সংশোধন হওয়ার এখনই সময়!

লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০১:০৫:২৩ রাত

সংশোধনের সময় এখনই! যখনই এই লেখাটি পড়া হচ্ছে। কেননা যে সময় চলে যায় তা আর ফেরানো যায় না। সুতরাং মৃত্যুর পূর্বেই জেনে নিন, কী আপনার পরিচয়? পৃথিবীতে কেনই বা এসেছিলেন!

কারণ

যেখানে চলে যাবেন, সেখান থেকে কেউ কখনো ফিরে নি! তাদের সাথে কী আচরণ করা হয়েছে বা তারা কিসের মুখোমুখি হয়েছে তা তারা আমাদের জানিয়ে দিতে পারে নি।

তাই-

যাচাই করে দেখুন আপনার বিশ্বাসের জায়গাটা কতটুকু মজবুত বা আস্থার বিষয়গুলো কতটা নড়বড়ে। ধর্ম পালনের নামে কী করছেন, কেন করছেন তার যৌক্তিকতা কতটুকু একবারও কি ভেবে দেখেছেন? না করে থাকলে এখনই করুন।



আপনি যদি মুসলিম হোন

আপনার বিশ্বাস আর আস্থা কতটুকু জোরালো? আপনার আত্মা কি পরিতৃপ্ত?

অবশ্যই! যদি আপনি সিরাতে মুস্তাকিমের (সরলপথ) উপর থাকেন;যদি আপনি স্রষ্টা আর সৃষ্টির মাঝে পার্থক্য বুঝে থাকেন; যদি আপনি বুঝে থাকেন আপনার সকল বিশ্বাস আর কর্ম হবে দলীল আর প্রমাণের ভিত্তিতে। কারো মুখের কথায় নয়, কারো প্রতি অন্ধবিশ্বাস করে নয়। দ্বীন মানেই হলো একত্ববাদ (তাওহীদ)! সুতরাং একত্ববাদই যদি ভালো করে না বুঝে থাকেন তাহলে আপনার বৃথা-ই হবে কালেমা পড়া।

আপনার প্রতি আল্লাহর প্রথম আদেশ:

পড়ো!তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। (সূরা ৯৬ আলাক:১)

সুতরাং আপনাকে পড়তে হবে, বুঝতে হবে আর মানতে হবে। আপনার উপর ইলম(জ্ঞান) অর্জন করাকে ফরয করা হয়েছে।

কার অনুসরণ করবেন: আল্লাহ বলেন-

“তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য রাসূলুল্লাহর (চরিত্রের) মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।” (সূরা আহযাব: ২১)

আর যদি কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটে, তাহলে সে বিষয়কে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও।” (সূরা নিসা: ৫৯)

আমলের মানদন্ড: আপনি যা করছেন তার ভিত্তি হবে দুটি বিষয়। আল কুরআন ও রাসূলুল্লাহর সুন্নাহ। আল্লাহ বলেন- “আর যদি কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটে, তাহলে সে বিষয়কে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও।” (সূরা নিসা: ৫৯) অর্থাৎ কিতাব ও সুন্নাহর দিকে।

রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন: আমি তোমাদের মাঝে দুটি বিষয় রেখে যাচ্ছি, যদি তোমরা তা আঁকড়ে ধরে থাকো তাহলে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না; তাহলো- আল্লাহর কিতাব ও তার রাসূলের সুন্নাত। (মুওয়াত্তা:১৩৯৫, মিশকাত:১৮৬)

সংশোধনের সময় এখনই: আপনার আক্বীদা ও আমল যাচাই করুন। কারো বাহ্যিক দিক দেখে শুধু তার মুখের কথা-ই বিশ্বাস করবেন না। তার কথার সত্যতা যাচাই করুন, তাকে বলুন তথ্যসূত্র উল্লেখ করতে।

ইবনু সীরীন (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই এ (সানাদের) ‘ইলম হচ্ছে দীন। অতএব তোমরা লক্ষ্য রাখবে যে, তোমাদের দীন কার নিকট হতে গ্রহণ করছো। (মুসলিম, মিশকাত:২৭৩)

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন লোকের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে (সত্যতা যাচাই না করে) তা-ই বলে বেড়ায়। (মুসলিম, মিশকাত: ১৫৬)

তাই- আর নয় কোনো পীর বা শায়খের অন্ধ ভক্তি ও অনুসরণ। (অধিকাংশ পীর নিজেরাই মুশরিক ও কাফির আর তার ভক্তদের শিরক ও কুফরের দিকে পরিচালিত করে। আর ভন্ড শায়খেরা ইসলামের বিষয়গুলোর ভুল ব্যখ্যা দিয়ে সরল মুসলমানদের জিহাদের নামে সন্ত্রাস রাহাজানিতে লিপ্ত রেখেছে)

রাসূলুল্লাহর প্রতি ভালোবাসার মানদন্ড : “বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর। ফলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করবেন।” (সূরা আলে ইমরান.৩১) মুখের আশেকে রাসূলের দাবি নয়, সুন্নাহই হলো কুরআন বুঝার ও মানার মানদন্ড।

মুসলিম হলেই জান্নাতী নয়: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বানী ইসরাঈল ৭২ ফিরক্বায় (দলে) বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। আমার উম্মাত বিভক্ত হবে ৭৩ ফিরক্বায়। এদের মধ্যে একটি ব্যতীত সব দলই জাহান্নামে যাবে। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! জান্নাতী দল কারা? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যার ওপর আমি ও আমার সাহাবীগণ প্রতিষ্ঠিত আছি, যারা তার উপর থাকবে। (তিরমিযী, মিশকাত:১৭১)

সুতরাং আসুন আমরা দ্বীনের পথে কল্যাণের পথে নিজেদের সংশোধন করি। কুরআন ও হাদীসকে সেভাবেই বুঝুন যেভাবে বুঝেছেন পূর্ববতী জ্ঞানী তথা সাহাবী-তাবেয়ীগণ। নইলে কুরআন-হাদীস পড়বেন আর নিজেদের যুক্তির (আপন মতের উপর) পক্ষে দলীল দাঁড় করাবেন।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইসলাম আগন্তুকের (অপরিচিতের) ন্যায় (স্বল্প সংখ্যক লোকের মাধ্যমে অপরিচিত ও নিঃসঙ্গ অবস্থায়) শুরু হয়েছে এবং তা পরিশেষে ঐ অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করবে, যেভাবে শুরু হয়েছে। তাই আগন্তুকের (ঈমানদার লোকদের) জন্য সুসংবাদ। (মুসলিম, মিশকাত: ১৫৯)

আল্লাহ আমাদের সিরাতে মুস্তাকিমের উপর কায়েম থাকার তওফিক দিন! আমীন!!

বিষয়: বিবিধ

৯০৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

381846
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ দুপুর ০২:৪৮
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : আল্লাহ আমাদের সিরাতে মুস্তাকিমের উপর কায়েম থাকার তওফিক দিন! আমীন!!
সুন্দর লিখাটির জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File