দ্বীন কায়েম ও ইবাদতের মর্মকথা
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০১:৩৭:৪৬ রাত
আমরা মুসলমান। আমাদের চারপাশে তাকালে আমরা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, রঙ আর ভাষা ও সঙস্কৃতির তারতম্য ও বৈচিত্র দেখতে পাই। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছি আমরা কেন মুসলমান?
আমরা মুসলমান কারণ, আমাদের পূর্বপুরুষ মুসলমান বা আমরা মুসলিম সমাজে বড় হয়েছি। যদি আমাদের জন্ম অন্য পরিবেশে বা অন্য ধর্মের অনুসারীদের ঘরে হতো তাহলে আমরা কী হতাম? নিশ্চয়ই মুসলিম নয়! কেননা আমরা যে এখনো বুঝে শুনে মুসলমান হয়ে উঠতে পারি নি। আমরা এখনো আমাদের পূর্বপুরুষ ও অধিকাংশের দোহাই দিয়ে থাকি আর দলীলে নয় বিশ্বাস করি যুক্তিতে।
এই কারণেই মুসলমানদের মাঝে এতো বিভেদ; এতো মত ও পথ। সুতরাং যেই কারণে কাফিররা কাফির, সেই কারণেই আমরাও গোমরাহীতে (অধিকাংশ মুসলমান) নিমগ্ন! অথচ আমরা মনে করছি- আমরাই হক সপথে আছি, আমরাই জান্নাতী।
আমাদের সৃষ্টির উদ্দেশ্য:
আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রেরণ করেছেন একমাত্র তারই ইবাদতের জন্য! (আলকুরআন সূরা ৫১ যারিয়াত: ৫৬)। আর আমাদের দায়িত্ব হলো তার দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করা ( সূরা ৪২ শূরা: ১৩) আর দ্বীন মানে হলো " তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদকে প্রতিষ্ঠা" করা। (দেখুন তাফসীরে ইবনে কাসীর শূরার ১৩ আয়াত অংশ)। একত্ববাদ মানে হলো শুধু আল্লাহরই ইবাদত (প্রার্থনা/আরাধনা/উপাসনা/স্মরণ/পূজা) করা এবং তাগুত বা শয়তানকে বর্জণ। ( দ্রষ্টব্য: সূরা ২১ আম্বিয়া: ২৫; সূরা ১৬ নাহল: ৩৬)
আর আল্লাহর ইবাদতের নামই হলো সরল পথ (সীরাতে মুস্তাকিম) (দ্রষ্টব্য সূরা ৩ আলে ইমরান: ৫১) যে সরল পথে চলার জন্য আমাদের কুরআনের প্রথমেই বলা হয়েছে "আমাদেরকে সরল পথ দেখাও"(সূরা ১ ফাতিহা: ৫) । সরল পথে চলার মাধ্যম হলো কুরআনের অনুসরণ ( সূরা ২ বাকারা: ২; সূরা ৭ আরাফ: ২-৩) আর কুরআনের পরিপুর্ণ অনুসরণ মানে হলো সুন্নাতের অনুসরণ ( সূরা ৩ আলে ইমরান: ৩১-৩২; সূরা ৩৩ আহযাব-২১; সূরা ৪ নিসা:১৪)
তাওহীদ মানে হলো আল্লাহর একত্ব বা একমাত্র তাকেই উপসনার যোগ্য মনে করা। তার সাথে শরীক না করা ( শরীক হয় তিনভাবে। যেমন_ ১. তার সত্ত্বায় শিরক ২. তার গুণে শিরক ৩. তার ইবাদতে শিরক) মুসলমানরা তার সিফাত বা গুণাবলীতে ও ইবাদতে শরিক করে যাচ্ছে। এই জন্যই আজ আমাদের দেশে মাযার/দরগাহ, দরবার/খানকাহ, পীর/বাবার কাছে আম জনতার এতো ভীড়! দেশ আজ শিরকের ভয়ালগ্রাসে!!কেউ কি একটুও চিন্তা করবেন না?
ইবাদতের মূলকথা হলো- যেটা আল্লাহর রাসূল আমাদের জন্য ইবাদত হিসেবে দিয়েছেন, সেটা তারই পদ্ধতিতে (সুন্নাতের রাসূল) আদায় করা।(সূরা ৩৩ আহযাব: ৩৬) যে কাজ তিনি করেন নি বা যে পদ্ধতিতে তিনি করেন নি তা কখনোই ইবাদত হতে পারে না। (সূরা নূর :৬৩) তা হবে গোমরাহী আর গোমরাহীর স্থান জাহান্নাম। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫৩৫ ও সুনান আন-নাসায়ী, হাদীস নং ১৫৬০)
আসুন আমরা আল্লাহর দ্বীনকে (তাওহীদ) ব্যক্তিগতজীবনে, পারিবারিক জীবনে, সামাজিক জীবনে ও রাষ্ট্রীয়জীবনে প্রতিষ্ঠিত করি। মনে রাখতে হবে দ্বীনের বাইরে মুসলমানের জিন্দেগী হতে পারে না। রাসূলের সুন্নাতের অনুসরণই মুক্তির একমাত্র পথ! আর ইসলাম পুণার্ঙ্গ বিধানের নাম ( সূরা ৫ আল-মায়িদাহঃ ৩) সুতরাং মুসলমানের ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো তরীকা থাকতে পারে না এবং সুন্নাত ছাড়া দ্বীনের অনুসরণ হয় না।
পূর্বপুরুষদের অন্ধভাবে মানা ও তাদের পরিণতি:
সূরা ২ বাকারা: ১৭০; সূরা ৫ মায়িদা: ১০৪; সূরা ৩৩ আহযাব: ৬৭; সূরা ৩১লুকমান: ২১; সূরা ১০ ইউনুস : ৭৮; সূরা ৩৭ সাফফাত:৬৯-৭১
অধিকাংশের দোহাই দেয়া মূর্খামী! কেননা অধিকাংশ লোকই গোমরাহী; কিংবা মূর্খ, কিংবা বুঝে না। দেখুন:-
সূরা ২৩ মুমিনুন: ৭০, সূরা ৫ মায়িদা: ৩২/ ৪৯, সূরা ৬ আনআম: ১১৭, সূরা ১২ ইউসুফ: ১০৩, সূরা ১৬ নাহল: ৩৮
বিষয়: বিবিধ
১২২৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন