ঘরের নিত্যব্যবহার্য যেসব পণ্য জীবাণুর অভয়ারণ্য
লিখেছেন লিখেছেন ক্ষনিকের যাত্রী ২৫ নভেম্বর, ২০১৪, ১২:৩২:০৮ রাত
ঘরের এমন কিছু জিনিস আছে যেগুলো প্রতিদিনই ব্যবহৃত হয়। তবে অনেকেরই জানা নেই নিত্যব্যবহার্য এসব পণ্য জীবাণুর অভয়ারণ্য।
জানা নেই, তাই এসব বিষয়গুলো নিয়ে তেমন একটা মাথাও ঘামানো হয় না। স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে ঘরের এবং নিত্যব্যবহৃত কিছু জিনিসের নাম উল্ল্যেখ করা হয় যেখানে সব থেকে বেশি জীবাণু থাকে।
গোসলের তোয়ালে
ব্যবহারের পর তোয়ালে যদি প্রায় ২০ মিনিট বা তার বেশি সময় ভেজা অবস্থায় থাকে তবে ছত্রাক ও ব্যাক্টেরিয়া জন্মাতে শুরু করে।
পরিষ্কার করা: তাই ভেজা তোয়ালে ভালোমতো শুকানোর ব্যবস্থা করতে হবে। রোদে বা খোলা জায়গার বাতাসে শুকানো সবচেয়ে ভালো। তিন-চার ঘণ্টা ব্যবহারের পর গরম পানিতে ক্লোরিন ব্লিচ মিশিয়ে ধুতে হবে তোয়ালে। আর এসব করেও যদি আঁশটে গন্ধ যা ছত্রাকের কারণে হয় সেটা না যায় তবে বুঝতে হবে নতুন তোয়ালে কেনার সময় হয়ে গিয়েছে।
টুথব্রাশ
প্রতিবার দাঁত মাজার পর দাঁত ও মুখের জীবাণু এঁটে যায় ব্রাশে। আর বেশিরভাগ মানুষই টুথব্রাশ রাখেন বাথরুমে বা বাথরুমের কাছাকাছি বেসিনের উপরে। ফলে যেসব ব্যাক্টেরিয়া বাতাসে ভেসে বেড়ায় সেগুলোও আটকে যায় ব্রাশে।
পরিষ্কার করা: তাই টুথব্রাশ শুকানোর জন্য একটি হোল্ডারে রাখা উচিত। আর সম্ভব হলে বাথরুম থেকে দূরে রাখা উচিত। অসুস্থ হলে সুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এবং সাধারণত তিন মাস পরপর ব্রাশ বদলে নেওয়া উচিত।
কিচেন স্পঞ্জ বা মাজুনি
প্রতিদিনের এঁটো বাসন, প্লেট, রান্না ঘরের সিঙ্ক ইত্যাদি পরিষ্কার করতে নিয়মিত ব্যবহৃত হয়ে থাকে কিচেন স্পঞ্জ বা মাজুনি। খাবার তৈরির সরঞ্জাম এবং প্লেটগ্লাস পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহৃত এই জিনিস পরিপূর্ণ থাকে ব্যাক্টেরিয়ায়।
আর ব্যাক্টেরিয়াপূর্ণ মাজুনি বা কাপড় দিয়ে প্রতিবার মোছার সময় ক্ষতিকারক জীবাণু ছড়িয়ে যায় রান্নায় ব্যবহৃত অন্য সব সরঞ্জামেও। তাই জীবাণুর বিস্তার ঠেকাতে প্রতিবার ব্যবহারের পর স্পঞ্জটি সঠিকভাবে পরিষ্কার করে রাখা জরুরি।
পরিষ্কার করা: ব্যবহার শেষে স্পঞ্জ বা কাপড় গরম পানিতে ভিজিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর ভালোমতো চেপে পানি ঝেড়ে শুকিয়ে নিতে হবে। আর মাঝে মাঝেই স্পঞ্জটি গরম পানিতে জীবাণুনাশক উপাদান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
রান্নাঘরের সিংক
দেখা গেছে টয়লেট সিটের তুলনায় ১০ গুণ বেশি ব্যাক্টেরিয়া থাকে রান্নাঘরের সিংকে। কারণ হিসেবে ধরা হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টয়লেট নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়ে থাকলেও রান্নাঘরের সিংকের প্রতি তেমন একটা যত্নবান নন অনেকেই।
রান্নাঘরের সিংক বেশিরভাগ সময়ই ভেজা থাকে আর খাবারের অংশ, শাকসবজির টুকরা প্রায়ই পড়ে থাকে যা থেকে ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়। তাই রান্নাঘরের সিংক নিয়ম করে পরিষ্কার করা জরুরি।
পরিষ্কার করা: প্রতি সপ্তাহে দুতিনবার রান্নাঘরের সিংক পরিষ্কার করা উচিত। বিশেষ করে রান্নার পর এবং বাসন ধোয়ার পর অবশ্যই সিংক পরিষ্কার করা দরকার। বিশেষ করে বেসিনের পানি যাওয়ার জায়গা ভালোমতো গরম পানি ও জীবাণু নাশক উপাদান দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত।
ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি
নিত্যব্যবহার্য যন্ত্র যেমন, রিমোট, কিবোর্ডস, ফোন ইত্যাদি প্রতিদিনই পরিবারের একাধিক সদস্য ব্যবহার করেন। আর এই যন্ত্রগুলো তেমন একটা পরিষ্কারও করা হয় না। তাই যন্ত্রগুলোতে জমে কিচেন স্পঞ্জের সমপরিমাণ জীবাণু।
কম্পিউটার ব্যবহার বা টিভি দেখতে দেখতে প্রায়ই স্ন্যাকসজাতীয় খাবার খাওয়া হয়। ফলে হাত থেকে মাউস, রিমোট বা কিবোর্ডসে তেল বা খাবারের টুকরা লেগে যায়। ভালোমতো পরিষ্কার না করা হলে সেখান থেকেই জন্ম নেয় ব্যাকটেরিয়া।
পরিষ্কার করা: সপ্তাহে একদিন বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে কিবোর্ড, ভিডিও গেইম কন্ট্রোল ডিভাইস, মাউস, রিমোট, ট্যাবলেট, স্মার্টফোন ইত্যাদি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নেওয়া উচিত।
মনে রাখুন, টাচস্ক্রিন বা কম্পিউটার মনিটর পরিষ্কার করার সময় ময়লাধুলা ভালো করে ঝেরে নিন। না হলে স্ক্রিনে দাগ পড়বে। আর সুতি কাপড় ব্যবহার করুন।
কার্পেট
বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে, কার্পেট বা পাপোশে প্রতি স্কোয়ারফুটে প্রায় দুইলাখ ব্যাক্টেরিয়া থাকে। আর এ থেকে চামড়ার রোগ হতে পারে।
পরিষ্কার করা: তাই যারা ঘরে কার্পেট বা পাপোশ ব্যবহার করেন তাদের উচিত সপ্তাহে একবার ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্রাশ লাগিয়ে পরিষ্কার করা তারপর কাপড় জীবাণুমুক্ত করার উপাদান ব্যবহার করা।
পার্স বা ব্যাগ
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি যে প্রতিদিনের ব্যবহৃত পার্স বা ব্যাগেও প্রচুর পরিমাণে ব্যাক্টেরিয়া থাকে। কারণ প্রতিদিনের ব্যবহার্য ব্যাগ নিয়ে অনেক জায়গায় যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়। আর সেখানকার জীবাণু লেগে যায় ব্যাগে। ব্যাগ তেমনভাবে পরিষ্কার করাও হয় না।
পরিষ্কার করা: সপ্তাহে অন্তত একবার কাপড় জীবাণুমুক্ত করার তরল দিয়ে ব্যাগ বা পার্স পরিষ্কার করুন।
বিষয়: বিবিধ
২৪০৬ বার পঠিত, ৯৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ আপু সচেতনামূলক পোষ্টের জন্য ।
একটু সচেতনতা অনেক রোগ-জীবানুর আক্রমন থেকে আমাদের কে রক্ষা করতে পারে!
সুন্দর এমন বিষয় উপস্হাপন করায় অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহ জানাচ্ছি!!
পিলাচ + পিলাচ +
(আমাকে নাচানাচি ইমো দিবেন তার আগেই আমি নিজে নিজে নিয়ে নিলাম )
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এখানেও মেয়েদের প্রাধান্য।
কি বলতে চাইছেন বুঝলাম না। মডুকে বললেন নাকি পোস্ট সম্পর্কে বললেন? :
আপনাকে আমার পোস্টে স্বাগতম।
আর স্পঞ্জ, সিঙ্ক কি ছেলেরা ইউজ করে না? যারা বিবাহিত/অবিবাহিত ব্যাচেলর তারা তো অবশ্য করবে।
এটা ঘরের ব্যবহার্য জিনিসকে নিয়ে পোস্ট।
তবে রোগ জীবাণু বলতে যদি ব্যাকটেরিয়া বুঝানো হয়ে থাকে, আমাদের মনে রাখা দরকার সব ব্যাকটেরিয়াকে ‘সেই অর্থে খারাপ বলা যাবেনা ! অনেক উপকারি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে আমাদের চারপাশে! এই জন্য সর্বত্র গণহারে জীবানূ নাশক প্রয়োগ করে সব কিছু ‘জীবানুমুক্ত করার চিন্তা সঠিক নয়, এতে ক্ষতিকর ব্যাক্তেরিয়ার সাথে ভাল ব্যাকটেরিয়া গুলো ও ধ্বংস হবে! এর পাশাপাশি http://www.bdmonitor.net/blog/blogdetail/bloglist/7287/tmirmustafa এই পাতার তথ্য গুলো জানলে মঙ্গল হবে !
বাজারের যে সব টাকার নোট গুলো আমরা হরদম ব্যবহার করি, সে সব নোটেও প্রচুর পরিমান ব্যাকটেরীয়া থাকে এবং এই কাগজের টাকার মাধ্যমে আমরা কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়, তা কখনও চিন্তা করিনা।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুবি গুরুত্বপূর্ণ ও সুন্দর মন্তব্যটি রেখে যাওয়ার জন্য।
আমিও আপনার সাথে মডারেটরদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
স্টিকি পোস্টের জন্য
আমার ব্লগে আপনাকে দেখে বেশ আনন্দিত হলাম। অনেক শুকরিয়া আপুমনি। শুভেচ্ছা রইল।
এখানে এই ফুলটা দিন Click this link
মন্তব্য করতে লগইন করুন