুগলী করা, লোকালয়ে কারো সমালোচনা করা।’’ (মুসলিম: ২৬০৬)
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পরস্পরে হিংসা পোষণ করো না, পরস্পর ধোঁকাবাজী করো না, পরস্পর বিদেষ পোষন করো না। একে অপরের (ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে) পশ্চাতে শক্রতা করো না এবং একের বেচাকেনার উপর অন্যে বেচা-কেনার চেষ্টা করবে না। তোমরা আল্লাহর বান্দা রূপে ভাই ভাই হয়ে থাক।
এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। সে তার উপর যুলুম করবে না, তাকে অপদস্থ করবে না এবং হেয় করবে না। তাকওয়া এইখানে, এই কথা বলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সীনার প্রতি ইশারা করলেন তিনবার। একজন মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার ভাইকে হেয় করে। কোন মুসলমানের উপর (প্রত্যেক) মুসলমানের সবকিছু জান-মাল ও ইজ্জত-আবরু হারাম। (মুসলিম: ২৫৬৪)
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা একজন অন্যজনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করো না, পরস্পরে শক্রতা পোষণ করো না, পরস্পরকে ঘৃনা করো না, পরস্পর হিংসা করো না, বরং আল্লাহ তা'আলার বান্দাহগণ পরস্পর ভাই হয়ে থেকো। কোন মুসলমান ব্যক্তির পক্ষেই বৈধ নয় তার ভাইকে তিনদিনের অধিক সময় ধরে ত্যাগ করে থাকা। (তিরমিযী: ১০৩৫)
দ্বী-মুখী লোক সবচেয়ে নিকৃষ্ট
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা মন্দ দুই মুখওয়ালা বিশিষ্ট ব্যক্তি। সে এই দলের কাছে এক চেহারায় আসে অন্য দলের কাছে অন্য চেহারায় যায়। (বুখারী: ৫৭১১, মুসলিম:২৫২৬)
সংকলন ও সম্পাদনায়: সামসুল আলম দোয়েল
চলবে.....
বিষয়: সাহিত্য
৬০০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইসলামের জন্য কবুল করুণ। বারাকআল্লাহ ফি হায়াতি
মন্তব্য করতে লগইন করুন