আমাদের অসভ্যতা !!!!!!!!!!!!! সাম্প্রতিক দুটি বক্তব্য এবং একটি খবর
লিখেছেন লিখেছেন এম খালিদ ২৬ নভেম্বর, ২০১৪, ০৯:৪০:৫০ সকাল
মানুষ জাতির মধ্যে সভ্যতার যখন কোন চিহ্নের লেষমাত্র বিদ্যমান না থাকে তখন আমরা তাকে অসভ্য বলি।
অসভ্য শব্দটিকে তুলনা করতে আমরা অনেক সময়পশু(কুত্তা,শুকর,হায়েনা)শব্দের ব্যবহার করে থাকি।কিন্তু মানুষ যখন অসভ্য কিংবা পশুর চেয়েও নিচে নেমে যায় তার সমার্থক শব্দ আমার জানা নাই।প্রচণ্ড বর্বর, হিংস্র বন্যপ্রানীরা খিদা মিটে গেলে অকারনে অন্য প্রানীকে হত্যা করেনা।
কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা বাংলাদেশীদের অসভ্যতার মাত্রা কতটা বেড়েছে তা সাম্পতিক তিনটি খবর থেকে অনুমান করা
যায়।
১)"ঘুষ নেয়া-দেয়া কোনটাই অপরাধ নয়"- আবুল মাল
২)'তোমরা লিখিত পরীক্ষাটা ভালো করে দাও, বাকি ভাইভা পরীক্ষা আমরা দেখব।’এইচ টি ইমাম
৩)গত রোববার রাতে পর্নোছবি তৈরি করতে গিয়ে রাজধানীর নিমতলীর হোটেল সুফিয়া থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষার্থীসহ ১১ জনকে আটক করে বংশাল থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয় এলাকাবাসী।
উপরের তিনটি খবর একটি সভ্য সমাজের জন্য কতকট ভয়ানক বার্তা বহন করে শুধুমাত্র সুস্থ বিবেকসম্পন্ন মানুষের পক্ষে চিন্তা করা সম্ভব।
কারন আমাদের জাতির রাজনৈতিক নেতারা বেপরোয়া-উদ্ধত,উচ্চবিত্ত-সুশীলরা বিকৃত, মধ্যবিত্তরা দিশেহারা আর নিন্মবিত্তরা জীবিকার যুদ্ধে লিপ্ত।
এই ধরনের খবর দেখে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি।আমরা এ ধরনের অসভ্যতার প্রতিবাদ করতে গিয়ে শাসক শ্রেণীর অসহনীয় নির্যাতনের ভয়ে কথা বলা ছেড়ে দিয়েছি।
আমাদের অবস্থা এমন হয়ে গেছে যে বাংলা অভিধানের "অ"বর্নটি বাদ দিলে আমরা সবাই বেঁচে যাই।নেতিবাচক সব ইতিবাচকে রূপ নেবে।কারন "অ"তেই সব বিপত্তি।
১নং বক্তব্যটি দিয়েছেন বর্তমান অর্নিবাচিত,দখলদার সরকারের ২য় কর্তা ব্যাক্তি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মূহিত।তিনি শুধু ঘুষ নেয়া দেয়া বৈধ এত টুকু বলেই থেমে
থাকেননি তাকে বৈধতা দেয়ার জন্য দুটি উদাহরন দিয়েছেন।তিনি উদাহরন টেনে বলেন উন্নত বিশ্বে ঘুষ নেয়াটা নাকি বৈধ যেটাকে নাকি "স্পীড মানি" বলা হয়ে থাকে।তিনি যদি একটু দয়া করে বলতেন উন্নত কোন দেশে এ ধরনের স্পীড মানির প্রচলন রয়েছে।আমাদের কারোও জানা নাই তিনার যদি জানা থাকে দেশের নামটা বললে আমরা সবাই এটাকে বৈধ বলে মেনে নিতাম।আমরা শুধু এতটুকু জানি যে উন্নত বিশ্বে ঘুষ নেয়ার কথা প্রচার
হওয়ার ভয়ে মন্ত্রীরা আত্মহত্যা পর্যন্ত করে থাকেন।
জাপানের সাবেক কৃষি মন্ত্রী তোশিকাৎসু মাৎসুওকা ২৮মে ২০০৭সালে ঘুষ খাওয়ার প্রতিবেদন প্রকাশের আগের রাত
তার সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও মান সম্মানের ভয়ে আত্মহত্যা করেছিলে।তারা সভ্য সমাজে
বসবাস করেন বিদায় মান-সম্মানের ভয় করে থাকেন।আমরা অসভ্য সমাজে বাস করি বিধায় আমরা এগুলোকে রাবিশ-বোগাস বলে উড়িয়ে দেই,অসভ্যকেও সততার লাইসেন্স দিয়ে থাকি। আসল কথা হলো এতোদিন
আমরা ঘুষ টেবিলের নীচে দিয়ে লেনদেন (আন্ডার মানি)মনে করলেও মূহিতরা এটাকে সরকারিভাবে বৈধতা
দিলেন।বয়সের ভারে সত্যটাকে প্রকাশ করে দিলেন।বেগম খালেদা জিয়া কিশোরগঞ্জে জনসভায় বলেন "বয়সের ভারে সরকারের মন্ত্রীরা মাঝেমধ্যে সত্যকথাটা বলে ফেলেন।"
মালের দ্বিতীয় উদাহরনটি হলো-তিনি চল্লিশ বছর আগে ড্রাইভিং লাইসেন্সটি নেয়ার সময় ঘুষ দিয়ে লাইসেন্স নিয়েছিলেন এবং তিনি এটাকে কোন রূপ অপরাধ মনে করেন না ।তিনি নির্ল্বজ্য বেহায়া হওয়ার কারনে এত বড় পদে
ঘুষ দিয়েও হেহেহে করে প্রকাশ করে দিয়েছেন।উন্নত বিশ্ব হলে এতক্ষনে তদন্তদল মেঠে নেমে পদ খোয়ার ব্যবস্থা করতেন।আমার ধারনা তিনি ঐ সময়ে সঠিকভাবে গাড়ি চালানো না শিখার কারনে ঘুষ দিয়েছিলেন বলে এটাকে অপরাধ মনে করেননা।
ইংরেজী সাহিত্যে লেখাপড়া করা আবুল মালের অর্থমন্ত্রী থাকা অবস্থায় বাংলাদেশে যে সকল আর্থিক দুর্ণীতি ও কেলেংকারী হয়েছে তা বাংলাদেশ জন্ম হওয়ার এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে এতো বড় পরিমানের আর্থিক দূর্নীতি হয়নি।এতোকিছুর পরও তিনি স্বপদে বহাল তবিয়তেরয়েছেন তা অসভ্য সমাজের পক্ষেই সম্ভব।তিনি নিজেকে সবকিছুর ঊর্ধে ভাবেন।এজন্যে সবাইকে রাবিশ,বোগাস বলে ডাকেন।তার মতে তিনি ছাড়া সবাই রাবিশ।এমনকিডঃমুহাম্মদ ইউনূস সাহেব ও।মাস কয়েক আগে ডঃ কামাল হোসেন তাকে উল্টো রাবিশ,বোগাস বলে সাশিয়ে ছিলেন।
সেদিন তিনি তাচ্ছিল্য করে বলেছিলেনন"রাবিশ---হেহেহে---বোগাস---হেহেহেহে।তারপর দিনকয়েক নীরব ছিলেন,এখন
আবারও আরম্ব করলেন স্বমহিমায় আগের চেয়েও একধাপ
এগিয়ে অর্থাৎ অসভ্যের চেয়েও আরো নিচে নেমে।আমৃত্যু
তিনি এসব বলে যাবেন।কারন মৃত্যুই একমাত্র তাকে এপদ
থেকে সরাতে পারে।
চলবে
বিষয়: বিবিধ
১২৫০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন