হারাম শরীফের ইমামের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য *************************************
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাসুম সরকার আযহারী ১৫ নভেম্বর, ২০১৪, ০৭:১০:০২ সন্ধ্যা
সহীহ আকীদার যে সকল ভাইয়েরা মাযহাব ও ইমামদের নিয়ে খুব বেশী বাড়াবাড়ি করেন তাদের জন্য পবিত্র হারাম শরীফের ইমাম আব্দুর রাহমান আস-সুদাইসির গুরুত্বপূর্ণ একটি বক্তব্যের কিছু অংশের অনুবাদ ও ভিডিও দেয়া হলোঃ
***********************************************
জ্ঞান অন্বেষণকারী একজন ছাত্রের আদব এমন হওয়া উচিত যে, সে মতপার্থক্যের শিষ্টাচারের (আদাবুল খিলাফ) প্রতি যত্নবান হবে। ওলামায়ে কেরামদের, বিশেষ করে পূর্ববতী ওলামাদের, সম্মান প্রদর্শন করবে। ইমাম আবু-হানীফা, ইমাম ইদরিস আশ-শাফেয়ী, ইমাম মালিক বিন আনাস, ইমাম আহমাদ, আওযায়ী, লাইছ বিন সা'দ, সুফিয়ান বিন উয়াইনাহ, সুফিয়ান আস-ছাওরী কিংবা ইসলামি তারকা ও মুসলিম স্কলারদের ইমানের মধ্যে দোষ তালাশ করা কোন ব্যক্তির জন্য সমীচীন নয়। আর যে ব্যক্তি তাদেরকে দোষারোপ করবে, সে সালাফদের মানহাজের (পূর্ব্বতী হক্কানী ওলামাদের পথ) বিরুধী। কারণ সালাফদের মানহাজই হচ্ছে ওলামাদের সেই সম্মান-মর্যাদা রক্ষা করা যা আল্লাহ (আজ্জা অজাল্লা) হিফাজত করেছেন এবং আল্লাহ তায়ালা যাদেরকে তাঁর নিজের একত্ববাদের সাক্ষ্য প্রদান এবং তার ফেরেস্তাদের তাঁর একত্ববাদের সাক্ষ্য প্রদানে সাথে যুক্ত করেছেন; আল্লাহ বলেনঃ
আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয় তিনি ছাড়া (সত্যিকার) কোন ইলাহ নেই, আর ফেরেশতাগণ ও ন্যায়নীতিতে প্রতিষ্ঠিত জ্ঞানীগণও সাক্ষ্য দিচ্ছে, তিনি ছাড়া সত্যিকার কোন ইলাহ নেই, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরাহ আলে-ইমরানঃ ৩/১৮)।
অনুরূপ ভাবে আমাদের উচিৎ হলো, তাদের (ওলামাদের) ভুলের ব্যাপারেও তাদের সম্মান ও আদব রক্ষা করা। কারণ তারা মাসুম (নিষ্পাপ) নয়। তারা মুজতাহিদ আলেম (গবেষক) হিসেবে ভুল করতে পারেন। কিন্তু একজন মুজতাহিদ (গবেষক) তার ইজতিহাদে (গবেষণায়) ভুল করলে তার জন্য সে একটি ছাওআব বা প্রতিদান পাবে, আর যদি সে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারে তাহলে দু'টি ছাওআব পাবে।
সুতরাং যারা ওলামাদের দোষারোপ করছে, তাদের ব্যাপারে অশোভনীয় মন্তব্য করছে, তারা ভ্রান্ত পথে আছে। ইমাম ত্বহাবী তা (এই ফতোয়া) উল্লেখ করেছেন।
আর তাই ওলামায়ে কিরাম তাদের অন্তরকে কোন মুসলিমের ব্যাপারে হিংসা-বিদ্বেষ-শত্রুতা-ঘৃণা পোষণ করা থেকে পরিশুদ্ধ ও হিফাজত রাখার ব্যাপারে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যেমন-
১- ইমাম শাফেয়ী (রা) বাগদাদ থেকে বের হওয়ার সময় বলেনঃ " আমি বাগদাদ থেকে যখন বের হই ,তখন সেখানে ইমাম আহমাদের চেয়ে অধিক উত্তম, অধিক জ্ঞানী, অধিক পরহেযগার কেউ ছিল না।"
২- আর ইমাম আহমাদ শেষ রাতে দু'হাত তুলে ইমাম শাফেয়ীর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন।
এই ছিল ওলামায়ে কেরামদের আদব-আখলাক। আর আজ কী হলো যে, কিছু জ্ঞান অন্বেষণকারী ওলামাদের সম্মানহানী করছে, তাদেরকে দোষারোপ করছে, তাদের ব্যাপারে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে এবং তাদের কুৎসা রটনা করছে!?
কোন ছাত্র তার জিহ্ববা দিয়ে কোন আলেমের সম্মানহানী করে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়া থেকে ভয় করা উচিৎ। কারণ ওলামায়ে কেরামের মাংস বিষাক্ত।
ইমাম শাফেয়ী বলেনঃ
"তারা (ভক্তরা) বললোঃ
আহমাদ আসে আপনার কাছে, আপনিও যান ওনার কাছে!
আমি তাদের বললামঃ মর্যাদা সর্বদা তার কাছেই আছে।
যদি তিনি আসেন আমার কাছে, তবে অনুগ্রহ তার সেটা
আর যদি আমি যাই তার কাছে, তার মর্যাদার জন্যই এটা ।
উভয় অবস্থাতেই সম্মান-মর্যাদা তার জন্যই আছে।"
সুতরাং প্রতিটি ছাত্রের উচিৎ এ ধরনের শিষ্টাচারের গুণ অর্জন করা। মতভেদপূর্ণ বিষয়ে তাদের পরস্পরের ওজরগুলো গ্রহণ করা। কারণঃ
আর তাদের প্রত্যেকেই রাসূলের (সা) জ্ঞানের ভান্ডার থেকে অন্বেষণকারী,
সমুদ্র থেকে এক অঞ্জলিসম পানি কিংবা মুষলধারে বৃষ্টি থেকে এক চুমুক বারি।
ভিডিও দেখুনঃ
https://www.facebook.com/video.php?v=761975963839740&saved
বিষয়: সাহিত্য
১৬৯৩ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন