আরাকান আর্মিঃ উইকিপিডিয়ায় সংকলিত তথ্যে ব্যাপক ফারাক!
লিখেছেন লিখেছেন রাহমান বিপ্লব ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০২:৫৩:১০ দুপুর
বিচ্ছিন্নতাবাদের আখড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে আরাকান আর্মির উপস্থিতি ব্যাপক উদবেগের জন্ম দিয়েছে ইতিমধ্যে। সেই সাথে গহীন অরেণ্যে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অপর্যাপ্ততার সুযোগে গড়ে ওঠা স্থানীয় স্বশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সাথে এদের সম্পর্ক নিয়ে চলছে তোলপাড়! এর মাঝেই বাংলাদেশ সরকার ও সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে হুমকি প্রদান এবং পার্বত্যাঞ্চলকে 'সেনাবাহিনীর কবরে পরিনত' করবার মত দম্ভোক্তি যোগ করেছে নতুন মাত্রা। নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিতে গিয়ে বিজিবির ওপর হামলার পর যুক্ত হয়েছে তথ্য অস্ত্রের ব্যবহারও।
গত ৩১ আগস্ট তারিখেই উপর্যুপরি ৬ বার সংকলন করে উইকিপিডিয়ায় নিজেদের পরিচিতিতে বেশ কিছু তথ্য যুক্ত করেছে আরাকান আর্মি।
উল্লেখযোগ্য কিছু সংকলন-
সদস্য সংখ্যা ৪০০-৫০০ কে ১৫০০ করা
কাচিনের সাথে আরাকান স্টেটকে 'কন্ট্রোল্ড এরিয়া' হিসেবে যুক্ত করা
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ওপর চালানো সাম্প্রতিক চোরাগোপ্তা হামলাকে সংঘর্ষ হিসেবে যুক্ত করা। https://goo.gl/YMt6no
ছবি-
a- আরাকান স্টেটকে এদের কন্ট্রোলড এরিয়ায় যুক্ত করা হয়েছে।
b- আরাকান স্টেটকে যুক্ত করার আগে ও পরে উইকিপিডিয়া
c- এডিটর 'কো জমি' তার পেজকে সরিয়ে রেখেছে, ফলে লাল কালিতে দেখাচ্ছে। ফলে তথ্যের ব্যাপারে তার সাথে কন্টাক্ট বা বিতর্কের সুযোগ নেই। অথচ এর আগের এডিটররা তাদের পেজ অক্ষুন্ন রেখেছে।
এখানে বিশেষ কোন উদ্দেশ্য আছে কিনা, তা যাচাই করা দরকার। সেই সাথে তথ্য সূত্রের বিশ্বস্ততা যাচাই করা দরকার। যেহেতু বিজিবির সাথে সংঘর্ষে জড়ানোর পর থেকে আরাকান আর্মি নিজেদের প্রবল শক্তিশালী হিসেবে দাবি করতে শুরু করে। সেই সাথে বাংলাদেশকে হুমকি দিয়ে তারা নিজেদেরকে বাংলাদেশ সংলগ্ন রাখাইন স্টেট (আরাকান স্টেট) বর্ডার এরিয়ায় শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক গ্রুপ বলে দাবি করে। ফলে বাংলাদেশ যেন তাদের সাথে ষংঘর্ষে না জড়ায় সেই হুশিয়ারি দেয় তারা! তাছাড়া নতুন সংকলনে তাদের সদস্য সংখ্যাকে আগের চেয়ে প্রায় চার গুন বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। আরাকান আর্মির শীর্ষ নেতা 'রান নিন সয়ে' সম্প্রতি চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের সাথে স্কাইপ স্বাক্ষাতকার দিয়ে নিজেদের আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যাপক আধুনীকীকরনের দাবি করেন। সেখানে তিনি একে ফোর্টি সেভেন অস্ত্রকে তাদের অস্ত্রসম্ভারের মাঝে সবচেয়ে নিম্নতম অস্ত্র বলে দাবি করেন। সাথে যোগ করেন, বাকী গুলো অনেক বেশি আধুনিক ও শক্তিশালী! https://goo.gl/W9k1St
উল্লখ্ করা যায়, এখনও যেকোন গবেষক তথ্যের জন্য উইকিপিডিয়া দেখেন। সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত এলাকায় বিজিবির ওপর চোরাগোপ্তা হামলে করে আলোচিত হবার পরই আরাকান আর্মি উইকিপিডিয়ায় এসব পরিবর্তন এনেছে তা স্পষ্ট। এতে করে, ৩১ আগস্টের পর থেকে যেকোন নীতিনির্ধারক, গবেষক, সংবাদ কর্মী, তদন্ত সংস্থা বা আগ্রহীদের যেকেউ উইকিপিডায়াতে আরাকান আর্মির ব্যাপারে জানতে চাইলে নতুন তথ্য গুলোই পড়বেন।
অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর সাথে তাদের যোগসাজশের প্রামাণ্য কিছু চিত্র পাওয়া গেছে সোসশ্যাল মিডিয়াতে। ধারনা করা হচ্ছে এইসব বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ গুলো অস্ত্র ও শেলটারে পরস্পর সহায়ক ভূমিকা পালন করে! সম্প্রতি ইন্ডিয়া থেকেও দাবি করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের অস্ত্র ইন্ডিয়া নয় বরং বার্মার বর্ডার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে! http://goo.gl/Phqiz5
তাছাড়া বার্মা ও সীমান্তবর্তী পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণের অপব্যবহার করেও এসব সহায়তা বিস্তৃত হতে পারে! বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র পাচার কাজে ব্যবহৃত খোদ ভিক্ষুদের ধরা পড়বার ঘটনাও খুব রেয়ার নয় এসব এলাকায়!
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৪ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
একটা আলাদা রাষ্ট্র গঠনের প্রচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়টি তো ওপেন সিক্রেট!!
বিবেচ্য হলো আমাদের ভূমিকা!!
বিষয়টি সামনে আনার জন্য ধন্যবাদ
আসলে আমাদের ভূমিকার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হল অজ্ঞতা। মূলত দেশবাসীকে অজ্ঞ করে রাখা হয়েছে। এত বড় একটি বিষয়কে আমাদের মিডিয়া সবসময় পাশ কাটিয়ে যায়। বরং প্রায়ই বিচ্ছিন্নতাবাদকেই প্রোমোট করে থাকে।
আমার খুব ভয় হয়, কোন সময় না জানি পূর্ব তীমূরের পরিণতি বরণ করতে হয়।
মনে হয় আগামি ১০-১২ বছ্রের মধ্যে আমরা আমাদের পাবত্য তিন জেলা কে হারাব।
এটাই মূল কথা।
এক্ষেত্রে ফিলিস্তিনের মযাপের ভাগ্য আমাদের বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রজোয্য হতে পারে।
bdfirst.net/blog/blogdetail/detail/10292/RahmanBiplob/68611#.ViUTntJq0qI
মন্তব্য করতে লগইন করুন