"প্রথম দেখাতেই ভালোবাসা আর তা থেকে পুরপূর্ণ জীবন" লেখক : মো: ইয়ামিন সরকার (বাবু) ১৮,১৯,২০,২১/১০/২০১৪ ইং একা পথ চলতে বড়ই ভালো লাগছে। আজকে কেন যেন আমার নিজের প্রতি নিজের অন্য রকম মনে হচ্ছে। আজকে মনে হয রাস্তাটা অনেক দীর্ঘায়িত হয়েছে। আমি একা পথ চলছি পথের মাঝেই একটা বাস এসে হড়েন দেওয়াতেই আমি থমকে দাড়াই। দেখি বাস থেকে একটা পরী নেমে আসছে।
লিখেছেন লিখেছেন ইয়ামিন ২২ অক্টোবর, ২০১৪, ১২:১১:৪১ রাত
"প্রথম দেখাতেই ভালোবাসা আর তা থেকে পুরপূর্ণ জীবন"
লেখক : মো: ইয়ামিন সরকার (বাবু)
১৮,১৯,২০,২১/১০/২০১৪ ইং
একা পথ চলতে বড়ই ভালো লাগছে। আজকে কেন যেন আমার নিজের প্রতি নিজের অন্য রকম মনে হচ্ছে। আজকে মনে হয রাস্তাটা অনেক দীর্ঘায়িত হয়েছে। আমি একা পথ চলছি পথের মাঝেই একটা বাস এসে হড়েন দেওয়াতেই আমি থমকে দাড়াই। দেখি বাস থেকে একটা পরী নেমে আসছে।
একি এত সুন্দর মেয়ে। ধারনায় করা যাই না। আমি যেন আর সামনের দিকে এগোতে পারলাম না। ধ্যাত আমি একি এলোমেলো ভাবছি! রাস্তায় এই রকম অনেক মেযেকে দেখা যায় তাই কি তাকে নিয়ে আমার চলার রাস্তা থামাতে পারি না। বাজারে এক চায়ের দোকানে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি আর চা খাচ্ছি কিছুক্ষণ পর আমার ছোট ভাই আমাকে ডাকতে আসে। ভাইয়া আম্মু তারাতারি করে বাড়ীতে ফিরতে বলেছে। আমি ভাবলাম হয়ত বা কেউ এসেছে। আর হ্যা সঙ্গে কিছু বাজার করে নিয়ে যেতে বলেছে। তারাতারি কর। তা না হলে আম্মু অনেক বকা দেবে। ঠিকআছে তুই বাড়ীতে যা আমি আসছি। আমি বাজার থেকে হালকা কিছু কিনে বাড়ীর দিকে রওনা হলাম। বাড়ীতে যাবার পরেই আমার মাথাটা এলোমেলো হয়ে গেল। একি!! এটা কি সত্যিই না স্বপ্ন দেখছি আমি। আমি বাজার টা আম্মুর হাতে দিলাম। আম্মুকে বললাম আম্মু বাড়ীতে কারা এসেছে? আম্মু বলল যে খাবার দেবার পরে পরিচয় করিয়ে দেব। আমি আর কিছু না বলে বাড়ী থেকে বের হয়ে আসলাম। এমন ভাব নিলাম যেন তারা বুঝতে পারে আমি এই বাড়ীর কেউ না। আমি যেন একটা বাড়ীর কাজের মানুষ। আমি আর কোন কিছু না বলে বাড়ী থেকে বের হয়ে আবার সেই দোকানে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠলাম। কিছুক্ষণ পরে আমার কেমন যেন মনে হলো আমি বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আবার বাড়ীতে ফিরে আসলাম। আম্মুকে বললাম আম্মু আমার প্রচুর ক্ষুদা পেয়েছে আমাকে খেতে দাও প্লিজ। আম্মু বলে আজকে এত তারাতারি ক্ষুদা লাগলো কেন? আমি বললাম আম্মু কেন আজকে আবার তারাতারি বা দেরি কেন। আমার কি তারাতারি ক্ষুদা লাগতে পারে না! আম্মু বলল ঠিকআছে একটু অপেক্ষা কর আমি খাবার রেডি করছি। তুই এতক্ষনে ফ্রেশ হযে নে। আমি আর কিছু না বলে সোজা ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ফ্র্রেশ হয়ে ঘরে আসলাম খাবার টেবিলে বসে আছি। আম্মু খাবার নিয়ে রেডি। আমার বাড়ীর যেই মেহমান রা এসেছে তারাও খাবার টেবিলে চলে আসল। আম্মু তখন আমাকে বলছে এটা আমার ছোট বেলার বান্ধবী তোর আংটি হয় এটা তোর আংটির স্বামী মানে তোর আংকেল হন। আর এটা তোর আংটির একমাত্র মেয়ে বিথি। বিথি এবার SSC পরীক্ষা দিয়েছে। আর ওই আমার বড় ছেলে বাবু। বাবু এবার HSC পরীক্ষা দিয়ে পাশ করল। ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছে। লেখাপড়া তেমন মনোযোগ নেই সারা দিন শুধু বন্ধুদের সাথে আড্ডা আর সারাক্ষণ শুধু বন্ধুদের নিয়ে ব্যস্ত। বাড়ীর কোন কাজেই পাওয়া যায় না। আগে লেখাপড়াটা শেষ করে নিক তার পর পায়ের সাথে দড়ি বেধে বাড়ীতে বসিয়ে রাখব তখন বুঝবে কেমন মজা লাগে। মা বিথি তুমিই আজকে আমাদের কে খাওয়াবে । আজকে আমরা দুই বান্ধবী এক হয়েছি বেশ অনেক দিন পরে। আজকে আমরা দুই বান্ধবী একসাথে বসে খাবো কিবলেন ভাই সাহেব।
আমি আম্মুর এই কথা গুলো শুনে একেবারে কেমন যেন ধমকে যাচ্ছি এ গুলো আম্মু কি বলছে। বাড়ীতে এতদিন পরে নতুন মেহমান এসেছে তাকে বলছে যে খাওয়াতে হবে। আমি কেমন যেন হয়ে যাচ্ছি। যাইহোক, বিথি তেমন কিছু না বলে আমাদের সবাইকে খাওয়া শুরু করল। সবার প্লেটে ভাত দিলো কিন্তু আমার প্লেটে ভাত দিতে কেমন যেন হয়ে গেল। মনে হচ্ছে ভাত দেবার চামচ টা অনেক ছোট হয়ে গেছে। ভাত উঠছে না। আমি আর কিছু বললাম না। ছোট বাচ্চাদের মত তেমনই রইলাম আর ছোট বাচ্চাদের যেমন খাবার হয় আমিও তেমনই খাবার পেলাম। আমাদের খাবার শেষ হলো খাবার খাবার পর দেখলাম আম্মু বিথি কে নিজ হাতে ভাত তুলে খাওয়াচ্ছে। যেন মনে হচ্ছে যে এখনও সেই ছোট বালিকাই রয়েছে। আমি আম্মুর কাছে আসলাম আম্মুকে বললাম আম্মু বিথি কি নিজের হাতে খেতে পারে না নাকি। আম্মু বলল তুই এখান থেকে যা। পরে আসিস। দেখছিস না আমি আমার বউ মাকে খাওয়াচ্ছি! আমি তো অবাক হযে গেলাম আম্মুর এই কথা শুনে এটা আম্মু কি বলে। আম্মু কি বলো তুমি! আম্মু বলছে না কিছু না তু্ই এখন এখান থেকে চলে যা। আমি আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে আসলাম। অনেকক্ষন পরে আবার বাড়ীতে আসলাম বাড়িতে আসার পরই আম্মু আমাকে বলছে বাবু তুই একটু বিথি কে নিয়ে আমাদের গ্রাম টা ঘুড়িযে আন। আমাদের গ্রাম টা বিথি দেখলে বিথির অনেক ভালো লাগবে। যা বাবা একবার ঘুড়িয়ে নিয়ে আয়। আমি আর দেরি করলাম না। আম্মুর কথাটা বলতে যতদেরি হযেছে কিন্তু আমার বিথিকে নিয়ে বের হতে তত দেরি হয় নি। বেরিয়ে পরলাম আমরা দুইজন।
আমি : বিথি! আমাদের গ্রাম টা তোমার কাছে কেমন লাগলে?
বিথি : ভালোই তো অনেক সুন্দর।
আমি : শুধুই সুন্দর নাকি তোমাদের শহরের চেয়ে খারাপ?
বিথি : আপনি যে কি বলেন না! আমাদের শহরে এই সমস্ত রাস্তা আপনি কোথায় পাবেন। আর এই গ্রাম গুলোতে যেমন মন খুলে নিশ্বাস নেওয়া যাচ্ছে আমাদের শহরে তো এই রকম ভাবে নিশ্বাস নিতে পারি না। তাহলে এবার আপনেই বলেন গ্রামই ভালো নাকি শহর।
আমি : আমার তো মনে হয় শহর। কেননা শহরের মানুষেরা অনেক চালাক। মানুষের সাথে বেইমানী করতে একটুও বুক কাপে না। একজন আরেক জনকে চেনেও না। মানুষের মন নিয়ে খেলা করতেও একটুও তাদের বুক কাপে না। যাইহোক এবার বলো তুমি এখন কি কি করতে চাও।
বিথি : আপনে কি আমার জন্য একটা কাজ করতে পারবেন?
আমি : কি এমন কাজ যে আমি করতে পারবো না। আর সেটা এমন তো না যে আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। আমার পক্ষের তোমার জন্য সবই সম্ভব। কেননা তুমি আমাদের গ্রামের মেহমান। আর যদি আমি তোমার জন্য কিছু না করতে পারি তাহলে কাল যখন তুমি শহরে চলে যাবে তখন তুমিই বলবে যে আমাদের শহর আর গ্রাম একদম সমান। কেউ কারোর জন্য নয়। বলো কি করতে হবে?
বিথি : ঔই যে নদীর মাঝে একটা শাপলা ফুল দেখা যাচ্ছে সেই ফুলটা একটু আমার জন্য এনে দিতে পারবেন?
আমি : নদীর পাশে একটা ভাঙ্গা নৌকা ছিলো সেটা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে নদীর গভীরে চলে গেলাম আর ফুলটাও তুলে এনে বিথির হাতে দিলাম।
বিথি : আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমি : তোমাকেও।
বিথি : কেন? আমাকে ধন্যবাদ কেন?
আমি : তোমার জন্য যে এই সামান্য একটা উপকার তোমাকে দিতে পেরেছি এর জন্য।
বিথি : এটাকে আপনি সামান্য বলছেন!
আমি : মানুষের কাছে এটা সামান্য। মানে আমার কাছে এইটা সামান্য। তোমার কাছে যদি এটা অসাধারন কিছু হয় তাহলে তো আরো ভালো। যাইহোক এবার সামনের দিকে যাওয়া যাক।
বিথি : চলেন।
আমি : সামনের দিকে যাচ্ছি আর বিথি কে অনেক মনে করছি। আর ভাবছি যে এই রকম একটা মেয়েকে পেলে আমার জীবন সঙ্গী হিসাবে পেলে আমার জীবন টা অনেক ধন্য হত। (মনে মনে)
বিথি : এই রকম যদি একজন কে আমার স্বামী হিসাবে পেতাম তাহলে আমার জীবন টা অনেক ধন্য হত। (মনে মনে)
আমি : কি হলো বিথি কিছুই তো বলছো না। নাকি আমার উপর রাগ করে আছো?
বিথি : আমি কেন আপনার উপরে রাগ করবো! আপনে তো আমাকে রাগ করার মতো কিছু বলেন নি!
আমি : না মানে আমি ভাবলাম যেহেতু কোন কিছু বলছো না তাই ভাবলাম যে তখন যে কথা গুলো বললাম তাতে তুমি আবার আমার উপর রাগ করে চুপ আছো নাকি।
বিথি : নাহ্ তো আমি রাগ করিনি। আমি একটা কথা ভাবতেছিলাম। আর আপনিও তো চুপ করে ছিলেন। তাহলে কি আপনেই আমার উপর রাগ করলেন নাকি।
আমি : হহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহ নাহ্ । কিন্তু আমি যদি একটা কথা বলি তাহলে কি তুমি খুব বেশি রাগ করবে?
বিথি : কি কথা? ( আমার মনের ভিতর অনেক আনন্দ ভাবছে মনে হচ্ছে আমাকে বাবু বলবে যে আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। বাবু, তারাতারি বলো আমি তোমার এই সময়টার অপেক্ষায় ছিলাম। বলো তারাতারি)।
আমি : নাহ্ তেমন কিছু না। আসলেই তখন কার ব্যপারে আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আসলেই আম্মু তখন কিছু একটা বললো তোমাকে তাই ভাবলাম যে তুমি মনে হয় খুবই চিন্তিত। প্লিজ আমার আম্মুর হয়ে আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি প্লিজ ক্ষমা করে দাও।
বিথি : কোন কারনে? আমি সঠিক বুঝলাম না। আর তখন আংটি কি এমন কথা বললো আমার তো তেমন মনে আসছে না। কি বলেছিলো তখন আর কোন কথা বলছেন?
আমি : তোমাকে আমার বউ বানানোর কথা যে বললো। সেটার কথা বলছি।
বিথি : ওওওওওওও আমি আরো ভাবলাম যে আপনি আমাকে অন্য কোন কথা বলবেন নাকি। নাহ্ আমি সত্যিই তেমন কিছু মনে করিনি।
আমি : ধন্যবাদ।
বিথি : আংটি যে তখন সেটা বলল তাতে কি আপনি কিছু মনে করছেন?
আমি : নাহ্ কিন্তু হ্যা। কারন তুমি শহরে থাকো আর তোমাকে তো অন্য কেউও ভালোবাসতে পারো এবং তুমি ও তো অন্য কাউকে তোমার মনটা দিতে পারো। তাই একটু আফসেট হয়ে ছিলাম তখন। কোন ব্যপার না। যাইহোক। অনেক সময় হয়েছে এবার চলো বাড়ীতে যায়। গল্পে গল্পে দুপুরের খাবার টাও খাওয়া হলো না। আর এখানে তেমন কিছু খাবারও নেই। চলো এবার বাড়ীতে।
বিথি : অনেক দেরি হবে আমার বাড়ীতে ফিরতে। আপনার যদি ভালো না লাগে তাহলে আপনি চলে যান আমার সময় হলে আমি যাবো। আপনাকে বলতে হবে না।
আমি : ঠিকআছে তোমার কথায় রাখতে হবে কেননা তুমি আমার মেহমান। চলো,,,,,,
বিথি : আপনাকে আমি একটা কথা বলতে চায় যদি কিছু মনে না করেন তো?
আমি : ঠিকআছে বলো কি এমন কথা। আমি কিছুই মনে করবো না।
বিথি : আপনে কি কাউকে ভালোবাসেন?
আমি : হুম!!!!!!!!!
বিথি : কাকে? কে সেই ব্যক্তি ( মনটা অনেক ছোট হয়ে গেল )
আমি : আমি যাকে ভালোবাসি সে অনেক সুন্দর তার সাথে আমার প্রথম দেখা হয় রাস্তায়, আমি তাকে একদেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছি জানি না সেও আমাকে ভালোবাসে কিনা। তবে আমার মনে হয় সে আমাকে ভালোবাসে না। কোন সমস্যা নেই আমার তাতে কিন্তু আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসার মানুষ এবং ভালোলাগার মানুষ আমি তাকে ভুলবো না আমি তাকেই ভালোবেসে যাবো। কিন্তু তুমি হঠাত করে এই প্রশ্নটা করলে কেন?
বিথি : না মানে এমনিতেই।
আমি : ওওওওওওওওও। তুমি কাকে ভালোবাসো। আর এখানে আসার পর কি তার সাথে একবার ও কথা হয়েছে? আর হ্যা তুমি যে এখানে মানে আমাদের এই গ্রামে এসেছো তা কি সে জানে?
বিথি : না সে আজো জানে না যে আমি তাকে কতটা ভালোবাসি। আর তার সাথে আমার অনেক কথা হয়েছে।
আমি : কিভাবে কথা বললে তার সাথে। আমাদের বাড়ীতে আসার পর তো আমার সাথেই কথা বলে যাচ্ছো তাকে কখন সময় দিলে তুমি। মিথ্যে কেন বলছো?
বিথি : আমি এখন আপনার সাথে কথা বলছি মুখ দিয়ে কিন্তু আমার মন যে তার সাথে কথা বলছে। সেটা আপনে কিভাবে শুনতে পারবেন।
আমি যখন এই কথাটা শুনতে পারলাম তখন যেন আমার অনেক খারাপ লাগতে শুরু করলো। কিন্তু কি করব। কোন কিছু করার নেই। আমি একদম অসহায়। তার পরও নিজেকে শান্ত করলাম।
আমি : ভালোতো তুমি যাকে ভালোবাসাবে তার জীবন টা অনেক সুন্দর হবে। একদিন দেখো সে অনেক সুখি হবে তোমার মতো একটা মেয়ের ভালোবাসা পেয়ে। আমি আল্লাহ্ কাছে এই কামনা করি। তুমি অনেক সুখি হও।
বিথি : আমিও আল্লাহ্ কাছে অনেক কামনা করি আপনেও যেন অনেক সুখি হন। আর খুব তারাতারি তার ভালোবাসা যেন আপনি পেয়ে যান। এবার চলেন যাওয়া যাক।
আমি : ঠিকআছে চলো।
বাড়ীতে আসলাম দুইজন মনটা অনেক খারাপ করে। যেন আমাদের দুইজনের মুখ এক রকম। কেউ কারোর দিকে তাকাতে পারছে না। বাড়ীতে ফেরার পর আম্মু আমাকে বলতেছে, বাবু, তোদের মধ্যে কি ঝগড়া হয়েছে নাকি। তোদের দুইজনের মখটাতেই যেন আকাশের মেঘ জমে আছে। কি হয়েছে তোদের। নাকি দুইজন মিলে রাগারাগি করেছোস? কি হয়েছে বল? মা বিথি, বাবু কি তোমাকে বকা দিয়েছে, নাকি তোমার সাথে ঝগড়া করেছে? আংটি কোন ব্যপার না। আমাদের কিছুই হয় নি। এইতো আমার বাড়ীর কথা মনে হয়ে গেল আর আমার পরীক্ষার কথাটা মনে হয়ে গেল আমি একটা বিষয়ে খুব খারাপ পরীক্ষা দিয়েছি তাই সেটা নিয়ে একটু চিন্তায় ছিলাম। তাছাড়া বাবু ভাইযা তো অনেক ভালো আমাকে হাসানোর জন্য অনেক কিছু করেছে আমার রাগ ভাঙ্গানোর জন্য কিন্তু আমি বাবু ভাইয়াকে বলার পরও সেটা থামায় নি। তাই হয়ত বা বাবু ভাইয়ারও মনটা খারাপ হয়েছে। তাছাড়া কিছুই হয়নি। আপনি কিছু মনে করবেন না। ঠিকআছে মা, এবার তোমরা দুইজন একটু ফ্রেশ হয়ে নাও আর খেতে আসো। সারাদিন কিছুই খাওনি মনে হয়। চলো।
আমি : বাব্বা মেয়েটাকে যতটা সাদাসিদে মনে করেছিলাম ততটা সাদাসিদে নয়।
বিথি : আম্মু আমরা বাসায় ফিরছি কবে?
আংটি : কেন? কি হয়েছে মা। তোমার কি আমাদের গ্রাম টা পছন্দ হয়নি নাকি?
বিথি : না আংটি। তেমন কিছু না।
আংটি : তোমরা অনেক দিন পর আমার বাড়ীতে আসলে আর এক সপ্তাহ্ না থেকে যেতে দেব না।
বিথি : এক সপ্তাহ!!!!!!!!! সে তো অনেক দিন আংটি।
আংটি : কেন মা তোমার কি কোন সমস্যা হবে?
বিথি : নাহ্,,,,,,,, তেমন কোন সমস্যা নেই। (আংটি আপনে কেন বুঝতে পারলেন না। আমি আপনার ছেলের বউ হতে পারবো না। আপনার ছেলে অন্য একটা মেয়েকে ভালোবাসে আমাকে সে কোন দিনও ভালোবাসতে পারবে না।)
আংটি : ঠিকআছে মা। চলো খাবার রেডি করেছি তোমরা দুইজন টেবিলে আসো আমি তোমাদের নিজের হাতে খাওয়াবো।
বিথি : আংটি আমার তেমন ক্ষুদা নেই। আপনি বরং বাবু ভাইয়াকেই খেতে দিন। সে অনেকক্ষণ আগেই ক্ষুদার কথা বলেছে। তাকেই খেতে দিন।
আংটি : আমি কিছু বুঝতে চাচ্ছি না। তুমি আমার সাথে সাথে খেতে যাবে।ঠিকআছে
বিথি : ঠিকআছে আংটি। আমি আসছি আপনি যান।
আংটি : ঠিকআছে।
বিথি তখন খেতে আসলো আমি আগে থেকেই বিথির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বিথির সাথে একসাথে খাবো। বিথি আসলো। এবং আমার পাশেই বসলো। আম্মু ভাত দিচ্ছে আর বিথির আম্মুকে ডাক দিলো। বিথির আম্মুকে আম্মু কি যেন কানে কানে বলল আর বিথির আম্মুর বলছে অনেক সুন্দর লাগছে। আমি তখনই বুঝলাম যে তারা কি বলেছে। কিন্তু না বোঝার ভান করলাম। বিথিও ঠিক তেমনই করল। সেও না বোঝার ভান করল। আমরা খাওয়া শেষ করলাম। চলে আসলাম যার যার ঘরে আমি চলে আসলাম আমার ছোট ভাই য়ের ঘরে আর আমার ঘরটা বিথির জন্য রেডি থাকল। আর বিথি সেই ঘরে সোবার জন্য চলে গেল। পরদিন সকালে ঘুম ভাংল বিথি আমার সামনে আসলো ভূল করে। আমার মনে হলো ও যেন আমাকে কিছু বলতে চায়।
বিথি : বাবু ভাইয়া আম্মু আর আংটি তারা কানে কানে কি বলল? আপনি কি বলতে পারবেন?
আমি : হহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহ না । তবে বুঝতে পারছি যে কিসের জন্য তোমার আম্মু মানে আমার আংটি সুন্দর বলল।
বিথি : কিসের জন্য?
আমি : না তেমন কিছু না। হয়ত বা তারা কি নিয়ে ভালো বলল তা হয়ত আমার সঙ্গে নাও মিলতে পারে।
বিথি : তার পরও বলেন?
আমি : আম্মু তোমার আম্মুর কানে বলল যে দুইজন কে কেমন লাগছে? আর তখন তোমার আম্মু হাসি নিয়ে বলল যে সুন্দর। তারা মনে হয় আমাদের নিয়ে অনেক....................
বিথি : কি হলো বলেন? অনেক কি,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
আমি : না কিছু না।
বিথি : আমি বলি।
আমি : বলো।
বিথি : আমাদের দুইজনকে এক করতে চায় মনে হয়।
আমি : এক করতে চাযলেও তো আর এক হওয়া যায় না। কেননা আমি............
বিথি : আবারো কথার মাঝখানে থেমে যান। এটা আমি কখনও পছন্দ করি না। যা বলবেন ঠিকঠাক করে বলবেন। বলার মাঝখানে ব্রেক মারাটা আমি পছন্দ করি না।
আমি : আমি যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখব সে তো আমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখে না। সেতো অন্য আরেক জনকে নিযে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে আর তাকে সে এমন জায়গায় রেখেছে সেখান থেকে আর কেউ তাকে সরাতে পারবে না। এখানে আম্মু বললেই তো আর সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে না।
বিথি : সেও আপনাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে।
আমি : মানে!!!!!!!!!!
বিথি : হুম,,,,, অনেক হয়েছে আপনার নেকামো।
আমি : মানে বুঝলাম না।
বিথি : হয়েছে আপনার আর বুঝতেও হবে না। অনেক কষ্ট দিয়েছেন আপনে। আর দিতে হবে না।
আমি : আমি তোমাকে কষ্ট দিলাম!!!!! আমি তো তোমার কোন কথাই বুঝতে পারছি না। প্লিজ একটু খুলে বলো?
বিথি : আপনি কি আসলেই মানুষ নাকি ঘোড়া। এত কাছে থাকার পরেও আপনি আমার মনের কথাটা বুঝতে পারলেন না।
আমি : কিসের কথা?
বিথি : কাল যখন আপনি আমাকে একটা কথা বলার জন্য অনুমতি চায়লেন আমি তো তখনই মনে করেছিলাম যে আপনি আমাকে এই কথাটা বলবেন কিন্তু তা না আম্মু কি বলল না বলল তার জন্য সাহেব একেবারে ক্ষমা চাওয়া শুরু করল। একটা মেয়ের এত কাছে থেকেও আপনি মেয়েটার মনে কথা বুঝতে পারলেন না। আপনি জানেন না যে মেয়েরা কখনও মনের কথা মুখে বলতে পারে না। আজকে সকালে ঘুম ভাঙ্গার পর যখন আপনার ছোট ভাই আমার কাছে এসে বলল আপু আমি তোমাকে একটা কথা বলব তুমি যদি কিছু মনে না করো। আমি তো ভাবলাম যে হয়ত তো ওই আমাকে বলবে যে আপু আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। হাহাহাহাহাহাহাহাহাহা। আসলেই আপনার ছোট ভায়ের মনে যতটুকু সাহস আছে না তার বৃন্দু পরিমান সাহস ও আপনার মনের ভিতর নেই।
আমি : কি যে বলছো বিথি আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। প্লিজ একটু খুলে বলো। আমি তোমার সব অপমান মেনে নেব। বলো। আসলেই কি?
বিথি : সাহেব, আপনার ছোট ভাই আমাকে সব বলেছে যে আপনার মনের রানীটা কে। আমাকে সবকিছুই বলার জন্যই সকালে আমার কাছে এসেছিলো।
আমি : কি বলেছে!!!!!!!!
বিথি : এতবড় একটা কথা আর আপনি আমাকে বলতে পারলেন না। এবার বলেন। আপনি মনে করেন যে আপনার স্বপ্নের রানীটা আমি তো এবার বলেন আপনার মনের কথাটা।
আমি : বিথি কি যে বলছো না। তুমি কি পাগল হয়ে গেলে নাকি। কি বলছো তুমি আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
বিথি : ধ্যাত............. আপনার মাথায় কি বুদ্ধি বলতে কিছুই নেই নাকি।
আমি : কেন?
বিথি : আপনে যে আমাকে ভালোবাসেন সেটা আমাকে বললেন না কেন?
আমি : বলতে সাহস পায় নি। আর তুমিও তো বললে তুমি একজন অনেক ভালোবাসো। তাই আমার গোপন কথাটা আমার মনের ভিতরই রেখেছিলাম। আর তুমিও তো আমাকে বলতে পারতে কিন্তু তুমিও তো আমাকে বললে না। কেন?
বিথি : আপনি যখন আমাকে আপনার স্বপ্নে রানীর কথাটা বললেন তখন আমি বলতে সাহস পায় নি। তায় আপনাকে আমার হৃদয়ের মাঝখানেই রেখেদিলাম। আর মনে মনেই আপনাকে ভালোবাসার সিদ্ধান্ত নিলাম।
আজকে সকালে যখন আপনার ভাই আমাকে বলল আপু রাতে ভাইয়া আপনাকে ভালোবাসার কথাটা বলছে আর কাদছে। আর বলছে যে বিথি আমি তোমাকে অনেক ভালোবেসেছি এবার আমার কাছে ফিরে আসো। এইভাবে আমাকে রেখে কোথাও যেতে পারো না। আমি কোন দিনও তোমায় ভালোবাসার কথাটা বলতে পারি নি কিন্তু কখনও কি তুমি বুঝতে পারলে না। রাস্তায় প্রথম যেই মেয়েটাকে দেখেছি তুমিই সেই মেয়ে। তুমিই আমার প্রথম ভালোবাসার এবং ভালোলাগার মানুষটা। প্লিজ বিথি আমার কাছে তুমি ফিরে আসো। আর এই কথা শোনার সাথে সাথেই আমি আপনার উপর রেগে গেলাম। কারন এত বড় সত্যি কথা টা আপনে আমার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখলেন।
আমি : আমার যে আর এছাড়া আর কিছু বলার ছিলো না। তুমিও তো আমাকে বলতে পারতে যে, যাকে জীবনে একবার দেখেছেন সে আর ফিরে আসবে না। এবার নতুন করে কাউকে বেছে নেন।
বিথি : আমার অনেক বড় ভুল হয়েছিলো। এবার তো সব ঠিক হয়েই গেল এবার কি বলা যাবে সেই কথাটা?
আমি : আমিমমমমমমমমমমমমমমমমমম তোতোতোতোতোতোতোতোতোমামামামামামামামাকেকেকেকেকেকেকেকেকেকে পারবো না। তুমিই আগে বলো?
বিথি : না তুমি আগে বলো?
আমি : পারবো না। তুমিই আগে বলো?
বিথি : আমি তোমাকে অনেক ভালোবা...................................সি।
এই কথা বলার সাথে সাথে বিথি দৌড়ে চলে গেল আমার রুমের ভিতরে। মনে হলো বিথি আজ অনেক সুখি একটা মানুষ। ঠিক আমার মতো। তার পর আম্মুর তলফ আসল খেতে আয়। অনেক সময় হয়ে গেছে। আমি একটু ফ্রেশ হয়ে খেতে যাবো । ফ্রেশ হচ্ছি আর আমার ছোট ভাই কে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ফ্রেশ হলাম খাবার টেবিলে গেলাম দেখি যে আংটি আংকেল এক সাইডে আমার ছোট ভাই আর আরেক সাইডে বিথি বসে আছে আর সেখানেই আমাকে বসতে বলল আম্মু আমি তেমন কিছু না বলে খেতে বসলাম। বিথি ডান পাশে আম্মু আমার ডান পাশে দাড়িয়ে সবাইকে খাবার দিচ্ছে। এইদিকে বিথি টেবিলে নিচে আমার পায়ের উপর পা রেখে শুরশুরি দিচ্ছে। আমি তেমন কিছু বলছি না। আমি এবার দেখলাম আর সহ্য করা যাবে না। মেয়েদের জালানো থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে তাই বিথির পায়ের উপর একটা পারা মারলাম। তাতে বিথি একটা ছোট করে চিৎকার দিলো। সবাই বলল কি হয়ে বিথি। বিথির মা বলল কি হয়েছে তোর । বিথি, বলল জিব্বয় কামর লেগেছে। তাই চিৎকার দিযেছি। বিথির মা এবং আমার আম্মু বলল ওওওও আমরা ভাবলাম যে অন্য কিছু নাকি। এবার আমি ও প্রস্তু থাকলাম যে এই পারা দেবার প্রতিশোধ অবশ্যই নেবে। তাই আমি ও প্রস্তুতি নিয়ে রেডি। এই কথা ভাবতে না ভাবতেই প্রতিশোধ নিলো। এমন জোড়ে পারা মারল যেন আমার সেইখানে কেউ একটা পাথর ফেলল। আমি যেন নিরুপায়। কিছুই বলার নেই আমার। কারন আমি আগে থেকেই রেডি ছিলাম যে এইরকম কিছু একটা ঘটবেই। আর ঘটলও তাই।
আমি : খাবার শেষ করলাম আর আমার রুমে গিয়ে একটু বিশ্রাম নিলাম। এরই মধ্যে বিথি চলে আসল। বিথি আমার রুমে আসার সাথে সাথে আমার রুমের দরজা টা আটকে দিয়ে বিথিকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরলাম যে বিথি আর ছুটতেই পারবে না।
বিথি: প্লিজ বাবু এই রকম করলে আমি কিন্তু আংটিকে সব বলে দেব। ছেড়ে দিন।
আমি : ঠিকআছে ছাড়তে পারি কিন্তু দুইটা সর্ত আছে?
বিথি : কি সেই সর্ত বলেন?
আমি : আমাকে আপনি থেকে তুমি করে বলতে হবে।
বিথি : ঠিকআছে বলব। অন্য সর্তটা কি?
আমি : আমাকে একটা ছোট্ট ........................
বিথি : এটা পারবো না।
আমি : তাহলে আমিও ছাড়তে পারবো না।
বিথি : আমি কিন্তু এবার চিৎকার দেবো।
আমি : দাও চিৎকার তাতে আমার কিছুই হবে না।
বিথি : তাহলে আমি চিৎকার দেবো।
আমি : হুম।।।।।।
বিথি : দিলাম কিন্তু চিৎকার।
আমি : দাও.............. চিৎকার
বিথি : আংটি আমাকে বাচান আপনার ছেলে আমাকে কিস করতে বলছে।
আমি : এত আস্তে করে বললে তো আমিই শুনতে পারবো না। জোড়ে বলো?
বিথি : আমি পারবো না। আপনেই চিৎকার দিন।
আমি : কি বললে?
বিথি : তুমিই চিৎকার দাও।
আমি : আমি চিৎকার দিতে পারি একটা সর্তে?
বিথি : কি সর্তে.......
আমি : ওই যে বললাম একটা ...................
বিথি : না আমি পারবো না।
আমি : আমি ও ছাড়বো না।
বিথি : ঠিকআছে। কিন্তু একটার বেশি কিন্তু না। আর তোমার চোখটা বন্ধ করতে হবে কিন্তু
আমি : ঠিকআছে বন্ধ করব।
বলার সাথে সাথেই আমার কপালে একটা সুখের ছোট্ট কিস করল। আর সঙ্গে সঙ্গে আমি ওকে ছেড়ে দিয়ে আমার বিছানার উপর পরে গেলাম। বিথি তারপরই চলে গেল রুম থেকে। এইভাবে বিথির সাথে সাতটা দিন কেটে গেল। বিথি শুধু একটাই কথা বলল। আমি কোন দিনও তোমায় ছাড়া বাচতে পারবো না। তোমার সাথে যদি আমার বাবা মা বিয়ে নাও দেয় তবুও আমি তোমাকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে তোমাকে বিয়ে করব। সাত দিনের দিন আম্মু বলল আমাদের মানে আমাকে আর বিথিকে।
আম্মু : মা বিথি তোমাকে আমার অনেক পছন্দ হয়েছে আমি তোমাকে আমার এই পাগল ছেলেটার জন্য বউ বানাতে চায় তুমি কি আমার এই পাগল ছেলেটাকে বিয়ে করবে?
বিথি : আংটি আমি আপনাদের বাড়ীতে আসার পর থেকেই আপনার এই পাগল ছেলেটাকে ভালোবেসে ফেলেছি। আমি ওকে ছাড়া আর কাউকেই বিয়ে করতে রাজি না।
আম্মু : বাবা বাবু তুই কি বলিস।
আমি : আমিও বিথি কে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি। আমিও ওকে ছাড়া বাচতে পারব না।
আম্মু : মা বিথি, আর বাবা বাবু তোরা যখন অনেক ছোট তখনই আমরা তোদের বিয়ে ঠিক করে ফেলি। মা বিথি তোর মা আমার ছোট বেলার সই। আর তোদের দিয়েই আমাদের এই বন্ধুত্বটা টিকিয়ে রাখতে চায় বলেই তখন থেকেই আমি তোকে আমার এই পাগলের জন্য পছন্দ করে রেখেছি। এবার তোর বাবা মাকে পাকা কথাটা দিয়ে দেবো আগামী মাসের ৪ তারিখে বাবুর বাবা বাড়ীতে আসবে আর তখনই তোকে আমার এই পাগল ছেলেটার জন্য বউ বানিয়ে আনবো। কি বলিস মা বিথি।
বিথি : আংটি,,,,,,,,, সরি আম্মু মানে শাশুড়ী আম্মা আপনার আমাকে আনতে হবে না আমিই আপনার বাড়ীতে আসবো। তাতে যদি আপনি রাজি নাও থাকেন তবুও আপনার ছেলের বউ হয়ে আপনার বাড়ীতে আসবো। কারন আপনার পাগল ছেলেটাকে আমি ছাড়া আর কেউ ভালো করতে পারবে না। কি বলো বাবু ?
আমি : হুম। আম্মু আমি সত্যিই ওকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি।
এরই মধ্যে বিথির আম্মু রেডি হয়েছে বাড়ীতে যাবার জন্য বিথিকে আর আম্মুকে ডাকলো। আমি আংটি এবং আংকেল কে বললাম আপনারা যদি আরো কয়েকটা দিন থেকে যান তাহলে আমার অনেক ভালো লাগত।
আংটি : বাবা বাবু আমাকে আর আংটি বলতে হবে না। এবার থেকে আম্মু বলা শেখ। কি পারবে না বলতে?
আমি : পারবো যদি আপনারা সেই রকম কিছু করেন। আর আল্লাহ্ তায়ালা যদি আমাদের কপালে এই সুখ লেখে রাখে।
আংটি : ঠিকআছে বাবা। এবার আমরা বিদায় নিতে চাচ্ছি। আসি এবার। আর হ্যা তুমি আমাদের বাসায় আসবে কিন্তু।
আমি : যদি ভালো না লাগে তাহলে আপনাদের বাড়ীতে আমাকে যেতেই হবে। কেননা আপনারা আমার ভালোলাগা এবং সুখটা সাথে করে নিয়ে যাচ্ছেন। তাই অবশ্যই আপনাদের বাড়ীতে আমার যেতেই হবে।
আংটি : ঠিকআছে বাবা। ভালো থেকো আর হ্যা তোমার আম্মু কে দেখে রেখো।
আংটি এই বলেই কেদে ফেলল। আম্মুর জন্যে। কারন অনেক দিন পর দুই বান্ধবী এক হয়েছিলো আর আজকে চলে যাচ্ছে যেন একজন আরেকজনের আত্মারসাথে মিশে আছে। আংটি আর আম্মু যেমন করে কাদছে আমাদের বাড়ী থেকে যাবার জন্য ঠিক তেমনিই আমি আর বিথি কাদছি। আমাদের কান্না আমরা ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারছে না। কিন্তু আংটি আর আম্মুর কান্দা সবাই বুঝতে পারছে। চোখের পলকে যেন আমার চোখে ঘোর অন্ধকার চলে আসলো। আমার মনে হচ্ছে যেন আমার আত্মা টা আমার আমার কাছ থেকে চলে গেছে। আমি যেন শূণ্য খাচা নিয়ে আছি। আমার কোন কিছুতেই ভালো লাগছে না। সেই দিনের পর থেকে ৪দিন ঠিক মত খেলাম না। আমার চোখে ঘুম ও নেই সারা রাত শুধু বিথিকে নিয়ে আমার সময় কাটছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে সব কিছুই অন্ধকার মনে হচ্ছে। আমি কি করব। আমি কি বিথির কাছে চলে যাবো। নাহ্ এটা ঠিক হবে না। কেবল মাত্র ৪দিন হলো আর আজকেই বিথির কাছে চলে গেলে আংটি আংকেল রাগ করবেন। নাহ্ এটা ঠিক হবে না। আর ৪দিন যেইভাবেই হোক আমার পার করতেই হবে কেননা ৪দিন পর ঢাকাতে আমার পরীক্ষা আছে আমি ৩দিনের দিন ঢাকায় যাবো আর রাতে বিথিদের বাসায় থেকে সকালে পরীক্ষা দিয়ে সেদিন থেকে পরের দিন চলে আসবো। এটাই ঠিক হবে আমাকে যেই ভাবেই হক এই তিন দিন পার করতেই হবে। অনেক কষ্টে আমার সেই তিনদিন কাটল। সকাল হতে না হতেই আমি রেডি হলাম ঢাকায় যাবার জন্যে। বাড়ী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ২টার দিকে পৌছালাম ঢাকায়। আর ঠিকানা মোতাবেক আম্মু আমাকে যেতে বলল আমি সেই জায়গায় আসলাম এসে দরজায় একটা টোকা দেবার সাথে সাথেই বিথি বলল কে বাবু। বলেই গেট খুলল। আমাকে দেখে বিথি কেমন যেন আশ্চয্য হয়ে গেল। তার চেয়েও বেশি আশ্চায্য হলাম আমি কেননা। আমি তো আসবো তা তো কেউই জানে না। একমাত্র আমার আম্মু ছাড়া। বিথির কানে কিভাবে খবর আসল। বিথি কেমন আছো?
বিথি : আগে কেমন ছিলাম বলতে পারবো না কিন্তু এখন থেকে মনে হয় ভালো থাকতে পারব। তুমি কেমন আছো?
আমি : তোমাকে বললে তুমি অনেক রাগ করবে। কেননা তুমি আসার পর আমার একবারও তোমার কথা মনে হয় নি। আমার এই কয়েকটা দিন অনেক ভালোভাবে কেটেছে কারন তুমি যেইদিন আমাদের বাড়ীথেকে চলে আসলে সেইদিন একটু মনে হয়েছিলো কিন্তু তার পর দিন থেকে আমার কোন কিছুই মনে হয় নি। কারন আমি একটা মেয়ের সাথে প্রেম করা শুরু করেছি। তাহলেই ভাবো তো আমি কেমন আছি।
বিথি : তার মানে?
আমি : তোমাকে তো আগেই বললাম আমি কেমন আছি শুনলে অনেক রাগবে। মানে কিছুই না। যেই দিন তুমি আমাদের বাড়ী থেকে চলে এসেছো সেই দিন থেকে আমি যে একটা মানুষ সেটা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম কেননা একটা মানুষের যদি দুইটা আত্মা হয় তাহলে কেমন হবে। আর যদি একটা আত্মা হয় তাহলে কেমন হবে। এবার তু্মিই বলো একটা মানুষের কয়টা আত্মা?
বিথি : একটা।
আমি : তাহলে সেই আত্মা যদি কাছে না থাকে তাহলে সেই মানুষ টা কেমন হয়ে যায়। বলোতো
বিথি : তাহলে সে...................।
এই বলেই বিথি আমাকে গেটেই জড়িয়েই কেদে ফেলল। অনেকক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখল। তার পর আংটি আসার শব্দে বিথি আমাকে ছেড়ে দিলো। আর বলল এবার ভিতরে আসো।
আমি : আচ্ছা বিথি একটা কথা বলবে?
বিথি : কি?
আমি : তুমি কি আগে থেকেই জানতে যে আমি আসবো?
বিথি : হ্যা......................... আমার মন বলছিলো যে আজকে তুমি আসবে। তাই সকাল থেকে এই গেটের কাছে দাড়িয়ে আছি শুধু মাত্র তোমার অপেক্ষায়। তুমি কখন আসো।
আংটি : বাবু! তুমি কখন আসলে বাবা।
আমি : আংটির পায়ে সালাম করলাম। এইতো এইমাত্র। কেমন আছেন, আংকেল কেমন আছে?
আংটি : সবাই ভালো আছে। তোমার আম্মু কেমন আছে?
আমি : ভালো। আংটি আম্মু আপনাকে অনেক মিস করে। আর কাদে। কেন মনে হয় অনেক দিন পর আপনি আম্মুর সাথে দেখা করে আসার পর থেকে আম্মু অনেক ভেঙ্গে পরেছে।
আংটি : তো তোমার আম্মুকে সাথে আনতে পারলে না?
আমি : না মানে আমার কালকে পরীক্ষা আছে তাই আম্মু আসল না। আর এমনিতেই আম্মু একটু অসুস্থ্য তাই আসতে পারল না। আপনাকে আর আংকেল কে আমার সাথে যেতে বলেছে। কালকে পরীক্ষা দিয়ে আসার পর আপনাদের কে আমার সাথে যেতে হবে।
আংটি : ঠিকআছে সেটা দেখা যাবে। আর বাইরে কেন। ভিতরে আসো। বিথি বাবু কে ভিতরে নিয়ে আসো।
বিথি : আজকে এই বেলা আমার সাথে তুমি আমার বন্ধু-বান্ধবীদের বাড়ীতে যাবে। তারা তোমাকে অনেক দেখার আগ্রহ্ জানিয়েছে। এবার চলো ফ্রেশ হও আর হালকা কিছু খেয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে আমার সাথে আজকে সারা শহর ঘুরবে। ঠিকআছে।
আমি : ঠিকআছে।
আমি ভিতরে গেলাম ফ্রেশ হলাম আমাকে একটা রুম দেওয়া হলো আমি সেখানে গিযে চেঞ্চ হচ্ছি আর এরই মধ্যে বিথি চলে আসে। আসার পরই বিথি দরজা টা আটকিয়ে দিলো আর আমি যেমন টা করেছিলাম ঠিক তেমনটাই হলো। কিন্তু পার্থক্য হলো এইটাই যে সেদিন আমার বাড়ী ছিলো বলে আমি বিথিকে জড়িয়ে ধরেছিলাম আজ বিথির বাড়ীতে বিথি আমাকে জড়িয়ে ধরল। বিথিও ঠিক সেই কৌশল অবলম্বন করল যেমনটা আমি করেছিলাম।
বিথি : এবার কোথায় যাবে তুমি। সেদিন তো তোমার বাড়ী ছিলো বলে খুবই ভাব নিয়েছিলে কিন্তু আজকে কি করবে আজকে তো আমার বাড়ী এখানে তোমার কোন ভাবই চলবে না। আমি যা বলব তাই হবে। এবার,,,,,,,,,
আমি : ঠিকআছে যাবার হবার তা হবে কিন্তু আগে চেঞ্চ হয়ে ঠিক হয়।
বিথি : না তোমার চেঞ্চ হতে হবে না। আমাকেও সেদিন তুমি সময় দিয়েছিলো না। আমিও তোমাকে আজ কোন সময় দেব না।
আমি : ঠিকআছে আমার কি করতে হবে?
বিথি : অনেক কিছু,
আমি : যেমন,
বিথি : আমি এই কয়েকটা দিন যেই কষ্ট অনুভব করেছি তার প্রত্যেকটা কষ্টে সুখ এনে দিবে আজকে।
আমি : আমি তো সেদিন তোমাকে একটা কিস করতে বলেছিলাম আজকে তার বেশি কিছু হবে না। কারন সেইদিন তুমি এর বেশি কিছু করোনি। আমিও পারবো না। এর বেশি কিছু করতে।
বিথি : ঠিকআছে সেটাই না হয় করো। যেটা আমি করেছিলাম তোমাকে।
আমি : ঠিকআছে চোখ বন্ধ কর।
বিথি : পারবো না।
আমি : তাহলে আমিও তোমাকে সেটা করতে পারবো না।
বিথি : তাহলে আমিও তোমাকে আর ছাড়ছি না।
আমি : ঠিকআছে, ছেড়োনা। কারন আমি ও চায়ছি যে তুমি আমাকে সারা জীবন এই ভাবে ধরে রাখো। কখনও ছেড়ে দিও না।
আমি বিথির কপালে চোট্ একটা কিস করলাম ভালোবাসার কিস। যেটাতে শুধু কষ্টকে ভুলে রাখতে পারে। অন্য কিছু না।
আমি : বিথি এবার তো আমাকে ছাড়বে? নাকি আরো ধরে রাখবে।
বিথি : আজকে আর কোথাও যাবো না। এই ভাবেই তোমাকে জড়িয়ে ধরে রাখবো। কোথাও যেতে দেব না।
আমি : তোমার আম্মু কি ভাববে। কিছুই ভাববে না। কারন আম্মু ভালো করে যানে যে তোমার কাছ থেকে চলে আসার পর আমি এতটাই পরিবর্তন হয়েছি যে আমার কোন কিছুই করতে পারিনি। সারা দিন তোমার কথাই বলেছি একা একা বসে। আর একটা বড় কথা কি বাবু, আজকে যদি তুমি আমাদের বাড়ীতে না আসতে তাহলে আমাকে আম্মু আমাকে কালকে তোমাদের বাড়ীতে রেখে আসতো। সে কথাও বলেছে আব্বু এবং আম্মু। তাহলে তুমিই বলো যে তারা আমাকে কি বলবে।
আমি : বিথি তুমি আমাকে এত ভালোবেসে ফেললে।
বিথি : বলতে পারবো না যে তোমাকে আমি কতটা ভালোবেসে ফেলেছি তবে এইটুকু বলতে পারি যে, তোমাকে ছাড়া আর একটা দিন থাকলে হয়ত আমাকে আর তুমি দেখতে পারতে না। আর কিছু বলোনাতো আমাকে একটু জড়িয়ে ধরে থাকতে দাও।
আমি : ঠিকআছে। ( আমিও বিথিকে অনেকক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখলাম। কারন এইতো কয়েকটা দিন বিথিকে কাছে পায়নি তাই মনে হয়েছে যে কত যুগ বিথির কাছ থেকে দূরে ছিলাম।)। কিছুক্ষণ পরেই আংটি বিথি কে ডাক দিলো বিথি কোন সারা শব্দ দিলো না।
আমি : বিথি আম্মু ডাকে তোমাকে। এবার ছাড়ো দেখ কি বলে। বিথি কোন রকমে আমাকে ছেড়ে দিয়ে দাড়ালো যেন মনে হচ্ছে তার শান্তির ঘুমটা কেউ ভেঙ্গে দিলো। আর মনে হলো যে বিথি যদি তাকে খুন করতে পারত তাহলো মনে হয় তাকে খুন করে ফেলত।
বিথি : কোন রকমে ছেড়ে দিলাম। আম্মুর কাছে গেলাম। রান্না রেডি করেছে বাবুকে আসতে বলল। আমি বাবুর কাছে আবারো আসলাম। বাবু আম্মু খাবার রেডি করেছে। চলো খেতে যাওয়া যাক।
আমি : চলো।
আমরা খাবার শেষ করলাম তার পর আংটিকে বিথি বলল যে, আমরা দুইজন একটু আমার বন্ধুদের বাড়ীতে ঘুড়তে যাবো। আব্বু আসলে বলো যে আমি বাবুর সাথে আছি। এই বলে বিথি আমাকে নিয়ে প্রথমে কলেজের সামনে আসল। তার পর যেখানে আমি পরীক্ষা দেব সেখানে ঘুড়ে ফিরে দেখালো। দেখা শেষ হবার পর আবার ফিরলাম বিথির বন্ধুদের বাসায়। প্রথমে ওর একটা বান্ধবীর বাসায় আসলাম নাম ..................... তারপর সেখানে আমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। অনেক গল্প হলো। আবার চলে আসতে হলো আমাদের দুইজন কে । আবার আরেক টা বন্ধুর বাড়ীতে আসলাম তার নাম ................................ সেখানেও আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলো সবার সাথে। এই ভাবে প্রায় ৫জনের বাড়ীতে যাওয়া হলো অনেক গল্পও করা হলো। বিদায় নিতে হলো কেননা রাত হতে চলছে তাই। আবার বিথিদের বাড়ীতে আসলাম একটু ফ্রেশ হতে না হতেই আমি যেই রুমে থাকব সেই রুমে আমার জন্য বিথি খাবার নিয়ে আসল। খাবার আনার পরই বিথি দরজা টা আটকে দিলো। যেন কেউ আমাদের ভালোবাসার মাঝে ডিষ্ট্রাব না করে। খাবার নিয়ে আসার পর দেখি যে এত খাবার যেন তিন জনের খাবার আনা হয়েছে। আমি বিথি কে বললাম বিথি, এত খাবার কার জন্য?
বিথি : কেন? আমার জন্যে,
আমি : শুধু তুমিই খাবে নাকি আরও কেউ খাবে।
বিথি : দেখা যাক আরও কেউ খায় কি না।
আমি : ঠিকআছে দাও।
একটা প্লেট একটা গ্লাস আর একটা জগ নিয়ে রেডি। ভাত দিলো একটা প্লেটে। তারপর। আমি বললাম তুমি কি করবে?
বিথি : কেন আবার আমি ও খাবো। কেন অসুভিধা নাকি।
আমি : কার আমার নাকি তোমার?
বিথি : তাহলে আমার একটু অসুভিধা আছে
আমি : কি অসুভিধা আছে?
বিথি : আমি নিজে থেকে খেতে পারি না। তোমার আমাকে তুলে দিতে হবে।
আমি : এই অসুভিধা। কোন ব্যপার না। কারন দুইদিন পর তো তুমিই আমাকে তুলে খাওয়াবে। আজ না হয় একটু কষ্ট করি।
বিথি : আরে না আমি আজকে তোমাকে খাওয়াবো কারন দুইদিন পর থেকে যেহেতু এইটা করতেই হবে তাহলে আগে থেকেই একটু প্রাক্টিস করেনিই। এটা আমি ভালো করে জানি যে বিয়ের পর থেকে তুমি নিজে নিজে খেতে পারবে না। তাই আগে থেকেই শুরু করি। কি বলো।
আমি : এইতো খুব সুন্দর করে বুঝেছো। এবার শুরু কর। আমার অনেক ক্ষুদা পেয়েছে।
বিথি : ঠিকআছে।
আমি বিথিকে খাওয়াচ্ছি বিথিও আমাকে খাওয়াচ্ছে। এই ভাবে আমাদের খেতে প্রায় ২ ঘন্টার মতো লেগে গেল। আমরা খাবার শেষ করলাম তার পর বিথি আমার কাছেই শুযে পরল। আমি আর কিছু না বলেই বিথির পাশেই শুলাম। (কিন্ত পাঠকরা হয়ত ভাববেন যে এটা কেমন কথা। আসলেই আমি সেই মুভমেন্ট নিয়ে এই গল্পটা লিখিনি। এটা শুধু একটা সত্যিকারের ভালোবাসার গল্প।) গল্পে গল্পে রাত প্রায় ২ টা বেজে গেছে কখন আমি টের ও পায়নি। বিথিকে বললাম বিথি তুমি এখন ঘুমাও আমি একটু পরতে বসি। কালকে আমার পরীক্ষা একটু হলেও পড়তে তো হবেই।
বিথি : ঠিকআছে। তবে আমি ও ঘুমাবো না। আমি তোমার পাশেই বসে থাকব আর তোমাকে প্রাণ ভরে দেখব। আমি তোমাকে এই কয়েকটা দিন দেখতে না পেয়ে যে কি কষ্ট হয়েছে তা আমি তোমাকে বোজাতে পারবো না। যাইহোক এবার তুমি পড় আমি এখানেই বসে আছি। সারা রাত এই ভাবেই থাকব।
আমি : ঠিকআছে। থাকো। কিন্তু কোন প্রকার চালাকী নয়। ঠিকআছে।
বিথি : ঠিকআছে।
আমি পড়তে পড়তে ঘড়িতে দেখলাম যে ৫টা বাজে তখন বিথিকে বললাম। বিথি এবার একটু ঘুমানো যাক। কারন অনেক রাত জেগেছি। অন্তত্য ২টা ঘন্টা ঘুম দিলে হয়ত বা একটু হলেও কালকে ভালো করে পরীক্ষা টা দেওয়া যাবে। কি বলো।
বিথি : ঠিকআছে। ঘুমাও কিন্তু আমাকে তোমার বুকের উপরে নিয়ে ঘুমাতে হবে কিন্তু।
আমি : ঠিকআছে।
বিথি : তাহলে এবার বই রেখে শুয়ে পরো।
আমি আর তেমন পরার আগ্রহ দেখালাম না। শুয়ে পরলাম আর বিথি ও আমার পাশে শুয়ে পরল আর আমার বুকের উপরে মাথাটা রেখে ঘুমিয়ে পরল। তার পর সকাল ৭টার দিকে ঘুম ভাংল আমাদের ঘুমটা ভাঙ্গার পরেই আমি আর বিথি দুইজনেই হাত মুখ ধুয়ে একটু ফ্রেশ হলাম। নাস্তা করলাম আর বিথিকে নিয়ে আমার পরীক্ষার হলের দিকে রওনা হলাম। পরীক্ষাটা দিলাম পরীক্ষা দিয়ে বের হলাম দেখলাম যে বিথিকে আমি যেই যায়গায় রেখেছিলাম সেই জায়গায়ই বিথি রয়েছে। হায়রে ভালোবাসা এটা কেমন করে সম্বভ। আমি বিথিকে সাথে নিয়ে বাড়ীতে চলে আসলাম। খাবার খেলাম। একটু ঘুমাতে যাবো আর বিথি বলল কালরাতে আমি ঘুমাতে পারি নি আজকে আমাকে তোমার বুকের উপরে মাথা রেখে শান্তি মত ঘুমাতে দিবে কি? ঠিকআছে। আমি ঘুমানোর জন্যে রুমে আসলাম বিথিও আসল সেদিন আর দরজাটা আটকানো ছিলো না। আমি ঘুমিয়ে পরেছি বিথিও আমার বুকের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরেছে। অনেক ক্ষণ পরে দেখি যে আংটি এসে আমাদের ডাকছে। আর বলছে বাবা বাবু আমার মেয়ে সত্যিই একটা ভাগ্যবান মেয়ে। কেননা তোমার মত স্বামী পেতে চলেছে। আমি সত্যিই আজ অনেক খুশি। তোমাকে দেখে কেননা পুরো একটা রাত তোমার কাছে একটা মেয়ে রইল তাও আবার ফাকা রুমে অথচ তুমি তাকে ভূল করেও কু নজরে তাকালে না। আজকেও তুমি তাকে সেই ভাবে যত্ন করে রাখলে যেন আমানতের খিয়ানত না হয়। আমি সত্যিই আজ মুগ্ধ বাবা। আমরা আর কোন দেরি করতে চায় না। তুমি আজকে এবং কালকে থেকে পরশু দিন আমাদের সাথে একসাথে বাড়ীতে যাবে আমরা তোমার আম্মু এবং আব্বুর সাথে পাকা কথা বলে আসব আর বিথিকে সেখানে রেখে আসব। সামনের মাসে তোমার বাবা আসলেই আমরা বিয়ের কাজটা শেষ করে ফেলব। এবার একটু কোথাও গিয়ে ঘুড়ে আসো। তারপর একটু হালকা খেয়ে ঘুমিয়ে পরো। ঠিকআছে।
আমি : ঠিকআছে আংটি।
বিথি : আম্মু কোথাও যাবো না আমরা আমরা এখন ঘুমাবো আর আমাদের ডাকতে এসোনা। আমাদের প্রচুর ঘুম পায়ছে। এবার আমাদের ঘুমাতে দাও।
বিথির আম্মু আর কিছু না বলেই চলে গেল।
বিথিকে আমি শুধু হাত দিয়েই মারা বাদ ছিলো আমার তা ছাড়া তাকে এমন ভাবে বলা হয়েছে যেন আর সে কোন দিনও এই রকম বেয়াদবি না করে। এই রকম করার পর বিথি অনেক কাদল।
আমি : বিথি প্লিজ কেদনা আমি তোমাকে শুধু এইটুকু বলেছি যে বড়দের সাথে এইভাব করা ঠিক না। প্লিজ এমন করো না।
বিথি : তাহলে আমার সাথে এইরকম করলে কেন?
