ইসলামে ঐক্যবদ্ধতা ও আমাদের শায়খদের কাঁদা ছুড়াছুড়ি
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ২৩ এপ্রিল, ২০১৬, ০২:০০:৩৮ রাত
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ভার্চুয়াল জগতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশেষ করে ফেসবুক আর ইউটিউবে (বিনা পয়সার গণমাধ্যম) "মুক্তমনার" নামে পার্থিব স্বার্থ হাসিলকারী গোষ্ঠীর সাথে তাল মিলিয়ে বেড়ে চলেছে ইসলামের "দায়ি" তথা প্রচারক-প্রসারকদের (আত্মস্বীকৃত) পারস্পরিক নোংরা ও জঘন্য আক্রমণ আর ইসলামকে বিকৃত করার প্রতিযোগিতা।
হায়! হায়রে মুসলমান পন্ডিত নামের কলঙ্ক! আল্লাহ যেখানে বলছেন "ঐক্যবদ্ধ থাকো বিচ্ছিন্ন হয়ো না" (সূরা ৩ আলে ইমরান: ১০৫) সেখানে দিনকে দিন মতভেদ আর মতপার্থক্য বাড়িয়ে চলেছে কিছু শায়খ ও মোল্লারা। আল্লাহ তাদের ও আমাদের হেদায়েত দিন ও ইসলামের পথে অবিচল রাখুন! (আমীন)
এখন ফেসবুক খুললেই দেখি একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে লাগামহীন ভাবে পিছনে লেগে চলেছেন। ইসলামে আরেকজনের পিছনে লাগাটাও হারাম!
কী আশ্চর্য! যেই মতভেদ আর মতভিন্নতা সাহাবীদের মাঝে ছিল, সেটা নিয়েই আজ আমরা ঝগড়ায় লিপ্ত। পরস্পরে মিথ্যা আর ইসলামকে উপহাসের পাত্রে পরিণত করেছি। অথচ সালফে সালেহীনরা মতভেদকে মেনে নিয়েই পরস্পরকে শ্রদ্ধা করতেন ও ঐক্যবদ্ধ থাকতেন। আফসোস! এই তারা কেমন শায়খ???
আমাদের আজ যেখানে ঐক্যবদ্ধভাবে ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে ,বিদআতী ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে, তথাকথিত নাস্তিক ও জালিমদের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও লড়াই করার কথা, সেখানে আমরা নিজেরাই শতধা বিভক্ত। আল্লাহর কাছে কী জবাব দেবো?
হাতের কাছে সস্তা মিডিয়া পেয়ে যে যেভাবে পারছে পরিচিত হতে চাচ্ছে। কেউ ইসলামকে মডারেটের নামে বিকৃত ইসলাম জনতার সামনে তুলে ধরছে, কেউ সংশোধনের নামে (নিজেরটাই আসল) সব কিছুকে ভ্রান্ত ও বাতিল বলে চুড়ান্ত ফতোয়া দিয়ে দিচ্ছে।
আমাদের ঈমান ও ইসলামকে রক্ষা করতে হলে এখনই সজাগ হতে হবে। মনে রাখতে হবে, এরা যা বলে তাই চুড়ান্ত হতে পারে না। এরা যা বলে তাহলো পরস্পরকে হেয় আর পরাজিত করার পায়তারা। আমাদের ইসলাম বুঝতে হবে" সাহাবীদের ভাষায়, সালফে সালেহীনদের ভাষায়। ইসলামী শরীয়াহর উৎস কুরআন ও হাদীস আমাদের সামনে সুষ্পষ্টভাবে বিদ্যমান। সবাইকে বলব, আসুন কুরআন বুঝি মুফাসসিরদের মাধ্যমে (তাফসীরে ইবনে কাসীর, তাফসীরে বায়যাভী বাংলাতে পাওয়া যায়, এগুলো পড়বেন) হাদীস গ্রহণ করতে হবে মুহাদ্দিসদের মাধ্যমে। কারো কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে একটু যাচাই করুন। এটাই রাসূলের (স.) নির্দেশ।
আমরা যেমন পিতৃ-পুরুষদের দোহাই দিয়ে যা পেয়েছি সবকিছুকে সঠিক বলব না, তেমনি শায়খ বা সালাফী নামধারী কেউ কিছু বললেই যাচাই ছাড়া তার পিছু নেব না।
আসুন কুরআন পড়ি, হাদীস পড়ি; নিজের জীবনকে সংশোধন করি। মৃত্যুর আগেই যেন ঈমান, আক্বীদা ও আমালকে সংশোধন করে সঠিক রাস্তার উপর আসতে পারি সেই চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের সরল পথে চলার তাওফিক দিন।
নিচের শায়খ ও ওয়ায়েজিনদের থেকে দূরে থাকুন: এরা পরস্পরে কাঁদা নয় এখন বিষ ছুড়ছে, এদের খপ্পঢ়ে পড়লে সব শেষ!!
১. শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ (ইনি সবই চুড়ান্ত কথা বলেন, অনেক সহীহ হাদীস অস্বীকারকারী)
২. শায়খ আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম (এই মহান ব্যক্তি আল্লাহ, রাসূল সা. ও অন্যান্য অনেক সহীহ আমলকেও তালাক দেন, )
৩. আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল মাদানী ( হাস্যরসের মাধ্যমে সবকিছুকে হালকা করে দেন)
৪. মুফতি লুৎফর রহমান ফারাজী ( এই লোকটি চরম ও জঘন্য অনাচারের আশ্রয় নেন! ইউটিউবের মাধ্যমে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হতে চান।)
৫. রেদওয়ান আনসারী (ফেসবুক আর ইউটিউবে ঝড় তোলার জন্য কাঁদা আর নোংরা জল ছুড়েন)
৬. মুফতি এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী জৌনপুরী ( এই লোকটি শুধু বিদ'আতী নয়, চরমভাবে সহীহ সঠিক আক্বীদা বিরোধী। যাকে তাকে কাফের বলে ফতোয়া দেন।)
আসলে পীরপন্থী সকল বক্তাই বাতিল! এখানে উনার কথা বললাম কারণ, উনি অনেক পড়াশোনা করা ও মিলাদ-কিয়ামসহ কিছু বিদ'আত ছাড়া অন্যান্য দিক ভালো, তাই যে কেউ বিভ্রান্ত হতে পারেন। অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেনও।
৭. আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী (উনি বিখ্যাত বক্তা ও সময়ের দায়ি বলে স্বীকৃত। সবাই তাকে চিনেন। তিনিও পীরপন্থী! এই লোকটা অনেকই ভালো কথা বলেন তবে, উনি নিজে যেটা ভালো বুঝেন সেটাকেই চুড়ান্ত বলে দেন আর কিছু বাতিল আক্বীদার বীজ বহন করে চলেছেন, যেমন- আল্লাহর অবস্থান ও আকার নিয়ে, রাসূলকে নিয়ে ইত্যাদি.....)
আরো অনেকের নাম লিস্টে আনা যাবে তবে তারা ইনাদের মতো জনপ্রিয় নন,বা ইন্টারনেট স্ক্রল করলেই হয়তো পাওয়া যায় না।
কয়েকজন সঠিক পথের দায়িদের নাম
১. শায়খ ড.খোন্দকার আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ জাহাঙ্গীরআরো অনেকেই আছেন। এখানে যাদের নাম বললাম এরা আমার কাছে সঠিক বলে মনে হয়েছে। আপনারাও দেখতে পারেন, যাচাই করতে পারেন।
২. শায়খ আব্দুল কাইয়্যুম
৩. শায়খ মাহমুদুল হাসান
আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে ইসলামের রশি মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরি। সঠিক দ্বীন বুঝে আমাল করি, সেইদিন আসার আগে-যেদিন কেউ কারো কোনো উপকারে আসবে না।
পুন্শ্চ: কারো কাছে এই পোস্টটি খারাপ লাগলে কী কারণে লেগেছে তা ব্যখ্যা করে বলবেন, অযথা তর্ক করা আমি পছন্দ করি না এবং বিতর্কও চাই না। আমার কথাই চুড়ান্ত না। কোনো নাস্তিক যেন এই পোস্টের ধারেও না ঘেঁষেন!!
আসসালামু আলাইকুম।
বিষয়: সাহিত্য
১১৬৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
https://www.facebook.com/ডখোন্দকার-আব্দুল্লাহ-জাহাঙ্গীর-561723870629209/
মন্তব্য করতে লগইন করুন