বাদশা ফয়সল : দখলমুক্ত মাসজিদে আকসায় ২রাকাত নামাজ পড়া ছিল যার ঐকান্তিক বাসনা =========╭✿╯╭✿╯╭✿╯===========
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাসুম সরকার আলআযহারী ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১১:৪২:৩৬ সকাল
১৯৭৩ খ্রিঃ সাথে ইসরাইলের সাথে মিশর ও সিরিয়ার যুদ্ধ শুরু হয়।
এ যুদ্ধে আমেরিকা ইসরাইলকে ২.২ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্য এবং যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করে।ফলে সৌদি বাদশা ফয়সল বিন আব্দুল আজীজ (অন্যান্য আরব দেশ সাথ নিয়ে) আমেরিকার কাছে তেল বিক্রয় বন্ধ করে দেন। সৌদি আরবের অর্থনীতিতে এই সিদ্ধান্তের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে অর্থনীতিবিদরা বিস্তর আলোচনা করেন। বাদশা ফয়সল তখন এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন।
তিনি বলেনঃ ╭✿"আমরা, আমাদের বাপ-দাদারা খেজুর আর দুধ খেয়েই জীবন যাপন করেছেন। আমরাও প্রয়োজনে তাই করবো।✿╯
বাদশার সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকায় জ্বালানি তেলের তীব্র সংকট দেখা দেয়। ফলে বাদশার এই ইস্পাত কঠিন সিদ্ধান্ত থেকে তাকে ফিরিয়ে আনতে আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জার ওনার সাথে সাক্ষাৎ করতে ছুটে আসেন সৌদি আরবে
-
কিসিঞ্জার তার ডাইরিতে লিখেছেন-"১৯৭৩ খ্রিঃ সালে তিনি যখন বাদশা ফয়সলের সাথে সাক্ষাৎ করেন, তখন বাদশার চেহারা খুব বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। তাই তিনি একটু রসিকতার মাধ্যমে আলাপ শুরু করতে চাইলেন।
একটু হেসে-হেসেই বললেনঃ╭✿"আমার প্লেনটা তেলের অভাবে বিমান বন্দরে অচল হয়ে পড়ে আছে। মহামান্য বাদশা দয়া করে একটু তেল সরবরাহ করবেন কি? আমি সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করতে প্রস্তুত আছি।"✿╯
কিসিঞ্জার বলেনঃ "আমার কথা শুনে বাদশার মুখে একটু মুচকি হাসিও দেখতে পেলাম না। মাথা উঁচু করে আমার দিকে তাকালেন। বাদশা আমাকে বললেনঃ╭✿"আমি একজন বয়োবৃদ্ধ মানুষ। আমার মনে প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষা যে, আমি ফিলিস্তিনের মাসজিদে আকসায় দুই রাকাত নামাজ পড়বো। আমার মনের এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে আপনি হেল্প করতে পারবেন কি?"✿╯
বাদশার জবাব শুনে কিসিঞ্জার কী বলেছিলেন তা জানা সম্ভব হয়নি।
যুদ্ধের মাত্র দুই বছর পরেই, ২৫মার্চ, ১৯৭৫ খ্রিঃ সালে এই মহান নেতাকে তার রাজ প্রাসাদে গুলি করে হত্যা করে তারই ভাতিজা প্রিন্স ফয়সল বিন মুসায়েদ। যে আমেরিকায় ক্রিসটিন সুরমা নামের এক গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে বাস করতো। এই ক্রিসটিন ছিল আমেরিকান গোয়েন্দা। যে ফয়সল বিন মুসায়েদকে মদের নেশায় বুঁদ করে রাখতো। উল্লেখ্য যে, সে দেশে ফেরার কয়েক দিনের মধ্যেই আপন চাচার মাথায় গুলি করে হত্যা করে।
প্রিন্স ফয়সল বিন মুসায়েদ ও তার আমেরিকান গার্ল ফ্রেন্ড ক্রিসটিন সুরমা
-
অনেক গবেষক মনে করেন, এই হত্যা ছিল আমেরিকার কাছে তেল বিক্রয় না করার একটি প্রতিশোধ এবং ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য একটি পদক্ষেপ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই যুদ্ধে মিসরের নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত। তাকেও আততায়ীর হাতে জীবন দিতে হয়েছে। ১৯৮১ সালের ৬ অক্টোবর ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিজয় দিবস উৎযাপন অনুষ্ঠানে মিসরীয় ১ম লেফটেন্যান্ট খালিদ আল-ইসলামবুলি তাকে হত্যা করে।
-আজকে মুসলমানদের এই দুর্দিনে বাদশা ফয়সল বিন আব্দুল আজীজের মত নেতৃত্ব খুব বেশী প্রয়োজন।
আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। আমীন।
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১৪৬৪ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার ভাল লাগা রেখে যাওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। জাযাকুমুল্লাহ।
অসংখ্য ধন্যবাদ। জাযাকুমুল্লাহ।
আপনার ভাল লাগা রেখে যাওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। জাযাকুমুল্লাহ।
আপনার ভাল লাগা রেখে যাওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। জাযাকুমুল্লাহ।
চমৎকার ব্যক্তিত্বের অসাধারণ মানুষটির সাথে পরিচয় করিয়া দেয়রা জন্য শুকরিয়া!
আপনার ভাল লাগা রেখে যাওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। জাযাকুমুল্লাহ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন