যার হাত ও মুখ থেকে অন্যরা নিরাপদ সে-ই প্রকৃত মুসলিম: (দরসে হাদীস)
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ১৭ জুন, ২০১৭, ০২:৪৯:৪০ রাত
যার হাত ও মুখ থেকে অন্যরা নিরাপদ সে-ই প্রকৃত মুসলিম: (দরসে হাদীস)
عَنْ عَامِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ مَا نَهَى اللَّهُ عَنْهُ "
বাংলা: আমের (রহ.) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলতেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমান (প্রকৃত) সেই ব্যাক্তি, যার যবান ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে। আর মুহাজির (প্রকৃত) সে, আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা পরিত্যাগ করে।
The Prophet (ﷺ) said, "A Muslim is the one who avoids harming Muslims with his tongue or his hands. And a Muhajir (an emigrant) is the one who gives up (abandons) all what Allah has forbidden."
ব্যাখ্যা: আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর হাদীসটি সহীহদ্বয় (বুখারী-মুসলিম) সহ প্রায় ৬০টির উপরে হাদীসের কিতাবে পাওয়া যায়।
আলোচ্য হাদীসে প্রকৃত মুসলমান তথা পরিপূর্ণ মুসলমানের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, তা হলো- যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলমানরা নিরাপদ থাকবে সে-ই পরিপূর্ণ বা কামেল মুসলমান। অর্থ্যাৎ মুসলমানের হাত ও মুখের অনিষ্ট/যাতনা/ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকবে। প্রকৃত পক্ষে কোনো মুসলমান কোনো মানুষকে হাত বা মুখ দিয়ে (যাবতীয়) কোনো ক্ষতি করতে পারে না। অন্য হাদীসে মুসলমানের পরিবর্তে মানুষ শব্দটি এসেছে (সহীহ ইবনে হিব্বান) ।
এই হাদীসের ভিন্ন কিছু কিছু রূপ দেখতে পাওয়া যায়, যেমন-কোন মুসলমান বা কোন ইসলাম সর্বোত্তম? এর উত্তরে রাসুলুল্লাহ সা. বলেন....(বুখারী: ১১ মুসলিম:৫৭, ৫৯) অথবা রাসুলুল্লাহ সা. সাহাবীদের জিগ্যেস করছেন: তোমরা কি জানো মুসলমান কে?.... তারপর নিজেই বলছেন: যার হাত ও যবান থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ।(আহমাদ:৬৬৩১)
আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলমানগণ নিরাপদ থাকে সে ব্যক্তিই প্রকৃত মুসলিম। আর যাকে মানুষ তাদের জান ও মালের জন্য নিরাপদ মনে করে সে-ই প্রকৃত মুমিন। (তিরমিযী:২৫৫১, নাসাঈ:৪৯০৯)
জাবির, আবূ মূসা আশ'আরী ও আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) হতেও এই মর্মে হাদীস বর্ণিত আছে।
মুহাজির হলো, যে আল্লাহর পথে হিজরত করে তথা ইসলামের জন্য নিজের বাড়ি-ঘর ছেড়ে (ধর্মপালনে)নিরাপদময় স্থানে আশ্রয় নেয়। যেখানে ইসলাম ও নিজের প্রাণ নিরাপদ নয় সেখান থেকে নিরাপদময় স্থানে হিজরত করা সব সময়ই ফরয।
এখানে আরেকটি হিজরতের কথা বলা হচ্ছে, তা হলো-
আল্লাহর নিষিদ্ধাবলী থেকে হিজরত করা বা ত্যাগ করা। আর প্রকৃত মুহাজির তারাই যারা আল্লাহর নিষিদ্ধতা তথা হারাম থেকে বেচে থাকে।
আল্লাহ আমাদের প্রকৃত মুমিন, মুসলমান ও মুহাজির হিসেবে কবুল করুন।
দ্রষ্টব্য:
বুখারী: ১০, ৬৪৮৪; মুসলিম: ৫৭, সুনানে আবু দাউদ:২৪৮১,নাসাঈ:৪৯৯৬, দারেমী:২৭১৬, মুসনাদে আহমাদ: ৬৭৮১, সহীহ ইবনে হিব্বান: ৪০৪, ৪০৫, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহ:২৫৬৯, বাইহাকী:৬৯৫৩, শরহে সুন্নাহ:১১
বিষয়: বিবিধ
১০৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন