বিদআ'তী, ভন্ড, মাযার-পূজারী ও কথিত সুন্নী তরীকতপন্থীদের বিভ্রান্তি ও মিথ্যা প্রচারণা ও তার জবাব

লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ১২ অক্টোবর, ২০১৮, ১০:৫৭:৫১ রাত

১. নবী নূরের তৈরি: তারা কুরআনের আয়াত ও কিছু মাওযু বা বানোয়াট হাদীস এবং কিছু সহীহ হাদীসের অপব্যাখ্যা করে বলতে চায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের তৈরি। অথচ কুরআন ও সহীহ হাদীসে "নবী নূরের তৈরির" পক্ষে কোনো দলীল নেই। আসুন দেখি কুরআনে কী বলা হয়েছে- আল্লাহ বলেন:

“নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট মহান আল্লাহ্‌ পাক-এর পক্ষ হতে এক মহান নূর এবং একখানা সুস্পষ্ট কিতাব এসেছে।” (সূরা মায়িদা-১৫)



এখানে নূর বলতে কী বুঝানো হয়েছে তা নিয়ে কয়েকটি মত পাওয়া যায়। এর একটি মত হলো এই নূর মানে নবী সা.। নবী সা. নূর মানে হলো তার গুণ/বৈশিষ্ট্য এবং তিনি হেদায়েতের আলো। যেমন আরেক আয়াতে নবীর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-

"হে নবী! আমি তো তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে, আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহবানকারীরূপে ও উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।" (সূরা আহযাব,৩৩:৪৫-৪৬)

যেমন প্রদীপ দ্বারা অন্ধকার দূর হয়, অনুরূপ নবী (সাঃ) দ্বারা কুফর ও শিরক, বিদআ'তের অন্ধকার দূর হয়েছে।

জাবের রা. এর বরাত দিয়ে যে হাদীস (হে জাবের, আল্লাহ সর্বপ্রথম তোমার নবীর নূর সৃষ্টি করেছেন....এই জাতীয় সকল বর্ণনা) সূফীবাদীরা বর্ণনা করে, সকল মুহাদ্দিসদের মতে তা বাতিল ও বানোয়াট; এর কোনো মূল নেই। কেউ এটাকে আব্দুর রাজ্জাকের সনদে বলে থাকেন অথচ মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাকে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। দেখুন- হাভী:১/৩২৫

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূর তবে তিনি নূরের তৈরি নন। অন্যান্য মানুষ যে ভাবে সৃষ্ট তিনিও সেভাবেই সৃষ্ট। সৃষ্টির উপাদানে মর্যাদা নেই বরং আল্লাহ যাকে মর্যাদা দান করেন সে-ই মর্যাদাবান।



২. মীলাদ-কিয়াম ও দরূদ: বিদআ'তী পীর পূজারী, ভন্ড সূফীবাদীরা বলে থাকে আমরা নাকি নবীর মীলাদ (জন্ম বৃত্তান্ত)-কিয়াম ও দরূদ (দাঁড়ানো) মানি না। অথচ বিষয়টি এ রকম নয় যে ভাবে তারা বলে থাকে। আমরা তো বলে থাকি তারা মীলাদ ও কিয়ামের নামে যা করে থাকে সেটা বিদআ'ত ও ভন্ডামী। নইলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মবৃত্তান্ত, তার সম্পর্কে আলোচনা আমরা কুরআন, হাদীস ও তাফসীরের গ্রন্থে যেমন পড়ি, শুনি ও আলোচনা করি তেমনি তার শানে নাতে রাসূলও শুনি। মুশকিল হলো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া কিছু বুঝে না। তাদের মতে, মীলাদ মাহফিল হলো- নবীর শানে সম্মিলিতভাবে বানানো দরূদ ও দাঁড়িয়ে ইয়া নাবী বলা এবং সাথে বিচিত্র ধরণের কাসীদা পাঠ করার নাম।

