জাতির মাঝে আরেকটি জাতি!
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ ইমরান হালিমী ৩০ অক্টোবর, ২০১৪, ১০:৪০:০০ রাত
পল্লবী বিহারী ক্যাম্প আমার বাসার কাছেই। বলতে গেলে আমরা বিহারিদের সমান্তরালেই থাকি। বিহারী ক্যাম্পের দিকে গেলে মানুষগুলোর দিকে প্রখর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি। পাকিস্তানী ছাপ খোঁজার চেষ্টা করি। চেহারা-সুরত, অঙ্গ-প্রতঙ্গে তাদের সাথে আমাদের তেমনটা ভিন্নতা নেই। তবে তারা আজ ও কেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারছে না?
বিহারিদের ভাসা মুলত হিন্দী। তবে তারা দাবি করে এটা উর্দু। পুরো বাংলাভাষী অঞ্চলের ক্ষুদ্র একটা অংশের মানুষ হিন্দিতে কথা বলে। আশ্চর্য ই লাগে! প্রাকৃতিকভাবে অঞ্চলভিত্তিক ভাষাগত কোনো রূপান্তর নয় এটি। মাঝবয়সীদের মাঝে একটু-আধটু বাংলা বলার প্রচলন আছে। তবুও যৎসামান্য। ক্রিয়াপদের ব্যাবহার বাংলায় করে মাত্র। বাকিটুকু হিন্দীতেই। আর শিশু, নারী ও বয়সীরা সমানতালে হিন্দিতে কথা বলে। মাঝে মাঝে চলার পথে একটু থেমে তাদের কথা-বার্তা শোনার চেষ্টা করি।
স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও তারা যেমন বাংলাদেশকে নিজেদের মাতৃভূমি মেনে নিতে পারেনি, পারেনি একাত্তরে তাদের অপরাধবোধের জন্য অনুশোচনা আনতে, তেমনি পারেনি বাংলাকে নিজেদের ভাষা করে নিতে। কেননা মাতৃ ভাষা কখনো সময়ের ব্যাবধানে পরিবর্তন সম্ভব না। মায়ের কাছ থেকে শেখা ভাষা দেশ-কাল-পাত্র কোনো কিছুর ওপর নির্ভর করে না। ৪৩ বছরেও বাংলা ভাষীদের সাথে থেকেও যেমনটি তাদের ভাষা পরিবর্তিত হয়নি। তবে কিভাবে দেশভাগের পর পাকিস্তানিরা আমাদের উপর উর্দু চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল? তাদের অন্তত ভেবে দেখা উচিত ছিলও এটা কখনো সম্ভব না। জোর করে হাজার বছরের লালিত ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ধ্বংস হয় না। উপরন্তু ধ্বংস চেষ্টাকারী ধ্বংস হয়ে যায়।
এ ক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশী ও আমাদের সরকার অনেক ভাল। আমরা জোর করে কোনো বিজাতীয়কে নিজেদের ভাষা জোরপূর্বক চাপিয়ে দেইনি।
বিষয়: বিবিধ
১০৫৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন