Skull নিজের অজান্তেই টাকা দিয়ে কিনে খাচ্ছি বিষ

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাসুম সরকার আযহারী ২৬ মার্চ, ২০১৫, ০৪:০৬:৫৮ রাত



প্রসঙ্গ:

ফার্মের মুরগির খাবার তৈরির জন্য হাজারিবাগে অবস্থিত ট্যানারির আশে পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য কারখানা। এ সমস্ত কারখানায় মুরগির খাদ্যে প্রোটিন হিসাবে মেশানো হচ্ছে ট্যানারির চামড়ার উচ্ছিষ্ট আবর্জনা। চামড়া কারখানার যতো বিষাক্ত কেমিক্যাল রয়েছে তা মিশে থাকে চামড়ার সে উচ্ছিষ্ট অংশে। বিশেষ করে ক্রোমিয়াম নামের একটি পদার্থের পরিমাণ আশংকা জনক হারে অনেক বেশি। এই ক্রোমিয়াম মানব দেহে কি ক্ষতি সাধন করছে তা জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন- এর একটি গবেষণা দেখে নিন -

গবেষণা:

ড. আবুল হোসেন হাজারি বাগ অবস্থিত মুরগির খাবার তৈরির কারখানা হতে বাজারজাত খাবার কিছু মুরগিকে দু’মাস খাওয়ান এবং প্রতিটি মুরগির দেহে ক্রোমিয়াম পান -

- রক্তে-৭৯০ মাইক্রোগ্রাম

- মাংসে- ৩৫০ মাইক্রোগ্রাম

- হাড়ে - ২০০০ মাইক্রোগ্রাম

-কলিজায়- ৬১২ মাইক্রোগ্রাম

-মগজে- ৪৫২০ মাইক্রোগ্রাম


গবেষণায় দেখা যায় গোটা মুরগিটাই হয়ে পড়ছে বিষাক্ত বস্তুতে, যা মানুষ খেয়ে যাচ্ছে নিজের অজান্তে এবং ধীরে ধীরে নিজের অজান্তেই মৃত্যু ডেকে আনছে। ড. আবুল হোসেন এর মতে, একজন মানুষ যদি প্রতিদিন ২৫০ গ্রাম মাংসও খায়, তাহলে তার দেহে প্রায় ৮৭ মাইক্রোগ্রাম ক্রোমিয়াম ঢুকে পড়ে অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মত অনুযায়ী একজন মানুষ দৈনিক সর্বোচ্চ ৩৫ মাইক্রোগ্রাম ক্রোমিয়াম গ্রহণ করতে পারবে। এই অতিরিক্ত ক্রোমিয়াম গ্রহণের ফলে আমাদের দেহের সেল গুলো ধ্বংস হয়ে ক্যানসার ও টিউমার এর মত রোগের সৃষ্টি হচ্ছে।

কেমিক্যাল হিসেবে ক্রোমিয়ামের বৈশিষ্ট হল, এটি যে পরিমাণে একটি মুরগির দেখে ঢুকে পড়ে সে মুরগি যতই রান্না করে খাওয়া হোক না কেন ঠিক একই পরিমাণে মানুষের দেহেও প্রবেশ করে। ড. আবুল হোসেন এর মতে, ক্রোমিয়ামকে ধ্বংস করতে হলে প্রায় ২৯০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা প্রয়োজন কিন্তু সাধারণত আমরা রান্না করে থাকি ১০০ – ১৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে। সুতরাং স্বাভাবিক ভাবেই এ রান্নার ফলে ক্রোমিয়াম ধ্বংস না হয়ে অনুরূপ পরিমাণে তা দেহে প্রবেশ করে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এর অন্য একটি গবেষণায় শতকরা শতভাগ মুরগির ডিমে সিপ্রোফ্লক্সাসিন নামে এক ধরণের এন্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে যেখানে অন্যান্য এন্টিবায়োটিকের উপস্থিতি শতকার ৮০ ভাগ মুরগির ডিমে এবং এটি পাওয়া যাচ্ছে সহনশীল মাত্রা হতে ৩-৫ গুন বেশি।

মুরগির ক্ষেত্রে খামারের চেয়ে বাজারের মুরগিতে অনেক বেশি এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হচ্ছে। গবেষণা দেখা যাচ্ছে যে, যেখানে খামারের শতকরা ২৩ ভাগ মুরগিকে উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হচ্ছে সেখানে বাজারের শতকরা ৬৩ ভাগ মুরগিকে উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হচ্ছে যা সহনশীল মাত্রা হতে ৩-৫ গুন বেশি।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এর পরিচালক ড. মো: মনিরুল ইসলাম বলেন, এ এন্টিবায়োটিক আমাদের দেহের ৫টি প্রধান অর্গানকে ধীরে ধীরে অকেজো করে ফেলে। হাড়ে যে মজ্জা থাকে তা না গ্রহণ করার জন্য, কেননা তাতে বেশি মাত্রায় ক্রোমিয়াম থাকে।

ভাবতে অবাক লাগে খুব আবেগ দিয়ে আমরা গাইতে পারি – “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি” অথচ আমাদের এই চেতনাবোধ এই ভালোবাসা রাষ্ট্র নামক যন্ত্রকে বাধ্য করতে পারে না জনগণ নামক এই অধিবাসিদের জন্য সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদান করতে; তা হোক জীবনের কিংবা অন্ন, বস্ত্র কিংবা বাসস্থানের।

---------------------------------------------

সূত্র: এনটিভির রিপোর্ট থেকে নেয়া।

বিষয়: বিবিধ

১০৬০ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

311153
২৬ মার্চ ২০১৫ রাত ০৪:২৫
পললব লিখেছেন : যারা আফিম খায় তাদেরকে নাকি সাপে কামড় দিলে সাপ মারা যায়!বাংলাদেশের মানুষ বোধহয় সেই ঘোরে আছে। তা নাহলে সমাজে কেন এর প্রতিক্রিয়া হয়না অথবা সরকারই বা কেন এর ব্যবস্থা নেয় না?
সচেতনামূলক পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
২৬ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৬:১৯
252232
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : আস্‌সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহু খাইরান।
311154
২৬ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৫:৪৫
দ্য স্লেভ লিখেছেন : খারাপ না। ২৫০ গ্রাস না খেয়ে ১০০গ্রাম খেলেই ল্যাা চুকে গেল।তবে ঘটনা যেভাবে বাড়ছে তাতে কদিন পর মানুষ সাপকে ছোবল দিতে যাবে,আর সাপ ভয়ে জঙ্গলে পালাবে। কারন তার জীবনের দাম আছে...
২৬ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:৫৬
252259
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : আস্‌সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। খুব মজা পাইলাম আপনার মন্তব্য পড়ে। Big Grin Big Grin
311164
২৬ মার্চ ২০১৫ সকাল ১০:৩৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আমরা খাইতে খাইতে ফ্রুপ হয়ে গেছি!!
২৬ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:৫৮
252260
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : আস্‌সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। হ্যাঁ, তাইতো মনে হয়। বিষ, ফরমালিন, মেলামিন সব হজম করে ফেলতেছি আর ক্রোমিয়াম তো এদের সামনে নস্যি।
311232
২৬ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৯
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুাআলাইকুম! শহুরে জীবন কষ্টের হয়ে যাবে! গ্রামে অন্তত এই বিষাক্ত মুরগি খেতে হবে না! শুকরিয়া !
২৬ মার্চ ২০১৫ রাত ০৮:৫৯
252316
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হ্যা আপনাকে বলেছে !!Smug Smug গ্রামের মানুষও সাপের মত বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে এখন....
২৭ মার্চ ২০১৫ রাত ১২:২৬
252362
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। গ্রামের ফার্মগুলোতেও এসব খাবার মুরগীকে খাওয়ানো হয়। তাই কেউ রেহাই পাবে না। সমাধান একটাই নিজেরাই মুরগী পালন শুরু করতে হবে।
311279
২৭ মার্চ ২০১৫ রাত ১২:১৬
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয় ভাইয়া। আপনার গুরুত্বপূর্ণ চমৎকার লিখাটির সুবাদে অনেক কিছুই জানা হল।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য জাযাকাল্লাহু খাইর।
২৭ মার্চ ২০১৫ রাত ১২:২৮
252364
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ। বারাকাল্লাহু ফীক ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File