সম্মান ও মর্যাদার মানদন্ডঃ বস্তুবাদী ও ইসলামি দৃষ্টিকোন (পঞ্চম পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাসুম সরকার আযহারী ১১ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:৩৭:৪৮ রাত



যার মুখে কোন আড়ষ্টতা নেই, জড়তা নেই, তোতলামো নেই; শ্রুতিমধুর, প্রাঞ্জল, সাবলীল ও বলিষ্ঠ যার কন্ঠ; যুক্তি, প্রজ্ঞা, বাগ্মিতা ও ভাষার অলংকার যার বক্তব্যের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। যার মাধুরী মিশ্রিত আলাপচারিতা পরম শত্রুকেও বশমানাতে বাধ্য, যার বক্তব্য ধমনীতে সঞ্চারিত খুন কিংবা প্রবাহমান নদীর স্রোতের মত তরতর বেগে প্রবাহিত, যার আলোচনা শোনার জন্য বাধার শত পাহাড় মাড়িয়ে বাধভাঙ্গা শ্রোতের মত শত-সহস্র লোক জমায়েত হয়ে হাপিত্যেশ করতে থাকে, যার ক্ষুরধার বক্তব্যে মুগ্ধ হয়ে জীবন-মরন পণ করে অসংখ্য লোক যুদ্ধে যাপিয়ে পড়ে, এমন ব্যক্তিকে শত্রু-মিত্র নির্বিশেষে সকলেই ভালবাসে, সম্মানজনক আসন অলংকৃত করতে তার দুয়ারে ধর্না দিয়ে থাকে। কারণ বিশ্বনবীর ভাষায়ঃ

"নিশ্চয়ই কিছু কথা এমন আছে যা যাদুর ন্যায় প্রভাব বিস্তার করে"(সহীহ বুখারী)।

অথচ যে বাগ্মীকে এসম্মান দেয়া হলো তার প্রকৃত অবস্থা ভেবে দেখার প্রয়োজন বোধ করা হয়না। আল্লাহ তা'য়ালা বিশ্বনবী (সাঃ) কে লক্ষ্য করে বলেনঃ

"আর যদি তারা কথা বলে তবে আপনি তাদের কথা শোনেন……"(সূরা আল-মুনাফিকুনঃ৪)।

এখানে মুনাফিকদের সম্পর্কে বলা হয়েছে। একটু ভেবে দেখুন, একজন মুনাফিক যতবড় বাগ্মীই হোক তার এ বাগ্মীতা তার কী কাজে আসবে? আল্লাহ তা'য়ালা এসকল বক্তৃতায় পারদর্শী মুনাফিকদের সম্পর্কে বলেনঃ

"তারাই শক্রু, অতএব তাদের সম্পর্কে সতর্ক হোন। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন। তারা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছে" (সূরা আল-মুনাফিকুনঃ ৪)।

তাছাড়া আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আরো বলেনঃ

আল্লাহ তা'য়ালা এমন বাগ্মীর প্রতি ক্রোধান্বিত হন যে তার জিহ্বাকে এমনভাবে সঞ্চালন করে যেভাবে গাভী তার জিহ্ববাকে (ঘাস খাওয়ার সময়) সঞ্চালন করে। (সুনানুত্‌ তিরমিজী)।

অন্যদিকে জিহ্বার জঢ়তা, কন্ঠের সমস্যা, কিংবা অন্য কোন কারণে যে ব্যক্তি হৃদয়ের গহীনে লুকানো প্রকাশুন্মোখ আবেগটুকুও শতচেষ্টা করে সুস্পষ্ট ভাষায়, সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে, আকর্ষণীয় ভঙ্গীতে, হৃদয়গ্রাহী করে, মনের আবেশ মিশিয়ে ব্যক্ত করতে পারেনা তার জবানীতে যত মহামুল্যবান কথাই ধ্বনীত হোকনা কেন, তা আমাদের বিবেকের কাছে রীতিমত বিরক্তি উদ্রেককর বলে বিবেচিত হয়।তার বক্তব্য আমাদের কর্ণকুহরে বিন্দুমাত্র রেখাপাত করার পরিবর্তে আমাদের হাসির খোরাক যোগাতে সাহায্য করে। কিন্তু তাকে নিয়ে এভাবে উপহাস করা কতটা সমীচীন তা ভেবে দেখার প্রয়োজন বোধ করিনা। অথচ বিশ্বনবী (সাঃ) বলেনঃ "লজ্জা ও ভাব প্রকাশে অক্ষমতা ঈমানের দু'টি শাখা এবং অশ্লীলকথা ও বাচালতা কপটতার দু'টি শাখা"(সুনানুত্‌ তিরমিজী)।

(চলবে----)

আগের পর্বঃ

http://www.bdmonitor.net/blog/blogdetail/detail/10280/masumsarker/56801#.VGI64fmUeOw

বিষয়: সাহিত্য

১০৬০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

283427
১২ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৩৯
আফরা লিখেছেন : অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
283481
১২ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:২১
মামুন লিখেছেন : লিখাটি পড়লাম। ভালো লেগেছে। ভালো লাগা রেখে গেলাম। ধন্যবাদ। Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up
283502
১২ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:১৮
মুহাম্মদ আমিনুল হক লিখেছেন : ভালো লাগলো
283503
১২ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:২২
মুহাম্মদ আমিনুল হক লিখেছেন : লেখার প্রথম অংশে দুটি শব্দ- (ধমদিতে এবং তরতর ব্যগে) একটু সংশোধন করে নিন।
-------------------------
ধমনী/ধমণী
তরতর বেগে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File