Roseমায়ের খেদমতের শতাধিক পদ্ধতিঃ ৩য় পর্ব Rose

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাসুম সরকার আযহারী ০১ মার্চ, ২০১৫, ০৭:৩৯:৫৮ সন্ধ্যা



মায়ের খেদমত করে যাতে দুনিয়াতে বসে জান্নাত খরিদ করতে পা্রি সে আশায় সবার সাথে শেয়ার করলাম ধারাবাহিক লেখার ৩য় পর্ব "কিভাবে মায়ের প্রতি সদ্ব্যবহার করব"। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমীন……।



২২। মায়ের সুখ-দুঃখের অংশিদার হওয়াঃ মা কখনো ব্যাথা পেলে (আল্লাহ হেফাজত করুন) তার ব্যথায় মর্মাহত হওয়া। চিকিৎসার পাশাপাশি ব্যথার স্থানে হাত রেখে কুরআনের আয়াত, দোয়া পড়ে ফু' দেয়া।



২৩। অসুস্থ অবস্থায় সান্ত্বনা দেয়াঃ মা অসুস্থ হলে এই বলে সান্ত্বনা দেয়া- "চিন্তা করনা মা। এইতো খুব শীঘ্রই তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে"। এ সময় কোন ধরনের শোক সংবাদ মায়ের কানে না দেয়া। বরং মাকে স্বরণ করিয়ে দেয়া যে, রোগ, বালা-মুসিবত আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে পরীক্ষা মাত্র। এর ধারা আল্লাহ বান্দার গুনাহ ক্ষমা করে দেন। ভাল ডাক্তার দেখানো। সম্ভব হলে ডাক্তার বাসায় ডেকে আনা। অথবা নিকটবর্তী ভাল চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া। ডাক্তার, নার্সদেরকে বলে দেয়া মানসিক ভাবে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য। যে এটা একটা অতি সাধারণ ব্যাপার খুব শীঘ্রই সেরে যাবে।



২৪। মায়ের আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করাঃ মায়ের আত্মীয় স্বজন, বান্ধবীদের খোজখবর রাখা। মা তার আত্মীয়দের দেখতে যাবার সময় মাকে কিছু হাদিয়া কিনে দেয়া।



২৫। মায়ের জন্য স্পেশাল বক্সঃ নাতী-নাতনী সহ ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা মায়ের কাছে আসলে মা তাদের হাতে যাতে কিছু দিতে পারেন, সে জন্য মায়ের বিছার কাছে বা রুমে একটা বক্স রাখা যেতে পারে। যাতে বিস্কুট, চকলেট, ছোট ছোট খেলনা সমাগ্রী রাখা যেতে পারে। এতে বাচ্চাদের সাথে মায়ের সখ্যতা বৃদ্ধি পাবে।



২৬। মা দূরে কোথাও সফরে গেলে ঘর থেকে বের হবার পর থেকে বাসায় ফিরে আসার পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত সার্বক্ষণিক যোগাযোগ-খোজ-খবর রাখা।

২৭। দুঃশ্চিতায় পড়ে মাকে না জানানোঃ জীবনে কোন কাজে মানসিক দুশ্চিতায় পড়লে মাকে না জানাতে পারলে ভাল। কারণ মা এতে মানসিকভাবে ভেংগে পড়বে। বরং মা বিষয়টি জেনে গেলে, তাকে আশ্বস্ত করুন যে, ব্যাপারটা তেমন জটিল কিছু নয়। অচিরেই আল্লাহর রহমতে সব ঠিক হয়ে যাবে। পেরাশান হওয়ার কোন কারণ নেই।



২৮। দাম্পত্য মনোমালিন্য মায়ের সামনে প্রকাশ না করাঃ কারণ মা যখন দেখবে তার নাড়িছেঁড়া ধন, কটিজার টুকরা সন্তাননের জীবনটা স্ত্রীর কারণে দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে, মা দ্রুত সমাধানের পথ খুঁজবে। যে কোন কিছুর বিনিময়ে সন্তানের সুখ ফিরে দিতে চাইবে। তাই সাংসারিক জটিলতা মায়ের সামনে প্রকাশ না করাই কল্যাণকর।

২৯। মায়ের সামনে স্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা না করাঃ জীবনের খুটি-নাটি সব বিষয় মায়ের সাথে শেয়ার করতে গেলে অনেক সময় সংসারে অশান্তি আসতে পারে। তাই স্ত্রীকে আপনি কী দিলেন, স্ত্রী কী দিল এগুলো মায়ের সাথে শেয়ার না করাই ভাল। কারণ অনেক সময় মা মনে করতে পারেন যে, স্ত্রী পেয়ে আপনি মাকে কম মূল্যায়ন করছেন। কিংবা মায়ের চেয়ে স্ত্রীর প্রতি বেশী মহব্বত দেখাচ্ছেন। মায়ের মনে হিংসাও জাগতে পারে। এও ভাবতে পারে, তিনি সারা জীবন কষ্ট করে সংসার সাজিয়েছেন আর এখন অন্য একজন এসে তাতে আরাম করছে ইত্যাদি। তাই মা ও স্ত্রীর সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। একজনকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে আরেক জনের অধিকার যাতে খর্ব না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।



৩০। স্ত্রীর সামনে মায়ের ভূয়সী প্রশংসা না করাঃ মাকে বেশী গুরুত্ব দিতে গিয়ে কথায় কথায় স্ত্রীর সামনে মায়ের প্রসঙ্গ তুলাও ঠিক নয়। এতে স্ত্রীর মধ্যে এক ধরনের হিংসা জন্মাতে পারে। সে মাকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করতে পারে। তাই মা ও স্ত্রীর মাঝে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। প্রত্যেককে তার প্রাপ্য মর্যাদা- অধিকার দিতে হবে।

৩১। স্বামী-স্ত্রীর বিরোধের ক্ষেত্রে মাকে ফয়সালাকারী না বানানো। এর কোন প্রয়োজন নেই। বরং স্ত্রীকে উত্তম নসিহত করার মাধ্যমে বিরোধ মিটানো যেতে পারে।



৩২। মায়ের পোশাক, চয়েচ, কাজের ধরণ ইত্যাদি নিয়ে মাকে সমালোচনা না কর। বরং তাকে এমনভাবে বুঝানো যাতে তিনি মনে কষ্ট না পা্ন।



৩৩। ভাই-বোনদের সম্পর্ক সুদৃঢ় করাঃ পারস্পরিক মনোমালিন্য থাকলে তা প্রকাশ না করা। করলেও তা মায়ের সামনে না করা। কারণ এতে মা অত্যন্ত মর্মাহত হবেন।



৩৪। পিতা-মা্তার দাম্পত্য অবস্থা যাই হোক না কেন, পিতাকে আর্থিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে মাকে না জানানো উত্তম। ব্যাপারটি সন্তান ও পিতার মাঝে সীমাবদ্ধ রাখাই ভাল।



৩৫। মায়ের ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করাঃ মা তার যৌবনকালে দ্বীন সম্পর্কে সম্মক জ্ঞানার্জন না করে থাকলে, অত্যন্ত হিকমতের সাথে মাকে শিখানো উচিৎ। মা যাতে শিখতে গিয়ে সন্তানের সামনে নিজেটে ছোট মনে না করেন। তাই শিখার জন্য- ক্যাসেট, সিডি, ভিসিডি, বই ইত্যাদি কিনে দেয়া এবং বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল বা শিক্ষামূলক প্রগ্রামে উপস্থিত করা, টিভিতে নির্ভরযোগ্য ইসলামিক পোগ্রমগুলো দেখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

(চলবে.....।)



বিষয়: সাহিত্য

১২০৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

306942
০৩ মার্চ ২০১৫ রাত ১২:৩২
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয় সুহৃদ আযহারী ভাইয়া। অনেক সুন্দর একটি বিষয়ে অসাধারণ লিখাটি। জাজাকাল্লাহু খাইর।
০৩ মার্চ ২০১৫ রাত ০২:৪৮
248337
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ। জাযাকিল্লাহু খাইরান ফিদ্দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File