দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাই সত্যে পরিণত হল : যে আশংকা আমরা করেছিলাম। (২)

লিখেছেন লিখেছেন যা বলতে চাই ০১ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০২:১০:৫৩ রাত

আওয়ামী লীগ জনগণের উপর আস্থা রাখেনা :

স্বাধীনতা যুদ্ধে একক কৃতিত্বের মিথ্যা দাবিদার, বরং রাজনৈতিক অঙ্গনে মিথ্যাচার ও দুর্নীতির জন্মদাতা হিসেবে একক কৃতিত্বের অধিকারী আওয়ামী লীগের দেশপ্রেমের কিছু নজির তুলে ধরেন শহিদ অধ্যাপক গোলাম আযম, তাঁর জীবদ্দশায় প্রণীত আত্ম উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতা মূলক অনন্য গ্রন্থ, জীবনে যা দেখলাম, নবম খন্ডে, পৃ. ১৯৮, ১৯৯ ও ২০০। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ভারতের সাহায্যে স্বাধীনতা লাভের জন্য বাধ্য হওয়া সত্বেও(ভারতের ষড়যন্ত্রের কারণে) তারা ইচ্ছা করলে জণগনের শক্তির উপর ভরসা করে ভারতের আধিপত্য থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারতো। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হল তারা এতোটা ভারত প্রেমিক যে, বাংলাদেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে সব সময় ভারতের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে। (বিনিময়ে তারা ভারত থেকে ব্যক্তি স্বার্থে ও দলীয় স্বার্থে যা পাচ্ছে জনগণ অবশ্যই একদিন তার হিসেব নিবে।), যেমন-

১. দেশের সকল জাতীয়তাবাদী ও ইসলামি শক্তি দেশ প্রেমের যে তাগিদে ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার, আওয়ামী লীগ সে ট্রানজিট দেয়ার ব্যাপারে ভারতের চেয়েও বেশী আগ্রহী। এমনকি ট্রানজিট ফি নিতেও আওয়ামী লীগ বড়ই লজ্জাবোধ করে। (হয়ত এটি তারা অন্যভাবে পায় বলে।)

২. দেশী-বিদেশী নানান ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও) বাংলাদেশ ২০০৫ সাল থেকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে যথেষ্ট যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে আসছে। সাউথ এশিয়ান টাস্কফোর্স গঠন করে ভারতীয় বাহিনীর হাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাস দমনের নামে আধিপত্য কায়েমের সুযোগ দেয়ার বিরুদ্ধেও সকল দেশ প্রেমিক জনতা সোচ্চার অথচ (ভারতের মদদপুষ্ট) আওয়ামী প্রধানমন্ত্রী তা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। (কোন আলাপ-আলোচনা ছাড়া, জনগণকে সম্পূর্ণ আড়ালে রেখেই তিনে এটি করতে চান)

৩. বাংলাদেশের দুটো বন্দর দেশের আমদানি রপ্তানির জন্য যথেষ্ট না হওয়া সত্বেও ভারতকে তা ব্যাবহারের সুযোগ দিতে তারা প্রচন্ড আগ্রহী। ( তাও আবার বিনা শুল্কে)

বাংলাদেশের সকল স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে ভাতের স্বার্থ উদ্ধার করার এ প্রবণতা দেশবাসির জন্য চরম কলঙ্কজনক। আশা করি জনগণ তা মেনে নেবে না।

বাংলাদেশের স্বার্থের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নীরব :

১৯৭২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ভারতের সাথে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশের স্বার্থের ব্যাপারে আওয়ামীলীগ বিস্ময়কর নীরবতা পালন করেছে। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিষয়

এখানে সন্নিবেশন করছি।

[b]১.
ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা প্রায়ই বাংলাদেশীদের পাখির মত গুলি করে হত্যা করে। আজ পর্যন্ত একটিবার ও তারা এর প্রতিবাদ করলো না।

২. প্রতি বছর ভারতের সাথে বাংলাদেশের বানিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। তারা কোন সময়ই এব্যাপারে আপত্তি তোলেনি।

৩. ভারত থেকে প্রবাহিত নদীর পানি শুঁকনো মওসুমে বাঁধ দিয়ে আটকে রেখে বাংলাদেশে মরুভূমি সৃষ্টি করা হচ্ছে আবার বর্ষাকালে বাঁধ ছেড়ে দিয়ে বন্যায় ভাসিয়ে দেয়া হচ্ছে। গোটা দেশবাসি এ বিষয়ে সোচ্চার। অথচ তারা কোন দিন আপত্তি করে না এমনকি চুক্তি আনুযায়ী সামান্য পানিটুকু না দিলেও কোন আপত্তি জানায় না্।

৪. বাংলাদেশ শেখ মুজিবের সাথে চুক্তি আনুযায়ী ভারতকে বেরুবাড়ি দান করে দিলেও ভারত আজ পর্যন্ত তিন বিঘা করিডোর দেয়নি। ভারতের এ প্রতারণার বাপারে তাদের কোন আপত্তির কথা যানা যায়নি।

৫. বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তরেখা চূড়ান্তভাবে চিহ্নিত করার ব্যপারে ভারতের অনীহা ও নানা রকম টাল বাহানা থাকলেও আওয়ামী লীগের এ ব্যাপারে কোন আপত্তি নেই।

৬. ছিটমহলের মিমাংসার ব্যাপারে তাদের কোন তাগিদ নেই।

৭. বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের ১৬টি জেলাকে বাংলাদেশ থেকে পৃথক করে স্বাধীন বঙ্গভূমি নামে একটি হিন্দু রাষ্ট্র কায়েমের আন্দোলন অনেকদিন ধরেই চলছে। (এতে ভারতের রাষ্ট্রিয় মদদ শতভাগ রয়েছে), এর কোন প্রতিবাদ আওয়ামী লীগ আজ পর্যন্ত করেনি।

৮. বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারত একতরফা কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করছে। আওয়ামী লীগ এ বিষয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চুপ।

৯. বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার অভ্যন্তরে জেগে উঠা তালপট্টি দ্বীপ ভারত অন্যায়ভাবে দখল করে আছে। (এটি সরাসরি কোন দেশ দখলের সামিল), অথচ আওয়ামী লীগের এ বিষয়ে কোন আপত্তি নেই। (ইদানিং তাদের মুখে সমুদ্র জয়ের কথা খুব বেশী শোনা যায়। অথচ আজও যানা যায়নি এ জয় ভারতের পক্ষে না বাংলাদেশের পক্ষে।)

১০. পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি বাহিনী নামে অশান্তি সৃষ্টিকারী রাষ্ট্রদ্রোহী শক্তিকে ভারত ট্রেনিং ও অস্ত্র দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করছে। (তাদের আক্রমনে স্বাধীনতার পর অসংখ্য দেশপ্রেমিক সেনা সদস্য আহত ও শহীদ হয়েছেন।) এ সন্ত্রাসীদের দমন করার পরিবর্তে শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হয়ে ১৯৯৮ সালে তথাকথিত শান্তিচুক্তির নামে বিদ্রোহীদের সব দাবী মেনে নিয়ে ওখানকার বাঙালিদের কে নিজ দেশে দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিকে পরিণত করেছেন।

উপরে বর্ণিত আচরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে একক কৃতিত্বের মিথ্যা দাবিদার আওয়ামী লীগের দেশপ্রেমের কোন প্রমাণ মেলে কি না তা জনগণেরই বিবেচ্য। (চলবে)

বিষয়: বিবিধ

১৩৬২ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

290100
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:০৭
আফরা লিখেছেন : আওয়ামী লীগের দেশপ্রেম নেই আছে ভারত প্রেম ।আওয়ামী লীগ জনগণের উপর আস্থা নেই জনগনের দরকারই নাই তাদের ভারতই তাদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখবে ।
অনেক কিছু জানলাম । অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:৩১
233873
যা বলতে চাই লিখেছেন : আপুকে অনেক ধন্যবাদ। আসলে এ গোষ্ঠীটি বাংলার উন্নয়ন, উত্পাদন,স্থিতিশীলতা আর ধর্মীয় স্বাধীনতার জন্য ঐতিহাসিকভাবেই হুমকি সরূপ। কিন্তু অব্যাহত মিডিয়ার অপপ্রচারের কারণে সত্য উদঘাটন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
290105
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:২৫
যা বলতে চাই লিখেছেন : আসলে ভারতবর্ষে মুসলিমদের দুর্ভাগ্য যে, তারা পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট একটি জাতির প্রতিবেশী...। আর বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য যে, তারা বিজাতীয় ফাঁদে পা দিয়ে, মিথ্যা ও ধোঁকায় বিভ্রান্ত হয়ে আওয়ামী লীগের মত একটি আজন্ম প্রতারক চক্রকে এখনো চিনতে পারেনি। যারা মুক্তি যুদ্ধের প্রবক্তা অথচ যুদ্ধের সময় নিজেরা পালিয়ে গিয়েছে। গণতন্ত্রের প্রবক্তা অথচ ১৯৭৪ সালে সদ্য স্বাধীন দেশে সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে মুজিবের ব্যক্তি শাসন কায়েম করেছে। যারা ধর্ম নিরপেক্ষতার প্রবক্তা অথচ ইসলাম বিদ্বেষী, আবার ভোটের সময় ধর্মের লেবাস ধারণ করে মানুষকে প্রতারিত করে। পড়ার জন্য এবং মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:০৩
233878

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 10348

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 917

"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : বাংলাদেশের ভাগ্য ভাল- সিরিয়া, ইরাক, ইরান, পাকিস্তান, সুদান.............এর মত বর্বর কোন দেশ আমাদের প্রতিবেশী না। ইরাকের কুয়েত দখল, ইরান-ইরাক ১২ বছরের যুদ্ধ, কুর্দীস্তানে পয়জন বোমা, সুদানে গনহত্যা সিরিয়ায় আইসিস/ইয়াজিদী/শিয়া কাইজ্যা ফ্যাসাদ, মসজিদে-মসজিদে জেহাদী বোমা আর ১০০০ মাইল টপকে এসে বাঙ্গাল মুমিকে পাকিস্তানের রংরাজী............ আপনার নিশ্চয় মনে আছে?
290115
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:১১
কাহাফ লিখেছেন :
ভারতের প্রতি চেতনার দাবীদার একটা গোষ্ঠির অন্ধপ্রেম বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকেই প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে!
জনতার সামগ্রিক প্রতিরোধ ছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা নেই আজ!
ভাল লাগল উপস্হাপনা! অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহু খাইরান জানাচ্ছি!! Praying Praying
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:২৬
233915
যা বলতে চাই লিখেছেন : জনতার সামগ্রিক প্রতিরোধ ছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা নেই আজ। প্রিয় ভাই, আপনি যথার্থই বলেছেন। সত্য উপস্থাপনের মাধ্যমে জনতাকে সচেতন করার দায়িত্ব যে আমাদেরকেই নিতে হবে। অসংখ্য ধন্যবাদ অত্যন্ত কার্যকরী মন্তব্য করার জন্য।
290116
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:১৭
শেখের পোলা লিখেছেন : এরা দূরদর্শীী এঁদের কথা বাস্তবে ফলবে বলেই এঁরা ভারতের সাহায্য স্বাধীনতর বিপক্ষে ছিলে৷ বাঙ্গালী একদিন ঠিকই বুঝবে, কিন্তু তখন পায়ের তলে মাটি থাকবে না৷
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৩৩
233917
যা বলতে চাই লিখেছেন : আমিও একদিন বুঝতাম না। আল আলহামদুলিল্লাহ্ আমরা এদের আসল চেহারা এখন চিনতে শুরু করেছি। এদের সমাজ বিধ্বংশি ও জাতীয় স্বার্থ বিরোধী অপতত্পরতা নতুন প্রজন্মের নিকট ব্যাপকহারে উপস্থাপন করে বাংলার মানুষের নিকট সত্য উম্মোচন করার দায়িত্ব গ্রহন করার এখনই সময়। Good Luck আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।Happy
290137
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ০৫:৩৬
সন্ধাতারা লিখেছেন : Chalam vaiya. Jajakallahu khair for your valuable writing.
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৩৬
233918
যা বলতে চাই লিখেছেন : আপুকে অনেক ধন্যবাদ, নিয়মিত পড়া এবং প্রেরণাদায়ক মন্তব্য লেখার জন্য। জাজাকাল্লাহু খাইরা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File