প্রচলিত মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ও উপার্জনের হালাল পন্থা: (একটি নীল মুসাফিরের কলাম)

লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ১৭ মে, ২০১৬, ০১:০৭:৫৮ রাত

আমাদের দেশে প্রধানত দু ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত। একটি হলো ইসলামী শিক্ষা-ব্যবস্থা তথা মাদরাসা আর অপরটি হলো সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা। মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা আবার দুই ধরণের। একটি আলিয়া বা সরকারী, অপরটি কওমী বা ব্যক্তি-উদ্যোগে পরিচালিত।

দেশে প্রচলিত প্রতিটি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধানতম মৌলিক ত্রুটি হলো- এখানে শিক্ষার্থীর মনন আর যোগ্যতাকে বিচার না করে সবাইকেই উচ্চশিক্ষিত করতে চায়। কাউকেই বিভিন্ন পেশা ভিত্তিক দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তোলা হয় না।



মাদরাসা শিক্ষার একটা ধাপে এসে, যারা উচ্চ শিক্ষা নিজের মেধায় নিতে পারবে না তাদের জন্য উপার্জনমুখী বা কারিগরী শিক্ষা ব্যবস্থা নেই। সুতরাং যারা এখানে ভর্তী হৌন সবাই কোনো না কোনো বিভাগে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন; অনেকে প্রতিটি বিভাগ থেকে ডিগ্রি নিয়ে নিজেকে সেরা পন্ডিত বানিয়ে ফেলেন। অথচ এমনটি তো হওয়ার কথা ছিল না, সবাই তো সমান যোগ্যতা সম্পন্ন হওয়ার কথা নয়।

সুতরাং আমরা দেখতে পাই- ইসলামের নানান বিষয়ে নানান মতভেদ। যারা বিষয়টা ভালো বুঝেন না তারাও এতে নাক গলান।

অপরদিকে কাওমী থেকে পাশ করেই উপার্জনের জন্য মাদরাসা বা মসজিদে চাকুরী নেন। কেউ কেউ মুহতামিম হওয়ার জন্য নতুন নতুন মাদরাসা গড়ে তুলেন। অথচ অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর ঘাটতি রয়েছে।



আমি কম সংখ্যক মসজিদের ইমাম বা মাদরাসার শিক্ষক দেখেছি যারা কায়িক শ্রম করেন বা কৃষিকাজে জড়িত। খুব কম সংখ্যকই আছেন যারা ইমামতি বা শিক্ষকতা ছেড়ে ভিন্ন কোনো পেশায় নিয়োজিত আছেন।

সবার তো ইমাম বা শিক্ষকতার যোগ্যতা থাকার কথার নয়? অথচ তাই হচ্ছে। কেননা এখানে বিভিন্ন পেশাভিত্তিক কাজের দক্ষতা অর্জনের ব্যবস্থা নেই।

দেশে অনেক মসজিদ আর মাদরাসা রয়েছে যেগুলো সরকারী বা খাস জমিতে। কর্তৃপক্ষের বিনানুমতিতে বা যথাযথ ওয়াকফ ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানে ইমামরা-আলেমরা কাজ করে যাচ্ছেন। একবারও তারা ভাবলেন না এটা বৈধ হচ্ছে কিনা?



অনেক মসজিদ আর মাদরাসা কিছু বৈধ জমিতে এবং বাকি বৃহৎ অংশ খাস জমি তথা নদী দখল, রেলের জমি দখল, বনবিভাগের জমি দখল করে করা হয়েছে। কোথাও অপরের জমি জবর দখল বা জোর করে (যেহেতু সে স্বেচ্ছায় দিতে চায় না) অন্যকে টেক্কা দিতে গড়ে উঠেছে এসব প্রতিষ্ঠান।

আবার এসব মসজিদ বা মাদরাসার তদারকি বা পরিচালনায় যারা রয়েছেন তারা ব্যক্তি আদর্শের রাজনীতি করেন; হারাম পথে উপার্জন করেন। মাদরাসার জন্য চাঁদা বা সাহায্য নেওয়া হয় জেনে-বুঝে ঐসব হারাম ব্যক্তির উপার্জন থেকেই। এটা কি বৈধ হতে পারে?



অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠান এবং অবৈধ অর্থ দ্বারা পরিচালিত দ্বীনি ব্যবস্থায় কি আল্লাহর দ্বীন কায়েমে বা মানবতার কোনো কল্যাণ রয়েছে? একটু বিবেককে প্রশ্ন করুন।



মসজিদে আর মাদরাসায় বসে অনেক ওয়ায শুনি, হালাল-হারামের বয়ান শুনি কিন্তু-

কালেকশনের অর্থ কার কাছ থেকে এলো তা যাচাই করি না বা জেনে-শোনে তাদের হারাম অর্থ গ্রহণ করি।

হে নবীর ওয়ারিসগণ! একটু কি ভেবে দেখবেন না? দুনিয়া কয় দিনের?

শুধু মাযহাবগত দ্বন্দ্ব নিয়ে, মুস্তাহাবগত দ্বন্দ্ব নিয়ে আরো দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে চলেছেন, দেশ-বিদেশে ইসলাম নিয়ে বাহাস করছেন অথচ ইবাদত কবুলের মৌলিক শর্ত হলো- হালাল উপার্জন ও পবিত্র খাবার। কায়িক শ্রম বা নিজহাতের কামাইয়ের অনেক ফযীলত আমরা শুনি কিন্তু বাস্তবে আমল করি না।

আবার অনেক ইসলামী আন্দোলনের দল বা কর্মীরাও নানাবিদ ছল-চাতুরী করেন, ব্যবসাতে, শিল্পে সাধারণ জনগণকে ধোঁকা দেন। আফসোস!



উপার্জনের গুরুত্ব: উপার্জন ব্যতীত জীবিকা নির্বাহ করা যায় না এবং ইসলামে পরিশ্রমের প্রতি উৎসাহ দেয়া হয়েছে ভিক্ষাবৃত্তিতে নয়!

আল্লাহ তা‘আলা ফরয ইবাদত সমাপনান্তে জীবিকা নির্বাহে উপার্জন করার লক্ষ্যে যমিনে ছড়িয়ে পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন:

﴿فَإِذَا قُضِيَتِ ٱلصَّلَوٰةُ فَٱنتَشِرُواْ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَٱبۡتَغُواْ مِن فَضۡلِ ٱللَّهِ وَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ كَثِيرٗا لَّعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ﴾ [الجمعة:10]

‘‘সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে, এবং আল্লাহকে অধিক স্মরন করবে যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সূরা জুমুআ: ১০)

এখানে অনুগ্রহ সন্ধান করা মানে জীবিকা অর্জনের মাধ্যম গ্রহণ করা। (দেখুন: তাফসীরে কুরতুবী:খ.১৮,পৃ.৯৬)

উপার্জনের ক্ষেত্রে ইসলাম নিজ হাতে উপার্জন করাকে সর্বোত্তম উপার্জন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এ মর্মে হাদীসে এসেছে:

عن رافع بن خديج، قال: قيل: يا رسول الله، أي الكسب أطيب؟ قال: «عمل الرجل بيده وكل بيع مبرور»

হযরত রাফে ইবনে খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, সর্বোত্তম উপার্জন কোনটি? জবাবে তিনি বলেন: ব্যক্তির নিজস্ব শ্রমলব্দ উপার্জন ও সততার ভিত্তিতে ক্রয়-বিক্রয়।’’(মুসনাদে আহমাদ: খ.৪, পৃ. ১৪১ )

উপার্জন করার মনোবৃত্তি ব্যতিরেকে যারা ভিক্ষাবৃত্তিতে প্রবৃত্ত হয়, তাদের এ ধরনের পেশাকে অবৈধ সাব্যস্ত করা হয়েছে। এ মর্মে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

‘‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সর্বদা মানুষের কাছে চেয়ে বেড়ায় সে কিয়ামতের দিন এমন অরস্থায় আগমন করবে যে, তার মুখমণ্ডলে এক টুকরো গোশতও থাকবে না।[বুখারী,হাদীস নং ১৪৭৪; সহীহ মুসলিম. হাদীস নং. ১০৪০]’’

ইসলাম মানবতার ধর্ম। দুস্থ মানবতার সেবায় দান করার রীতি ইসলামে চালু আছে। তবে ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে ইসলাম অনুমোদন দেয় নি।

সা‘দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এভাবে বলেছেন,

«إِنَّكَ أَنْ تَدَعَ وَرَثَتَكَ أَغْنِيَاءَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَدَعَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُونَ النَّاسَ فِي أَيْدِيهِمْ»

‘‘তোমাদের সন্তান সন্তুতিদেরকে সক্ষম ও সাবলম্বী রেখে যাওয়া, তাদেরকে অভাবী ও মানুষের কাছে হাত পাতা অবস্থায় রেখে যাওয়ার চেয়ে উত্তম।’’ [বুখারী,খ- ১, হাদীস নং ৫২]

হালাল উপায়ে উপার্জনের ব্যবস্থা গ্রহণও অন্যতম একটি মৌলিক ইবাদত। শুধু তাই নয়, ইসলাম এটিকে অত্যাবশ্যক (ফরয) কাজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

এ মর্মে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি হাদীস প্রনিধানযোগ্য। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«كسب الحلال فريضة بعد الفريضة »

‘ফরয আদায়ের পর হালাল পন্থায় উপার্জনও ফরয।’’[বাইহাকি]



‘‘হে মানুষ! পৃথিবীতে হালাল ও তাইয়্যেব যা রয়েছে তা থেকে আহার কর। আর শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না, নি:সন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।[সূরা আল-বাকারা: 168]

হালাল উপার্জনের গুরুত্ব: রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন:

‘‘মানুষের নিকট এমন একটি সময় আসবে, যখন ব্যক্তি কোন উৎস থেকে সম্পদ আহরন করছে, তা হালাল না হারাম, সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ করবে না।’’[বুখারী,হাদীস নং ২০৫৯]

হালাল উপার্জন ব্যতীত দুআ বা ইবাদত কবুল হবে না। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন-

‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআল পবিত্র। তিনি শুধু পবিত্র বস্ত্তই গ্রহণ করেন। তিনি মুমিনদের সেই আদেশই দিয়েছেন, যে আদেশ তিনি দিয়েছিলেন রাসূলগণের।’’ আল্লাহ তা’আলা বলেন : ‘‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পবিত্র বস্ত্ত-সামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুযী হিসেবে দান করেছি।’’ অতঃপর রাসূল সা. এমন এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দীর্ঘ সফরে থাকা অবস্থায় এলোমেলো চুল ও ধূলি-ধুসরিত ক্লান্ত-শ্রান্ত বদনে আকাশের দিকে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে প্রার্থনা করে ডাকছেঃ হে আমার প্রভূ! হে আমার প্রভূ! অথচ সে যা খায় তা হারাম, যা পান করে তা হারাম, যা পরিধান করে তা হারাম এবং হারামের দ্বারা সে পুষ্টি অর্জন করে। তার প্রার্থনা কিভাবে কবুল হবে?’’[সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ১০১৫]

উপার্জনের উৎস সম্পর্কে কিয়ামাতে জিজ্ঞাসা করা হবে

কিয়ামতের দিন আদম সন্তানকে তার উপার্জনের উৎস সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। সেজন্য মুমিনের জন্য হালাল উপার্জন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়ে হাদীসে উল্লেখ আছে, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন,

«لَا تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ القِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ، عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أَفْنَاهُ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ، وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ»

‘‘কিয়ামতের দিন আদম সন্তানকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এক কদমও স্বস্থান হতে নড়তে দেওয়া হবে না।

১. তার জীবনকাল কিভাবে অতিবাহিত করেছে,

২. যৌবনের সময়টা কিভাবে ব্যয় করেছে,

৩. ধন সম্পদ কিভাবে উপার্জন করেছে,

৪. তা কিভাবে ব্যয় করেছে,

৫. সে দ্বীনের যতটুকু জ্ঞান অর্জন করেছে সেই অনুযায়ী আমল করেছে কিনা।’’[তিরমিযী, খ- ৪, হাদীস নং ২৪১৭]

হালাল উপার্জন করা আল্লাহর পথে বের হওয়ার শামিল

হালাল উপার্জন করার জন্য প্রয়োজনে বিদেশেও যেতে হতে পারে। সেজন্য এটিকে কুরআন মাজীদে আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার সাথে হালাল উপার্জনকে বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿وَءَاخَرُونَ يَضۡرِبُونَ فِي ٱلۡأَرۡضِ يَبۡتَغُونَ مِن فَضۡلِ ٱللَّهِ وَءَاخَرُونَ يُقَٰتِلُونَ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِۖ ﴾ [المزمل: ٢٠]

‘‘আর কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে পৃথিবীতে ভ্রমণ করবে, আর কেউ কেউ আল্লাহর পথে লড়াই করবে।’’[সূরা আল-মুযযাম্মিল: ৭৩:২০]

এটা কাউকে আঘাত করার জন্য, কারো মনে বিদ্বেষ ছড়ানো নয় শুধু সচেতনতা সৃষ্টির জন্য। আসুন-

যারা ইসলামের দায়ী, নবীর ওয়ারিস, জাতির আলোকবর্তিকা! আসুন নিজেদের স্বার্থে হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হই, ইসলামের কল্যাণে বাতিল মতাদর্শদের বাদ দিয়ে, তাদের সংশ্রব থেকে দূরে থেকে (নিজেদের পরিবার আর প্রতিবেশীদের বুঝিয়ে) নিজেরা মিলিত ভাবে ইসলামের বাণী সমুন্নত রাখি। হারাম পথে দ্বীন কায়েম হয় না।



আল্লাহই আমাদের অভিভাবক! আল্লাহ আমাদের ইসলামের পথে ঐক্যবদ্ধ রাখুন আমীন!!!

বিষয়: বিবিধ

১৪৪৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

369376
১৭ মে ২০১৬ সকাল ০৯:০৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : একটি বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। মসজিদ বা মাদ্রাসা তৈরি করে কিছু ক্ষেত্রে জমি দখল এর চেষ্টা হলেও অনেক ক্ষেত্রেই উল্টা মসজিদ-মাদ্রাসার জমি দখল করছে অন্যরা।
১৮ মে ২০১৬ রাত ০২:৩০
306633
সামসুল আলম দোয়েল লিখেছেন : যদি হয়ে থাকে সেটারও প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ করতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে। তবে আমার দেখা এমনটি হয় নি, অনেক সময় খাসজমি/পরিত্যক্ত জমিতে মসজিদ বানিয়ে ফেলে আর পরবর্তীতে দাবিদাররা দাবি করতে গেলে জনগণের আবেগের রোষানলে পড়ে।

আল্লাহ ভালো জানেন। ধন্যবাদ
369404
১৭ মে ২০১৬ দুপুর ০৩:৫৫
আবু জান্নাত লিখেছেন : আলোচনাটি ভালো লেগেছে, তবে একটি কথা হলঃ সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলতে গিয়ে তাদের যোগ্যতা এক হবার নয় বলে ক্ষ্যান্ত দিয়েছেন, তাদের সূদ ঘুষ, চাদাবাজি, উৎকোঁচ কিছুই উল্যেখ করলেন না।
অথচ আলেমদের কথা বলতে গিয়ে যোগ্যতা এক হবার নয় বলে ক্ষ্যান্ত হননি, চালিয়েছেন আপনার যোগ্যতার ক্ষুর। জেনে না জেনে ধারনার উপর ভিত্তি করে প্রাসঙ্গিক কুরআন হাদিস দিয়ে তাদের ধোলাই করেছেন,

সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের টাকায় চলে, বড় লোকের বাচ্চারা সেখানে যায় বড় শিক্ষিত হওয়ার জন্য। কিন্তু সমাজের গরীবদের জন্য কেউ কি ভাবে? কাওমী আলেমরাই অসহায় গরীব ও সমাজ বিচ্ছিন্ন ছেলেমেয়েদের জন্য নিজেরা পরিশ্রম করে, তালিম ও কালেকশান দুটোই করে।

মুহতামিম হওয়ার জন্য কেউ মাদরাসা খুলেছে আমার অন্তত জানানেই। আপনি কি ধারনা থেকে বলছেন কিনা জানি না। আল্লাহ মাফ করুক। উম্মাহর দরদ অন্তরে জায়গা দিয়ে এমন কথা লিখায় আসতাে বলে মনে হয় না।

সরকারের টাকায় পরিচালিত হওয়া প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিত লোকেরাই বৃদ্ধ মা বাবাদের বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে, কোন কাউমী আলেম এমন কাজ করেছে নজীর দেখাতে পারবেন না।

সরকারের টাকায় পরিচালিত হওয়া প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিত সোনার ছেলেরাই অস্ত্রের মহড়া সাজায়, দিনে দুপুরে মানুষ হত্যায় মেতে উঠে, কোন কাউমী মাদরাসায় এমন হয়েছে? নজীর দেখাতে পারবেন?

সো, বিবেচনা করে উম্মাহর দরদ নিয়ে আলেমদের বিরুদ্ধে কথা বলা উচিৎ বলে মনে করছি।

প্রতি বছর গড়ে ১০,০০০ দশ হাজারের উপরে কাউমী মাদরাসা থেকে ফারেগ হচ্ছে, প্রতি বছরই কি এতগুলো মাদরাসা ও মসজিদে এদের কর্মক্ষেত্র তৈরী হচ্ছে? তাহলে কি ভাবে বললেন যে, শুধু মাদরাসা তৈরী করছে মুহতামিম হওয়ার জন্য, বা পরের জমী দখল মরে মসজিদ বানাচ্ছে?

তদুপরি বলবো, আপনার জানামতে হয়তো দু'এক খারাপ হতে পারে, তাই বলে ঢালাও ভাবে বলা মোটেও সমীচীন নয়।

ধন্যবাদ


369455
১৮ মে ২০১৬ রাত ০২:২৭
সামসুল আলম দোয়েল লিখেছেন : আমার এই লেখার উদ্দেশ্যই ছিল, যারা দ্বীনের দায়ী হবেন তাদের সতকর্তার জন্য। আপনি ব্যাপারটা কেন নিজের কাঁধে তুলে নিলেন বুঝলাম না।(?)
আপনি কি বলতে চান, সমাজের নষ্ট-কীটদের সাথে হাত মেলাতে? হারাম পথের আয়কারীদের অর্থ দ্বারা মসজিদ/ মাদরাসা পরিচালিত হওয়া বেধ?

আমি ঢালাও ভাবে সবাইকে কিছু বলি নি! আমার লেখা যদি রেফারেন্সের দিকদিয়ে ভুল হতো ধরিয়ে দিতে পারতেন । আপনি এনেছেন অন্য প্রসঙ্গ। আমি সাধারণ শিক্ষার ব্যাপারে এখানে আলোচনা করতে চাই নি বলেই কিছু পান নি এখানে।আমার পরবর্তী লেখায় শিক্ষা-পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব সেখানেই বিস্তারিত পাবেন।

১. আমার দেখা একটি নয় অনেকগুলো ঘটনা দেখেই আর দায়িত্ব নিয়ে এসব লিখেছি। চোখের সামনে কত মসজিদ/ মাদরাসা হতে দেখেছি জেদের বশে/ ঝগড়া করে বা সম্মানের জন্য বা অপরকে ঘায়েল করার জন্য।

২.আমার লেখা ছিল হারাম পথে উপাজর্নের দ্বারা কি দ্বীনের কাজ হয়?

৩. শিক্ষা পদ্ধতির কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য

৪. যোগ্যতার ভিত্তিতে দায়িত্ব!
৫. বাতিলদের সাথে হাত না মিলানো।

আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে সঠিক জ্ঞান করুন। আমীন

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File