আমি : তুমিই একবার ভেবে দেখ যে এইরকম করাটা কি তোমার ঠিক হযেছে?
বিথি : আমি ওতো কিছু বুঝি কেননা আমি তোমাকে ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারি না। কারন আমি একটু তোমার বুকের উপর মাথা রেখে শান্তি মত ঘুমাবো তা না কোথাও বেরিয়ে আসো। তাইতো আমি এই রকম করেছি। আমার দোস কোথায়।
আমি : আমার বুকের উপর মাথা রেখে ঘুমানো কি শেষ নাকি যে তুমি আম্মুর সাথে এইরকম করলে। যাও এক্ষুণি আম্মুর কাছে ক্ষমা চেয়ে আসো তা না হলে কিন্তু আমি তোমাকে আমার বুকের উপরের মাথা রেখে ঘুমাতে দেব না।
বিথি : ঠিকআছে আমি আম্মুর কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে আসছি।
আমি : আগে তোমার আম্মু যদি তোমাকে ক্ষমা করে তাহলেই আমি তোমাকে ক্ষমা করবো।
বিথি তখনই ওর আম্মুর কাছে ক্ষমা চাইতে গেল আর আম্মু সঙ্গে সঙ্গে অনেক খুশি হয়ে বলল মা বিথি আজকে তোর কি হয়েছে? জীবনে কত ভূল তুই করছোস আর আজ সামান্য ভূলের জন্যে আমার কাছে ক্ষমা চাইতে আইছোস। বাবু কে একবার এখানে ডেকে আন মা।
বিথি : ঠিকআছে আম্মু।
আমি : আম্মু কি বলেন? আপনে কি আমাকে ডেকেছেন! নাকি বিথি এমনিতেই আমাকে আসতে বলল।
আম্মু/আংটি : বাবা বাবু তুমি কি জানো যে বিথি ছোট থেকে এতদুর পর্যন্ত যতগুলো ভূল করেছে তার জন্য কোন দিনও সে আমাদের কাছে ক্ষমা চায়নি আজ তোমার জন্যে ক্ষমা কথা টা বিথির মুখে শুনতে পারলাম। তুমি কি আসলেই মানুষ নাকি অন্য কিছু। আমার তো মনে হচ্ছে তুমিই প্রকৃত একটা মানুষ তাও আবার আমাদের মেযের কাছে। মা বিথি আমি তোকে তোর জীবনের সব ভূল মাফ করে দিলাম মা। তুই এই রকম একটা স্বামী পেলে জীবনে অনেক সুখি হতে পারবি মা।
সখি থাক।
বিথি : আম্মু আমরা কোথাও বের হবো না। আজকে আমরা দুইজন একটু ঘুমাবো আর গল্প করব। খেতে দাও খেয়ে ঘুমাবো।
আংটি : ঠিকআছে মা। তোরা রুমে যা আমি খাবার রেডি করে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
বিথি : ঠিকআছে।
কিছুক্ষণ পর খাবার রেডি হলো আর বিথিকে আংটি ডেকে নিয়ে খাবার দিয়ে পাঠিয়ে দিলো। আমরা দুইজন খেয়ে আবার সেই আগরে মত আমার বুকের উপর বিথির মাথা রেখে গল্প শুরু করলাম। এই ভাবে যে আমরা কখন ঘুমিয়ে পরেছি জানি না। সকালে ঘুম ভাংল তার পর ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে বাড়ীতে আসার জন্য প্রস্তুত নিলাম কিন্তু বিথির আম্মু আমাকে আসতে দিলো না বলল যে আরো একটা দিন থেকে যাও আর কালকে বিথিকে নিয়ে আমারা তোমায় সঙ্গে করে তোমাদের বাড়ীতে যাবো। কি বলো।
আমি : ঠিকআছে আংটি। তাই হবে।
তার পর সেই দিনও ঠিক তেমনি করেই কাটল। পরের দিন সকালে আমাদের বাড়ীতে আসার জন্য রেডি হলাম। বাড়ীতে পৌছালাম ৩ টার দিকে বাড়ীতে আসতেই যেন আমাদের বাড়ীটা অনেক সুন্দর ঝলঝল করে জলে উঠল। এই ভাবে আমাদের দিন গুলো চলতে লাগল আর ৪ তারিখে বাবা বাড়ীতে আসল। কথা বার্তা পাকা হয়ে গেল তিনদিন পরে আমাদের বিয়ে। বিয়েতে আমি আমার সকল বন্ধুকে দাওয়াত দিলাম। বিয়েটা হয়ে গেল। বিয়ের পর দিন থেকে আমাদের জীবনে নতুন এক আনন্দের বন্যা বওয়া শুরু হলো কোন সময় আমরা কেউ কাউকে ছাড়া একা থাকতে পারতাম না। একা খেতে পারতাম না। আর প্রত্যেকদিন ঠিক সেই রুটিং মোতাবেকই চলতে শুরু হলো। বিথি আমার বুকের উপর মাথা দিয়ে না শুলে নাকি ওর ঘুম আসে না। আমার বুকটা শুধু মাত্র বিথির বালিশ হিসাবে এখন ব্যবহৃত হয়। এই ভাবে আমাদের জীবন টা অনেক সুন্দর ভাবে কাটতে থাকে। আজ আমরা অনেক সুখি।
(আমার এই গল্পটা পুরোপুরি কাল্পনিক। আমি শুধু এই টুকু প্রমান করেছি যে সত্যিকারের ভালোবাসায় এর চেয়ে বেশি কিছু হতে পারে না। কোন কথাটা বোঝানো হয়েছে হয়ত তারাই বুঝতে পারবেন যারা এই গল্পটা মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আর যদি আমার এই গল্পটা আপনাদের কাছে ভালো লাগে তাহলে শুধু Like ই দিবেন না আমার জন্য দুয়াও করবেন আমি যেন আপনাদের এইরকম আরো কিছু গল্প উপহার দিতে পারি।)
লেখক : মো: ইয়ামিন সরকার (বাবু)
২১/১০/২০১৪ ইং
বিষয়: সাহিত্য
৪৬৬১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন