বাংলাদেশ, তুমি কি আরেকটি ফিলিস্তিন হচ্ছ?
লিখেছেন লিখেছেন রাহমান বিপ্লব ০৯ এপ্রিল, ২০১৫, ০৩:২৬:৩৬ দুপুর
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সূচনা লগ্নে গোটা দেশজুড়ে ছিলেন জাগ্রত জনতারা! জাগ্রত জনতার বাংলাদেশই স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ। এই জাগ্রত জনতা যতদিন থাকবেন, ততদিন সকল স্বার্বভৌমত্ব বিরোধী অপতৎপরতা রুখে দিবেন তারা।
আজ জাতীসংঘের প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে (বাংলাদেশের এক-দশমাংশ অঞ্চল) পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের সকল প্রান্তে বসবাসকারী প্রধানত মঙ্গলীয় উপজাতিদের (ঐতিহাসিক বঙ্গ অঞ্চলে কোন একসময়কার বহিরাগত) নিয়ে যে ষড়যন্ত্রের খেলা চলছে সে ব্যাপারে খুব কম নাগরিকই জাগ্রত!
এই ষড়যন্ত্রের বিস্তৃতি এবং এগিয়ে চলার গতিপ্রকৃতি নিয়ে যারা সামান্যও জ্ঞাণ রাখেন তারা খুব সহজেই এই বাংলাদেশের বুকে আরেকটি নয়া ইজরাইলের উত্থান আশংকা করেন! পশ্চিমা অপতৎপরতায় একসময়কার স্বাধীন ফিলিস্তিনি নাগরিকগণ ভাবতেও পারেননি তাদের দেশে আশ্রিত ইহুদি জনগোষ্ঠীদের নিয়ে কত করুন ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হচ্ছে!
আর সেই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে ঘুমন্ত ফিলিস্তিনি মানুষই আজকের ইজরাইলী আগ্রাষণের জন্য মৌলিক ভাবে দায়ী।
আমদেরকেও যেন সেভাবে দায়ী হতে না হয়!
লক্ষ্য করুন, আশ্রিত ইহুদি বসতি গুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা প্রথম ইজরাইলের সূচনা ও বিবর্তনে কিভাবে ফিলিস্তিন হারিয়ে গেছে!
সেসময় মধ্যপ্রাচ্যে মোড়লিপনার আকাংখা এবং তেলের নিরাপদ উৎস লাভের উদ্দেশ্যে পশ্চিমা মোড়ল সম্প্রদায়ের জন্য যেভাবে ‘ইহুদি সম্প্রদায়কে অবৈধ ঢাল বানিয়ে ইজরাইল সৃষ্টি’ অপরিহার্য ছিলো; বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান বিশাল বাজার দখল ও মোড়লিপনার জন্যই পশ্চিমাদের, বাংলাদেশ জুড়ে ‘বসবাসরত উপজাতিদের মাধ্যমে আরেকটি ইজরাইল প্রতীষ্ঠার’ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন শত্রু রাষ্ট্রের চাহিদা এবং প্রতিযোগীতাও এর সাথে যুক্ত হয়েছে।
দক্ষিন এশীয় অঞ্চলের নতুন ইজরাইলের সম্ভাব্য নামই হল জুম্মাল্যান্ড।
বাংলাদেশে বসবাসকারী উপজাতিদের অবস্থান গুলোকে ভিত্তি করে যেভাবে জুম্মাল্যান্ড নামে বাংলাদেশের বুকে আরেকটি আগ্রষী ইজরাইলের গোড়া পত্তন ও বিবর্তণ হতে পারে-
এবার দেখে নিই বর্তমানে জাতীসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণা পত্রের ধারা নাম্বার ৩ কী বলছে-
‘Right of Self-determination- Indigenous peoples have the right of self determination. By virtue of the right they freely determine their political status ant freely pursue their economic, social and cultural development.’
“আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার- আদিবাসীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার আছে। এই অধকার বলে তারা স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে। (অর্থাৎ তারা কি কোন দেশের মধ্যে থাকবে, না সেই দেশ থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন দেশ গঠন করবে- সেটা তাদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে, যেমন পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিরা যদি আদিবাসী হয়ে থাকেন তাহলে তারা কি বাংলাদেশের মধ্যে থাকবে, না বাংলাদেশ থেকে আলাদা পার্বত্য এলাকাকে নিয়ে স্বাধীন জুম্মালযান্ড গঠন করবে- তা সেই উপজাতীদের রাজনৈতিক ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে) এবং স্বাধীন ভাবে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন করবে”।
বাংলাদেশে বসবাসকারী কোন উপজাতীয় সম্প্রদায় ‘আদিবাসী’ নয়। কারন আদিবাসী হবার জন্য কোন সম্প্রদায়ের জন্য মৌলিক শর্তই হল, উক্ত রাষ্ট্রে বসবাসকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতীগোষ্ঠীর আগে এসে বসবাসকারী হতে হবে। অথচ বাংলাদেশে বসবাসকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙ্গালীরা এ অঞ্চলে অন্তত ৫০০০ পাচ হাজার বছর আগ থেকে বসবাস করছে বলে ঐতিহাসিক প্রমাণ রয়েছে। আর অন্যদিকে এখানে বসবাস কারী অন্যান্য সকল উপজাতীরা সর্বোচ্চ ৫০০ বছর এবং সর্বনিম্ন ১৫০ বছর আগে এ অঞ্চলের বাইরে থেকে নানা ভাবে বিতাড়িত বা বাস্তুসংস্থানের জন্য জাজাবর হয়ে মাইগ্রেসন করে আসে। ফলে অন্তত ৫০০০ বছরের আদিনিবাসী ভূমিপুত্র বাঙ্গালীদের সাপেক্ষে মাত্র ১৫০-৫০০ বছরের মাইগ্রেটেড জনগোষ্ঠীকে (তাও আবার ঢালাও ভাবে) আদিবাসী সাব্যস্ত করা মানে, একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশের অখন্ডতার বিরুদ্ধে মারাত্মক অন্যায় চাপিয়ে দেয়ার পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহন!
আর সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই- বাংলার মানুষকে সম্পূর্ণ অজ্ঞ রেখে গোপনে পশ্চিমারা প্রধানত খ্রিষ্টান মিশনারী, এনজিও ও তথাকথিত মানবাধির গোষ্ঠীদের দিয়ে অর্থ, ফাঁদ ও ভীতি প্রদর্শণ করে খ্রিষ্টান বানানো; উপজাতিদের জন্য আদিবাসী স্বীকৃতি আদায় করা এবং কেবল উপজাতিদের জন্য আলাদা ভূমি আইন প্রণয়নসহ সাংঘাতিক সব বিতর্কিত আইন করতে চাপ দিয়ে, সরকারের কাছ থেকে আদায় করে নিচ্ছে সংবিধান পরিপন্থী ও নাগরিক রাষ্ট্র ধারনা বিরোধী নানান আত্মঘাতী আইন!
বাংলাদেশ ইজরাইল হবেনা। যদি বাংলাদেশের জাগ্রত জনতা সজাগ থেকে সঠিক ভূমিকা পালন করতে পারেন।
আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের অধিকার রয়েছে প্রাণ খুলে গাইবার!
‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,
সারা বিশ্বের বিশ্ময়, তুমি আমার অহংকার!’
তাই আসুন ভাগ্যহারা পরাধীন জাতি হবার আগেই রুখে দিই সব কালো থাবাদের আগমন!
বিষয়: বিবিধ
১৯১৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এই থাবা বাবাদের হাত থেকে রুখে দেয়ার মত নেতাই আমাদের এখন তৈরি হয়নি। তবে সময়ের প্রয়োজনে সেটা হবে বলে আশা রাখি।
অসম্ভব নয়!
বাঙ্গালিরা সব উপজাতিদের মুসলমান বানিয়ে ফেলছে, এই জিকির তুলে সবার নজর ওদিকে নিয়ে খুব চতুরতার সঙ্গেই খৃষ্টান মিশনারীরা তাদের অশুভ উদ্দেশ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন