আমি ফিরিয়েছি মুখ আল্লাহর দিকে
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ১১ মে, ২০১৬, ০৮:২৮:০২ রাত
إِنّي وَجَّهتُ وَجهِيَ لِلَّذي فَطَرَ السَّماواتِ وَالأَرضَ حَنيفًا وَما أَنا مِنَ المُشرِكينَ
নিশ্চয়ই আমি একনিষ্ঠভাবে তাঁর দিকে মুখ ফিরাচ্ছি, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই। (সূরা ৬ আনআ'ম: ৭৯)
আমি মুসলিম! আল্লাহ আমার প্রতিপালক! ইসলাম আমার মুক্তির পথ! কুরআন আমার পথ-নির্দেশিকা! মুহাম্মাদ (সা.) আমার আদর্শ!! আমি পুরোপুরি ইসলামের উপর তথা সীরাতে মুস্তাকিমে চলতে চাই আর সবাইকে অনন্ত জীবনের মুক্তির জন্য সেই পথে ডাকছি! আমি জেনে, শুনে ও বুঝে এটাকে মুক্তির পথ হিসেবে পেয়েছি; কুরআনকে পেয়েছি দিশারী; তাওহীদকে গ্রহণ করেছি আর শিরককে বর্জণ করেছি। আমি সবাইকে আল্লাহর পথে ডাকছি তাগুতের পথ ছেড়ে।
আমি আমার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি পৃথিবীর সকল মতবাদ, তন্ত্র, তরীকা ছেড়ে একনিষ্ঠতার সাথে একত্ববাদের দিকে!
আমার সবচেয়ে বেশি হাসি পায় এবং কষ্টও লাগে, যারা নিজেদের হক্কানী দা'য়ী (দ্বীনের প্রচারক) হিসেবে মসজিদ/ মাদরাসাতে বসে মানুষদের আল্লাহর পথে ডাকে ( কখনো তাবলীগের নামে কখনো নসিহতের মাধ্যমে) আর বাইরে এসে তাগুতের পথে ডাকে বা তাগুতের সাথে চলে/ ওঠা-বসা করে/ তাদের অর্থ দ্বারা নিজেকে সুশোভিত করে!
পথ দুটো! একটা আল্লাহর অন্যটা তাগুত বা শয়তানের! এর বাইরে ভিন্ন কোনো পথ নেই। হয় আপনাকে পুরোপুরি আল্লাহর পথে থাকতে হবে নয় তো তাগুতের পথে। চিন্তা করে দেখুন আপনি কোন পথে আছেন?
সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য হই যখন দেখি বেশিরভাগ মুসলমান বিদআ'ত আর ভন্ডদের দরবারে গিয়ে পথভ্রষ্ট হচ্ছে আর একদল লোক মাযহাবের বিতর্কিত মাসআ'লাগুলো নিয়ে সামাজিক সাইটে আরো বিতর্কের ঝড় তুলছেন! মুসলমানদের ভিতর থেকে বিদআ'ত আর তাগুতকে বের করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাওহীদের পথে আন্দোলন করতে হবে। মুস্তাহাবগত বিতর্কিত বিষয় নিয়ে অযথা বিতর্ক করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আল্লাহ বলেছেন ঐক্যবদ্ধ থাকতে আর আমরা দ্বীনের নামে বিভিন্ন দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়ছি আর নিজেদেরই খাঁটি মনে করছি। আসুন ফিকহের মতভেদ ফিকহের ইমামদের উপর ছেড়ে দিই! হাদীস গ্রহণ করি হাদীসদের ইমামদের ব্যখ্যায় আর কুরআন বুঝি মুফাসসিরিনদের ব্যখ্যায়!
আমার সবচেয়ে বেশি আফসোস হয়, যখন দেখি একদল দায়ী বা বিদ্বান সামাজিক মিডিয়া বা ওয়াজ মাহফিলে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করে, গালি-গালাজ করে! এরা নিজেদের আল্লাহর পথে সৈনিকও মনে করে! দ্বীনের সাথে কত বড় উপহাস!!! অপরের মতামত বা অপরের মন্দতাকে মন্দ দিয়ে প্রতিহত করা ইসলাম সম্মত নয়। আল্লাহ বলেন-
"ভাল ও মন্দ সমান হতে পারে না। উৎকৃষ্ট দ্বারা মন্দ প্রতিহত কর; তাহলে যাদের সাথে তোমার শত্রুতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত।" (সূরা ৪১ হা-মীম সাজদা: ৩৪)
পুনশ্চ: আমার এই আইডিতে বেশিরভাগ Friends আমার অপরিচিত! অর্থ্যাৎ তাদের আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। সুতরাং একটা কথা পরিষ্কার করতে চাই- প্রত্যেকের মতের প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে (যার কর্ম তার ফল) সুতরাং সকল মতের-তরীকার লোকই থাকতে পারে, কোনো সমস্যা নেই! শুধু অনর্থক বিতর্কপ্রিয় অশ্লীলভাষী/ গালিবিদ আর নোংরামী পোষ্টকারী যেন না থাকেন।
উপসংহার:
ادعُ إِلى سَبيلِ رَبِّكَ بِالحِكمَةِ وَالمَوعِظَةِ الحَسَنَةِ وَجادِلهُم بِالَّتي هِيَ أَحسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبيلِهِ وَهُوَ أَعلَمُ بِالمُهتَدينَ﴿١٢٥﴾ وَإِن عاقَبتُم فَعاقِبوا بِمِثلِ ما عوقِبتُم بِهِ وَلَئِن صَبَرتُم لَهُوَ خَيرٌ لِلصّابِرينَ ﴿١٢٦﴾
"তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহবান কর হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে আলোচনা কর সদ্ভাবে। নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক, তাঁর পথ ছেড়ে কে বিপথগামী হয়, সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত এবং কে সৎপথে আছে, তাও সবিশেষ অবহিত।এই সূরার শেষ আয়াতে আল্লাহ বলছেন: নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরই সঙ্গে থাকেন, যারা সংযম অবলম্বন করে এবং যারা সৎকর্মপরায়ণ।
যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তাহলে ঠিক ততখানি করবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। আর যদি তোমরা ধৈর্যধারণ কর, তাহলে অবশ্যই ধৈর্যশীলদের জন্য সেটাই উত্তম।" ( সূরা ১৬ নাহল: ১২৫-১২৬)
আল্লাহ আমাদের দ্বীনের সঠিক জ্ঞান দান করুন। তাওহীদের উপর অটুট রাখুন। আমীন!!
বিষয়: বিবিধ
১১১৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন