কবর পাকা ও তার উপর সৌধ নির্মাণ
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ২১ মার্চ, ২০১৭, ১২:২২:৪৭ রাত
পরম করুণাময় আল্লাহর নামে-
কুরআন ও সুন্নাহ দিয়ে ব্যক্তির পরিচয় ও কর্ম যাচাই করতে হবে। অথবা বলা যায় কুরআন-সুন্নাহর মানদন্ডে ব্যক্তিত্ব যাচাই হবে। কিন্তু ব্যক্তিত্ব দিয়ে কুরআন বা সুন্নাহকে যাচাই করা যাবে না। অথচ আমরা আজ তাই করছি। তাই শিরক আর বিদআ’তের গন্ডি থেকে বের হতে পারছি না। কেননা প্রতিটি বিদআ’ত আর শিরকের পিছনে আমরা অকাট্য দলীল দাঁড় করাতে পারছি কুরআন আর হাদীস থেকে (নিজেদের মতো করে ব্যাখ্যা দিয়ে)।
কবর পাকাকরণ ও তার পরে সৌধ নির্মাণ হারাম:
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি এরূপ শুনেছি যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরের উপর উপবেশন করতে, কবর পাকা করতে এবং কবরের উপর সৌধ নির্মাণ করতে নিষেধ করেছেন। (মুসলিম:৯৭০,সুনানে আবু দাউদ:৩২২৫, নাসাঈ:২০২৮.ইরউয়াউল গালীল ৭৫৭, মিশকাত ১৬৯৭) তিরমিযীর বর্ণনায় এসেছে-
কবর পাকা করতে, তার উপর কোন কিছু লিখতে বা কিছু নির্মাণ করতে এবং তা পদদলিত করতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। (তিরমিযী:১০৫২,নাসাঈ:১৫৬৩)
আবূল হায়্যাজ আসাদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, আলী (রাঃ) আমাকে বললেন, আমি কি তোমাকে ঐ কাজে পাঠাব যে কাজে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে পাঠিয়ে ছিলেন? কাজটা হল সকল মূর্তিকে বিলুপ্ত এবং উচু কবরকে ভেঙ্গে দিবে। (মুসলিম:৯৬৯, আবু দাউদ:৩২১৮, তিরমিযী:১০৪৯, নাসাঈ:২০৩১) হাবীব (রহঃ) হতে উক্ত সনদে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, মূর্তি বিলূপ্ত এবং ছবি ধ্বংস করে দিবে।
কবর হবে মাটির সমান: মুসলিম: ৯৬৮
ছবি বা মূর্তির প্রতি কোনো মুসলমানের ভালোবাসা থাকতে পারে না।
কবর পূজা: কবরকে মাযার/রওযা/দরগা নামে অভিহিত করে তাতে ওরস পালন বা কবরে গিয়ে নিজের জন্য যাঞ্চা করা সম্পূর্ণরূপে নিষেধ। কবরকে সজ্জিত করা, বাতি জ্বালানো বা তা থেকে ফয়েয নেয়ার নাম করে যা করা হয় তা-ই কবর পূজা। যারা এতে জড়িত তারা যদিও হারাম মানতে নারাজ। কেননা তারা যুক্তি দিয়ে দলীলকে অস্বীকার করে।
ইবন বুরায়দা (রাঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইতিপূর্বে আমি তোমাদের কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা কবর যিয়ারত করবে। কেননা, কবর যিয়ারতের ফলে মৃত্যুর কথা ম্মরণ হয়। (আবু দাউদ:৩২৩৫, মুসলিম:১৬২৩ ইবনে আবি শাইবাহ: ১৪১৭, নাসাঈ:২০৩২, হাকেম: ১৪২৫)
সুতরাং আমরা কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য বুঝতে পারলাম। তা হলো-কবরবাসীকে সালাম দেয়া আর তাতে মৃত্যুর কথা স্মরণ হয়।
আল্লাহ বলেন-
আর তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাক তারা তো খেজুরের আঁটির উপরে পাতলা আবরণ বরাবর (অতি তুচ্ছ) কিছুরও মালিক নয়।তোমরা তাদের আহবান করলে তারা তোমাদের আহবান শুনবে নাএবং শুনলেও তোমাদের আহবানে সাড়া দেবে না। তোমরা তাদেরকে যে অংশী করছ, তা ওরা কিয়ামতের দিন অস্বীকার করবে। আর সর্বজ্ঞ (আল্লাহ)র ন্যায় কেউই তোমাকে অবহিত করতে পারে না। (সূরা ৩৫ ফাতির:১৩-১৪)
وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُو مِنْ دُونِ اللَّهِ مَنْ لَا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَهُمْ عَنْ دُعَائِهِمْ غَافِلُونَ
সে ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত কে, যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে যা কিয়ামত দিবস পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না? আর তারা তাদের ডাক সম্বন্ধে অবহিতও নয়।(সূরা ৪৬ আহকাফ:৫)
وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ
তোমাদের প্রতিপালক বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। যারা অহংকারে আমার উপাসনায় বিমুখ, ওরা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সূরা ৪০ গাফির:৬০)
বিষয়: বিবিধ
৯৬৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন