কালিমুদ্দি-বানেছার গল্প ও আমাদের বক্তাগণ
লিখেছেন লিখেছেন udash kobi ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ০১:১৫:৩৫ রাত
সময়টা ১৯৯২ বা ৯৩ সাল। ক্লাস সেভেন বা এইটে পড়ি। বড় ভাইদের সাথে পায়ে হেঁটে তৎকালীন ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে যাই ওয়াজ শোনার জন্য। বাড়ি থেকে মোটামুটি অনেক দুরের পথ হলেও যুক্তিবাদী সাহেবের নামেই সবাই মাহফিলে যাই। এর আগে একবার সদর মাদরাসার ওয়াজে উনাকে দেখি।
সেই সময়ে পীরজাদা মীর মো.হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী সাহেব সেলিব্রিটি বক্তা ছিলেন। কওমি কি আলিয়া, হক্কানি কি ভন্ডপীর সবার কাছেই তিনি ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন। উনার হাস্য রসিকতা আর মজার ওয়াজে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি হতো। মূলত উনাকে আনার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল 'কালেকশন', যেটা তিনি খুব ভালো পারতেন।
রাত ৯ বেজে যায় কিন্তু উনার উপস্থিতির কোনো লক্ষন না দেখে আমরা ফিরতি পথ ধরি। এক মাইল আসার পর ৩/৪ টা মোটরসাইকেলের বহর দেখে ও জিজ্ঞেস করে জানতে পারি উনি আসছেন।
রাত দশটার দিকে মঞ্চে উঠে তিনি প্রথমে রাস্তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেন বিশেষ করে অনেকবার বললেন, মোটরসাইকেলে চড়ে ৭/৮ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে উনার কোমরে ব্যাথা ধরেছে। (সেই সময় কাপাসিয়াতে না ছিল সেতু না ছিল ফেরি, কাপাসিয়া থেকে তাই মোটরসাইকেলের পিছনে বসে আসতে হয় উনাকে, রাস্তাও ছিল মাটির ) মোটামুটি বেশ কিছু সময় তিনি নিজের ব্যক্তিগত কথাগুলো জনগণকে কৌতুকারে পেশ করেন, জনতাও বেশ খুশি।
সেইরাতে তিনি স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক নাম ধরে ডাকার কুফল সম্পর্কে বলতে গিয়ে "কালিমুদ্দি বানেছা" র গল্প শোনান। এই দম্পতির সন্তান নাকি বাবা-মার নাম নিয়ে (কালিমুদ্দি বানেছা) খেলা করে, যেহেতু সে সারাক্ষণ বাবা-মার পারস্পরিক মুখে এই নাম শোনে। তিনি বেশ মজা করে কথাগুলো বলছিলেন আর উপস্থিত শ্রোতারা বেশ উপভোগ করছিলেন।
পরদিন সকালেই (আব্বার কলিগ তথা) হাইস্কুল শিক্ষকদের মাঝে কলিমুদ্দি-বানেছা গল্প নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। সবাই বলাবলি করছিল উনার মতো এতো নামি দামি বক্তার মুখে এই ধরণের রসিকতামুলক গল্প নাকি মানায় নি।
সেই সময় উনার কিছু বক্তব্য নিয়েও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, কিন্তু ডিজিটাল যুগ না হওয়ার কারণে বিতর্কগুলো ভাইরাল হতো না।
সময় এখন পাল্টেছে। এখন ডিজিটাল যুগ, কিছু একটা হলেই মুহূর্তে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। সবকিছু ক্যামেরাবন্দীর
বিষয়: বিবিধ
৯০২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন