হুসেনী মুসলমান আর এজেদী মুসলমান: আমাদের কর্তব্য!
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ০২ মে, ২০১৬, ০৩:০৬:৪৯ রাত
কী যে অবস্থা আমাদের দেশের মুসলমানদের! তারা কীভাবে সঠিক দ্বীন পালন করবে, এতো মত পথ আর তরীকা থাকলে?
একদল বলছে, তারা নাকি হুসাইনি মুসলমান, বাকিরা ইয়াযিদী মুসলমান! ওরা আবার সুন্নী মুসলমান! এদের প্রত্যেক গ্রুপে আবার ভিন্ন ভিন্ন প্রেসিডেন্ট রয়েছে। মানে-
তাদের পীরবাবারা প্রত্যকেই দাবি করে" সে আন্তর্জাতিক সুন্নী বা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের প্রেসিডেন্ট"।
এরা মীলাদ-কিয়ামের ভক্ত, হু.হু যিকরের আশেকান ও যাকেরান।
আরেকদল হুহু করে না, তবে তারা বিদ'আতী যিকর করে আর নিজেদের খাটি হুসাইনিয়া মুসলমান মনে করে আর বাকিদের কাফির বলে মনে করে। তারাও মিলাদ-কিয়ামের বিশেষ ভক্ত।
আরেকদল হুসেনী মুসলমান বেপর্দা, বেনামাযী হয়েও খাঁটি মুসলমান ও আশেকে রাসূল! তাদের মস্তিষ্কে মগজ বলে কিছু আছে বলে মনে হয় না। পীরদের কাছে নিজেদের "বিবি" কন্যাদের উৎসর্গ করে। বিশেষ মোলাকাত করে।
আল্লাহ আমাদের এমন মুসলমানিত্ব থেকে হেফাযত করুন। কে তাদের এই অধিকার দিল? মুসলমানদের মাঝে দুইভাগ করতে? আর হুসেনী মুসলমানের দলিল কী?
কী বলব! কারা ওদের বুঝাবে, কীভাবে বুঝাবে? যারা নিজেদের হক্কানী মনে করে, তারাও আছে মুরিদ বানানোর কাজে! তারাও আশা রাখে- পরকালে এদের পীর, গাউস, কুতুব (তাদের ভাষায়) তাদের নিয়ে তরী বাইবেন! আফসোস!! তারা কুরআন পড়ে, হাদীস পড়ে! তারপরও মুসলমানদের কেন ধোঁকা দেয়!
কে আল্লাহর কাছে ওলী হিসেবে গণ্য, কে আল্লাহর বন্ধু(নবী ছাড়া) কে পরকালে সুপারিশ করতে পারবে (নবী করীম সা. ছাড়া) তারা কিসের ভিত্তিতে জানতে পারল??
ইন্টারনেটের যুগে ফেসবুকসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ইউটিউবে এই সকল বিশেষ মুসলমানদের বড়ই উৎপাত দেখা যায়! আজকাল এটা মনে হয় বিশেষ ফ্যশন হয়ে দাড়িয়েছে। নিজেকে বড় পন্ডিত, সেলিব্রেটি বানাতে ব্যস্ত। তাই অনেক সময় ওদের মুখেও কোনো লাগাম থাকে না।
এমনকি, যারা আমাদের সহীহ হাদীসের কথা বলেন, বিদআত ছাড়তে বলেন তারাও পিছিয়ে নেই! জাল আর দূর্বল হাদিস দিয়ে কুরআনের তাফসির করেন। বিরোধী মতের পক্ষে সকল হাদীসকে দূর্বল হাদীস বলে থাকেন। আফসোস! যেখানে ইমাম তিরমিযী থেকে ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম (রহ.) পর্যন্ত মাযহাবগত পার্থক্য দেখতে পান সহীহ বর্ণনার ভিত্তিতে বা পরস্পর দূর্বল হাদীসের ভিত্তিতে সেখানে এরা নিজেদের মতকে প্রাধান্য দিয়ে অকাট্য প্রমানের জন্য বাকিটাকে অস্বীকার করেন।
এরা আবার সবকিছুকে বিদআ'ত বলে থাকেন নিজেদের স্বার্থে। মাযহাব মানা নাকি বিদআত!
হায়! বিদ্বানদের অবস্থা!! মাযহাব কি দ্বীন না দ্বীন পালন-মানার পন্থা? এরা দেখি কোনটা দ্বীন আর কোনটা দ্বীন পালনের মাধ্যম তাও জানেন না।
দ্বীন পালনের মাধ্যম বা পথ যদি বিদআত হয়, তাহলে তাদের অবস্থা কী হবে? এরা তো নিজেদের ভাষায় দ্বীন বুঝে, আধুনিক পাঠশালায় গিয়ে বুখারী, মুসলিম বা তাফসীর শিখে।
মাযহাব মানা আর কাউকে অন্ধ তাকলীদ এক নয়! রাসূলুল্লাহ সা, ছাড়া কাউকে অন্ধভাবে মানা যাবে না এটাই সবাই বলেন। এটাই সঠিক এবং চুড়ান্ত কথা। নইলে জাতি যে বড্ড গোমরাহীতে পড়ে যাবে।
আমার এই কথাসহ সকল পন্ডিতদের (উপরের আলোচিত বিশেষ পরিচিত বক্তাশ্রেণীদের)কথা আগে যাচাই করুন। তারপর মানুন--
আল্লাহ আমাদের পড়তে বলেছেন!
নইলে অন্ধকারের অতল গহ্বরে হারিয়ে যাবেন। মনে রাখবেন, মৃত্যুর আগেই আপনার আক্বীদা ও আমা'ল সঠিক-সহীহ করতে হবে। যেটাকে দ্বীন হিসেবে পালন করবেন তার ভিত্তি কী আর সেটার সুন্নাত পদ্ধতি কী, তা ভালো করে জানতে হবে সবার আগে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক দ্বীন বুঝার তাওফিক দিন। সকল প্রকার বাড়াবাড়ি থেকে হেফাজত করুন। আমীন ! আমীন!!
বিষয়: বিবিধ
১১৩৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন