ক্ষমতাসীনদের অপরাজনীতি ও ক্ষমতা প্রত্যাশীদের হঠকারিতা।।
লিখেছেন লিখেছেন বাকশাল ০৩ নভেম্বর, ২০১৪, ০৪:৪৬:৫৩ বিকাল
গত ৫ জানুয়ারির অবৈধ নির্বাচনের পর নিজেদের বৈধতা ও ক্ষমতা স্থায়ী করতে আওয়ামীলীগের জন্য প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দয়া, বিশেষ করে ভারতের। হাসিনা "র" এর বিশেষ এজেন্ডা নিয়ে ক্ষমতা এসেছেন। আর ভারতের ফরেন পলিসি হল আশপাসের ছোট দেশের উপর তার আধিপত্য বিস্তার ও নিয়ন্ত্রন। বাস্তবিক ভাবে বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ও অথনীতিক কারনে এ দেশের উপর তাদের একক নিয়ন্ত্রন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আওয়ামীলিগ হল সবচেয়ে বড হাতিয়ার আর জামাতকে সবচেয়ে বড বাধা বলে তারা মনে করে। এক দিকে প্রধানমন্ত্রী বিদেশ ছুটছেন প্রভুদের আস্থা অর্জন করতে সাথে সাথে ভারতের নতুন সরকারকে আস্থায় রাখতে যা করা দরকার সব করতে
তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর এ কাজগুলো করতে গিয়ে তিনি নেমেছেন অপরাজনীতির এক জঘন্য খেলায়। আসুন দেখি সে অপরাজনিতি কি। হাসিনা বিশ্বের সামনে, তার প্রভুদের সামনে দেখাতে চায় এ দেশকে সে জঙ্গি মুক্ত রাখে এবং এ দেশে ইসলামপন্থীরা হল উগ্রবাদী সে তাদেরকে কঠোর হাতে দমন করে। যেমনঃ হেফাজতকে দমন করা। এক্ষেত্রে কথিত যুদ্ধাপরাধের বিচারকে তার ক্ষমতায় টিকে থাকার একমাত্র উপায় হিসেবে ধারন করেছে। কিছুদিন পরপর যখন রায় হয় তখন সকল মিডিয়া এ রায় নিয়ে ব্যস্ত থাকে আর সরকারের বডবড অপকর্ম গুলো ঢাকা পডে যায়। অন্য দিকে বিএনপি এ রায়ের ব্যাপারে চুপ থাকতে গিয়ে কোন কর্মসূচী দিতে না পারার কারনে সরকার পতনের হুমকি কাগুজে বাঘ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। সম্প্রতি গোলাম আযম মারা যাওয়ার পর তার যানাযায় ব্যাপক লোকের সমাগম ঘটে। এর মাধ্যমে বাধাহিন সুযোগ পেলে জামাত শিবিরের যে সরব উপস্থিতি কেমন হতে পারে সরকার তা দেখেছে এবং এত অত্যাচার নির্যাতনের পর ও এদের দমন করা যাচ্ছেনা তা দেখে সরকারকে নতুন কৌশল নিচ্ছে। এ ব্যাপক শোউডানের পর হঠাত সরকার কয়েকটি রায় ঘোষণা দিচ্ছে এবং ১/২ টা বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিবে। এ থেকে সরকার যে ফায়দা নিতে চাইবে তা হলঃ এক, এর ফলে জামাত শিবির ব্যাপক আন্দোলন ও মারাত্তক কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে, হতে পারে লাগাতার হরতাল-আবোরোধ, ভাংচুর ইত্যাদি। দুই, আন্দোলনের জন্য মাঠে নামলে গুলি, হামলা, মামলা, নির্যাতন করে দমন করবে। তিন, জ্বালাও পোডাও করলে তার মাধ্যমে সরকার এদেরকে বিশ্ব মহলে উগ্রবাদী ও জংগীবাদী হিসেবে উপস্থাপনের সুযোগ পাবে। চার, এ রায়ের পক্ষ নিতে না পারার কারনে বিএনপি চুপ থাকছে এবং কোন আন্দোলন না করতে পারায় সরকার টিকে যাবে। পাঁচ,ভারতকে বুঝাতে চাইবে আমরা জামাতকে দমন করছি আমাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার ব্যবস্থা কর। ছয়, কঠোর আন্দোলনে ব্যাপক জান মালের ক্ষতি হলে আমাদের বেহায়া মিডিয়াগুলো জামাত নিষিদ্ধ নিয়ে হইচই তুলবে, আর সরকার আদালতকে ব্যবহার করে তার আসল টার্গেট জামাতকে নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা নিবে।
এখন আসি ক্ষমতা প্রত্যাশীদের হঠকারিতা প্রসঙ্গে , বিএনপি সবসময় অন্যের উপর ভর করে ক্ষমতায় আসা পছন্দ করে ও ক্ষমতায় যেতে চায়। তারা মিনিটে মিনিটে আঁতাতের গন্ধ পায়। যেখানে জামাত একা সরকারের বিরুদ্ধে লডাই করছে আর তাদের নেতারা নাকে সরিষার তেল দিয়ে মন্ত্রী হওয়ার দিবা স্বপ্ন দেখছে। কেউ কেউ মন্ত্রী হওয়ার আনন্দে হয়ত স্বপ্নের মধ্যে লেপ কম্বল ছিডে খাচ্ছে। আসলে যে এক দলে থেকে অন্য দলের সংগে গভীর যোগাযোগ রক্ষা করে, যে দলের নেতাদের স্থায়ী কমিটির মিটিং এ মোবাইল বন্ধ রাখতে বলা হয়, সে দলের পক্ষে আঁতাতের কাল্পনিক গল্প বলা দোষের কি? বিএনপি তার মুখে কুলুপ এঁটে রাজনীতির ময়দানে তার চুডান্ত কবর রচনা করতে যাচ্ছে.।।
বিষয়: রাজনীতি
১২৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন