ফাঁদ (পত্র থেকে ম্যসেঞ্জার)

লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ০৩ অক্টোবর, ২০১৮, ০৫:৩৭:০৫ বিকাল



১. একটা সময় ছিল যখন মোবাইল, ফোন বা ইন্টারনেট ছিলো না বা এতোটা সহজলভ্য ছিলো না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল চিঠিপত্র। বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রবাসী ছিল মধ্যপ্রাচ্যের। সৌদি কি সিঙ্গাপুর প্রবাসীদের বিনোদনের অন্যতম খোরাকি ছিল দেশ থেকে পাঠানো বিনোদনমুলক ম্যাগাজিন (বিশেষ করে চলচ্চিত্র বিষয়ক)। এই সব ম্যাগাজিনে থাকতো বিভিন্ন বিজ্ঞাপন, বিশেষ করে মেয়েদের ছবি দিয়ে টাকা পাঠানোর আবেদন। কখনো মেয়েটি পিতৃহীন-অসহায়-আশ্রয়হীন, কখনো দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত, কখনো পড়াশোনার ব্যায় মিটাতে অক্ষম। কিছু প্রবাসী আবেগে আপ্লুত হয়ে ওই সব ঠিকানায় (বা ব্যাংক একাউন্টে) টাকা পাঠাতো, চিঠি লিখতো। কেউ কেউ ভাই হতে ইচ্ছুক, কেউ সোজা বিয়ে করে সম্মান দিতে চাইতো, কেউ দিত প্রেমের প্রস্তাব।

কেউ (পত্রমিতালী বিষয়ক ম্যাগাজিন থেকে সুন্দরীর ঠিকানা নিয়ে, বা বিজ্ঞাপন থেকে ঠিকানা নিয়ে) প্রথমে পত্রমিতালী করতো পরবর্তীতে প্রেমে গিয়ে গাড়াতো। আর এই ধরণের কর্মকান্ড ছিল একটা ফাঁদ, একটা দুষ্ট চক্রের অর্থ কামানোর হাতিয়ার। কিছু সাধারণ (মেয়েদের প্রতি দূর্বল) আবেগী ছেলেরা এই ফাঁদে পা দিয়ে নিজেদের উপার্জনের শ্রেষ্ঠ অংশ ব্যায় করে ফেলতো, কেউ আবার সর্বস্ব হারাতো। কখনো কাছের বন্ধুদের দেখেছি, কখনো ওদের কারো কাছ থেকে এই ধরণের ঘটনা শুনেছি।

২. আমার পাশের রুমের একজন খুবই আবেগী আর মেয়ে পটানোর উস্তাদ (অথবা মেয়েদের দ্বারা অতি দ্রুত পটে যায়) বলে খ্যাত ছেলে ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক মেয়ের সাথে প্রেম করে। এক সময় একটা মেয়েকে সে অনেক টাকা দিয়ে সাহায্য করে, পরবর্তীতে মেয়েটি সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আর কখনো মেয়েদের সাথে কোনো প্রকারের সম্পর্কে জড়াবে না। কিছুদিন পর সিন্ধান্ত বদল করে প্রতিশোধের নেশায় আবারো নতুন সম্পর্কে জড়ায় এবং এক সময় নিজেই কুপোকাত হয়। মেয়েদের সুন্দর চেহারা আর আবেগী কথার মায়ায় জড়িয়ে একটার পর একটা সম্পর্কে জড়ায় আর টাকা খোয়ায়।

এই ধরণের লোক দীর্ঘদিন ধরে বিদেশের মাটিতে কাটায়, দেশে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় না।

৩. ষাটোর্দ্ধ এক প্রবাসী (২০ বছর ধরে বিদেশ করছেন এবং সর্বশেষ ৫ বছর আগে দেশ থেকে এসেছেন) সেদিন খাবার টেবিলে বললেন, আর দুইটা বছর দেশে টাকা পাঠাবেন, ছোট ছেলেটার একটা ব্যবস্থা করে আর দেশে টাকা পাঠাবেন না। দেশেও যাবেন না, এখানে একটা বিয়ে করে নাকি স্ত্রীকে উচিত শিক্ষা দিবেন! দেশ থেকে প্রিয়জন, আপনজনদের কাছ থেকে টাকার চাহিদার বাইরে এরা কখনো সহমর্মিতা বা ভালো কোনো ব্যবহার পায় না। ফলে এরা এক সময় হীনমন্যতায় ভোগে, কখনো সম্পর্কচ্ছেদ করে প্রতিশোধ নেয়ার চিন্তা করে এক সময় নিজেরাই ভেঙ্গে যায়।

পুনশ্চ: বিবাহিতরা স্ত্রী বা আপনজনদের কাছ থাকে অর্থের সম্পর্ক ছাড়া যখন আর কোনো কথা শুনতে না পায় তখন, আর অবিবাহিতরা দীর্ঘদিন ধরে (কাগজের সমস্যায়) দেশে যেতে না পেরে এই ধরণের অবৈধ সম্পর্কে জড়ায়। এই ধরণের ফাঁদ থেকে বের হবার উপায় খুজতে হবে। বিশেষজ্ঞরা কিছু বলবেন----

নীলমুসাফির



বিষয়: বিবিধ

৬৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File