মানুষের যাবতীয় ইচ্ছা ও কর্ম আল্লাহর তাওফীকের উপর নির্ভরশীল (দরসে কুরআন)
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ৩০ জানুয়ারি, ২০১৮, ০৩:৫৮:৩২ রাত
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
মানুষের যাবতীয় ইচ্ছা ও কর্ম আল্লাহর তাওফীকের উপর নির্ভরশীল (দরসে কুরআন)
وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ
৮১:২৭ঃ এ তো (আল কুরআন) শুধু বিশ্ববাসীর জন্য উপদেশ মাত্র।
لِمَنْ شَاءَ مِنْكُمْ أَنْ يَسْتَقِيمَ
৮১:২৮ঃ তোমাদের মধ্যে যে সরল পথে চলতে চায় তার জন্য।
وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ
৮১:২৯ঃ আর বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত তোমরা কোনই ইচ্ছা করতে পার না। (সূরা ৮১ তাকভীর:২৭-২৯)
[/b
আল কুরআন সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্যই উপদেশ ও হেদায়েতের গ্রন্থ তাদের মধ্য থেকে যারা হেদায়েতের পথে তথা সরল পথে চলতে চায়; আর মানুষের চাওয়া আল্লাহ রব্বুল আলামীনের তাওফিকের অনুকূলে তথা মানুষের ইচ্ছা আল্লাহর তওফীকের উপর নির্ভরশীল। যেমন আল্লাহ অপর আয়াতে বলেন-
অপর আয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ্য করে বলেন-
وَمَا كَانَ لِنَفْسٍ أَنْ تُؤْمِنَ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَيَجْعَلُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِينَ لَا يَعْقِلُونَ
"অার আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কারো বিশ্বাস স্থাপন করার সাধ্য নেই; আর আল্লাহ নির্বোধ লোকদের উপর (কুফরীর) অপবিত্রতা স্থাপন করে দেন।" (সূরা ১০ ইউনুস:১০০) ‘তুমি যাকে ইচ্ছা করো, তাকে হিদায়াত করতে পারো না।’(সূরা ক্বাস্বাস ৫৬ নং)
মানুষের ভালো মন্দ যাবতীয় কর্ম তার ইচ্ছার উপর আর তার ইচ্ছা আল্লাহর ইচ্ছা বা তাওফীকের উপর নির্ভরশীল। তাছাড়া ভালো বা মন্দ কোনো কিছুই আল্লাহর ইচ্ছা বা তাওফীকের বিপরীত হতে পারে না। সবকিছুই আল্লাহর অনুমতিক্রমে ঘটে। [b]দেখুন- সূরা ২ আয়াত:১০২, ২১৩, ২৪৯, ২৫১,২৫৫; সূরা ৩ আয়াত:৪৯, ১৪৫: সূরা ৪:৬৪, সূরা ৮ :৬৬,সূরা ১৩:৩৮, সূরা ১৪:১১
তাই বিপদাপদে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করুন:
আপনার উপর পতিত যাবতীয় ক্লেশ, যন্ত্রণা, বিপদাপদ কিংবা বিরুদ্ধবাদীদের বা শত্রুর কথায় কষ্ট পাবেন না, সবকিছুতে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করুন। কাফেররা বলে, যদি মুসলমানরা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকত, তাহলে দুনিয়াতে কোন বালা-মুসীবত তাদের উপর আসত না। আল্লাহ বলেন-
مَا أَصَابَ مِنْ مُصِيبَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۗ وَمَنْ يُؤْمِنْ بِاللَّهِ يَهْدِ قَلْبَهُ ۚ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
"আল্লাহর অনুমতি ব্যতিরেকে কোন বিপদই আপতিত হয় না। আর যে আল্লাহকে বিশ্বাস করে, তিনি তার অন্তরকে সুপথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক অবগত।" (সূরা তাগাবুন ৬৪:১১)
"এই গোপন পরামর্শ তো শয়তানেরই প্ররোচনা, যাতে বিশ্বাসীরা দুঃখ পায়। তবে আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত শয়তান তাদের সামান্যতমও ক্ষতি সাধনে সক্ষম নয়। আর বিশ্বাসীদের কর্তব্য আল্লাহর উপরই নির্ভর করা।" (সূরা ৫৮ মুজাদালা:১০)
আল্ হামদুলিল্লাহ! আল্লাহ আমাদের মুসলমান বানিয়েছেন। তার ইচ্ছা ব্যতীত তা সম্ভব ছিলো না।
وَلَوْ أَنَّنَا نَزَّلْنَا إِلَيْهِمُ الْمَلَائِكَةَ وَكَلَّمَهُمُ الْمَوْتَىٰ وَحَشَرْنَا عَلَيْهِمْ كُلَّ شَيْءٍ قُبُلًا مَا كَانُوا لِيُؤْمِنُوا إِلَّا أَنْ يَشَاءَ اللَّهُ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ يَجْهَلُونَ
আমি যদি তাদের নিকট ফিরিশতা প্রেরণ করতাম এবং মৃতেরা তাদের সাথে কথা বলত এবং সকল বস্তুকে তাদের সম্মুখে হাজির করতাম তবুও আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত তারা বিশ্বাস করত না। কিন্তু তাদের অধিকাংশই অজ্ঞ। (সূরা আন'আম ৬:১১১)
فَمَنْ يُرِدِ اللَّهُ أَنْ يَهْدِيَهُ يَشْرَحْ صَدْرَهُ لِلْإِسْلَامِ ۖ وَمَنْ يُرِدْ أَنْ يُضِلَّهُ يَجْعَلْ صَدْرَهُ ضَيِّقًا حَرَجًا كَأَنَّمَا يَصَّعَّدُ فِي السَّمَاءِ ۚ كَذَٰلِكَ يَجْعَلُ اللَّهُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ
(৬:১২৫): আল্লাহ কাউকে সৎপথে পরিচালিত করার ইচ্ছা করলে, তিনি তার হৃদয়কে ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দেন এবং কাউকে বিপথগামী করার ইচ্ছা করলে, তিনি তাঁর হৃদয়কে অতিশয় সংকীর্ণ করে দেন; তার কাছে ইসলাম অনুসরণ আকাশে আরোহণের মতই দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। যারা বিশ্বাস করে না, আল্লাহ তাদের উপর এরূপে অপবিত্রতা (শয়তান অথবা আযাব) নির্ধারিত করেন।(সূরা ৬ আনআম:১২৫)
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي هَدَانَا لِهَٰذَا وَمَا كُنَّا لِنَهْتَدِيَ لَوْلَا أَنْ هَدَانَا اللَّهُ ۖ
‘যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহরই; যিনি আমাদেরকে এর পথ দেখিয়েছেন। আল্লাহ আমাদেরকে পথ না দেখালে, আমরা কখনও পথ পেতাম না।" (৭:৪৩)
সংকলন ও সম্পাদনা: সামসুল আলম
বিষয়: বিবিধ
৮২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন