মুসলিম মোরা পরস্পর ভাই ভাই-চর্বিত চর্বনে কেন সম্প্রীতি হারাই
লিখেছেন লিখেছেন এস এম আবু নাছের ২৪ অক্টোবর, ২০১৪, ১০:২৭:২১ রাত
বেশ কিছুদিন ধরে সোশাল মিডিয়ায় একটা জিনিস লক্ষ্য করছি যে অনেক ভাইয়েরা ইসলামের খেদমত করার স্বার্থে পক্ষান্তরে নিজের অজান্তেই ইসলামের হয়ত ক্ষতিই করছেন। দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার জন্য এখানে এসে তারা কিছুটা হলেও চর্বিত চর্বনে নিজেকে ব্যস্ত রাখছেন কখনও কখনও। যা সত্যিই দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত। জানিনা ছোট মুখে বড় কথা হয়ে গেল কিনা? তবে আমার অনুধাবন তাই বলছে।
অনেকেই এই ফেসবুকে নির্লজ্জের মত জ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ আলেমগনের বা মুজাহিদ্গনের পোষ্টমর্টেম করছেন, আলেমদের হাজারো ভুল ধরে তাদের হেয় করছেন যা মোটেই সাধারন লোকের কাজ নয়। এমনকি পর্যাপ্ত বা যথেষ্ট যোগ্যতা অর্জন ব্যতিরেকে জ্ঞানের ছাত্রদেরও নয়। আমি ঠিক বলতে পারছিনা যে তারা কেন এই কাজ করছেন, তবে এটুকু নিশ্চিত ভাবেই বলতে পারি যে এরকম যত্রতত্র এই উম্মাহর আলেম সমাজকে নিয়ে, মুজাহিদগনদের নিয়ে উল্টা পাল্টা মন্তব্যে আর যাই হোক মুসলিম সমাজের কোন উপকার হবেনা।
কেন জানিনা? তারা কথা তোলেন, শায়খ আব্দুল্লাহ আযযাম, উস্তাদ সায়িদ কুতুব এবং আনোয়ার আল আওলাকি, আবুল আলা মওদূদী রাহিঃ সম্পর্কে। আবার আরও একদিক থেকে কথা বলা হয় শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী রাহিঃ, শাইখ মতিউর রহমান মাদানী, ডা. জাকির নায়েক, ডঃ বিলাল ফিলিপস এর মত নন্দিত দাঈ ও আলেমদের নিয়ে।
আলেমদের বলা হচ্ছে দরবারী আলেম। তাও আবার সেই সকল আলেম সম্পর্কে যারা বর্তমানে সারা পৃথিবীতে দ্বীনের দাওয়াতের ক্ষেত্রে রেখে চলেছেন অবিস্মরনীয় ভুমিকা, সঠিক দ্বীন পৌছানোর কাজ নিজের ধ্যান জ্ঞানে পরিনত করেছেন।
কিছু ভাই ব্যস্ত রয়েছেন, জীবন বাজি রেখে দ্বীনের জন্য লড়াই করে যাওয়া মুজাহিদীনদের মাঝে কাকে খারেজী ট্যাগ, কাকে পথভ্রষ্ট বলে গালি দেওয়া বা ইউটোপিয়ান জোম্বি বলে গালি দেওয়া যায় সেই কাজে। আমারত মনে হয় সত্যি যদি কারও দাওয়াতি কাজের ইচ্ছা থেকে থাকে তাহলে এরকম মুর্খতা কোনক্রমেই প্রত্যাশিত নয়।
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যতটুকু জানি যে, আলেমগনের ভুল ধরা বা শুধরিয়ে দেওয়ার অধিকার শুধু আলেমগনের মাঝেই সীমাবদ্ধ। আমরা দু কলম বিদ্যা শিখে কেন এই বড় বড় বিষয়গুলোতে মাথা ঘামাতে যাই ঠিক বোধগম্য হয়না। আপনি যেসকল আলেম বা স্কলারের মত অনুসরন করেন, তা মেনে চলুন। কিন্তু তার অর্থ আলাদা মত থাকবেনা তা কিভাবে ভেবে নিচ্ছেন? এমন অনেক বিষয়েই তো আলেম সমাজও এখনও এক হতে পারেননি সেখানে আপনি বা আমি কোন ছার। কথায় কথায় তাকফির করা, কথায় কথায় খারেজি ট্যাগ লাগানো বা ফিতনাবাজ ইত্যাদি বলার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে ভাই?
এমনকি অনেক ভাইকে দেখছি যে উনারা সোশাল মিডিয়া এসেও আলেমগনের লেখাতে যাচ্ছে তাই বলে যাচ্ছেন। ন্যুনতম সৌজন্যতা বা ভদ্রতার লেশমাত্র থাকছেনা কথায়।
যাবের ইবনে আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা আলেমদের সাথে বড়াই করা এবং মূর্খদের সাথে বিতর্ক করার উদ্দেশ্যে ইলম শিক্ষা করো না এবং ইলম দ্বারা মজলিশসমূহকে বিতর্কিত করো না। যে ব্যক্তি ইহা করে তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম! জাহান্নাম। [ইবনে মাযাহ: ২৫৪]
সেদিন ফেসবুকে শাইখ আহমাদ উল্লাহ ভাইয়ের এক স্ট্যাটাসে এক ভাই যা তা মন্তব্য করতে করতে এক পর্যায়ে বলেই ফেললেন যে আপনার কথায় বিদায়াতীদের গন্ধ পাচ্ছি। শাইখের উত্তরটিও ছিল বেশ পছন্দ করার মত- আল্লাহ আপনার ঘ্রান শক্তি আরও প্রখর করুন।
এক বাবা আর তার ছেলের ঘটনা- “বাবা প্রায় দশ বছর আগে সিএসই থেকে পাশ করেছেন আর তাই সঙ্গত কারনে কম্পিউটার এর অনেক বিষয়েই জানাশোনা মাশাআল্লাহ ভাল। তার ছেলে নব্য কিশোর, গুগল মামার সাহায্যে একটা ভিডিও ডাউনলোড করেছে যে কিভাবে কম্পিউটার চালাতে হয়, অপারেট করতে হয়। আর তাই দৌড়ে এসে বাড়ি হুলুস্থুল করে বাবাকে বলছে, বাবা, তোমার মাউস ধরায় ভুল হচ্ছে, তোমার কীবোর্ড প্রেস করায় শব্দ হচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আজ যে সকল আলেম তাদের জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করে দ্বীন শিক্ষা করলেন তাদের শেখাচ্ছে জাহেল। তথা আলেমের পোষ্টমর্টেম করছে জাহেল। বাড়ির বাইরে একটা পটকা ফোটারশব্দে যারা বাথরুমের দিকে দৌড় দেয় তারা কথা বলছে মুজাহিদীনদের নিয়ে। খুব খুব কষ্টলাগে এদের এই বাড়াবাড়ি দেখলে। আবার তাদের লেখাতে কোন ইসলাহ বা নসীহাহ যেটাই কেউ দিন না কেন? উনারা সব কিছুকেই ডিফেন্ড করবেন। নিজের যেন কোন ভুলই নেই।
ভার্সিটিতে পড়াতে যখন মেসে থাকতাম, তখন বুয়াকে কোন বিষয়ে ডাকলে বা জিজ্ঞেস করলে তাদের স্বভাবই ছিল ডিফেন্ড করার। এরকমই একদিন আমি বুয়াকে ডাকছিলাম যে, আজকের তরকারিটা বেশ ভাল হয়েছে আর এভাবেই রান্না করার চেষ্টা করেন। উনি এসে প্রথমেই কিছু না শুনেই শুরু করে দিলেন, মামা আজকে হইছে কি- চুলা ভাল জ্বলছিলনা, তেল একটু কম ছিল ইত্যাদি ইত্যাদি। শেষে যখন বললাম যে, না খালা, আজ রান্না বেশ ভালই হয়েছে তখন- “ও তাই” বলে বিদায় নিল। ঠিক এরকম স্বভাব রয়েছে কিছু ভাইদের মাঝেও। মন্তব্য বুঝুক আর না বুঝুক উনার প্রথম এবং প্রধান কাজ ডিফেন্ড করা।
অনেক ভাইকে দেখছি কোন দল বা মতের ভুল তুলে ধরার জন্য পোষ্টের শুরুতে লিখছেন, ওরে আল্লাহ! কি করি বলেন; একটু হাসুন; লুল রে লুল; এরা যে কবে হেদায়েত হবে; ইত্যাদি বিভিন্ন রকম শব্দ বা বাক্য। আমার যতটুকু মনে হয় যে এভাবে কারও ভুল শোধরানো যায়না। বরং চটকদার ও মজাদার কথা বলে শুধু হয়ত মজা দেওয়া যায় বা মজা নেওয়া যায়। তখন বিষয়টি দাওয়াহ না হয়ে জোক্স হয়ে যায়। যার ফলে হয়ত পোষ্টে কিছু লাইক পাওয়া যায় কিন্তু আল্লাহর খুশি বা লাইক পাওয়া কি সম্ভব হয়? তবে আমাদের এই তিরস্কার বা অন্যকে নিয়ে যে মজা করছি তার জবাব কি আমাদের দিতে হবেনা? আর যাদের এভাবে কোন ভুলের জন্য বলছেন তারা যদি তা থেকে তাওবাহ করে গিয়ে থাকে তবে নিজের বাঁচার জায়গাটা কই? রাসুল সাঃ এর এক হাদীস থেকে আমরা জানি যে-
"যদি কেউ কোন কৃত পাপের জন্য তাওবাহ করার পরেও অপর কোনব্যক্তি তাকে ঐ পাপের ব্যাপারে খোঁটা দেয় তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকেও ঐপাপের দ্বারা লাঞ্ছিত না করে মৃত্যু দিবেন না"।
অনেক শক্ত কথা। আসুন শুধু মজা নেওয়ার জন্য কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠীর সমালোচনা না করি। প্রকৃত দাওয়াতের পদ্ধতি অনুসরন করে চলি নতুবা কাউকে তিরস্কার না করি। প্রয়োজন হলে গঠনমূলক সমালোচনা করি। রাসুল সাঃ বলেছেন-
"যদি কথা বল তবে ভাল বল নতুবা চুপ থাক"
আমাদের জ্ঞান অর্জন আর তার ব্যবহারের একটা লক্ষ্য আছে। আর তা হল জান্নাত পাওয়ার আশা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর কাছে থেকে পুরষ্কার নেওয়া। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে যা মনে হচ্ছে যে জান্নাত নয় শুধু জ্ঞান অর্জনটাই লক্ষ্য আর তার মাধ্যমে জ্ঞান জাহির করে নিজেকে প্রচার বা অন্যকে ছোট করাই উদ্দেশ্য।
এখন আমি কয়েকটি বিষয় নিয়েসংক্ষেপে আলোকপাত করি। তা হল...
১.আপনারা যেসকল আলেমদের বা মুজাহিদ্গনের সমালোচনা করছেন তাদের ইজতিহাদ, জ্ঞান, প্রজ্ঞা আর খেদমতগুলো শুধু পড়ে দেখা নয় বরং খোলা মন নিয়ে স্বয়ং বিচার করুন। নিজেকে কোথায় হারিয়ে ফেলবেন। আমরা কোন ছাড় ! যে উনাদের নিয়ে এসব মন্তব্য করি।
২.সারা জীবন উনারা চিন্তা করেছেন দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার, ইসলামের প্রচার আর প্রসারনের। সেখানে আমাদের মত মানুষ কোথায়? আমরা কেন তাদের নিয়ে অযথা মন্তব্য করি।
৩. উনারা অনেকে দিয়েছেন জীবন, অনেকে কারাবরন করেছেন,অবর্ননীয় সব দুঃখ আর কষ্ট সহ্য করেছেন, গুলির মুখে আর শত্রুর অত্যাচার বুক পেতে নিয়েছেন এই আপনার আমার কাছে দ্বীন আল ইসলামকে পৌঁছে দেওয়ার নিমিত্তেই। সেখানে আপনি ইসলাম প্রচার আর প্রতিষ্ঠার জন্য কয়দিন একজনের একটা চড় খেয়েছেন বা বকা খেয়েছেন।
৪. আজ ও যারা জীবিত আছেন তাদের কতজন রাতের পর রাত জেগে দ্বীনের গবেষনায় নিজেকে ব্যপৃত রেখেছেন, কত নির্ঘুম রাত হয়ত তাদের কেটে গেছে দ্বীনের খেদমতের জন্য। সেখানে আমরা কয়দিন পেরেছি আরামের বিছানায় না গিয়ে এই উম্মাহর কল্যানে খেদমত করতে, দ্বীনের অধ্যয়ন এর মাঝে নিজেকে ব্যপৃত রাখতে?
৫. উনাদের কতজন আজ সারা বিশ্বে ছুটে চলেছেন দ্বীনের দাওয়াতের কাজে। সেখানে আমি, আপনি কি করছি? কয়টা দেশ নয়, কয়টা শহরে ঘুরেছি এই দাওয়াতী কাজের মহান উদ্দেশ্য নিয়ে?
৬.তাদের দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে আজ কত মানুষ ইসলামের দিকে আকৃষ্ঠ হয়েছে ? কত মানুষের তারা আজ শ্রদ্ধেয় ও মান্যবর শিক্ষক ও গুরুজন। তাদেরও রয়েছে আপনার আমার মত হাজারও ছাত্র, যাদের মাঝে দ্বীন বিতরন করে তারা তৈরি করে চলেছেন ভবিষ্যতের দাঈ। যারা মানুষের কাছে পৌছাবেন দ্বীনের দাওয়াত যখন হয়ত আমরা থাকবনা, তারা থাকবেন না। কিন্তু আপনি কি করতে পেরেছেন ? আমি কি পেরেছি ?
৭. যত বিষয়েই বলে যাই শুধু দেখতে পাবো, খুঁজে পাবো নিজের ক্ষুদ্রতা, নিজের সীমাবদ্ধতা, নিজের অলসতা, অযোগ্যতা, দৈন্যতা আর মূর্খতা।
আমার উপরের কথাগুলো শুনে অনেক ভাই বলে বসবেন যে তাদের সম্পর্কে অনেক বড় আলেমও এমনি ফতোয়া দিয়েছেন। আবার হয়ত কেউ বলবেন যে তারা একপেশে কথা বলেন আর অন্য বিষয়ে চুপ থাকেন। আবার আরও কেউ বলতে পারেন যে অমুক দাঈ ত কোন দারুল উলুমে পড়েন নি, উনার ত কোন শিক্ষক নেই, কেউ বলেন যে উনিতো ইসলামের শিক্ষায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহন করেন নি, উনিতো গতানুগতিক বা জেনারেল বাংলা, ইংরেজি এগুলো শিক্ষায় শিক্ষিত তাই উনাদের এই করা যাবেনা ঐ করা যাবেনা ইত্যাদি ইত্যাদি। আরে বাবা !! ত উনাদের না হয় সীমাবদ্ধতা থাকতেই পারে। কিন্তু আপনি , আমি কোন পর্যায়ের যে তাদের ঢালাওভাবে সমালোচনা করছি? আর তাদের কারও সম্পর্কে যদি আলেমগন সমালোচনা করে থাকেন তাহলে আপনি তা থেকে জ্ঞান অর্জন করেন কিন্তু এই নির্লজ্জভাবে তাদেরকে ছোট করে আপনার স্বার্থটা কোথায়? আলেমগন যেমন উনাদের বিষয়ে ভুল ধরেছেন বা সংশোধনী দিয়েছেন তেমনি প্রচারের কাজটাও আলেমগনের উপরেই ছেড়ে দেন ভাই। আমরা যারা কুরআন আর হাদীস পড়ে আরবি অর্থটাও সঠিকভাবে অনুধাবনে অক্ষম তাদের এই বিলাসিতা, অজ্ঞতা, মুর্খতা বা ধৃষ্টতা সত্যি বড় অদ্ভুত, বড্ড বেমানান।
এখন সেই সকল ভাইদের বলছি...
ক. মানুষ মাত্রই ভুল করাটা স্বাভাবিক। একমাত্র রাসুল সাঃ ছাড়া কোন মানুষই ত ভুলের উর্দ্ধে নয়। তাই উনাদেরও ছোট খাটো ভুল ত থাকতেই পারে। আমরা তাদের ভুল গুলো বাদ দিয়ে উনারা দ্বীনের যে খেদমত করে গেছেন তার সন্ধান করি ও তাদের কে সেই খেদমতের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন কবুল করে নেন সেই দুয়া করি। কেন তাদের ভুল গুলো নিয়ে আমরা এভাবে তাদের দোষারোপ করছি? উনাদের এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটিগুলো নিয়ে উনাদের সমালোচনা করা নিশ্চয় আমাদের মানায় না। উনারা যদি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ছোট খাটো ভুলও করে থাকেন তবেও নেক নিয়্যাহ থাকার কারনে উনারা পাবেন একটি সওয়াব। কিন্তু আপনি আমি কি করছি?
খ. আরও একটি কথা, দ্বীনের খেদমত আল্লাহ এক এক জনের কাছে থেকে একেক ভাবে কবুল করেন। কেউ তার লেখনী দিয়ে, কেউ কথার দ্বারা, কেউ অর্থ দ্বারা,কেউ বা স্বশরীরে, কেউবা জীবন দিয়ে। যাই হোক সবার উদ্দেশ্য একই যে তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চান। হ্যাঁ হতে পারে এখানে কোন বিষয়ে একটু ত্রুটি থাকতেই পারে কারন কেউ ত রাসুল সাঃ ও সাহাবা রাঃ এর মত এমন স্বর্নযুগের মানুষ নয়। কেউ মানুষের আক্বীদা পরিশুদ্ধির জন্য দাওয়াত দিচ্ছেন, কেউ বিদায়াতের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, কেউ মানুষকে জিহাদের ব্যাপারে অনুপ্রেরনা যোগাচ্ছেন, আবার কেউ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে ইসলামের আলো পৌছিয়ে দেওয়ার মহান সাধনায় ব্যপৃত রয়েছেন। তাই কারও অবদানই খাট নয়। কাউকে হেয় করা ত নয়ই বরং উনাদের সম্পর্কে খারাপ ধারনা রাখাও ঠিক না। আমাদের উচিত উনাদের ভালো বিষয়গুলোমেনে নেওয়া আর ত্রুটিপুর্ন বিষয় থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রেখে চলা, আর উনাদের জন্য দুয়া করা। আবারও বলছি, ভাই আমি আপনি কে? যে আমরা শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রাহি), শাইখ আকরামুযযামান, ড.সাইফুল্লাহ, ড. বিলাল ফিলিপস, শায়খ আব্দুল্লাহ আযযাম, উস্তাদ সায়িদ কুতুব, ইমাম আওলাকি, আবুল আলা মওদূদী, ডাঃ জাকির নায়েক বা শাইখ মতিউর রহমান মাদানী সম্পর্কে কটু মন্তব্য করার?
গ. আগে নিজে দ্বীনের খেদমত করুন, গবেষনা করুন, নিজেকে তৈরি করুন, নিজের পরিশুদ্ধি নিয়ে ভাবুন, তাকওয়ার গুনে বলীয়ান হওন আর তার পরে না আপনি বলতে পারবেন তাদের নিয়ে কিছু কথা, তবে তাও কটু মন্তব্য বা অপমানের স্বার্থে ত অবশ্যই নয়।নিজেদের মাঝে এই দ্বন্দ করছি আমরা আর তার সুযোগ নিচ্ছে বিধর্মী ও কাফির, মুশরিকগন।
আসুন আমরা সকলেই দ্বীনের সঠিক পথে চলি। যারা দ্বীনের খেদমত করে গেছেন তাদের সম্পর্কে সুধারনা পোষনপু্র্ব্বক দুয়া করি যেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের জান্নাত নসীব করেন, তাদের ভুল ত্রুটি ক্ষমা করেন, আমীন।
আর আমরা নিজেদের মাঝে দলাদলি ও ভেদাভেদের এই নোংরা কার্যকলাপ বন্ধ করি। ছোটখাট কোন ভুল পেলেই আর এক দ্বীনি ভাইয়ের চরিত্র হননের চেষ্টায় নিজেকে ব্যপৃত না রাখি, নিজের মতের সাথে সামান্য অমিল হলেই অন্যকে গালিগালাজ ও তাকফির করা থেকে বিরত থাকি। দাওয়াহর কাজে এসে নিজেকে তার বিপরীতমুখি না করি বরং মানুষের সামনে রোল মডেল স্থাপন করি। সহানুভুতি, সহমর্মিতা, ক্ষমা ও ভালবাসার মাধ্যমে দ্বীনের বন্ধন কে আরও মজবুত করি।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হক্ব কথা বোঝার তাওফিক দান করুন, আমাদের সবার নিয়্যাহ সঠিক করুন, আমাদের সবাইকে জান্নাতুল ফিরদাউসে ভাই-ভাই ও বন্ধুহিসেবে থাকার তাওফিক দিন। আমীন।
(সবশেষে, আমি ব্যক্তিগত ভাবে সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি যদি লিখায় কোন অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়ে থাকে বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে কারও মনে সামান্য আঘাত করে থাকি। আমি নিজেই অনেক ক্ষুদ্র জ্ঞানের অধিকারী। অনেক কম জানি। তাই আরও শিখতে চাই, জানতে চাই আপনাদের পাশে থেকে)
এস এম আবু নাছের
২২ জুন ২০১৪ ঈসায়ী
বিষয়: বিবিধ
২৪৫১ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন