মুসলমানদের দ্বিতীয় ব্যথর্তা (অনৈক্য ও দলে দলে বিভক্তি)
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ১০ জানুয়ারি, ২০১৬, ০২:৩৮:৩৪ রাত
মুসলমানদের জামাতবদ্ধতা ও ঐক্যের গুরুত্ব এবং বিভক্ত না হওয়া
আল্লাহ তায়ালা ইসলামী জীবনাদর্শ প্রেরণ করেছেন পৃথিবীর বুকে এটিকে প্রবর্তিত ও বিজয়ী করতে এবং বিজয়ী রাখতে। আর এই কাজ করার জন্যে আল্লাহ তায়ালা মুসলিমদের সংগঠিত ও সংঘবদ্ধ থাকা অনিবার্য-ফরয করে দিয়েছেন।
তাছাড়া কোনো জাতির অস্তিত্ব ও স্বকীয়তা রক্ষার জন্যে সংগঠন ও সংঘবদ্ধতার বিকল্প নেই। জামাতবদ্ধতা স্বয়ং এক বিরাট শক্তি। কোনো সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ জাতিকে সহজে কেউ পরাজিত ও নিশ্চিহ্ন করতে পারেনা। একতা, সংঘবদ্ধতা, ত্যাগ ও সংগ্রাম-সাধনার মাধ্যমেই কোনো জাতি হতে পারে বিজয়ী, লাভ করতে পারে সম্মান, সাফল্য ও উন্নতি।
অসংগঠিত বিশৃংখল জাতি কোনো অবস্থাতেই উন্নতির চূড়ায় আরোহন করতে পারেনা। নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক হানাহানিতেই তাদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়। বিশ্বের দরবারে এমন জাতির কোনো মর্যাদাই থাকেনা। এ ধরণের জাতি নিজেদের সম্মান এমনকি স্বাধীনতা পর্যন্ত হারিয়ে বসে। এমন জাতির পক্ষে নিজের অস্তিত্ব, সভ্যতা-সংস্কৃতি, ভাষা, জাতীয় বৈশিষ্ট্য এবং জীবন-ব্যবস্থা ও জীবনাদর্শের হিফাযত করা কোনো অবস্থাতেই সম্ভব হয়না। লাঞ্ছনা, পরাশাসন, অধপতন ও নিষ্পেষণই জুটে থাকে এ ধরণের জাতির ভাগ্যে।
মুসলিম উম্মাহ মানেই ইসলামি আদর্শের বাহক। আর ইসলামের আদর্শ কেবল তখনই বাস্তবায়িত হতে পারে, যখন মুসলিমরা হবে ঐক্যবদ্ধ, সংগঠিত। বিচ্ছিন্নতা তাদের মধ্যে কেবল ফিতনা আর বিপর্যয়ই সৃষ্টি করবে। বিচ্ছিন্নতার সুযোগে যে কোনো পরাশক্তি মুসলমানদেরকে ফিতনা এবং গুমরাহিতে নিমজ্জিত করে দিতে পারে। আর বিচ্ছিন্নতার কারণে এ ধরণের ফিতনা তারা প্রতিরোধও করতে পারবেনা। ইতিহাস সাক্ষী, বিচ্ছিন্নতার যুগে মুসলমানদের মধ্যে ফিতনা কিভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল? ইসলামের প্রতিষ্ঠা ও বিজয় তখনই সম্ভব, যখন ইসলামি উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত হয়ে এর জন্যে চালিয়ে যাবে প্রাণান্তকর চেষ্টা সংগ্রাম।
এইজন্যই আজ আমাদের ঘাড়ে ফাসেক, জালেম, মুশরিক শাসকরা সোয়ার হয়ে বসে আছে। পৃথিবীতে মুসলিমরা বারবার মার খাচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে।
ইসলাম মুসলমানদের বিশৃংখল ও বিচ্ছিন্ন না থেকে সংঘবদ্ধ ও সংগঠিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। বাস্তবে প্রমাণস্বরূপ জামাতবদ্ধ ইবাদতের নমুনা রেখেছে, যেমন সালাত, হাজ্জ ইত্যাদি।
ঐক্যবদ্ধতার আবশ্যকতায় আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا ۚ وَاذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ كُنْتُمْ أَعْدَاءً فَأَلَّفَ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ فَأَصْبَحْتُمْ بِنِعْمَتِهِ إِخْوَانًا وَكُنْتُمْ عَلَىٰ شَفَا حُفْرَةٍ مِنَ النَّارِ فَأَنْقَذَكُمْ مِنْهَا ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
"আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে, এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহের কারণে পরস্পর ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা এক অগ্নিকুন্ডের পাড়ে অবস্থান করছিলে। অতঃপর তা থেকে তিনি তোমাদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ নিজের নিদর্শনসমুহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার।" (সূরা আলে ইমরান: ১০৩)
তিনি আরো বলেন: আর আল্লাহ তা’আলার নির্দেশ মান্য কর এবং তাঁর রসূলের। তাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা কাপুরুষ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা রয়েছেন ধৈর্য্যশীলদের সাথে। (সূরা আনফাল: ৪৬)
রসূল সা. বলেন :
“আমি তোমাদের পাঁচটি বিষয়ের নির্দেশ দিচ্ছি। স্বয়ং আল্লাহই সেগুলোর নির্দেশ আমাকে দিয়েছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন : ১. জামাতবদ্ধ থাকার, ২. নেতার কথা শুনার, ৩. নেতার আনুগত্য করার, ৪. হিজরত করার (অর্থাৎ আল্লাহর অপছন্দনীয় বিষয় ত্যাগ করার এবং ৫. আল্লাহর পথে জিহাদ করার।
আর জেনে রাখো, যে ব্যক্তি জামাত থেকে এক বিঘত পরিমাণও বের হয়ে গেলো, সে নিজের গলা থেকে খুলে ফেললো ইসলামের রশি- যতোক্ষণ না সে পুনরায় এসে শামিল হয়েছে জামাতে। আর যে ব্যক্তি মানুষকে আহবান জানায় কোনো জাহেলি আচার ও মতবাদের দিকে, সে হবে জাহান্নামের জ্বালানি, যদিও সে রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং নিজেকে মুসলিম বলে ধারণা করে”। -সূত্র আহমদ, তিরমিযি।
মহান আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ধর্মকে খন্ড বিখন্ড করা থেকে এবং দলে দলে ভাগ হওয়া থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিচ্ছেন।
إِنَّ الَّذينَ فَرَّقوا دينَهُم وَكانوا شِيَعًا لَستَ مِنهُم في شَيءٍ إِنَّما أَمرُهُم إِلَى اللَّـهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُم بِما كانوا يَفعَلونَ
নিশ্চয় যারা স্বীয় ধর্মকে খন্ড-বিখন্ড করেছে এবং অনেক দল হয়ে গেছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপার আল্লাহ তা'আয়ালার নিকট সমর্পিত। অতঃপর তিনি বলে দেবেন যা কিছু তারা করে থাকে। (সূরা আনআম: ১৫৯)
তিনি অন্য আয়াতে বলেন:
مُنِيبِينَ إِلَيْهِ وَاتَّقُوهُ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَلَا تَكُونُوا مِنَ الْمُشْرِكِينَ﴿﴾ مِنَ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ
সবাই তাঁর অভিমুখী হও এবং ভয় কর, নামায কায়েম কর এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
যারা তাদের ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং অনেক দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উল্লসিত।
(সূরা রূম : ৩১-৩২)
আমাদের প্রত্যেককে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে থাকতে নির্দেশ দিয়ে মতবিরোধ না করতে বলছেন-
যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দিবে এবং ইনছাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন।
মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। (সূরা হুজুরাত: ৯-১০)
মুসলমানদের সম্পর্ক হবে পারস্পরিক হৃদ্যতাপূর্ণ আর ভালোবাসায়। তারা কখনো মতনৈক্য করতে পারে না, অকল্যাণ কামনা করতে পারে না।
"মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকু ও সেজদারত দেখবেন। তাদের মুখমন্ডলে রয়েছে সেজদার চিহ্ন..... ।(সূরা ফাতহ: ২৯)
নেতার আনুগত্যে থাকতে হবে আল্লাহ ও রাসূলের অনুকূলে-তাদের অমান্য করা যাবে না যতক্ষণ না ইসলাম বিরোধী কোনো নির্দেশ দেয়।
‘হে ঈমানদার লোকেরা! আনুগত্য করো আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের আর সেইসব লোকদেরও, যারা তোমাদের মধ্যে সামগ্রিক দায়িত্বশীল। অতপর তোমাদের মধ্যে যদি কোনো ব্যাপারে মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়, তখন ব্যাপারটা আল্লাহ ও রসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও, যদি তোমরা সত্যিই আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমানদার হয়ে থাকো। এটাই সঠিক কর্মনীতি আর পরিণতির দিক থেকেও এটাই উত্তম।’ (-সূরা আন নিসা : আয়াত ৫৯)
মুসলমানদের অনৈক্যের পরিণাম:
আল্লাহ বলেন:-
আর তাদের মত হয়ো না, যারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং নিদর্শন সমূহ আসার পরও বিরোধিতা করতে শুরু করেছে-তাদের জন্যে রয়েছে ভয়ঙ্কর আযাব। (সূরা আলে ইমরান: ১০৫)
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বানী ইসরাঈল যে অবস্থায় পতিত হয়েছিল, নিঃসন্দেহে আমার উম্মাতও সেই অবস্থার সম্মুখীন হবে, যেমন একজোড়া জুতার একটি আরেকটির মতো হয়ে থাকে। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ যদি প্রকাশ্যে তার মায়ের সাথে ব্যভিচার করে থাকে, তবে আমার উন্মাতের মধ্যেও কেউ তাই করবে। আর বানী ইসরাঈল বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল। আমার উন্মাত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। শুধু একটি দল ছাড়া তাদের সবাই জাহান্নামী হবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে দল কোনটি? তিনি বললেনঃ আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত। (জামে আত তিরমিযী: ২৬৪১)
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এক ব্যাক্তিকে একটি আয়াত পড়তে শুনেলাম। অথচ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (আয়াতটি) অন্যরূপ পড়তে শুনেছি। আমি তার হাত ধরে তাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে এলাম। তিনি বললেন, তোমরা উভয়েই ঠিখ পড়েছ। শু’বা (রাঃ) বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছিলেনঃ তোমরা বাদানুবাদ করো না। কেননা, তোমাদের পূর্ববর্তীরা বাদানুবাদ করে ধ্বংস হয়েছে।(বুখারী: ২২৫০)
অনৈক্যের কারণ:
(১) নিজেদের মাঝে প্রচলিত আক্বীদা বা বিশ্বাস এবং ইলম বা জ্ঞান দিয়ে কুরআন ও সুন্নাহর মনগড়া ব্যাখ্যা করা।
(২পূর্বপুরুষ বা বাপ-দাদাদের থেকে প্রাপ্ত দ্বীন ও মুরুব্বীদের কথা ও কাজকে যাচাই-বাছাই (শরীয়াতের মানদন্ডে) ছাড়া অন্ধভাবে আঁকড়ে ধরা।
(৩) কুরআন ও হাদীস থেকে দূরে থাকা এবং না বুঝে কুরআন পড়া।
(৪) দলীলবিহীন কথা ও কাজে অভ্যস্ত হয়ে পড়া। সুন্নাহকে বাদ দিয়ে বিদ'আত ও শিরকে লিপ্ত থাকা।
(৫) পারস্পরিক সম্পর্ক সু সংহত না হওয়া এবং দ্বীনকে প্রাধান্য না দিয়ে দুনিয়াকে গ্রহণ করা।
(৬) মতভেদপূর্ণ ফিকহী মাসয়ালার ছোট ছোট (মুস্তাহাব বিষয়ক) জিনিসকে বড় করে দেখা এবং ভিন্নমতকে হেয় করা।
ঐক্যবদ্ধতার উপায়-
(১) আমাদের তাওহীদ তথা একত্ববাদের দিকে পুরোপুরি ফিরে আসতে হবে এবং কুফুরি বর্জণ করতে হবে। আল্লাহকেই একমাত্র উপাস্য মেনে নিয়ে শুধু তার কাছেই প্রার্থনা করতে হবে। ইবাদতে কাউকে শরীক করা যাবে না।
(২) আক্বীদা হবে তাওহীদ ভিত্তিক আর আমাল হবে সুন্নাহ মাফিক। বিদআতকে প্রতিহত করতে হবে।
(৩) আল কুরআন বুঝে শুনে পড়তে হবে এবং রাসূলুল্লাহর(স.) হাদীস সম্পর্কে জানতে হবে।
(৪) দলীলবিহীন কোনো কথা বলা ও আমাল করা যাবে না। যাচাই না করে কারো কথা শোনা যাবে না।
(৫) ফিকহী মাসয়ালাতে ইমাম ও মুজতাহিদদের মতপার্থক্যের বিষয়ে আরো মতানৈক্য না বাড়িয়ে যে কোনো মতকে গ্রহণ এবং হাদীসকে হাদীসবিশারদের মাধ্যমে এবং কুরআনকে পূর্ববতী মুফাসসিরদের মাধ্যমে বুঝতে হবে।
(৬) বান্দাহর হক যথাযতভাবে আদায় করা। (আর মুসলমানদের অনৈক্যের দ্বিতীয় প্রধান কারণই হলো মুসলমানদের পারস্পরিক বিরোধ দুনিয়াবিষয়ক, অথচ রাসূল স. বলেছেন- দ্বীন হলো কল্যাণ কামনা করা। মুসলিম: ৫৫) দুনিয়ার স্বার্থে কারো সাথে বিদ্বেষ না রাখা।
মুসলমানরা পরস্পর ভাই:
আল্লাহ বলেন: মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।
মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম।
মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।
(সূরা হুজুরাত: ১০-১২)
উপরের আয়াত সমূহের উপর আমাদের বিশ্বাস আছে কী? তাহলে তো আমাদের মাঝে কোনো মতপার্থক্য থাকার কথা নয়।
আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট তায় পতিত হয়। (সূরা আহযাব: ৩৬)
তাই আসুন না আমরা সবাই কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ মোতাবেক জীবনকে পরিচালিত করি আর নিজেদের মাঝে সংশোধন করে নিই কুরআন ও সুন্নাহর মাধ্যমে। হঠকারীতার অপর নামই গোমরাহী।
বিষয়: বিবিধ
২১৫৫ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যথার্থই লিখেছেন। মুসলমান যখন মুসলিম উম্মাহ ছেড়ে বাংলাদেশী পাকিস্থানী সৌদী তার্কি ইত্যাদি হল তখন যেমন বিভক্ত হল, আবার শিয়া, সুন্নী, সালাফী, সুফী ইত্যাদি হল - তখন ও বিভক্ত হল, আবার আজকে ব্রাদারহুড, একে, জামায়াত কিংবা শাসনতান্ত্রিক আন্দোলন কিংবা মিনহাজ মুভমেন্ট হল তখন ও বিভক্ত হল এরপর আবার আহলে দিস এ্যান্ড আহলে দ্যাট হল তখনো বিভক্ত হল - সো মুসলমানদেরকে মুসলমানে ফিরতে হবে, কোরান ও হাদীসে ফিরতে হবে, এবং আমীর উল মুমীনিন ভিন্ন কোন দেশ-নেতা, দল-নেতা, ধর্মীয়/তরিকা-নেতাকে মানা ভুলতে হবে। ধন্যবাদ।
সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে দল কোনটি? তিনি বললেনঃ আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত। (জামে আত তিরমিযী: ২৬৪১)
সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে দল কোনটি? তিনি বললেনঃ আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত। (জামে আত তিরমিযী: ২৬৪১)
মন্তব্য করতে লগইন করুন