রমাদান মাসের ফযীলত ও আমাদের কর্তব্য
লিখেছেন লিখেছেন ক্ষনিকের যাত্রী ২৮ জুন, ২০১৫, ১২:৩০:১৮ রাত
রমদান মাস মুসলিম জাতির প্রতি মহান আল্লাহর সীমাহীন অনুকম্পা ও অনুদানের অন্যতম মাস। আল্লাহর ইবাদতের জন্য বছরের অন্যান্য মাসের মাঝে রমাদান মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। কুরআন ও হাদীস পর্যালোচনা করলে এ মাসের অনেক ফযীলত, মর্যাদা, বৈশিষ্ট্য, গুরুত্ব ও মহত্ব প্রস্ফূটিত হয়।
এ মাসের যে সকল ফযীলত রয়েছে তা হল;
কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার মাস;
রমাদান মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, এই মাসকে আল্লাহ তাঅালা কুরআন নাযিল করার জন্য নির্বাচন করেছেন। আল্লাহ তাঅালা বলেছেনঃ ‘রমদান হল, সেই মাস, যাতে কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। মানুষের হিদায়েতের জন্য এবং হিদায়েত ও পার্থক্যের অনেক নিদর্শনাবলী। অতএব তোমাদের থেকে যে এই মাস পাবে সে যেন সিয়াম পালন করে। {বাকারাঃ ১৮৫।}
জান্নাতের দ্বার খোলা এবং জাহান্নামের দ্বার বন্ধ;
আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন: নবী কারীম (ছাঃ) বলেছেন: যখন রমাদান মাস প্রবেশ করে, তখন জান্নাতের দ্বারসমূহ খোলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দ্বারসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। আর শয়তানকে শিকলে আবদ্ধ করে রাখা হয়। {বুখারী}
প্রত্যেক দিনে রাতে জাহান্নাম থেকে মুক্তিদান:
আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)বলেছেন: আল্লাহ তাঅালা রমাদানের প্রত্যেক রাতে অনেক লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। {সহীহুত তারগীবঃ}
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন: রমাদানের প্রত্যেক রাত ও দিনে আল্লাহ তা’আলা অনেক ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। {সহীহুত তারগীব}
দুঅা কবূল হওয়ার উত্তম সময়:
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন: প্রত্যেক মুসলিমের জন্য এ মাসের প্রত্যেক দিনে ও রাতে রয়েছে মাকবুল দুঅা। অর্থাৎ যখনই দুঅা করবে তা গ্রহনযোগ্য হবে। {সহীহুত তারগীব}
এ মাসে রয়েছে লাইলাতুল কদর :
আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন : লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সে রজনি উষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা কদর-৩/৫)
রমাদান পাওয়ার পরও যে পাপ মোচন করাতে পারেনি সে হতভাগা:
কা’আব ইবনে উজরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) কে বললেনঃ: মিম্বর নিয়ে আস, আমরা মিম্বর নিয়ে আসলাম। তিনি প্রথম সিঁড়িতে চড়ে বললেনঃ আমীন। দ্বিতীয় সিঁড়িতে চড়েও বললেনঃ আমীন। তারপর তৃতীয় সিঁড়িতে চড়েও বললেনঃ আমীন। যখন মিম্বর থেকে নিচে অবতরণ করলেন, তখন আমরা জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আজ আমরা আপনাকে এমন কথা বলতে শুনলাম যা পূর্বে কখনো শুনিনি। তিনি বললেনঃ জিবরীল (আঃ) আমার কাছে এসে বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে রমাদান মাস পেয়েও নিজের পাপ মোচন করাতে পারেনি। আমি বললামঃ আমীন। দ্বিতীয় সিঁড়িতে চড়ার পর জিবরীল (আঃ) বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক যার সামনে আপনার নাম উল্লেখ করা হল, কিন্তু সে দরূদ পাঠ করল না। আমি বললামঃ আমীন। তারপর তৃতীয় সিঁড়িতে চড়ার পর জিবরীল (আঃ) বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে মাতা-পিতাকে বা তাদের কোন একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেয়েও তাদের খেদমতে রত থেকে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে নি। আমি বললামঃ আমীন। {মুস্তাদরাক হাকেম, সহীহুত তারগীব}
এ মাসকে কেন্দ্র করে মহান আল্লাহ প্রতিটি ঈমানদারের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক উন্নতি ও কল্যাণ সাধনের সুযোগ অবধারিত করে দিয়েছেন।
আমাদের কর্তব্য হলো, আল্লাহর এ অনুগ্রহের মূল্যায়ন করতে চেষ্টা করা, এ মাসের ফযীলত ও তাৎপর্য অনুধাবনে সচেষ্ট হওয়া ও ইবাদত-বন্দেগীসহ সকল কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত থাকা।
আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন আমাদেরকে রমযান মাসের ফযীলত অর্জন করার তাওফীক দান করুন। আমীন …
বিষয়: বিবিধ
২০১৩ বার পঠিত, ৪২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লাগলো। জাজাকাল্লাহু খাইরান।
ফাতিমা মারিয়াম আপু লিখেছেন : বিলাই মন্তব্য!?
এটা কি জিনিস? :
অনেক অনেক শুকরিয়া
মন্তব্য করতে লগইন করুন