╭✿হুযুগে বাঙ্গালী-"স্বাদের লাউ বানাইল মোরে বৈরাগী"✿╯
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাসুম সরকার আযহারী ১৫ এপ্রিল, ২০১৫, ১২:২৬:৩৩ রাত
"স্বাদের লাউ বানাইল মোরে বৈরাগী" গানটির সাথে ছোট-বড় সব বাঙ্গালী, বাংলাদেশীরা পরিচিত। এই গান ছাড়া ১লা বৈশাখ একেবারেই বেমানান। তাই নিজেরাতো গায়ই আবার ছোট বাচ্চাদেরকেও একতারা, ধূূতি-পাগরি পরিয়ে বাউল সাজানোর চেষ্টা করা হয়। পুরা দেশটা যেন বাউলময় হয়ে ঊঠে। বাউল গান গাওয়ার আগে বাচ্ছাদের বাউল সাজানোর আগে বাউলদের আউল ফাউল জীবনটা একটু জেনে নিন।
কারা এই বাউল সাধক।
╭✿ প্রাচীন প্যালেস্টাইনে "বা’আল" নামে এক প্রজনন দেবতার উপাসনা করা হতো। কালক্রমে এই "বা’আল" লোকধর্মই পরবর্তীতে বাউল লোকধর্মে পরিণত হয়েছে এবং লোকনিরুক্তি অনুসারে বাউল শব্দটি বা’আল>বাওল>বাউল এভাবে পরিবর্তিত হয়ে এসেছে। (বা.বা পৃষ্ঠা ১৩৩-১৪৫)।
╭✿"বা’আল" প্রজননদেবতা হওয়ায় মৈথুন বা যৌনাচার ও দেহতাত্ত্বিক সাধনা বাউল সাধনার অপরিহার্য অঙ্গ। সাধনসঙ্গিনীর (নারীর) সক্রিয় সাহায্য ব্যতীত সাধনায় সিদ্ধী লাভ হয় না। তাই তাকে ‘চেতন গুরু’ বলা হয়। বাউলরা বিবাহ অস্বীকার করে কিন্তু নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশাই তাদের দর্শন। (বা.বা পৃঃ ১৫-১৭)।
╭✿ বাউল সাধনায় পরকীয়া প্রেম এবং গাঁজা সেবন প্রচলিত।
╭✿ বাউলরা বিশ্বাস করে যে, কুমারী মেয়ের মাসিকের রক্ত পানে শরীরে রোগ প্রতিরোধক তৈরী হয়।
╭✿বাউলরা বীজকে(শুক্র) ঈশ্বর আখ্যয়িত করে থাকে। তাই সিদ্ধিলাভের জন্য তাদের নিকট বীর্যপান একটি আবশ্যক কর্ম। বাউল গবেষক ডক্টর উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বাউলধর্ম সম্পর্কে বলেছে, “বাউলগণ পুরুষদের বীজরূপী সত্ত্বাকে ঈশ্বর বলে। বাউলদের মতে এই বীজসত্ত্বা বা ঈশ্বররস ভোক্তা, লীলাময় ও কাম ক্রীড়াশীল।”
╭✿ বাউলরা রোগমুক্তির জন্য নিজের প্রশ্রাব, মানুষের দুগ্ধ পান করে। সর্বরোগ থেকে মুক্তির জন্য তারা মল, মুত্র, মাসিকের রক্ত ও বীর্য মিশ্রণে "প্রেমভাজা" নামক একপ্রকার পদার্থ তৈরি করে তা ভক্ষণ করে। একজন বাউলের একাধিক সেবাদাসী থাকে। এদের অধিকাংশই কমবয়সী মেয়ে। (বা.বা পৃ ৩৫০, ৩৮২)
╭✿ আমাদের সমাজে খুবই উচ্চমার্গের আধ্যাতিক গান হলো-
“বাড়ির পাশে আরশি নগর, সেথা এক পড়শী বসত করে,
আমি একদিনও না দেখিলাম তারে” এটি মূলত একটি নিছক যৌনাচারমূলক গান, যাতে আরশিনগর, পড়শী শব্দগুলো প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে তাদের বিকৃত জীবনাচারকে গোপন রাখার উদ্দেশ্যে। (বা.বা পৃঃ ৩৬৮-৩৬৯)
╭✿বাউলরা বিশ্বাস করে গুরুর কোন মৃত্যু নেই। তিনি চিরঞ্জীবী।
╭✿বাউলরা মন্দিরে কিংবা মসজিদে যায়না। বাউলরা মৃতদেহকে পোড়ায়না, জানাজাও হয়না।
╭✿সাঁইজি লালন শাহ তাদের নবী। তাদের কালেমা হচ্ছে– "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু লালন রাসুলুল্লাহ"। (দেখুন-ব্রাত্য লোকায়ত লালন, পৃঃ ৯৪-৯৫)
------------------------------------------------------------------
বিস্তারিত পড়ুনঃ
১-বাউল তত্ত্ব- আহমদ শরীফ
২- ব্রাত্য লোকায়ত লালন. সুধীর চক্রবর্তী
৩- বাংলাদেশের বাউল-ড. আনোয়ারুল করীম
৪- বাংলাদেশের বাউল সমাজ, সাহিত্য ও সংগীত-ডক্টর আনোয়ারুল করিম
বিষয়: বিবিধ
২৬৩১ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অসাধারণ একটি লিখার জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন