ঈসা আ.অবশ্যই অবতরণ করবেন: ততক্ষণ পর্যন্ত কেয়ামত হবে না
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:৩৪:৩৩ রাত
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ঈসা আ.অবশ্যই অবতরণ করবেন: ততক্ষণ পর্যন্ত কেয়ামত হবে না::
কিয়ামতের লক্ষণসমূহের অন্যতম হলো দাজ্জালের আগমন ও তার ফিতনাসমূহ। এ ব্যাপারে মোতাওয়াতির (অসংখ্য) বর্ণনা এসেছে আর তাকে হত্যা করবেন মরিয়ম তনয় ঈসা আলাইহিস সালাম। ঈসা আ.এর পৃথিবীতে পুনরায় অবতরণ সংক্রান্ত সহীহ বর্ণনা মুতাওয়াতির পর্যায়ের দরুন একে অস্বীকার করা বা ভিন্ন ব্যাখ্যা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ঈসা আলাইহিস সালামের কিয়ামতের পূর্বে অবতরণ সংক্রান্ত সহীহ বুখারীতে এসেছে চারটি হাদীস! সহীহ বুখারী, অধ্যায় ৩৪ ক্রয়-বিক্রয়: ২১০৯, অধ্যায়: ৪৬ অত্যাচার, কিসাস ও লুণ্ঠন, হ/২৩৪৪ অধ্যায় ৬০: আম্বিয়া কিরাম হা/৩২৬৪ ও ৩২৬৫
সহীহ মুসলিমে ঈমান অধ্যায়ে এসেছে,باب نُزُولِ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ حَاكِمًا بِشَرِيعَةِ نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم "আমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শারীআত অনুসারী প্রশাসক হিসেবে ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ)-এর অবতরণ"। এতে ৬টি বর্ণনায় ৩ প্রকারের হাদীস এনেছেন । দ্রষ্টব্য: কিতাবুল ঈমান, হা/১৫৫ এবং ফিতনা ও কেয়ামতের লক্ষণ অধ্যায়ে বাব এসেছে-باب فِي الآيَاتِ الَّتِي تَكُونُ قَبْلَ السَّاعَةِ "কিয়ামাতের আগে যেসব নিদর্শন দৃশ্য হবে" এই শিরোনামে চারটি বর্ণনা। باب ذِكْرِ الدَّجَّالِ وَصِفَتِهِ وَمَا مَعَهُ "দাজ্জাল এর বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে" শিরোনামের অনুচ্ছেদে ২টি হাদীস।
ঈসা আ. এর অবতরণ সম্পর্কে আরো বর্ণনা এসেছে সুনানে আবু দাউদ, জামে আততিরমিযী, সুনানে ইবনে মাজাহ, সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকী, মুসনাদে আহমাদ, মুসতাদরাক আলাস সহীহাইন (হাকেম),তাবারানীর মু'জামুল আওসাত ও সগীর, সহীহ ইবনে হিব্বান, মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহ, মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক সহ আরো অসংখ্য হাদীসের কিতাবে।
ঈসা আ.-এর অবতরণ সংক্রান্ত কিছু হাদীস:
১.
عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ سَعِيْدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَيُوْشِكَنَّ أَنْ يَنْزِلَ فِيكُمْ ابْنُ مَرْيَمَ حَكَمًا عَدْلًا فَيَكْسِرَ الصَّلِيْبَ وَيَقْتُلَ الْخِنْزِيْرَ وَيَضَعَ الْجِزْيَةَ وَيَفِيْضَ الْمَالُ حَتَّى لَا يَقْبَلَهُ أَحَدٌ حَتَّى تَكُوْنَ السَّجْدَةُ الْوَاحِدَةُ خَيْرًا مِّنْ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا ثُمَّ يَقُوْلُ أَبُوْ هُرَيْرَةَ وَاقْرَءُوْآ إِنْ شِئْتُمْ وَإِنْ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ إِلَّا لَيُؤْمِنَنَّ بِهٰ قَبْلَ مَوْتِهٰ وَيَوْمَ الْقِيٰمَةِ يَكُوْنُ عَلَيْهِمْ شَهِيْدًا (النساء :159)
ইবনে শিহাব থেকে বর্ণিত,সাঈদ ইবনুল মুসাই্যয়িব আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)কে বলতে শুনেছেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: শপথ সেই সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, শীঘ্রই তোমাদের মধ্যে মারিয়ামের পুত্র ‘ঈসা (আঃ) শাসক ও ন্যায় বিচারক হিসেবে আগমন করবেন। তিনি ‘ক্রুশ’ ভেঙ্গে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন এবং তিনি যুদ্ধের সমাপ্তি টানবেন। তখন সম্পদের ঢেউ বয়ে চলবে। এমনকি কেউ তা গ্রহণ করতে চাইবে না। তখন আল্লাহকে একটি সিজ্দা করা তামাম দুনিয়া এবং তার মধ্যকার সমস্ত সম্পদ হতে অধিক মূল্যবান বলে গণ্য হবে। অতঃপর আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) বলেন, তোমরা ইচ্ছা করলে এর সমর্থনে এ আয়াতটি পড়তে পারঃ ‘‘কিতাবীদের মধ্যে প্রত্যেকে তাঁর (ঈসা (আঃ)-এর) মৃত্যুর পূর্বে তাঁকে বিশ্বাস করবেই এবং কিয়ামতের দিন তিনি তাদের বিপক্ষে সাক্ষ্য দিবেন।’’ (আন-নিসাঃ ১৫৯)
বুখারী: অধ্যায়: আম্বিয়া কিরাম ('আঃ) (كتاب أحاديث الأنبياء) হা/নং-৩২৬৪, শেষাংশ বাদ দিয়ে বুখারী, كتاب البيوع: ২১০৯ আরো বর্ণিত আছে-
সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকী:১১০১/১১২২৫/ ১৮০৪৬; তিরমিযী:২২৩৩, মুসনাদে আহমাদ:৭৬২২, ৭৮৪৩ মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক: ২০৮৪০
কিছু বর্ণনা এ রকম শব্দে এসেছে-
عن عطاء ، مولى أم حبيبة قال : سمعت أبا هريرة ، يقول : قال رسول الله - صلى الله عليه وآله وسلم - : " ليهبطن عيسى ابن مريم حكما عدلا ، وإماما مقسطا وليسلكن فجا حاجا ، أو معتمرا أو بنيتهما ، وليأتين قبري حتى يسلم ، ولأردن عليه " . يقول أبو هريرة : أي بني أخي إن رأيتموه فقولوا : أبو هريرة يقرئك السلام .
আল মুসতাদরাক আলাসসহীহাইন (হাকেম):৪২১৮
২.
عن أبي هريرة أن النبي صلى الله عليه وسلم قال ليس بيني وبينه نبي يعني عيسى وإنه نازل فإذا رأيتموه فاعرفوه رجل مربوع إلى الحمرة والبياض بين ممصرتين كأن رأسه يقطر وإن لم يصبه بلل فيقاتل الناس على الإسلام فيدق الصليب ويقتل الخنزير ويضع الجزية ويهلك الله في زمانه الملل كلها إلا الإسلام ويهلك المسيح الدجال فيمكث في الأرض أربعين سنة ثم يتوفى فيصلي عليه المسلمون
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমার ও তাঁর অর্থাৎ ঈসা (আঃ)-এর মাঝে কোনো নবী নেই। আর তিনি তো অবতরণ করবেন। তোমরা তাঁকে দেখে এভাবে চিনতে পারবে যে, তিনি মাঝারি উচ্চতার, লাল-সাদা ও গেরুয়া রঙের মাঝামাঝি অর্থাৎ দুধে আলতা তাঁর দেহের রং হবে এবং তাঁর মাথার চুল ভিজা না থাকলেও মনে হবে চুল থেকে যেন বিন্দু বিন্দু পানি টপকাচ্ছে। তিনি ইসলামের জন্য মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন, ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শুকর নিধন করবেন ও জিযিয়া রহিত করবেন। তিনি তাঁর যুগে ইসলাম ছাড়া সকল ধর্ম বিলুপ্ত করবেন এবং মাসীহ দাজ্জালকে হত্যা করবেন। তিনি পৃথিবীতে চল্লিশ বছর অবস্থান করবেন, অতঃপর মৃত্যুবরণ করবেন এবং মুসলিমরা তাঁর জানাযা পড়বে। (আবু দাউদ:৪৩২৪, আল মুসতাদরাক: ৪২১৯)
৩.
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَنْزِلَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ حَكَمًا مُقْسِطًا وَإِمَامًا عَدْلاً فَيَكْسِرُ الصَّلِيبَ وَيَقْتُلُ الْخِنْزِيرَ وَيَضَعُ الْجِزْيَةَ وَيَفِيضُ الْمَالُ حَتَّى لاَ يَقْبَلَهُ أَحَدٌ " .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ঈসা ইবনে মরিয়ম (আ) ন্যায়পরায়ণ শাসক ও ইনসাফগার ইমাম হিসাবে অবতরণ না করা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না। তিনি ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন, জিয্য়া মওকূফ করবেন এবং ধন-সম্পদের প্রাচুর্য হবে, এমনকি তা কেউ গ্রহণ করবে না। (বুখারী, অধ্যায়: ৪৬/ অত্যাচার, কিসাস ও লুণ্ঠন, হ/২৩৪৪, সুনানে ইবনে মাজাহ:৪০৭৮, মু'জামুল আওসাত লিততাবারানী:১৩৬৪, ৪৮৯৫,মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহ:৫৫৯১/৪১)
৪.
عَنْ نَافِعٍ مَوْلَى أَبِيْ قَتَادَةَ الأَنْصَارِيِّ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَيْفَ أَنْتُمْ إِذَا نَزَلَ ابْنُ مَرْيَمَ فِيكُمْ وَإِمَامُكُمْ مِنْكُمْ تَابَعَهُ عُقَيْلٌ وَالأَوْزَاعِيُّ
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের অবস্থা কেমন হবে যখন তোমাদের মধ্যে মারইয়াম পুত্র ‘ঈসা (আঃ) অবতরণ করবেন আর তোমাদের ইমাম তোমাদের মধ্য থেকে হবে। (বুখারী, অধ্যায়: আম্বিয়া কিরাম ('আঃ) (كتاب أحاديث الأنبياء): ৩২৬৫, সহীহ মুসলিম, ঈমান অধ্যায়:১৫৫ তাবারানী:৯১৯৯ মুসলিমের অপর বর্ণনায় আছে-
" كَيْفَ أَنْتُمْ إِذَا نَزَلَ ابْنُ مَرْيَمَ فِيكُمْ وَأَمَّكُمْ " .
আর তিনি তোমাদের নেতৃত্ব দিবেন। (সহীহ মুসলিম:১৫৫)
৫.
عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ - قَالَ - فَيَنْزِلُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ أَمِيرُهُمْ تَعَالَ صَلِّ لَنَا . فَيَقُولُ لاَ . إِنَّ بَعْضَكُمْ عَلَى بَعْضٍ أُمَرَاءُ . تَكْرِمَةَ اللَّهِ هَذِهِ الأُمَّةَ "
ইবনে জুরাইহ বলেন, আবু জুবাইর রহ. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাযিঃ)থেকে বলতে শুনেছেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি: কিয়ামাত পর্যন্ত আমার উম্মতের একদল সত্য দীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকবে এবং অবশেষে ঈসা (আঃ) অবতরণ করবেন। মুসলিমদের আমীর বলবেন, আসুন সলাতে আমাদের ইমামাতি করুন! তিনি বলবেন না, আপনাদেরই একজন অন্যদের জন্য ইমাম নিযুক্ত হবেন। এ হলো আল্লাহ তা'আলা প্রদত্ত এ উম্মতের সম্মান। (সহীহ মুসলিম ঈমান অধ্যায়:১৫৬, মুসনাদে আহমাদ:১৪৩১০,মু'জামুল আওসাত:৯০৭৪, সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকী:১৮০৪৭)
৬.
عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ أَسِيدٍ الْغِفَارِيِّ، قَالَ: كُنَّا قُعُودًا نَتَحَدَّثُ فِي ظِلِّ غُرْفَةٍ لِرَسُولِ اللَّهِ صلّى الله عليه وسلم، فَذَكَرْنَا السَّاعَةَ، فَارْتَفَعَتْ أَصْوَاتُنَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " لَنْ تَكُونَ - أَوْ لَنْ تَقُومَ - السَّاعَةُ حَتَّى يَكُونَ قَبْلَهَا عَشْرُ آيَاتٍ: طُلُوعُ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا، وَخُرُوجُ الدَّابَّةِ، وَخُرُوجُ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ، وَالدَّجَّالُ، وَعِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ، وَالدُّخَانُ، وَثَلَاثَةُ خُسُوفٍ، خَسْفٌ بِالْمَغْرِبِ، وَخَسْفٌ بِالْمَشْرِقِ، وَخَسْفٌ بِجَزِيرَةِ الْعَرَبِ، وَآخِرُ ذَلِكَ تَخْرُجُ نَارٌ مِنَ الْيَمَنِ، مِنْ قَعْرِ عَدَنٍ، تَسُوقُ النَّاسَ إِلَى الْمَحْشَرِ
হুযাইফা ইবনু আসিদ আল-গিফরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘরের ছায়ায় বসে কিয়ামাত সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। আমাদের কণ্ঠস্বর চরমে উঠলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ দশটি আলামত প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত কখনো কিয়ামাত হবে না। সেগুলো হলোঃ পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদয় ‘দাব্বাতুল আরদ’ নামক জন্তুর আবির্ভাব, ইয়াজূজ-মাজূজ দাজ্জাল ও ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ) ও ধোয়ার প্রকাশ, আর তিনটি ভূমিধ্বস; পাশ্চাত্যে, প্রাচ্যে একটি ও আরব উপদ্বীপে একটি। এগুলোর পরেই ইয়ামেনের আদান নামক স্থানে নীচ ভূমি থেকে আগুন বের হবে, যা মানুষকে হাশরের (সিরিয়ার) দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে। (সহীহ মুসলিম:২৯০১, আবু দাউদ:৪৩১১,মুসনাদে আহমাদ:১৫৭০৮, তিরমিযী:২১৮৩)
৭.
عَنِ النَّوَّاسِ بْنِ سَمْعَانَ الْكِلَابِيِّ، قَالَ: ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الدَّجَّالَ، فَقَالَ: إِنْ يَخْرُجْ وَأَنَا فِيكُمْ فَأَنَا حَجِيجُهُ دُونَكُمْ، وَإِنْ يَخْرُجْ وَلَسْتُ فِيكُمْ، فَامْرُؤٌ حَجِيجُ نَفْسِهِ، وَاللَّهُ خَلِيفَتِي عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ، فَمَنْ أَدْرَكَهُ مِنْكُمْ فَلْيَقْرَأْ عَلَيْهِ فَوَاتِحَ سُورَةِ الْكَهْفِ، فَإِنَّهَا جِوَارُكُمْ مِنْ فِتْنَتِهِ، قُلْنَا: وَمَا لَبْثُهُ فِي الْأَرْضِ؟ قَالَ: أَرْبَعُونَ يَوْمًا: يَوْمٌ كَسَنَةٍ، وَيَوْمٌ كَشَهْرٍ، وَيَوْمٌ كَجُمُعَةٍ، وَسَائِرُ أَيَّامِهِ كَأَيَّامِكُمْ، فَقُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَذَا الْيَوْمُ الَّذِي كَسَنَةٍ، أَتَكْفِينَا فِيهِ صَلَاةُ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ؟ قَالَ: لَا، اقْدُرُوا لَهُ قَدْرَهُ، ثُمَّ يَنْزِلُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ عِنْدَ الْمَنَارَةِ الْبَيْضَاءِ شَرْقِيَّ دِمَشْقَ، فَيُدْرِكُهُ عِنْدَ بَابِ لُدٍّ، فَيَقْتُلُهُ
আন-নাওয়াস ইবনু সাম‘আন আল-কিলাবী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তিনি বলেনঃ আমি তোমাদের মাঝে বিদ্যমান থাকতে যদি সে আবির্ভূত হয় তবে তোমাদের পক্ষ থেকে আমিই তার প্রতিপক্ষ হবো। আর আমি তোমাদের মাঝে বিদ্যমান না থাকা অবস্থায় যদি সে আবির্ভূত হয় তবে প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিজেই তার প্রতিপক্ষ হতে হবে। আর আল্লাহ হবেন প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আমার পক্ষে দায়িত্বশীল। তোমাদের মাঝে যে কেউ তাকে পাবে, সে যেন সূরা আল-কাহফের প্রথম কয়েকটি আয়াত পাঠ করে; কেননা এটাই হবে ফিতনা থেকে তার নিরাপত্তার প্রধান উপায়।
আমরা বললাম, সে পৃথিবীতে কতদিন থাকবে? তিনি বললেনঃ চল্লিশ দিন। একদিন হবে এক বছরের সমান, একদিন হবে এক মাসের সমান ও একদিন হবে এক সপ্তাহের সমান, আর বাকী দিনগুলো হবে তোমাদের সাধারণ দিনগুলোর সমান। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যে দিনটি এক বছরের সমান হবে, সে দিনে একদিন ও এক রাতের সালাত কি আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বললেনঃ না, তোমরা অনুমান করে দিনের পরিমাণ নির্ধারণ করে (সালাত পড়বে)। অতঃপর ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ) দামেশকের পূর্ব প্রান্তে একটি সাদা মিনারে অবতরণ করবেন এবং ‘লুদ্দ’ নামক স্থানের দ্বারপ্রান্তে দাজ্জালকে নাগালে পাবেন এবং হত্যা করবেন। (আবু দাউদ:৪৩২১, সহীহ মুসলিমে বিস্তারিত এসেছে, হা/২৯৩৭)
আল্লাহ আমাদের সত্য বুঝার ও মানার তাওফিক দিন। আমীন!!
বিষয়: সাহিত্য
৭৫৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন