ইসলামের ব্যাখ্যা ও খারেজী সম্প্রদায়
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ২৬ জুলাই, ২০১৭, ০৩:০৬:২৯ রাত
স্বপ্ন ও ইসলাম:
ইসলাম স্বপ্নে পাওয়া ধর্ম নয়! ইসলামকে নিজের স্বপ্ন দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। স্বপ্ন অনুযায়ী ইসলামী "শরীয়াহ"কে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা যাবে না যেমন, তেমনি ব্যক্তি দিয়ে ইসলামকে যাচাই করা যাবে না। বরং ইসলাম দিয়ে স্বপ্ন কিংবা ব্যক্তিকে বুঝতে হবে, যাচাই করতে হবে!
স্বপ্ন দেখে নিজের আমলের সন্তুষ্টিতে নিজের আমলকে বিশ্লেষণ করা এক ধরণের পাগলামী ও বোকামী! ইবাদত গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি কুরআন ও হাদীস (শরীয়াহ), স্বপ্ন নয়! কোন পদ্ধতি গ্রহণীয় বা সঠিক তা বিশ্লেষিত হবে শরীয়াহর মাপকাঠিতে, কারো স্বপ্নে পাওয়া তরীকা ইসলামের তরীকা হতে পারে না। অনেককে দেখেছি নানান স্বপ্নের কথা বলে নিজের বুজুর্গি জাহির করতে। আফসোস! ইসলামকে এরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?
মনের প্রশান্তি ও ইসলাম: একদল লোক বিদআ'তী কর্মকান্ডে লিপ্ত থেকে নিজের প্রশান্তি প্রকাশ করে বলছে- এটা করে কতো মজা পাচ্ছি, ঈমানী তৃপ্তি পাচ্ছি! পূর্ব-পুরুষদের বিদআ'ত ছাড়তে বললে ওরা বলে, এখানে কত প্রশান্তি, সুতরাং এটা ভুল হতেই পারে না। ওদের কাছে শরীয়াহর মাপকাঠি মনের প্রশান্তি! কোনটা ইবাদত আর কোনটা ইবাদতের সঠিক পদ্ধতি তা তারা মনের তৃপ্তির আলোকে (মূলকথা চিত্তের পূজারী) বিশ্লষেণ করে থাকে!
রাসূলুল্লাহ সা.-এর সুন্নাহ ও ( সলফে সালেহীন বা সাহাবীদের ব্যাখ্যায়) তরীকার উপর থেকে যে ব্যক্তি মনের প্রশান্তি পাবে সে-ই প্রকৃত মুমিন।
সন্ত্রাসবাদ ও ইসলামের সঠিক শিক্ষা: ইদানিং শিক্ষিত ও বিত্তবানদের সন্তানরা ইসলাম কায়েমের নামে (জিহাদের কথা বলে) সন্ত্রাস-রাহাজানি-হত্যাকান্ডে লিপ্ত হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো, পারিবারিকভাবে মৌলিক আদর্শ থেকে বিচ্যুত থাকা এবং ছোটবেলায় ইসলামী শিক্ষা না পাওয়া।
ইসলামের সঠিক শিক্ষা না থাকার কারণে এদেরকে বেছে বেছে টার্গেট করে বিপথগামীদের একদল অথবা পার্থিবপূজারীরা। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা উপস্থাপন করে তারা সহজেই শিকার ধরে ফেলে! যেহেতু আগে থেকে ইসলামের কোনো শিক্ষা-ই এদের মাঝে ছিল না, তাই ওদের মনে কোনো সন্দেহ ও প্রশ্নের জন্ম নেয় না। কোনো ইমাম বা আলেমের কাছে জানার চেষ্টাও করে না।
তাই আপনার সন্তানদের প্রতি সব সময় খেয়াল রাখুন, তাদেরকে ইসলামের মৌলিক ও প্রাথমিক শিক্ষাগুলো দিন। বন্ধু নির্বাচনে তাদেরকে সহায়তা করুন।
খারেজীরাও সালাত আদায় করতো, বিশুদ্ধভাবে কুরআন পড়তো; কিন্তু কুরআনের ব্যাখ্যা নিজেদের মতো করার কারণে পথভ্রষ্ট হয়ে যায় এবং ইসলাম থেকে খারেজ হয়ে ইতিহাসে খারেজী নামে বিখ্যাত হয়! এদের নেতাকে যখন আলী রা. হত্যা করেন সে তখনও কুরআন তেলাওয়াত করে নিজেকে জান্নাতী দাবি করছিল আর আলী রা. বললেন, তোকে জাহান্নামে পৌছে দিলাম।
খারেজীদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন-
শেষ যুগে এমন লোকদের আত্মপ্রকাশ ঘটবে যারা হবে বয়সে নবীন এবং প্রতিজ্ঞাহীন বোকা। তারা সমগ্র সৃষ্টিকূলের মধ্যে সর্বোত্তম কথা বলবে, তীর যেভাবে ধনুক থেকে বেরিয়ে যায় তারাও সেভাবে দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে, তাদের ঈমান কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না।.... (বুখারী:৩৪১৫, মুসলিম:১৭৭৩, আবু দাউদ:৪৭৬৭)
যুগে যুগে খারেজীদের আবির্ভাব ঘটতে থাকবে, এরা নিজেদের একমাত্র হক দাবি করবে আর মুসলমানদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করবে অথচ মূর্তিপুজারীদের ছেড়ে দেবে। (আরো দেখুন- বুখারী হা/৬৯৯৫; কিতাবুত তাওহীদ এবং কিতাবুল মানাকিব)
আসুন! আমরা ইসলামের ব্যাখ্যা ইসলামের কান্ডারী সাহাবী ও সলফে সালেহীনদের থেকে গ্রহণ করি। আল্লাহ আমাদের দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন এবং তাওহীদের পথে অটল রাখুন।
বিষয়: সাহিত্য
৭৫৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন