চোরের বিচার গৃহস্থের ওপর, গৃহস্থের ক্ষতিপূরণ চোরের ভাগেঃএবার অভিনব বিজয় দিবস পালন করলেন পার্বত্য রাঙ্গামাটির নানিয়াচরের বাঙ্গালীরা!
লিখেছেন লিখেছেন রাহমান বিপ্লব ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৫:৩৫:০৪ বিকাল
=বিজয় দিবসের আগে, এক রাতের ব্যবধানে পার্বত্য বাঙ্গালীদের ১২ একর পাহাড়ের সাড়ে ৪ লাখ ফলন্ত আনারস ও ২২ হাজার সেগুন গাছ কর্তণ করে সাফ!
=প্রতিক্রিয়ায় সন্ত্রাসীদের ১৩ টি দোকান ও বাড়ীতে বিক্ষুব্ধ কৃষকদের হামলা।
=প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, বিবিসি বাংলার রিপোর্টে মূল ঘটনার উনুপস্থিতি!
=বাঙ্গালী বিদ্বেষ উস্কে দেয়ার উদ্দেশ্য প্রণোদিত একপেশে কাল্পনিক রিপোর্ট নিয়ে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে বিজয় দিবসে দিনব্যাপী বাঙ্গালী বিরোধী সমালোচনার ঝড়!
এবার ঘটনা প্রবাহের দিকে খানিক দৃষ্টিপাত করা যাক-
*‘পুলিশ ঘটনাস্থলের একটি উপজাতীয় সন্ত্রাসীর বাড়ি থেকে আগের রাতে আনারস গাছ কাটায় ব্যবহৃত হওয়া তিনটি দেশীয় ধারালো ‘দা’ জব্দ করে। দা’গুলোতে আনারস গাছ কাটার সুস্পষ্ট দাগ রয়েছে’। (১৭/১২/১৪, দৈনিক সংগ্রাম)
*স্থানীয় বাঙ্গালীদের দাবি একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মদদে এই কান্ড ঘটিয়েছে পাহাড়ি উপজাতীয়রা’।
*এদিকে বিজয় দিবসের প্রথম প্রহর থেকেই প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, বিবিসি বাংলা সহ কিছু চিহ্নিত সংবাদ মিডিয়ার অনলাইন ভার্সনে বাঙ্গালীদের দ্বারা শত শত বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয়ার খবর রটিয়ে দেয়া হয়! সেসব উস্কানিমূলক খবর মুহুর্তের মাঝেই হাজাহ হাজার শেয়ার-লাইক-কমেন্ট হতে থাকে অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।
এসব খবরের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের বিজয় দিবসের দিনে, একপ্রান্তে নিপিড়িত বাঙ্গালীদের দিকেই মানুষের সকল ক্ষোভ ও হতাসা ব্যক্ত করতে দেখা গেছে।
*এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের নিত্য চাঁদাবাজী-খুন-গুম-অগ্নিসংযোগ-ধর্ষণের মত মারাত্মক ঘটনাগুলো স্বাধারন ঘটনায় পরিনত হয়েছে। যার মূল শিকার স্থানীয় বাঙ্গালী সম্প্রদায়, তদুপরি এসব খবরগুলো প্রায় সবসময় এড়িয়ে গিয়ে যেকোন ছুতোনাতায় নিরস্ত্র ও নিরীহ বাংগালী বিদ্বেষী একপেশে রিপোর্ট প্রকাশ করে আসছে পত্রিকাগুলো।
*গতকাল রাত ৮ টা নাগাদ প্রথম আলো (অনলাইন) ছাড়া বাকী আর কোন মিডিয়াতে এই উদ্দেশ্যমূলক প্রচারনাটি উইথড্র করতে দেখা যায়নি। প্রথম আলো পত্রিকার সহযোগী দৈনিক ডেইলি স্টারে বহাল তবিয়তে দেখা গেছে উস্কানিমূলক ভুয়া খবরটি। মূলত বিদেশীদের দৃস্টি আকর্ষণ করে থাকে এই ইংরেজী দৈনিক ডেইলি স্টার।
*বাংলাদেশ, বাঙ্গালী বিরোধী রিপোর্টের প্রভাব পড়তেও দেখা গেছে তৎক্ষণাৎ। উপজাতিরা প্রাথমিক ভাবে ১০ থেকে ১২ টি দোকান ও বাড়ীতে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের দাবি করলেও ঠিক দুপুর থেকেই শতাধিক এবং শত শত দোকান ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে! তৎক্ষণাৎ রাস্তা অবরোধ করে ঢাকাগামী গাড়ীগুলো আটকে দেয়া হয়েছে।
সেই সাথে সন্ত্রাসীদের বাড়ী-ঘর গুলো সফর করে প্রত্যেককে নগদ ১ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। এছাড়া বাড়ী-ঘর নির্মানের যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেয়ার সরকারী আশ্বাস দেন তিনি।
