শরীয়াতের মূলনীতি ( সত্যের সন্ধানে ০৪ পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ১৬ নভেম্বর, ২০১৪, ১২:৪৭:১৭ রাত
আল্লাহ তা'আলা আমাদের চলার পথে দ্বীনকে (ইসলাম) শরীয়াত করে দিয়েছেন। শারা'আ মানে হলো, বিশদভাবে অলোচনা করা, ব্যাখ্যা করা, বিস্তারিত বর্ণনা করা। এর মানে হলো- জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে ইসলামী দৃষ্টি-ভঙ্গির নামই হলো "শরীয়্যাহ"। একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের পুরোপুরি শরীযাতের অনুসরণ করতে হবে। কেননা আল্লাহ তাআলা ইসলাম ছাড়া আমাদের কারো আ'মাল গ্রহণ করবেন না। ( দ্রষ্টব্য: সূরা আলে ইমরান: ৮৫)
আল্লাহর মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য হলো তারই গোলামি (ইবাদত) করা। (সূরা যারিয়াত: ৫৬-৫৭) কিন্তু ইবাদতের আগে প্রয়োজন জীবনে বেঁচে থাকা। বাঁচতে জীবন ধারণ করা। মানে হলো, দুনিয়ার বিভিন্ন কার্যাবলীতে জড়িত থাকা। তাই শরীয়াতের বিভিন্ন দিক রয়েছে। যেমন:-
(১) ঈমান ও আকায়িদ ( বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গি সষ্ট্রা ও তার সৃষ্টির ব্যাপারে)
(২) ইবাদত ( এটা পুরোপুরি বান্দাহর সাথে স্রষ্ট্রার সম্পর্ক)
(৩) মু'আমালাত-মুআ'শারাত ( বান্দাহর সাথে বান্দাহর পারস্পরিক সম্পর্ক, দৈনন্দিনের কার্যাবলী, চলাফেরা, উঠা-বসা, লেন-দেন, ব্যবসা ইত্যাদি দুনিয়াবী কাজ!)
(৪) আদাব ও আখলঅক (শিষ্টাচার ও চরিত্র )
শরীয়াতের উত্স: শরীয়াতের উত্স হলো, কুরআন, সুন্নাহ (সহীহ হাদীস) ইজতিহাদ বিল রায় ( ইজমা ও কিয়াস কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে)
শরীয়াতের মূলনীতি:
(১) আক্বীদার ক্ষেত্রে: কুরআন ও সহীহ হাদীস ভিত্তিক বিশুদ্ধ আকীদা থাকতে হবে। অস্পষ্টতার ব্যাপারে চুঁপ থাকাই শ্রেয়।
(২) ইবাদতের ক্ষেত্রে: ইবাদতের মূলকথা হলো- কিছুই করা যাবে না, শুধু যা করতে বলা হয়েছে (আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক) শুধু তা-ই করতে হবে। আর তা করতে হবে সুন্নাহ অনুযায়ী।
তাই ইবাদতে সুন্নাহর বিপরীত হলো বিদ'আত। সুন্নাহ জান্নাতের পথে আর বিদআ'ত জাহান্নামের পথে পরিচালিত করে। (দ্রষ্টব্য: বুখারী,মুসলিম, মিশকাত: ১৩৩, সূরা আলে ইমরান: ৩১-৩২)
(৩) মু'আমালাত ও মু'য়াশারাত: এর মূলনীতি হচ্ছে- সব করা যাবে শুধু যা করতে নিষেধ করা হয়েছে, যা হারাম হিসেবে বর্ণিত হয়েছে তা করা যাবে না। মানে হলো, কুরআন ও হাদীসের মাধ্যমে নিষিদ্ধ প্রমাণিত না হলে সবই বৈধ।
যেমন: প্রশ্ন করা যাবে না- আম- কাঠাল বা লিচু খাওয়া হালাল কীনা। বরং বলতে হবে এগুলো হারাম হওয়ার প্রমাণ আছে কীনা।
(৪) আদাব ও আখলাক: আদাব ও আখলাকের ব্যাপারে শরীয়াতে বিস্তারিত বর্ণিত আছে। রাসূলুল্লাহ স. হলেন আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ, অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। মুসলমানের আদর্শ (তিনি ছাড়া) কোনো ব্যক্তি নয় এবং আর কারো আদর্শের জন্য জীবনকে ব্যায় করা যাবে না।
(সুরা আহযাব: ২১, সূরা আলে ইমরান: ৩১,৩২)
শাসনকার্য ও বিচারব্যবস্থায় ইসলামের হুকুম পালন করা ফরয। কারণ সৃষ্টি যার- আইন তার, হুকুম তার, রায় তার।
(বিস্তারিত জানতে তাফসির দেখুন: সূরা আনআম: ৫৭/৬২, সূরা আ'রাফ: ৫৪ )
মুসলমানদের আনুগত্য হবে- আল্লাহ, তার রাসূল (স.) এবং তদীয় নেতার। (সূরা আননিসা: ৫৯)
(সংক্ষেপিত)
বিষয়: বিবিধ
৯১২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন