রোগী দেখতে যাওয়ার ফযিলত ও গুরুত্ব (দরসে হাদীস)

লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ২৮ জানুয়ারি, ২০১৮, ০৩:১৩:২১ রাত

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

রোগী দেখতে যাওয়ার ফযিলত ও গুরুত্ব (দরসে হাদীস)



عن ثوبان مولى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال :إنَّ المُسْلِمَ إِذَا عَادَ أخَاهُ المُسْلِمَ، لَمْ يَزَلْ في خُرْفَةِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَرْجِعَ ». قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَمَا خُرْفَةُ الجَنَّةِ ؟ قَالَ: « جَنَاهَا »

সওবান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কোন মুসলিম যখন তার অন্য কোন মুসলিম ভাইয়ের রোগ জিজ্ঞাসা করতে যায়, সে না ফিরা পর্যন্ত জান্নাতের ‘খুরফার’ মধ্যে সর্বদা অবস্থান করে।’’ জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! খুরফাহ কী?’ তিনি বললেন, ‘‘জান্নাতের ফল আহরণ করা।’’

সূত্র: সহীহ মুসলিম:কিতাবুল বিররি ওয়াসসিলাহ ওয়াল আদাব:২৫৬৮, জামে আত তিরমিযী:৯৬৭, সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকী:৬৪৪৬, মু'জামুল কাবীর লিত তাবারানী: ১৪৪৫-৪৬, আহমাদ: ২১৮৬৮, ২১৮৮৪, ২১৮৯৮, ২১৯১৬, ২১৯৩৩, ২১৯৩৮; মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহ: ১২৭৪, মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক:৬৭৬১



আলোচনা:

কোনো ভাইয়ের রোগ হলে তাকে দেখতে যাওয়া তথা রোগী দেখতে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ এবং এর অনেক ফযিলত রয়েছে। একজন মুসলমানের প্রতি অপর মুসলমানের গুরুত্বপূর্ণ একটি হক হলো অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া। (বুখারী: ১২৪০, মুসলিম: ২১৬২)

হাদীস:

عَنْ أَبِىْ مُوسى قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: أَطْعِمُوا الْجَائِعَ وَعُودُوا الْمَرِيْضَ وَفُكُّوْا الْعَانِىْ

আবূ মূসা আল আশ্‘আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ক্ষুধার্তকে খাবার দিও, অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাও, বন্দী ব্যক্তিকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করো। (বুখারী: ৫৩৭৩, ৫৬৪৯, আবূ দাঊদ: ৩১০৫, আহমাদ: ১৯৫১, সুনানুল কুবরা লিল নাসায়ী: ৮৬১৮, ইবনু হিব্বান: ৩৩২৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী: ৬৫৭৫।)

রোগী দেখার নিয়তে বের হলে সত্তর হাজার ফেরেশতার সঙ্গ ও ক্ষমা প্রার্থনা এবং জান্নাতে একটি বাগানের সু সংবাদ।

হাদীস:

عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ: مَا مِنْ رَجُلٍ يَعُودُ مَرِيضًا مُمْسِيًا، إِلَّا خَرَجَ مَعَهُ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ يَسْتَغْفِرُونَ لَهُ حَتَّى يُصْبِحَ، وَكَانَ لَهُ خَرِيفٌ فِي الْجَنَّةِ، وَمَنْ أَتَاهُ مُصْبِحًا، خَرَجَ مَعَهُ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ يَسْتَغْفِرُونَ لَهُ حَتَّى يُمْسِيَ، وَكَانَ لَهُ خَرِيفٌ فِي الْجَنَّةِ

আলী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, কেউ বিকাল বেলা কোনো রোগীকে দেখতে গেলে সত্তর হাজার ফিরিশতা তার সাথে রওয়ানা হয় এবং তারা তার জন্য ভোর হওয়া পর্যন্ত ক্ষমা চাইতে থাকে। উপরন্তু তার জন্য জান্নাতে একটি বাগান তৈরী করা হয়। আর কোনো ব্যক্তি দিনের প্রথমভাগে রোগী দেখতে গেলে তার সাতেও সত্তর হাজার ফিরিশতা রওয়ানা হয় এবং তারা সন্ধ্যা হওয়া পর্যন্ত তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। তাকেও জান্নাতে একটি বাগান দেয়া হয়। (সুনানে আবু দাউদ: ৩০৯৮) হাদীসটি মারফু সূত্রেও বর্ণিত আছে- তিরমিযী:৯৬৯,সুনানুল কুবরা:৬৪৫০, মুসতাদরাক:১৩০৪, মুসনাদে আহমাদ:৭৫৬, মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহ)



হাদীস:

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিন বলবেন, হে বানী আদম! আমি অসুস্থ ছিলাম। তুমি আমাকে দেখতে আসো নি। সে বলবে, হে আমার রব! আমি তোমাকে কিভাবে দেখতে যাব? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব! আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ ছিল? তুমি তাকে দেখতে যাও নি। তুমি কি জানতে না যে, তুমি যদি তাকে দেখতে যেতে, আমাকে অবশ্যই তার কাছে পেতে। হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম। তুমি আমাকে খাবার দাও নি। সে বলবে, হে আমার রব! আমি তোমাকে কিভাবে খাবার দিতাম? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব। আল্লাহ বললেবন, তুমি কি জানো না, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে খাবার চেয়েছিল? তুমি তাকে খাবার দাও নি। তুমি কি জানতে না যে, সে সময় যদি তুমি তাকে খাবার দিতে তাহলে তা এখন আমার কাছে পেতে? হে বানী আদম! আমি তোমার কাছে পিপাসা নিবারণের জন্য পানি চেয়েছিলাম। তুমি পানি দিয়ে তখন আমার পিপাসা নিবারণ করো নি। সে বলবে, হে আমার রব! আমি কিভাবে তোমার পিপাসা নিবারণ করতাম? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব। আল্লাহ বলবেন, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানি চেয়েছিল, তুমি তখন তাকে পানি দাওনি। যদি তুমি সে সময় তাকে পানি দিতে, তাহলে তা এখন আমার কাছে পেতে। (মুসলিম: ২৫৬৯, ইবনু হিব্বান: ৯৪৪, সহীহ আদাবুল মুফরাদ :৫১৭)



সংকলন ও সম্পাদনা: সামসুল আলম

বিষয়: সাহিত্য

৬৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File