দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাই সত্যে পরিণত হল : যে আশংকা আমরা করেছিলাম (৩)
লিখেছেন লিখেছেন যা বলতে চাই ০১ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১০:৪৯:১১ রাত
অধ্যাপক গোলাম আযম(জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশের সাবেক আমির, শহিদ অধ্যাপক গোলাম আযম রহ.)জীবনে যা দেখলাম, খ. ৯, পৃ. ২০৩, ২০৪ ও ২০৫
দুর্ভাগা বাংলাদেশ
দুনিয়ার কোন রাষ্ট্রে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সমর্থক রাজনৈতিক শক্তি দেখা যায় না। বিশেষ করে এমন প্রতিবেশী রাষ্ট্র, যে সব সময় বৈরী আচরণ করে নিজের স্বার্থ ছাড়া অপর রাষ্ট্রের ন্যায়ানুগ অধিকারও দিতে সম্মত হয় না। একমাত্র বাংলাদেশই এমন একটি দুর্ভাগা দেশ, যেখানে ভারতপন্থী হিসেবে পরিচিত একটি বিশাল রাজনৈতিক দল রয়েছে, যে দল নিজের দেশের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে। ঐ রাষ্ট্র স্বাভাবিক কারণেই এমন একটি রাজনৈতিক শক্তির পৃষ্ঠপোষকতা করবে।
পলাশির ময়দানে নওয়াব সিরাজ উদ দৌলার পরাজয়ের জন্য ক্লাইভকে দোষ দেয়া চলে না। এর জন্য আসল দোষী মীর জাফর। ক্লাইভ তার জাতির নিকট হিরোর মর্যাদা পেয়েছে।
আমাদের আশংকা যদি সত্যে পরিণত না হত
ধর্মণিরপেক্ষতার কুফরি মতবাদ ও ভারতের মত সম্প্রসারণবাদী রাষ্ট্রের আধিপত্যের যে আশংকায় আমাদের বিবেক স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ গ্রহণে সম্মত হলোনা, সে আশংকা যদি সত্যে পরিণত না হত তাহলে আমাদের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলে আমরা অকপটে স্বীকার করতাম কিন্তু জাতীয়তাবাদী ও ইসলামি দেশপ্রেমিক সকলেই স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে যে, বাংলাদেশ দিল্লির তল্পিবাহক রাষ্ট্রে পর্যবসিত হয়েছে।
বাংলাদেশে ভাতের হাইকমিশনার গণ ও ভারত সরকারের নেতৃবৃন্দ সব সময়ই বলে এসেছেন যে, তারা বাংলাদেশে সেক্যুলার শক্তিকে ক্ষমতাশীন দেখতে চান। এতে তাদের কোন দোষ দিচ্ছি না। তাদের আদর্শ অন্যত্র প্রতিষ্ঠিত হোক তা তারা চাইতেই পারেন। তাদের পছন্দনীয় শক্তিকে ক্ষমতাশীন করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টাও চালাতে পারেন এবং তা তারা করে থাকবেন এটিই স্বাভাবিক।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে একথা সুস্পষ্ট রূপে প্রমাণিত হয় যে, ইউরোপ ও আমেরিকার সেক্যুলার শক্তি এবং আমেরিকার সাথে চুক্তিবদ্ধ ভারতের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছিল নির্বাচনে বাংলাদেশে সেক্যুলার শক্তিকে ক্ষমতাশীল করা।
২০০৮ সালে তাদের ইচ্ছা পূরণ করেছে অনির্বাচিত সংবিধান বিরোধী সরকার, এর (দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান) পৃষ্ঠপোষক শক্তি, আর (তথা কথিত পুনর্গঠিত) নির্বাচন কমিশন।
সরকারের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য
বর্তমান আওয়ামী লীগের (হীন রাজনৈতিক ও গোষ্ঠীগত গোপন স্বার্থ বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য) প্রধান টার্গেট দুটি। যথা-
১. ধর্মণিরপেক্ষতা নামক কুফরী মতবাদকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করা। সকল ইসলামি রাজনৈতিক দলের মতে, ধর্ম নিরপেক্ষতা বাদ একটি জঘন্য কুফুরী মতবাদ। এ মতবাদ দ্বীন ইসলামকে পরিপূর্ণ জীবন বিধান হিসেবে স্বীকার করেনা। ইসলামকে অন্যান্য ধর্মের মত কতিপয় অনুষ্ঠানসর্বস্ব ধর্মে পরিণত করতে চায়। হযরত মুহাম্মদ সা. কে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের(আদর্শ) নেতা বলে স্বীকার করে না। তাকে শুধু ধর্মীয় নেতায় পর্যবসিত(দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় বিষয়ে ইসলাম ও ইনসাফ বিরোধী আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চায়) করতে চায়।
২. আওয়ামী লীগের ক্ষমতা এদেশে স্থায়ী করার প্রয়োজনে বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা। ভারতের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এ উদ্দেশ্য সফল হতে পারে না।
বাংলাদেশের ইসলামি আন্দোলন উপরোক্ত দুটি টার্গেটের পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা হিসেবে তারা বিবেচনা করে। শেখ হাসিনার (তথাকথিত উপদেষ্টা) পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় এর (কাল্পনিক) প্রবন্ধে দেয়া পরামর্শ আনুযায়ী বাংলাদেশে ইসলামি শক্তির উত্থান প্রতিরোধের উদ্যেশ্যে জামায়াতে ইসলামির অগ্রগতি রোধ করার প্রয়োজনেই তথাকথিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রহসন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। (চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৪ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শেষে দেখা যায়-তাঁদের আশংকাই সত্যি হয়েছে!
ভাল লাগা রেখে গেলাম!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আর পড়ার আমন্ত্রণের জন্য, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
মন্তব্য করতে লগইন করুন