রমাদান মাসের রোযার মাহাত্ম্য ও এ মাসে বিভিন্ন কাজের গুণাবলী
লিখেছেন লিখেছেন ক্ষনিকের যাত্রী ০২ জুলাই, ২০১৫, ০৮:৩৪:৫৬ রাত
ইসলামী ইবাদতসমূহের মধ্যে রোযার মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব কারো অজানা কথা নয়। বিশেষভাবে রমাদানের রোজার মাহাত্ম্য ও মর্যাদা অনেক বেশী।
রমাদানের রোযা সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস:
রমাদানের রোযা পূর্বের সকল গুনাহের কাফ্ফারা:
আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি ঈমান ও ইখলাছের সহিত রমাদানের রোযা পালন করবে,তার অতীতের সকল পাপ ক্ষমা করা হবে। বুখারী
প্রত্যেক দিনে রাতে জাহান্নাম থেকে মুক্তিদান:
আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: আল্লাহ তাআলা রমাদানের প্রত্যেক রাতে অনেক লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। সহীহুত তারগীব
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: রমাদানের প্রত্যেক রাত ও দিনে আল্লাহ তা’আলা অনেক ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। সহীহুত তারগীব
ইফতারের সময় জাহান্নামীদের মুক্তিদানঃ
জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক দিন ইফতারের সময় লোকজনকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। ইবনে মাজাহ
রমাদানের রোযা দশ মাস রোযার সমানঃ
ছওবান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: রমাদানের রোযা পালন করলে দশ মাস রোযা পালন করার সমান ছওয়াব হয়। সহীহুত তারগীব
রোযা পালনকারীর জন্য জান্নাতে বিশেষ দরজা:
সাহাল ইবনে সা’আদ (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (সাঃ) বলেছেন, জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটির নাম হল ‘রায়্যান’। এই দরজা দিয়ে শুধু সিয়াম পালনকারীরাই প্রবেশ করবেন। বুখারী
রোযা পালনকারীর জন্য সিদ্দীক ও শহীদের মর্যাদা:
আ’মর ইবনে মুররাহ (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি নবী কারীম (সাঃ) এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমি এ সাক্ষ্য দেই যে আল্লাহ ব্যতীত কোন (সত্য) মাবুদ নেই এবং আপনি আল্লাহর রাসূল। আর পাঁচ ওয়াক্ত ছলাত পড়ি,যাকাত দেই এবং রমাদানে রোযা পালন করি ও রাত্রিতে তারাবীহ পড়ি, তাহলে আমি কাদের অন্তর্ভূক্ত হব? তিনি বললেনঃ সিদ্দীক ও শহীদগণের অন্তর্ভূক্ত। সহীহুত্ তারগীব
রোযা পালনকারীর জন্য দুটি খুশী:
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (সাঃ) বলেছেন: রোযা পালনকারীর জন্য খুশীর বিষয় দু’টি। একটি খুশী ইফতারের সময়, আরেকটি খুশী তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের সময়। মুসলিম
রোযা পালনকারীর মুখের গন্ধ মিশকের চেয়েও উৎকৃষ্ট:
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ নবী (সাঃ) বলেছেন: রোযা পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশকের সুগন্ধির চেয়েও অধিক উৎকৃষ্ট। মুসলিম
রমাদান মাসে বিভিন্ন কাজের গুণাবলী
রমাদান মাসে রোযা ব্যতীত আরো অনেক কাজ রয়েছে, যেগুলোতে অনেক অনেক ছওয়াব ও ফযীলত পাওয়া যায়। সেরূপ কতিপয় কাজ হলো:
রোযা পালনকারীকে ইফতার করানো:
যায়েদ ইবনু খালিদ আল্ জুহানী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি রোযা পালনকারীকে ইফতার করাবে, সে তার সমান ছওয়াব পাবে। আর রোযা পালনকারীর ছওয়াবে কোন কম করা হবেনা। তিরমিযী
তারাবীহের নামায আদায়:
আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ নবী কারীম (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত ছওয়াবের আশায় রমাদান মাসের রাত্রে তারাবীহের নামায আদায় করবে, তার পূর্বের সমূহ পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে। বুখারী
তারাবীহের নামায আদায়কারী শহীদদের অন্তর্ভূক্ত:
আ’মর ইবনে মুররাহ (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি নবী কারীম (সাঃ) এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমি এ সাক্ষ্য দেই যে আল্লাহ ব্যতীত কোন (সত্য) মাবুদ নেই এবং আপনি আল্লাহর রাসূল। আর পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ি, যাকাত দেই এবং রমাদানে সিয়াম পালন করি ও রাত্রিতে তারাবীহ পড়ি, তাহলে আমি কাদের অন্তর্ভূক্ত হব? তিনি বললেন: সিদ্দীক ও শহীদগণের অন্তর্ভূক্ত। সহীহুত্ তারগীব
ইমামের সহিত পূর্ণ তারাবীহ পড়া:
আবূ যার (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি ইমামের সহিত ইমাম নামায শেষ করা পর্যন্ত তারাবীহ পড়বে, তার জন্য পুরা রাত ইবাদত করার মত ছওয়াব হবে। আহমদ, তিরমিযী
সাহরী খাওয়া:
আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (সাঃ) বলেছেন: তোমরা সাহরী খাও, কারণ তাতে অনেক বরকত রয়েছে। বুখারী
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: সাহরী খাওয়া বরকত। সুতরাং তোমরা সাহরী ছেড়ে দিও না। যদিও এক ঢোক পানি দ্বারা হয়,তারপরও সাহরী কর। কারণ যারা সাহরী করে তাদের উপর আল্লাহর রহমত হয় এবং ফেরেশতাগণ তাদের জন্য দুআ করেন। আহমদ, সহীহুল জামে’
দ্রুত ইফতার করা:
সাহাল ইবনু সাআদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যতদিন মানুষ দ্রুত ইফতার করবে,ততদিন তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে। বুখারী,মুসলিম
লাইলাতুল কদরে নামায:
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত ছওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে নামায পড়বে, তার পূর্বের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। বুখারী, মুসলিম।
উমরা আদায় করলে হজ্জের সমান ছওয়াব:
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এক আনসারী মহিলাকে বললেন, আমাদের সাথে হজ্জ করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? মহিলা বলল,আমাদের পানি বহনকারী, দু’টি উট ছিল। আমার ছেলের বাবা এবং ছেলে এক উট নিয়ে হজ্জে চলে গেছেন, আর অপরটি পানি বহনের উদ্দেশ্যে রেখে গেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন: রমাদান মাস আসলে তুমি উমরা আদায় কর,কারণ এমাসের উমরা হজ্জের সমান। মুসলিম
অপর বর্ণনায় আছে, আমার (অর্থাৎ রসূল সাঃ এর) সাথে হজ্জ করার সমান ছওয়াব হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৩৫ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাজকিল্লাহি খায়রান
জাযাকাল্লাহ্!
মন্তব্য করতে লগইন করুন