ধনী-গরীবের এক বিস্ময়কর ঈর্ষা ও প্রতিযোগিতা *******************************************

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাসুম সরকার আযহারী ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০২:০৫:৩৮ রাত



কিছু গরীব সাহাবী একদিন রাসূলুল্লাহ (সা) এর কাছে আসলেন। তারা অধিক সম্পদশালী সাহাবাদের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সা) এর কাছে কিছু অভিযোগ করলেন। এবং তাদের মনের কিছু কষ্ট ব্যক্ত করলেন এভাবেঃ

: "ذهب أهل الدثور بالأجور"

“হে আল্লাহর রাসূল! বিত্তবান লোকেরাতো সওয়াব ও নেকীর কাজে অনেক এগিয়ে গেছে। (তার কারণ হলঃ)

১। আমরা নামায পড়ি, তারাও সেরকম নামায পড়ে।

২। আমরা রোযা রাখি, তারাও সেরকম রোযা রাখে।

৩। তাছাড়া তারা তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ দান-সদকা করে। আমাদেরতো দান করার মত কিছুই নাই।

তাই সওয়াবের দিক দিয়ে তারা আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে আছে।

রাসূলুল্লাহ (সা) তাদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন:

আল্লাহ্ কি তোমাদের জন্য এমন জিনিস রাখেননি যা দ্বারা তোমরা সদকাহ্ করতে পারো? (অপর বর্ননায় আসছেঃ আমি কি তোমাদেরকে এমন কিছু (আমল) শিখিয়ে দেবো? যার বদৌলতে তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের সমকক্ষ হয়ে যাবে এবং তোমাদের পরবর্তীদের থেকে অগ্রসর থাকবে। তোমরা যা করছো তা না করলে কেউ তোমাদের চেয়ে বেশী মর্যাদাবান হতে পারবে না। তারা বললোঃ হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদেরকে তা শিখিয়ে দিন)।

রাসূলুল্লাহ বললেন,

১- প্রত্যেক তাসবীহ্ (সুবহানাল্লাহ্) হচ্ছে তোমাদের জন্য সদকাহ্।

২- প্রত্যেক তাকবীর (আল্লাহু আকবার) হচ্ছে তোমাদের জন্য সদকাহ্।

৩- প্রত্যেক তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ্) হচ্ছে তোমাদের জন্য সদকাহ্।

৪- প্রত্যেক তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) হচ্ছে তোমাদের জন্য সদকাহ্।

৫- প্রত্যেক ভালো কাজের আদেশ করা হচ্ছে তোমাদের জন্য সদকাহ্। এবং

৬- মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখা হচ্ছে তোমাদের জন্য সদকাহ্।

তারপর থেকে নামাজের পর মসজিদে তাসবীর গুণগুণ আওয়াজ শোনা যেত। সম্পদশালী সাহাবীরা তাসবীর ফজিলত জানার পর তারাও এবার গরীবদের মতই আমল করতে শুরু করল।

এ অবস্থায় কিছু দিন চলার পর দরিদ্র মুহাজির সাহাবীরা আবার রাসূলুল্লাহ (সা) এর কাছে এসে বললঃ

হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের সম্পদশালী দ্বীনি ভাইয়েরা তাসবীর কথা শুনে আমাদের ন্যায় আমল করতে শুরু করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সা) জবাবে বলেনঃ "ذلك فضل الله يؤتيه من يشاء" অর্থাৎ- এটা আল্লাহর অনুগ্রহ (নেয়ামত)। যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন।

(অপর বর্ননায় আসছে)

৭- আর তোমাদের লজ্জাস্থানে তোমাদের জন্য সদকার সওয়াব রয়েছে।

সাহাবারা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেন:

হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে কেউ যখন তার জৈবিক চাহিদা পূরণ করে, তাতেও কি সওয়াব হবে?

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন: তোমরা কি ভেবে দেখেছ? যদি সে হারাম স্থানে তা ব্যবহার করতো তাহলে কি সে গোনাহ্গার হত না? তারা বলেনঃ হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল!

রাসূলুল্লাহ বললেনঃ যেহেতু সে তা বৈধ স্থানে ব্যবহার করেছে, তাই সে এর জন্য প্রতিফল ও সওয়াব পাবে।”

(সূত্রঃ মুসলিম, ইবনু হিব্বান ও ইবনু খুজাইমাহ)



বিষয়: সাহিত্য

১৪৯০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

292274
০৮ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪২
বিভীষিকা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
০৮ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:০৯
236012
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহু খাইরান।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File