Roseঅনুপম সৌন্দর্য: দ্বীনি ভ্রাতৃত্বRose

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাসুম সরকার আযহারী ২৯ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:৫৮:১৭ রাত



উমর (রা) এর শাসনামলের ঘটনা।

একদিন ২ জন লোক এক বালককে ধরে নিয়ে আসল উমর (রা) এর দরবারে ।

উমর (রা) বললেনঃ ব্যাপার কি, কেন তোমরা একে এভাবে টেনে এনেছ?

তারা বললঃ সে আমাদের পিতাকে হত্যা করেছে।

উমর(রা) বালকটিকে বললেনঃ তুমি কি সত্যিই তাদের পিতাকে হত্যা করেছ?

বালকটি বললঃ হ্যাঁ, আমি হত্যা করেছি; তবে তা ছিল দূর্ঘটনাবশত। আমার উট তাদের বাগানে ঢুকে পড়েছিল। তা দেখে তাদের পিতা একটি পাথর ছুড়ে মারে যা উটের চোখে লাগে। উটটি খুবই কষ্ট পাচ্ছিল। যা দেখে আমি রেগে গিয়ে একটি পাথর নিয়ে তার দিকে মারি। পাথরটি তার মাথায় লাগে এবং সে মারা যায়।

উমর (রা) দুই ভাইকে বললেনঃ তোমরা কি এ বালককে ক্ষমা করবে ?

তারা বললঃ না, আমরা তার মৃত্যূদন্ড চাই।

উমর(রা)) বালকটি জিজ্ঞেস করলেনঃ ‘তোমার কি কোন শেষ ইচ্ছা আছে?

বালকটি বললঃ আমার আব্বা মারা যাওয়ার সময় আমার ছোট ভাইয়ের জন্য কিছু সম্পদ রেখে যান। আমি সেগুলো এক জায়গায় লুকিয়ে রেখেছি। আমি তিনদিন সময় চাই । যাতে আমি সেই জিনিসগুলো আমার ভাইকে দিয়ে আসতে পারি । আমার কথা বিশ্বাস করুন ।’

উমর (রা) বললেনঃ আমি তোমাকে বিশ্বাস করতে পারি যদি তুমি এমন একজন জামিন জোগাড় করতে পার যে নিশ্চয়তা দেবে যে তুমি ফিরে আসবে ?

বালকটি দরবারের চারদিকে তাকাল এত মানুষের মধ্যে কেউই তার জামিনদার হল না।

হঠাৎ দরবারের পেছন থেকে প্রখ্যাত সাহাবী আবু যর গিফারী (রা)) হাত উঠলেন। তিনি বললেন ‘আমি তার জামিনদার হব। (তার মানে হল, যদি বালকটি ফিরে না আসে তবে তারই শিরচ্ছেদ করা হবে)। এরপর বালকটিকে যেত দেওয়া হল।

একদিন গেল। দ্বিতীয় দিনেও বালকটি আসল না। তৃতীয় দিনে ২ ভাই আবু যর গিফারী (রা) এর কাছে গেল।

আবু যর (রা) বললেনঃ আমি মাগরিব পর্যন্ত অপেক্ষা করব।

মাগরিবের কিছুক্ষণ আগে আবু যর গিফারী (রা) দরবারের দিকে রওনা হলেন। মদিনার লোকজন তাঁর পেছন পেছন যেতে লাগল। সবাই দেখতে চায় কী ঘটে। আবু যর(রা) একটি বালকের ভুলের কারণে আজ জীবন দিচ্ছেন । হঠাৎ আজানের কিছুক্ষণ আগে বালকটি দৌড়ে আসল । লোকেরা সবাই অবাক হল ।

উমর (রা) বললেনঃ হে বালক! তুমি কেন ফিরে এসেছ? আমিতো তোমার পিছনে কোন লোক পাঠাইনি!

বালকটি বললঃ আমি চাই না যে, কেউ বলুক একজন মুসলিম কথা দিয়েছিল; কিন্তু সে তা রাখে নি। তাই আমি ফিরে এসেছি’!

উমর(রা) আবু যর(রা) কে বললেনঃ হে আবু যর তুমি কেন এই বালকের জামিনদার হলে?

আবু যর(রা) বললেনঃ আমি চাইনা যে, কেউ বলুক একজন মুসলমানের সাহায্য প্রয়োজন ছিল; কিন্তু কোন মুসলমান তাকে সাহায্য করেনি।

এ কথা শুনে দুই ভাই বললঃ ‘আমরাও চাই না যে, কেউ বলুক একজন মুসলমান ক্ষমা চেয়েছিল; কিন্তু অন্য মুসলমান তাকে ক্ষমা করেনি’ তারপর বালকটি মুক্তি পেল ।

বর্তমান সমাজে কি পাওয়া যাবে মুসলিম ভ্রাতৃত্বের এই অপরূপ দৃষ্টান্ত?

বিষয়: বিবিধ

১২৬১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

289686
২৯ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০৪
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : খুব সুন্দর লিখা ,পড়ে ভালো লাগলো
২৯ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০৬
233401
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহু খাইরান।
289689
২৯ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
আমাদের মধ্যে ভাতৃত্ববোধ এর অভাব ই আমাদের এই অবস্থার কারন
২৯ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৪৩
233417
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহু খাইরান।
289735
৩০ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০২:০৮
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লাগলো লিখাটি ভাইয়া।
৩০ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০২:১৮
233481
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : Roseজাযাকাল্লাহু খাইরান।
289743
৩০ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৪০
নাছির আলী লিখেছেন : অনেক ভালো লাগলো,যাযাকাল্লাহ
৩০ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৪৪
233585
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : Roseজাযাকাল্লাহু খাইরানRose
289793
৩০ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:১৮
নাবিলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ পিলাচ।
৩০ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫
233586
মোঃ মাসুম সরকার আযহারী লিখেছেন : Roseজাযাকাল্লাহু খাইরানRose

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File