তারা দরূদ-পাঠকেও মীলাদের সাথে তাল-গোল পাকিয়ে ফেলে।

আমরা দরূদ পড়ি তবে তা রাসূলের তরীকায় এবং তারই শেখানো শব্দে কখনো দাঁড়িয়ে কখনো বসে কখনো শুয়ে, এতে কোনো আনুষ্ঠানিকতা নেই।



৩. যিকর করা: তারা বলে থাকে আমরা নাকি যিকরকে ইনকার করি। অথচ আল্লাহ বলেন-

"আল্লাহর যিকর/স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ।"(-সূরা আনকাবুত : ৪৫)

"যারা বিশ্বাস করেছে এবং আল্লাহর স্মরণে যাদের হৃদয় প্রশান্ত হয়। জেনে রাখ, আল্লাহর স্মরণেই হৃদয় প্রশান্ত হয়।" (সূরা রা'দ, ১৩:২৮)



মূলত তারা যিকরকে একটি নির্দষ্ট অর্থে আবদ্ধ করে নিজেদের তৈরি পদ্ধতিতে করাকে বুঝে থাকে। আমরা তো বলি, তারা যে পদ্ধতিতে "যিকর" করে তা বানোয়াট ও বাতিল। যিকরের অনেক অর্থের একটি হলো- আল্লাহকে স্মরণ করা, সেটা মুখে হতে , অন্তরেও হতে পারে। আবার তাসবীহ, তাহলীল, তাহমীদ বা আল্লাহকে ডাকাও যিকরের অন্তর্ভুক্ত।

জামাতবদ্ধভাবে "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" বা শুধু "আল্লাহ-আল্লাহ" বা বিশেষ তরীকায় ও ভঙ্গীমায় উচ্চস্বরে, কোরাসের মতো (একজন বিভিন্ন বিচিত্রভাবে গান গেয়ে) যিকর করা ইসলামী শরীয়াতে প্রমাণ নেই। সুতরাং এটা বিদআ'ত।

৪. দু'আ করা: তাদের দাবি হলো, আমরা নাকি দু'আ/হাত তুলে দু'আ করাকে ইনকার করি। সত্য হলো- প্রচলিত সম্মিলিতভাবে হাত তুলে দু'আ করা যা ফরয সালাতের পর ও জানাযার সালাতের পর করা হয় তা- বিদআ'ত।

নইলে যে কোনো সময় যে কোনো কারণে আল্লাহর কাছে দুআ/প্রার্থনা বা কিছু চাইতে (হাত তুলে বা না তুলে) কেউ বাঁধা দেয় নি। বরং দু'আর নামে আনুষ্ঠানিকতা/ জামাতবদ্ধতা বর্জনের কথা এসেছে।

মহান আল্লাহ বলেন:
‘তোমাদের প্রতিপালক বলেন, তোমরা আমার কাছে প্রার্থনা কর, আমি তোমাদের প্রার্থনা কবুল করব। যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত হতে বিমুখ তারা অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে। (আল-মুমিন : ৬০)


"তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না। পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহবান করো ভয় ও আশা সহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।" (আরাফ :৫৫,৫৬)



নবী সা. বলেন- আল্লাহর কাছে দুআর চেয়ে উত্তম কোনো ইবাদত নেই। (তিরমিযী)

দুআ, যিকর, দরূদ বা যে কোনো ইবাদত করতে হবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ ও পদ্ধতিতে। এর বাইরে করলে হবে বিদআ'ত।

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“যে ব্যক্তি এমন আমল করবে যার ব্যাপারে আমার শরীতের নির্দেশনা নেই, উহা প্রত্যাখ্যাত।” (মুসলিম হা/৩২৪৩)


৫. আশেকে রাসূল: তারা নিজেদের "আশেকে রাসূল" দাবি করে আর তাদের মতাদর্শের বাইরে যারা আছে তাদেরকে দুশমনে-রাসূল সা. বলে থাকে। কেননা তাদের মতো যেহেতু অন্যরা নবীকে নূরের তৈরি বলে না, মীলাদ-কিযাম করে না, বিদআ'তী দরূদ পড়ে না ও জসনে জুলুস করে না বিশেষ করে ঈদে মীলাদুন্নাবী সা. পালন করে না তাই তারা রাসূলকে ভালোবাসে না। অথচ রাসূলকে ভালোবাসার মানদন্ড হলো রাসূলের সুন্নাতের অনুসরণ, বিদআ'তী পন্থায় সম্মান জানানো নয়। যার মাঝে যতো সুন্নাত পাওয়া যাবে সে ততো বড় আশেকে রাসূল।

বি.দ্র: আশেকে রাসূল (রাসূল-প্রেমিক) শব্দগতভাবে ভুল ও রাসূলের শানে বেয়াদবী। হায়! যদি বিদআ'তীরা বুঝতো। আমরা রাসূলের অনুসারী ও তাকে ভালোবাসি, আমরা তার উম্মাত, তিনি আমাদের জন্য উত্তম ও একমাত্র আদর্শ।



সুন্নাতের গুরুত্ব: আল্লাহ বলেন-

“রাসূল তোমাদেরকে যা দেন তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক, আর আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তি দাতা”।[সূরা আল হাশর: ৭]

“বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাসতে চাও, তাহলে আমার অনুসরণ কর। ফলে আল্লাহও তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দিবেন, আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু”।[সূরা আলু ঈমরান: ৩১]

“তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মাঝেই রয়েছে উত্তম আদর্শ, এটা তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে”।(সূরা আহযাব: ২১)



আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
“যে ব্যক্তি অস্বীকার করে, সেই ব্যক্তি ব্যতীত আমার সকল উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে; সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন: হে আল্লাহর রাসূল! কোন ব্যক্তি অস্বীকার করে? তখন তিনি বললেন: যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে; আর যে ব্যক্তি আমার অবাধ্য, সে ব্যক্তিই অস্বীকার করে।”[বুখারী, আস-সহীহ: ৬ / ২৬৫৫ / হাদিস নং- ৭২৮০]


তিনি আরো বলেন-

“তোমরা আমার সূন্নাতকে আঁকড়ে ধর এবং খুলাফায়ে রাশেদীনের সূন্নাতকে আঁকড়ে ধর। তার উপর তোমরা অটুট থাক। (তিরমিযী, হাদিস: ২৬৭৬, ইবনু মাযাহ: ৪৭)



৬. শাফায়াত: তারা বলে থাকে আমরা নাকি শাফায়েতকে অস্বীকার করি। তবে তাদের মতো ঢালাওভাবে শাফায়েতকে ব্যাবহার করি না। শাফায়েতের মালিক আল্লাহ যাকে ইচ্ছা যার জন্য ইচ্ছা শাফায়াত/ সুপারিশ করার অনুমতি দিবেন এবং সুপারিশের কারণে জাহান্নাম থেকে অনেক মানুষকে বের করা হবে।

যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

তাঁর অনুমতি লাভ না করে শাফাআত করাবার কেউ নেই। (সূরা ইউনুসা ৩)

কে আছে এমন যে, তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট শাফাআত করতে পারবে? (সূরা বাক্বারা : ২৫৫)

তিনি যার জন্য সুপারিশের অনুমতি দিবেন সে সুপারিশ অন্য কারো কাজে আসবে না। (সূরা সাবা : ২৩)

দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দিবেন ও যার কথায় তিনি সন্তুষ্ট হবেন সে ছাড়া কারো সুপারিশ সেদিন কোনো কাজে আসবে না। ( সূরা ত্বা-হা : ১০৯)

৭. পীর-মুরিদী ও ওলী-আল্লাহ:তারা বলে থাকে আমরা নাকি ওলী-আল্লাহর দুশমন, কোননা তাদের কাছে পীর আর ওলী একই। যেহেতু আমরা ভন্ড পীরদের সমালোচনা করি তাই আমরা ওলীদের দুশমন। অথচ পীরের অস্তিত্ব শরীয়াতে নেই। আর ওলীর পরিচয় আল্লাহ দিয়েছেন-

“জেনে রেখো নিঃসন্দেহে আল্লাহর (বন্ধুদের)ওলীদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। যারা (সঠিক) ঈমান স্থাপন করেছে এবং তাকওয়া বা পরহেজগারী অবলম্বন করেছে দুনিয়া এবং আখেরাতের জীবনে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। আল্লাহর বাণীর কোন পরিবর্তন নেই। এটিই মহাসাফল্য।“ (সূরা ইউনূস, ১০:৬২-৬৪)
এখানে সকল মুত্তাকী ঈমানদেরকেই আল্লাহর ওলী বলা হয়েছে।

আর পীর হতে কোনো একটা তরীকা গ্রহণ করতে হয় এবং একজন পীরের খেলাফত প্রাপ্ত হতে হয়। অথচ এই ধরণের কোনো ব্যবস্থা শরীযাতে নেই।

৮. কবর যিয়ারত: তাদের দাবি আমরা নাকি মাযারকে অসম্মান করি, মাযার/কবর যিয়ারত অস্বীকার করি। অথচ সত্য হলো- আমরা কবরে গিয়ে ইসলামী শরীয়াতের বাইরে নানান কর্মকান্ড ও ওরশ পালনের বিরোধিতা করে থাকি। কেননা প্রচলিত মাযার যিয়ারত, ওরস/ওরশ মাহফিল সম্পূর্ণরূপে বিদআ'ত ও শিরকে ভরপুর। এসব কর্মকান্ডের স্বপক্ষে কোনো দলীল নেই। যা বলে থাকে তাহলো- কুরআন ও হাদীসের অপব্যাখ্যা। যে কোনো মুমিন বান্দাহর কবরে গিয়ে সালাম দেয়া ও দু'আ করা একটি ভালো কাজ। তবে কবর যিয়ারতের সময় কবরওয়ালার কাছে বা তার ওসীলা করে নিজের জন্য কিছু চাওয়া বৈধ নয়।

৯. ওসীলা: আমরা নাকি ওয়াসিলা/অসীলা/ওসীলা মানি না। অথচ কুরআন ও সহীহ হাদীসে ওসীলার কথা এসেছে। মূলত তারা ওসীলার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে এবং ওসীলার অপপ্রয়োগ করে থাকে। আমরা তো "ঈমান, আল্লাহর গুণবাচক নাম, নেক আমাল, সৎব্যাক্তিদের ওসীলা করে আল্লাহর কাছে চাওয়াকে বৈধ মনে করি। তবে কবরের কাছে গিয়ে মৃত ব্যাক্তির ওয়াসীলা বা মৃত ব্যাক্তির কাছে সরাসরি চাওয়াকে বৈধ মনে করি না।

১০. জিন্দা নবী: তারা রাসূলুল্লাহ সা.কে হায়াতুন্নাবী বলে অর্থ করে থাকে জিন্দা নবী। তাদের দলিল হলো, রাসূলদের কবরে জীবিত থাকার বা নবী-রাসূলদের দেহ সংরক্ষণের হাদীস। হাদীসে বলা হয়েছে বারযাখী জীবনের কথা।

কী আশ্চর্য! তারা কবরের জীবনকে দুনিয়ার জীবনের সাথে গুলিয়ে ফেলেছে। কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে শুধু আমাদের নবী নন, সকল নবী-রাসূল, শহীদগণ এমনকি সকল মৃতব্যক্তিকেই জীবিত করার কথা এসেছে। তাহলে এখানে রাসূলের আলাদা কী হলো?

মূলত এতে তাদের ভ্রান্ত আক্বীদা হলো - কবরে নবী সা. ও তাদের তরীকার পীরেরা বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ও উম্মাত ও মুরীদদের উপকার করতে পারেন। নাউযুবিল্লাহ। কোনো দলীল নাই, কোনো প্রমাণ নাই অথচ আজগুবী কথা বলে থাকে।

বিদআ'তের পরিণতি: দলীল প্রমাণ বিহীন কিছুর প্রতি বিশ্বাস বা কোনো আমাল করা থেকে বিরত থাকুন আর সকল কর্মকান্ডকে যাচাই করুন কুরআন ও হাদীস দিয়ে।

আল্লাহ বলেন-

“সত্যের পর ভ্রষ্টতা ছাড়া আর কী আছে?” (সূরা ইউনুস: ৩২)



আইশা রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনে কোনো নতুন কিছু উদ্ভাবন করল---যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।’’ (বুখারী ও মুসলিম)

মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘যে ব্যক্তি এমন কোনো কাজ করল, যাতে আমাদের নির্দেশ নেই, তা বর্জনীয়।’’ (মুসলিম: ১৭১৮, রিয়াদুস সালেহীন:১৭৩)

তিনি জুম‘আর দিন তাঁর খুৎবায় বলেন:

«
أما بعد فإن خير الحديث كتاب الله وخير الهدي هدي محمد صلى الله عليه وسلم وشر الأمور محدثاتها وكل بدعة ضلالة»

“অতঃপর সর্বোত্তম বাণী হলো আল্লাহর কিতাব এবং সর্বোত্তম হেদায়েত হলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হেদায়েত আর নিকৃষ্টতর কাজ হলো দ্বীনে নব আবিষ্কৃত কাজ এবং প্রতিটি বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা।”(মুসলিম: ৮৬৭, নাসায়ী: ১৫৭৮)



আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।’’ (মুসলিম: ২৬৭৪)

আল্লাহ আমাদের দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন। আমীন।।



সংকলন ও সম্পাদনায়: সামসুল আলম

বিষয়: বিবিধ

৮৮২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385982
১২ অক্টোবর ২০১৮ রাত ১১:৩৩
কুয়েত থেকে লিখেছেন : তরিকত পন্থিরা ইসলামের শত্রু ওরা ইসলামের ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ করেনি শুধূ দান্দাবাজি আর সত্যপন্থেদের বিরুধীতা করাই ওদের প্রধান কর্ম। আল্লাহ ওদেরকে হেদায়ত দান করুন। লেখাটি ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
385986
১৩ অক্টোবর ২০১৮ সকাল ০৭:৪৩
আনিসুর রহমান লিখেছেন : বাংলাদেশের অর্থ-সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যে বিষয়গুল বড় বাধা, ইসলাম প্রতিষ্ঠায় এর অন্যতম হ’ল ঐ বেদাতি গুষ্ঠি। ঐ বেদাতি গুষ্ঠি নিজেরা তো বিভ্রান্ত অবস্থায় ঘোর পাকসাথে খাচ্ছে, সাথে সাথে ইসলামী জ্ঞান শূন্য অন্যদেরও বিভ্রান্ত করছে। বিদাতিদের কপালে তওবা জোটে না। তার অন্যতম প্রধান কারন হল ঘোরতর গুনাহের কাজে লিপ্তি ব্যাক্তি যানে যে, সে নিজের প্রতি অথবা অন্যের প্রতি জুলুম করছে ফলে খারাপ কাজের জন্য তওবা করে। কিন্ত বিদাতিরা খারাপ কাজকে ভাল মনে করে করে ফলে তা থেকে তওবা করার সৌভাগ্য হয় না। আল্লাহ এদেরকে সঠিক বুঝ দান করুক। আমীন। সময় উপযোগী লেখ। অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File