*এদিকে গত এক বছর যাবত ১২ একর পাহাড়ি জমিতে আনারসের সাড়ে ৪ লাখ চারা ও ২২ হাজার সেগুন গাছের পরিচর্যা করে কোটি কোটি টাকা খোয়ানো স্থানীয় ইসলামপূরের ৫ জন কৃষক এখন বাকরুদ্ধ। তাদের ক্ষতি কী করে পূরণ হবে, তা নিয়ে যেন কারো মাথা ব্যাথাটুকু নেই! স্থানীয় প্রশাসন কিংবা সরকারীভাবে কোন সাহায্য কিংবা ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেয়ার খবরও পাওয়া যায়নি।
*ক্ষতিগ্রস্থরা অবিলম্বে এ ঘটনায় জড়িত ৩ শতাধিক উপজাতী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন। স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা প্রায় প্রতিবছর স্থানীয় বাঙ্গালীদের শতাধিক বাগান গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়ে বিনাশ সাধন করে এলেও এবারই প্রথম, এ সংক্রান্ত কোন ঘটনায় সন্ত্রাসীদের দোকান ও বাড়িতে হামলা, মিডিয়াকে সরব করে তুলল।
*বিজয় দিবসের আগের রাতে ঘটা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও তার জেরে বাড়ি ও দোকান ভাংচুর-অগ্নিসিংযোগের ঘটনায় স্থানীয় চাকমা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গড়া হয়েছে।
**দেশের অন্যান্য অঞ্চলের স্বাপেক্ষে পার্বত্য ঘটনাগুলো- এত পরিবর্তিত হয়ে প্রকাশিত হওয়া, মূল ঘটনা চেপে যাওয়া কিংবা নিয়মিত বড় বড় ঘটনাগুলোর মিডিয়া কাভারেজ না পাওয়া প্রসংগে স্থানীয় বুদ্ধিজীবিরা একে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবেই চিহ্নিত করেন।
তারা মনে করেন- যেখানে সমগ্র পশ্চিমা শক্তিসহ বৈশ্বিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর বাঙ্গালী বিরোধী একতরফা স্বার্থ রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের একরতরফা মুনাফামূখী মিডিয়ার সৎ থাকা স্বাভাবিক নয়। সেই সাথে আন্তর্জাতিক চাপের বিপরীতে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনগুলো স্বাধীন ও নিরোপেক্ষ ভাবে কাজ করতে সমর্থ হয়না।
**উল্লেখ্য বহুদিন যাবত ‘পার্বত্য চট্টগ্রামকে’ স্থানীয় উপজাতীদের মাধ্যমে স্বাধীন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলো। এক্ষত্রে মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ন অসৎ উপায়ে ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যাপক প্রচলন ও জাতীসংঘের মাধ্যমে আদিবাসীদের স্বাধীনতা লাভের অধিকারকে কাজে লাগিয়ে অঞ্চলটিকে পশ্চিমা স্বীকৃতির মাধ্যমে পৃথক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যার পেছনে রয়েছে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবেশ’ এবং ‘তা রোধ করার’ প্রতীযোগীতায় লিপ্ত পরস্পর বিপরীত মেরুতে অবস্থান নেয়া সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো।
>>ফলে এখানে ঘটে চলা একতরফা ঘটনাগুলো ও তার প্রচারনাকে অনেক বেশি তাৎপর্যময় বলে ধরে নেন পার্বত্য বিশেষজ্ঞরা।
যদিও ইতোপূর্বে জাতীয় দিবস গুলোতে বাংলদেশ ও বাঙ্গালী বিদ্বেষী বিষয় গুলোতে সংবাদ সন্ত্রাস ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের খানিকটা ছাড় দিতেই দেখা গেছে। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই বলা যায়- “এবার অভিনব বিজয় দিবস পালন করলেন বাংলার ফিলিস্তিন খ্যাত পার্বত্য রাঙ্গামাটির নানিয়াচরের বাঙ্গালীরা”!
বিষয়: বিবিধ
১০৬৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মাত্র কিছু দিন আগেই সন্তু লারমা ঢাকায় এসে পার্বত্য অঞ্চলে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়ার হুমকি দিয়ে গেছে।
সম্ভবত গ্রাউন্ড তৈরি করছে তারা
মন্তব্য করতে লগইন করুন