আর দিও না সুখটান-বন্ধ কর হারাম (ধূম) পান-২

লিখেছেন লিখেছেন এস এম আবু নাছের ৩০ অক্টোবর, ২০১৪, ১২:১২:৩৮ রাত



আগের পর্ব পড়ুন এখান থেকে- আর দিও না সুখটান-বন্ধ কর হারাম (ধূম) পান-১

ধূমপানকারী তার ধুমপানের দ্বারা স্ত্রী-পরিজন, সহযাত্রী, বন্ধু বান্ধব ও আশে-পার্শের লোকজনকে কষ্ট দিয়ে থাকে। অনেকে নীরবে কষ্ট সহ্য করে মনে মনে ধূমপান কারীকে অভিশাপ দেন। আবার দু একজন প্রতিবাদ করে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে যান। আমি বাসে ও ট্রেনে বসে অনেক ধূমপানকারীকে আদবের সাথে বলেছি ভাই সিগারেটটা শেষ করুন। আমাদের কষ্ট হচ্ছে। এতে তিনি আমার উপর প্রচন্ড ক্ষেপে গিয়ে বকাবকি করেছেন, আমাকে একটা গাড়ী বা ট্রেন কিনে তাতে আলাদা ভাবে চলাফেরা করার হুকুম দিয়েছেন। আবার এও বলেছেন "মনে হয় গাড়ীটা উনি কিনেই নিয়েছেন"।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় ও প্রমানিত ধূমপানকারীর প্রতিবেশী শারিরিকভাবে অনুরূপ ক্ষতিগ্রস্থ হন যে রূপ ধূমপানকারী হয়ে থাকেন। নিজের যেটুকু ক্ষতি তা না হয় তিনি নিজে বুঝবেন, কিন্তু অন্যের ক্ষতি করছেন, হক্ব নষ্ট করছেন তার দায়ভার কে নিবে? আর এর জবাদিহিতা কি উনাকে করতে হবেনা? অবশ্যই হবে।

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- "যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।" (বুখারী)

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- "আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তোমাদের তিনটি বিষয় ঘৃণা করেন- ১-ভিত্তিহীন ও সনদ-সুত্র বিহীন কথা-বার্তা। ২- অধিকহারে প্রশ্ন করা। ৩- সম্পদ নষ্ট করা।" (বুখারী ও মুসলিম)

ধূমপানকারী ধূমপান করে সম্পদ নষ্ট করে এ ব্যাপারে কারো দ্বি-মত নেই। অপচকারী হিসেবে সে শয়তানের ভাইয়ের খাতায় নাম দেখবে, যদি না তাওবাহ করে ফিরে আসে।

"তিনি তোমাদের জন্য পবিত্র ও ভাল (তাইয়েবাত) বস্তু হালাল করেন আর ক্ষতিকর- নোংড়া (খাবায়িস) জিনিষ হারাম করেন। (২)

আর ধূমপান নিশ্চয়ই খাবায়িস এর অন্তর্ভুক্ত, তাই তা পান করা বৈধ (হালাল) নয়।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন: "তোমরা নিজেদের জীবন ধংশের সম্মুখীন করো না।" (৩)

এ আয়াতের দাবীতেও ধূমপান নিষেধ।) কেননা ধুমপানের কারনে অনেক জীবন বিধংসী রোগ ব্যধি হয়ে থাকে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জাহান্নামীদের খাদ্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন- "এটা তাদের পুষ্টিও যোগাবে না ক্ষুধা ও নিবারণ করবে না।" (৪)

ধুমপানের মধ্যে এ বৈশিষ্ট্যই রয়েছে যে তা পান কারীর পুষ্টির যোগান দেয় না, ক্ষুধাও নেভায় না। ধুমপানের তুলনা জাহান্নামী খাবারের সাথেই করা যায়।

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন- "তোমরা অপচয় করো না। অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই।" (৫)

ধূমপান একটি অপচয়। অনেক এমন অপচয় আছে যাতে মানুষের লাভ-ক্ষতি কিছু নেই। এগুলো সকলের কাছে অন্যায় ও সর্বসম্মতভাবে তা অপচয় বলে গণ্য। কিন্তু ধূমপান এমন একটি অপচয় যাতে শুধুই মানুষের ক্ষতি। কোন লাভই নেই।

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে আমরা দেখতে পাই, কোন পাক ঘরে যদি জানালায় কাচ থাকে অথবা বাল্ব থাকে তাহলে দেখা যায় ধোঁয়ার কারনে তাতে ধীরে ধীরে কালো আবরন পড়ে। এমনি ভাবে ধূমপান কারীর দাতে, মুখে ও ফুসফুসে কালো আবরন তৈরী হয়। কাচের আবরন পরিস্কার করা গেলেও ফুসফুসের কালিমা পরিস্কার করা সম্ভব হয় না। ফলে তাকে অনেক রোগ ব্যধির শিকার হতে হয়। একজন অধুমপায়ী ব্যক্তির চেয়ে একজন ধুমপায়ী অধিকতর উগ্র মেজাজের হয়ে থাকেন। সমাজে যারা বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়ায় তাদের ৯৮% ভাগ ধূমপান করে থাকে। যারা মাদক দ্রব্য সেবন করে তাদের ৯৫% ভাগ প্রথমে ধুমপানে অভ্যস্ত হয়েছে তারপর মাদক সেবন শুরু করেছে। এমনকি ধুমপায়ী মায়ের সন্তান উগ্র স্বভাবের হয়ে থাকে। (৬)

সম্প্রতি উইনকনসিন বিশ্ব বিদ্যালয়ে ৩৭৫০ জন লোকের উপর এক সমীক্ষায় দেখা যায় যে অধুমপায়ীদের চেয়ে ধুমপায়ীদের শ্রবন শক্তি কমার সম্ভাবনা শতকরা ৭০ ভাগ বেশী থাকে। গবেষকরা আরো দেখেছেন যে, একজন ধুমপায়ীর ধূমপানকালীন সময়ে কোন অধুমপায়ী উপস্থিত থাকলে তারও একই সমস্যা দেখা দেবে। (৭)

তাই আসুন সকলে মিলে আমরা আমাদের সমাজকে ধূমপান মুক্ত করার চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের সকলকে হিদায়াত নসীব করুন। আমীন।

==================0==================

১. বুখারি – ৮০৪

২. সূরা আল-আরাফ: ১৫৭

৩. সূরা আল-বাকারা: ১৯৫

৪. সূরা আল-গাশিয়াহ: ৭

৫. সুরা আল-ইসরা: ২৭

৬. দৈনিক ইনকিলাব তারিখ ১৫-১২-২০০০ ইং

৭. সাপ্তাহিক আরাফাত বর্ষ ৪৫ সংখ্যা ১, ১৮ই আগস্ট ২০০৩

[পূনশ্চঃ লেখাটির কিছু তথ্য Preaching Authentic Islam in Bangla ব্লগ থেকে নেওয়া হয়েছে]

বিষয়: বিবিধ

২৪৮২ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

279484
৩০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:৪৮
আফরা লিখেছেন : জর্দা খাওয়াও কি হারাম নাকি ভাইয়া ?
৩০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০১:১৭
223234
এস এম আবু নাছের লিখেছেন : আলেমগণ এই মর্মেই ফাতওয়া দিয়েছেন যে, জর্দা খাওয়াও হারাম। কারন তাতে যেমন নেশা হয়, তেমনি তা ক্ষতিকারকও বটে। মন্তব্যের জন্য মোবারকবাদ। আর প্রথম মন্তব্যকারী হিসেবে এক্সট্রা ধন্যবাদ তো থাকছেই। Good Luck Good Luck Good Luck
279509
৩০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৪:২৯
কাহাফ লিখেছেন :

একটি আদর্শ সমাজ বিনির্মানের মহান উদ্দেশ্য নিয়ে হাজির হয় আপনার প্রতি টা লেখনী! আজকের উপস্হাপনাও বিরাট গুরুত্বপুর্ণ।

সামগ্রিক বিবেচনায়'ধুমপান' আবশ্যই বর্জনীয় একটা বিষয়,তবে সাধারণ ভাবে তা হারাম ঘোষিত নয়।অনুরুপ ভাবে- জ্বর্দা ইত্যাদিও পরিহার যোগ্য হলেও তাও হারাম নয়।
৩০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১০:৪৬
223294
এস এম আবু নাছের লিখেছেন : কাহাফ ভাই, অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। তবে আরও কিছুটা তথ্য দিলাম, হয়তো কাজে লাগবে যে, "ধূমপান হারাম" এই বিষয়ে। যদিও তা সরাসরি কুরআন ও হাদীসে সরাসরি প্রমাণ নেই। কিন্তু আলেমগণ কুরআন ও হাদীস থেকে মাসয়ালা বের করে তা দেখিয়েছেন যে, হারাম।

প্রশ্ন: সৌদী আরবের সাবেক প্রধান মুফতি আল্লামা শাইখ আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায রহমাতুল্লাহ আলাইহি কে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, ধূমপানের হুকুম কি?

উত্তর: ধূমপান হারাম, কেননা তা অপবিত্র এবং বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি বহন করে, আর আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দাদের জন্য ভাল পবিত্র খাবার ও পানীয় হালাল করেছেন, পক্ষান্তরে অপবিত্র জিনিস তাদের উপর হারাম করেছেন।

তিনি বলেন :
﴿ يَسۡ‍َٔلُونَكَ مَاذَآ أُحِلَّ لَهُمۡۖ قُلۡ أُحِلَّ لَكُمُ ٱلطَّيِّبَٰتُ ﴾ [المائ‍دة: ٤]
‘‘তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে যে, তাদের জন্য কি হালাল করা হয়েছে? বলুন: সকল প্রকার ভাল পবিত্র জিনিস তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে।’’ [সূরা মায়েদা: ৪]

তিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গুণাগুণের ব্যাপারে বলেন:
﴿يَأۡمُرُهُم بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَىٰهُمۡ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ ﴾ [الاعراف: ١٥٧]
“তিনি তাদেরকে ভাল কাজের নির্দেশ দেন এবং মন্দ কাজ হতে নিষেধ করেন এবং তাদের জন্য পবিত্র জিনিস হালাল করেছেন এবং অপবিত্র জিনিস তাদের উপর হারাম করেছেন।” [সূরা আ‘রাফ : ১৫৭]

আর সকল প্রকার ধূমপান অপবিত্র, এর মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। এমনিভাবে সকল প্রকার নেশা জাতীয় জিনিস অপবিত্র, কাজেই সিগারেট পান করা, তা বিক্রি করা এবং এর ব্যবসা করা কোনো ক্রমেই জায়েয নেই, যেমন মদ। ধূমপায়ী এবং এর ব্যবসাকারীর উপর ওয়াজিব হলো তাওবা করে বিনীত হয়ে আল্লাহর নিকট ফিরে আসা এবং অতীত কর্মের উপর লজ্জিত হওয়ার সাথে সাথে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজে ফিরে না আসার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট খাঁটি তাওবা করবে আল্লাহ তার তাওবা কবুল করে থাকেন।

তিনি বলেন:
﴿ وَتُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ٣١ ﴾ [النور: ٣١]
“হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, হয়তো তোমরা সফলকাম হতে পারবে।” [সূরা নূর: ৩১]

অন্যত্র তিনি বলেন:
﴿ وَإِنِّي لَغَفَّارٞ لِّمَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ صَٰلِحٗا ثُمَّ ٱهۡتَدَىٰ ٨٢ ﴾ [طه: ٨٢]
“আমি ক্ষমাশীল সেই ব্যক্তির জন্য, যে ব্যক্তি তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, অতঃপর হেদায়েত প্রাপ্ত হয়।” [সূরা তাহা : ৮২]

[ফাতাওয়া ইসলামীয়্যা (৩/৪৪২-৪৪৩)]
৩০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১০:৪৯
223295
এস এম আবু নাছের লিখেছেন : প্রশ্ন/ আল্লামা শাইখ মুহাম্মদ ইবন সালেহ আল উসাইমীন রহমাতুল্লাহ আলাইহি (সৌদী আরবের সর্বোচ্চ উলামা কমিটির সাবেক সদস্য) কে এভাবে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, মহামান্য শাইখের নিকট নিবেদন এই, ধূমপান ও হুক্কা পান করার হুকুম কি? এর দলীলসহ বিস্তারিত বর্ণনা করে বাধিত করবেন।

উত্তর : ধূমপান এবং হুক্কা পান করা হারাম।
দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَلَا تَقۡتُلُوٓاْ أَنفُسَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُمۡ رَحِيمٗا ﴾ [النساء: ٢٩]
অর্থাৎ: “তোমরা তোমাদের নাফসকে হত্যা করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহশীল।” [সূরা নিসা: ২৯]

তিনি আরও বলেন:
﴿ وَلَا تُلۡقُواْ بِأَيۡدِيكُمۡ إِلَى ٱلتَّهۡلُكَةِ ﴾ [البقرة: ١٩٥]
“তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিওনা।” [সূরা বাকারা : ১৯৫]

ডাক্তারি শাস্ত্রে রয়েছে যে, এগুলো গ্রহণ করা ক্ষতিকর, আর যদি তা ক্ষতিকর হয় তবে অবশ্যই হারাম।
দলীল: আল্লাহ বলেন:
﴿ وَلَا تُؤۡتُواْ ٱلسُّفَهَآءَ أَمۡوَٰلَكُمُ ٱلَّتِي جَعَلَ ٱللَّهُ لَكُمۡ قِيَٰمٗا ﴾ [النساء: ٥]
“আর যে সম্পদকে আল্লাহ তোমাদের জীবন যাত্রার অবলম্বন করেছেন, তা অর্বাচীনদের হাতে তুলে দিও না।” [সূরা নিসা: ৫]

আমাদের সম্পদকে নির্বোধদের হাতে দিতে নিষেধ করেছেন, কেননা তারা তা অপব্যয় করে বিনাস করে ফেলবে। আর এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, ধূমপান এবং হুক্কা ক্রয়ে টাকা ব্যয় করা অপব্যয় ও ধ্বংসেরই শামীল। কাজেই এ আয়াতের দলীল দ্বারাও তা নিষেধ করা হয়েছে।

হাদীসের দলীল হলো:
«نَهَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ إِضَاعَةِ المَالِ»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পদ নষ্ট করতে নিষেধ করেছেন।”[বুখারী: ১৪৭৭]

আর হুক্কা ও সিগারেট পানে তা ব্যয় করা মাল নষ্ট করার শামিল। কেননা

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لا ضرر ولا ضرار»
“নিজের কোনো অনিষ্টতা বা ক্ষতি এবং অন্য কারো ক্ষতি করা যাবে না”। এগুলো গ্রহণ করায় ক্ষতি আবশ্যকীয় এবং তা গ্রহণ করা মানুষকে এর সাথে সম্পৃক্ত করে দেয়। নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি যখন তা পানের জন্য খোঁজে না পায় তখন তার মন এবং গোটা দুনিয়া তার উপর সংকীর্ণ হয়ে পড়ে, তখন সে অপ্রয়োজনীয় জিনিস তার শরীরে প্রবেশ করায়।

[ফাতাওয়া ইসলামিয়া - ৩/৪৪৩-৪৪৪]
৩০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১০:৫২
223297
এস এম আবু নাছের লিখেছেন : প্রশ্ন/ এ প্রশ্নটি করা হয়েছিল আল্লামা ডক্টর আব্দুল্লাহ ইবন আব্দুর রহমান আল জিবরীনকে যে, তামাক এবং হুক্কার ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কি? এগুলো পান করা বা গ্রহণ করার বিধান কি? কারো প্রতিবেশী এতে আশক্ত হলে তার সাথে সে কি ভাবে লেনদেন করবে?

উত্তর: এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, তামাক, হুক্কা এবং শাম্মাহ (তামাক জাতীয় জিনিস নাক দিয়ে যার ঘ্রাণ নেয়া হয়) ইত্যাদি সবই হারাম, কেননা এসব কিছুই অপবিত্র।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ﴾ [الاعراف: ١٥٧]
“এবং তাদের জন্য পবিত্র জিনিস হালাল করেছেন এবং অপবিত্র জিনিস তাদের উপর হারাম করেছেন।” [সূরা আরাফ: ১৫৭]

তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং ইহা এমন কিছু জটিল রোগ সৃষ্টি করে যা মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় বা এতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে থাকে। অথচ আল্লাহ বলেছেন:
﴿ وَلَا تَقۡتُلُوٓاْ أَنفُسَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُمۡ رَحِيمٗا ﴾ [النساء: ٢٩]
“তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না” [সূরা নিসা: ২৯]
তিনি আরও বলেন:
﴿ وَلَا تُلۡقُواْ بِأَيۡدِيكُمۡ إِلَى ٱلتَّهۡلُكَةِ ﴾ [البقرة: ١٩٥]
“তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিওনা।” [সূরা বাকারা: ১৯৫]

এবং এতে বিনা উপকারে মূল্যবান সম্পদ নষ্ট ও অপব্যয় করা হয়, আর অপব্যয়কারীগণ শয়তানের ভাই।[ইহা সূরা ইসরার ২৬ও ২৭ নং আয়াতের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে]

এতে যারা আক্রান্ত তাদেরকে বলব: কালবিলম্ব না করে তাড়াতাড়ি এগুলো থেকে ফিরে এসে আল্লাহর নিকট তাওবা করুন এবং ভবিষ্যতে কখনো তা গ্রহণ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাঁর নিকট প্রার্থনা করুন এবং তা থেকে মুক্ত ও এর ব্যথা থেকে নিরাময় হওয়া পর্যন্ত কিছু দিন ধৈর্য ধারণ করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ আরোগ্য দানকারী।

[ফাতাওয়া ইসলামিয়া: (৩/৪৪৬)]
৩০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১০:৫৫
223302
এস এম আবু নাছের লিখেছেন : প্রশ্ন/ এ প্রশ্নটি করা হয়েছিল ফাতাওয়ার স্থায়ী কমিটিকে: সিগারেট ও হুক্কার হুকুম কি? তা হারাম না মাকরুহ? যদি হারাম হয় তবে কুরআন ও হাদীস থেকে এর দলীল কি? অতঃপর হজ্জ এবং উমরায় মুহরিম অবস্থায় সিগারেট ও হুক্কা পান করার হুকুম কি?

উত্তর: সিগারেট ও হুক্কা পান করা হারাম, কারণ এতে ক্ষতি রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لا ضرر ولا ضرار»
নিজের কোনো অনিষ্টতা বা ক্ষতি এবং অন্য কারো ক্ষতি করা যাবে না) এবং তা অপবিত্র।

আল্লাহ বলেন:
﴿ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ ﴾ [الاعراف: ١٥٧]
“এবং তাদের জন্য পবিত্র জিনিস হালাল করেছেন এবং অপবিত্র জিনিস তাদের উপর হারাম করেছেন।” [সূরা আরাফ: ১৫৭।] এবং এতে টাকা ব্যয় করা অপব্যয়ের শামিল, অথচ আল্লাহ এ থেকে নিষেধ করেছেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَلَا تُسۡرِفُوٓاْۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُسۡرِفِينَ﴾ [الانعام: ١٤١، الأعراف: 31]
“তোমরা অপব্যয় করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ অপব্যয়কারীকে পছন্দ করেন না।” [সূরা আন‘আম: ১৪১, আরাফ: ৩১]

শয়তান যখন মানুষকে নিয়ে খেলা করে তখন সে এগুলো পান করে থাকে ফলে সে অন্যায় করে, কাজেই তার উপর ওয়াজিব হলো তাওবা করা এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা, হয়তো আল্লাহ তার তাওবা কবুল করে ক্ষমা করতে পারেন। হজ্জ বা উমরাহ অবস্থায় যদি কেউ তা পান করে তবে তার হজ্জ এবং উমরাহ বাতিল হবে না।

হে আল্লাহ! আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর ও তাঁর পরিবার পরিজন এবং সাহাবীগণের উপর সালাত ও সালাম পেশ করুন।

[সৌদী স্থায়ী কমিটির ফাতাওয়া - ২২/২০৪-২০৫]

৩০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১১:৪৩
223310
কাহাফ লিখেছেন :
পড়লাম,অনেক ধন্যবাদ আবারো!
জাযাকুমুল্লাহু খাইরান ফিদ্ দুনিয়া ওয়ালআখিরাহ.....।Applause Applause Applause
৩০ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ১২:০৫
223317
এস এম আবু নাছের লিখেছেন : বারাকাললাহু ফিকুম। Good Luck Good Luck Good Luck
279524
৩০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৬:১৭
তহুরা লিখেছেন :






৩০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১০:৩৯
223293
এস এম আবু নাছের লিখেছেন : ওরে বাপরে! কত্ত ছবি। ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ।Yahoo! Fighter Yahoo! Fighter Yahoo! Fighter
279538
৩০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৮:২৮
মামুন লিখেছেন : লিখাটি পড়লাম। ভালো লেগেছে। ভালো লাগা রেখে গেলাম। ধন্যবাদ। Rose Rose
৩০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১০:৫৬
223303
এস এম আবু নাছের লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ গ্রহন করবেন। আপনার ভালো লাগা আমায় আপ্লুত করলো।
279638
৩০ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:৫৪
প্রিয় লেখকদের লেখা লিখেছেন : জাযাকাল্লাহু খাইর। আমি এই সংক্রান্ত হাদিস আর কুরানের আয়াত খুঁজছিলাম মনে মনে। পেয়ে গেলাম আপনার লেখা থেকে। আল্লাহ্‌ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। আমীন।
৩০ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:৪৮
223378
এস এম আবু নাছের লিখেছেন : বারাকাল্লাহু ফিকুম। আপনার মন্তব্যের জন্য রইলো অনেক অনেক মোবারকবাদ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করে নিন। আমীন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File