মায়ের খেদমতের শতাধিক পদ্ধতিঃ ১ম পর্ব
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাসুম সরকার আযহারী ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০২:১০:৪৬ রাত
ইসলাম মায়ের মর্যাদার দিগন্ত উম্মোচিত করেছে। পৃথিবী সকল ধর্মের মাঝে ইসলামের এই বিধান সত্যিই অপূর্ব, অতুলনীয়। আল্লাহর ইবাদতের পরেই যার স্থান। আমাদের যাদের মা জীবিত আছেন আমরা চাই মায়ের খেদমত করেতে। কিন্তু কিভাবে করব তা হয়তো অনেক সময় বুঝে আসে না। তাই মায়ের খেদমত করে যাতে দুনিয়াতে বসে জান্নাত খরিদ করতে পা্রি সে আশায় সবার সাথে শেয়ার করলাম ধারাবাহিক লেখার প্রথম পর্ব- "কিভাবে মায়ের প্রতি সদ্ব্যবহার করব"। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমীন……।
১। প্রত্যেক বিশেষ দিবসে উপযুক্ত হাদিয়া নির্বাচন করাঃ যেমন-ঈদ, সফর থেকে প্রত্যাবর্তন, শীতকালের শুরু, রোগ মুক্তি ইত্যাদি।
২। একটা ব্যাংক একাউন্ট খোলাঃ সব ভাই-বোন মিলে মায়ের জন্য একটা ব্যাংক একাউন্ট খোলবে। প্রেত্যেকেই তাদের আয়ের নির্দিষ্ট একটা পরিমান প্রতি মাসে মায়ের একাউন্টে জমা রাখবে। যাতে মা সেখান থেকে তার ইচ্ছামত প্রয়োজন মাফিক খরচ করতে পারেন; কোন সন্তানের কাছে হাত পাততে না হয়।
৩। বয়সের স্তর অনুযায়ী আচরণ করাঃ সন্তানের উচিৎ মায়ের বয়সের বিভিন্ন ধাপগুলো অনুধাবন করা। এবং প্রতি স্তরের জন্য উপযুক্ত আচরণ বা ব্যবহার করা।
৪। উত্তম শব্দচয়নঃ মায়ের সাথে আলাপচারিতার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে আমার মুখ দিয়ে এমন শব্দ কখনো বের না হয় যাতে মা মনে কষ্ট পেতে পারে।
৫। সর্বশেষ বিদায় মায়ের কাছ থেকে নেয়াঃ সন্তান দূরে কোথাও ভ্রমনের উদ্দেশে রওয়ানা হবার সময় সর্বশেষ বিদায় এবং দোয়া মায়ের কাছে থেকে নিবে। কারণ মায়ের দোয়া আল্লাহ অবশ্যই কবুল করবেন। এতে কোন সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ নেই। আর সন্তান দেশের বাইরে থাকলে কল করে মায়ের কাছ থেকে বিদায় ও দোয়া নেয়া ।
৬। সফর থেকে ফিরে সর্ব প্রথম মায়ের সাথে সাক্ষাৎ করাঃ সন্তানের উচিৎ সফর থেকে ফিরে এসে সবার আগে মায়ের সাথে সাক্ষাৎ করা। মাকে সালাম করা। তার কাছে কিছু সময় বসে আলাপ করা। খোজ-খবর নেয়া। বাড়ী ফেরার আগেই সন্তান কোন দিন কোন সময় আসছে তা মাকে জানিয়ে রাখা। না জানিয়ে মাকে সারপ্রাইজ দিতে যাওয়া ঠিক না। কারণ হঠাৎ সারপ্রাইজ পেয়ে খুব বেশী আবেগী হয়ে যেতে পারেন। ফলে অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। কোন অবস্থাতেই মায়ের সাথে বিলম্বে সাক্ষাৎ করা ঠিক না। কারণ মা সন্তানের মুখ এক নজর দেখার জন্য প্রচন্ড আগ্রহ ও আবেগ নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুণতে থাকেন।
৭। দেশের বাইরে থাকলে দিনে অন্তত একবার কল করে মায়ের খোজ-খবর নেয়া। যদি তা ২/১ মিনিট ও হয়। কারণ এই দু'এক মিনিটের আলাপই তার অন্তরে অনেক শান্তির ফোয়ারা বয়ে দিবে। অনেক দুঃশ্চিতা, বিষন্নতা কাটিয়ে দিবে।
৮। কাছে থাকলে প্রতি দিন সাক্ষাৎ করাঃ মা যদি একই বাড়ীতে বসবাস না করেন। সন্তান যদি খুব কাছাকাছি অন্য বাসায় অবস্থান করেন। সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন এক বার হলেও মায়ের সাথে সাক্ষাৎ করা। এবং শত কর্মব্যস্ততার মাঝেও এটাকে রুটিনে পরিনত করে নেয়া।
৯। দূরে থাকলে কল করাঃ মা যদি দূরে অবস্থান করেন। তাহলে সন্তানের উচিৎ হবে নিয়মিত প্রতিদিন কল করে খোঁজ – খবর নেয়া। কোন অবস্থাতেই যাতে একদিনের জন্যেও এর ব্যতিক্রম না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা।
১০। মায়ের প্রিয়দের সাথে ভাল ব্যবহার করাঃ মায়ের কাছে সবচেয়ে প্রিয় হলো তার সন্তানেরা। তাই তাদের প্রতি উত্তম আচরণ করলে মা খুশী হন। মা যখন দেখেন তার সন্তানেরা একের অন্যের প্রয়োজনে এগিয়ে আসছে, ভাই-বোনদের মাঝে পারস্পরিক সহযোগিতা, সহৃদয়তা, সহমর্মিতা, বন্ধুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে, মা অত্যন্ত আনন্দিত হন। কারণ তিনি দেখেন কিভাবে তার হাতে রোপন করা সদ্ব্যবহার ও উন্নত চরিত্র গঠনের ছোট্ট চারাটা আজ সুন্দর ফুলে-ফলে ভরে উঠেছে। এবং তা পরিবারের সৌন্দর্য বর্ধন করছে।
চলবে------
বিষয়: বিবিধ
১৮৯০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন