বিদেশে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
লিখেছেন লিখেছেন খান জুলহাস ১৫ নভেম্বর, ২০১৪, ১২:৪০:১৮ দুপুর
মাত্র ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টার অপ্রত্যাশিত নোটিশে প্রধানমন্ত্রীর পূর্বনির্ধারিত যুক্তরাজ্য ও ইতালী সফর বাতিল হয়ে যাওয়ায় গোটা বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে দেশে-বিদেশে। অক্সফোর্ড ইউনিয়নে ভাষণ প্রদানের নিমিত্তে ১৬ থেকে ১৮ নভেম্বর যুক্তরাজ্যে এবং রোমে পুষ্টি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে ১৯-২০ নভেম্বর ইতালীতে সফরসূচী চূড়ান্ত ছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
নজিরবিহীনভাবে একেবারে শেষ মুহূর্তে ইউরোপের দু’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশে সফর বাতিল করার বিষয়ে সরকারীভাবে প্রধানমন্ত্রীর ‘সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত’ হবার কথা বলা হলেও লন্ডন সহ ইউরোপের বেশ কিছু নির্ভরযোগ্য সূত্র জানাচ্ছে ভিন্ন তথ্য। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ইস্যুটি সম্প্রতি খোদ যুক্তরাজ্যের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের বেশ কয়েকটি ইউনিটের মাথাব্যথার কারণ হয়েছে।
লন্ডনের গোয়েন্দা বিভাগের সাথে নিয়মিত ওঠাবসা রয়েছে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিশ্বস্ত একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্রের আত্মঘাতী হামলার শিকার হতে পারেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং ভয়াবহ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইউরোপের যে কোন দেশের তুলনায় যুক্তরাজ্যের মাটিকে তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক মনে করা হচ্ছে।
বিদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা দেখভাল করতে সফরসঙ্গী হিসেবে ঢাকার এসএসএফ সদস্যরা থাকলেও সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের ভূখন্ডের বাইরে এসএসএফকে যেহেতু সংশ্লিষ্ট দেশের স্থানীয় নিরাপত্তা বিভাগের ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করতে হয়, সেক্ষেত্রে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে সীমানা পেরিয়ে সর্বোচ্চ ঝুঁকি মোকাবেলায় সবকিছু নতুন করে হিসেব নিকেশ করার সময় এসেছে আজ।
প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাজ্য সফরকালীন সময়ে বিরোধী রাজনৈতিক জোট লন্ডনে চিরাচরিত কায়দায় যেভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে থাকে বা এবার আরো বড়সড় কিছু করার যে পরিকল্পনা তাদের ছিল, সেটাকে গনতান্ত্রিক অধিকার হিসেবেই দেখে থাকে ব্রিটিশ প্রশাসন। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের সাথে এর কোন সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি স্থানীয় গোয়েন্দা বিভাগ। তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে সাম্প্রতিক সর্বোচ্চ ঝুঁকির পেছনে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা এক্ষেত্রে আমলে নিয়েছে যুক্তরাজ্য থেকে ইদানীংকালে সিরিয়ায় আইএস-এ যোগ দেয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণদের অংশগ্রহনের বিষয়টি।
কথিত ‘জেহাদী’ চেতনায় উজ্জীবিত সমমনা এসব তরুণদের একটি গ্রুপকে বাংলাদেশের বিশেষ ভিভিআইপি’র বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, চলতি নভেম্বরে এমন তথ্যের ওপর ব্যাপকভাবে কাজ শুরু করেছে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। শুধুমাত্র অক্সফোর্ড ইউনিয়নে বক্তব্য রাখার জন্যই যেহেতু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাজ্য সফরের শিডিউল ছিল এবং ভয়াবহ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাই এ যাত্রায় বাড়তি ঝুঁকি নিতে চায়নি দেশটির নিরাপত্তা বিভাগের বিশেষ ইউনিট।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে, টোটাল ইস্যুতে একটি বিশেষ মিশন নিয়ে মাঠে কাজ করছে বিশেষ ঐ অপশক্তি, যাদের নেটওয়ার্ক বিলেতের সীমানা পেরিয়ে জার্মানী-ইতালী সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশেও শক্তভাবে বিস্তৃত। সবমিলিয়ে দেশ-বিদেশের আন্তর্জাতিক ও সামরিক বিশ্লেষকরা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দিচ্ছেন শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় সফরকে গুরুত্ব দিয়ে বিদেশ ভ্রমণের।
বিষয়: বিবিধ
১১৯২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ আপনাদের মত কিছু ব্লগার এই ব্লগে আছেন বলেই তো ব্লগটাতে বিনোদন কখনও ফুরিয়ে যায় না ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন