প্রচলিত সামাজিক ব্যাধি ( ৯ম পর্ব): হিংসা
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ২৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:৪৯:৩৮ রাত
পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতাভাবের কারণে মুসলমানদের মাঝে এতো অনৈক্য, বিভেদ ও বৈষম্য। অথচ ইসলামে বিভেদ ও অনৈক্য হারাম! (আলকুরআন, ৩:১০৫) আজ মুসলমানরা বিভিন্ন দল, উপদল ও মতবাদের উপর বিভক্ত হয়ে আছে আর নিজেদের হকপন্থী দাবী করে পরস্পরকে বাতিল ও পথভ্রষ্ট আখ্যা দিচ্ছে। পরস্পর কাফির ও মুশরিকদের দালাল বলতে কুন্ঠিত হচ্ছে না! কী আশ্চর্য! এর মূল কারণ হলো যত না দ্বীনের জ্ঞানের স্বল্পতা তারচেয়ে বেশি দুনিয়ামূখিতা। আজ মুসলমানরা পার্থিব স্বার্থে পরস্পরকে বাতিল বলে নিজেদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করছে আর হিংসার আগুনে ঘি ঢেলে দিচ্ছে।
হিংসা হলো দ্বীনের প্রাচুর্যের কারণে বা দুনিয়ার স্বার্থের কারণে কাউকে তুচ্ছ ভাবা, ধ্বংস কামনা করা।
অথচ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করো না, একে অপরের প্রতি হিংসাপরায়ণ হইয়ো না, পরস্পরের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন হইয়ো না, পরস্পরের সাথে সম্পর্ক ছেদন করো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে যাও। আর কোন মুসলিমের জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে তার (মুসলিম) ভাইয়ের সঙ্গে তিনদিনের বেশি কথাবার্তা বলা ত্যাগ করে।’’ (বুখারী, মুসলিম)
তিনি আরো বলেন-
তোমরা হিংসা থেকে দূরে থাক। কেননা হিংসা মানুষের উত্তম কাজগুলো এভাবে ধ্বংস করে দেয়, যেভাবে আগুন শুকনো কাঠ বা ঘাস ছাই করে ফেলে। [আবূ দাঊদ]
আমাদের সমাজে প্রচলিত আরেকটি মারাত্মক ব্যাধি হলো- এই হিংসাত্মক মনোভাব " আমিই হক পথে, বাকিরা ভ্রান্তিতে"। নিজেদের পাস্পরিক ভূলগুলো শোধরানো কিংবা এই মুসলমানদের দাওয়াতী মিশনের জন্য নয় শুধু হিংসার কারণেই অপরের দোষ খুজে বেড়ায় শ্রেষ্ঠ উম্মাত! এতো পারস্পরিক দূরত্ব বাড়ে বৈকি কমে না।
আসুন দ্বীন কিংবা দুনিয়ার স্বার্থে একতাবদ্ধ হই। দ্বীনের জন্য দুনিয়ার স্বার্থে ছাড় দিই। পরস্পরকে দ্বীনের শোধরানোর জন্য চেষ্টা করি, কারো চরিত্র নিয়ে বা ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কাঁদা না ছুড়ি।
বিদআ'ত বা শিরকের ব্যাপার ছাড়া সকল মতানৈক্য বিষয়ে পরস্পরকে সম্মানের সাথে মতভেদ মেনে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হই দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যাণে। এতেই আমাদের মঙ্গল!আল্লাহ আমাদের সহায় হৌন।
বিষয়: বিবিধ
১০৮৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন