তাবলীগের বিরোধিতা করে লাভ কী? আসুন, জামাত,হেফাজত,তাবলীগ সবাই একসাথে দ্বীনের কাজ করি। সবাই একে অপরকে বুঝার চেষ্টা করি।
লিখেছেন লিখেছেন রাজাকারের বেয়াই ১২ নভেম্বর, ২০১৪, ০৩:৫০:২৫ দুপুর
দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনত,যেন ফেরাউনের গালে শিশু মুসার চপেটাঘাত
ফেরাউনের প্রাসাদে শিশু মুসা। আদর করার
জন্যে মুসাকে কোলে তোলে নিল
ফেরাউন।
শিশু মুসা ফেরাউনের গালে জোরে একটা থাপ্পড়
বসিয়ে দিলেন।
ফেরাউন থাপ্পড় খেয়ে হতভম্ব।
বলে উঠল,
আরে এই শিশুই তো সেই শিশু,
জলদি এরে জবাই কর। সবাই তাকে বুঝালো,
বাচ্চা থাপ্পড়ের কি বুঝে! এমনিই
হয়তো মুখে হাত রেখেছে। কিন্তু ফেরাউন
তো থাপ্পড় খেয়েই বুঝতে পেরেছে।
সে বলল,
না না, এটিই সেই। সবাই বলল, তাহলে পরীক্ষা হোক। শিশু মুসার
সামনে আগুনের কয়লা ও স্বর্ণের
টুকরো ।
দেখা যাক, কোনটা নেয় ।
মুসা ঐশী ইঙ্গিতে আগুনের
কয়লা মুখে পুরলেন।পরীক্ষা হয়ে গেল। মুসা ফেরাউনের প্রাসাদে বড়
হতে থাকলেন।
আজ দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতও
তাই।
বাতিলের বুকে বসে বাতিলকে থাপ্পড়
মারছে। বাতিল কোনভাবেই এই
মেহনতকে দমাতে পারছে না। আল্লাহ
তায়ালা ঠিকই চালিয়ে নিচ্ছেন এই
মেহনতকে। আমেরিকার নাকের ডগায়ও
মেহনত চলছে। কিন্তু কোন হেকমত ও
কৌশল এর পেছনে? প্রচলিত কোন পন্থাকে ব্যবহার না করা, সব
ব্যাপারে সাহাবাদের নকল করা,
প্রচারবিমুখ
থাকা, কোন কমিটি না থাকা, চলমান
পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি মুখ
না খোলা,সর্বাবস্থায় আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করা, জাহেরী কোন
শক্তির আশ্রয় না নেয়া ইত্যাদি এই
মেহনতের বুনিয়াদি উছুল। যাদের
মধ্যে এই
হেকমত ও কৌশল বুঝার যোগ্যতা নেই,
তারাই অহেতুক প্রশ্ন তোলে। আসলে আল্লাহ
তায়ালার রহমতের পর্দাই বাতিলের
গোয়েন্দা তৎপরতা, তীক্ষ্ণ নজরদারির
মধ্যেও এই মেহনতের হেফাজতের কারন।
১১ সেপ্টেম্বর, ২০০১ ইংরেজি।
আমেরিকানদের গর্ব টুইন টাওয়ার ভূপাতিত
হল। ঐ সময় খোদ আমেরিকাতেই কাজ
করছিল অনেকগুলো জামাত।
বাংলাদেশের
জামাতও এর মধ্যে ছিল। এফ, বি, আই,
বাংলাদেশের এক জামাতকে ধরে নিয়ে গেল।
কাকরাইলের ডাঃ রফিক ভাই ঐ
জামাতে ছিলেন। এই
কারগুজারী তার কাছেই
শোনা। আপনারাও তার মুখেই শুনুন।
" আমাদের জামাত আমেরিকাতে কাজ করছিল।
এরি মধ্যে টুইন টাওয়ার হামলার
ঘটনা ঘটে গেল। সমগ্র
আমেরিকাতে বেড়ে গেল মুসলমানদের
উপর
কড়া নজরদারি। সর্বত্র মুসলমানরা গ্রেফতার আতংকে ভুগছে।
না জানি, কখন এফ,বি,আই,
ধরে নিয়ে যায়।
আমরা আমাদের মেহনতে ব্যস্ত।
আল্লাহ
তায়ালার উপরই ভরসা করছি। হঠাৎ এফ,বি,আই, এর এক টিম
এসে ইজতেমায়ী ছামানাসহ
আমাদের
ধরে নিয়ে গেল। তারা কঠিন
নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আমাদের
জেরা করা শুরু করল। আমাদের সবার দিকে অস্ত্র তাক করা। যেন কঠিন সব
সন্ত্রাসীকে জেরা করা হচ্ছে।
আমাদের
ডেকসি,পাতিল, দা-বটি তাদের হতাশ
করল।
কোন ভারী অস্ত্র সাথে নেই। প্রতিটি প্রশ্নের জবাবে বার বার ছয়
নম্বর
শুনাচ্ছি। আমাদের আজব উত্তর ওদের
কাছে অপ্রত্যাশিত। যখন জুনিয়র
অফিসাররা ইনভেস্টিগেশন করে কিছু বের
করতে পারল না, এক মহিলা অফিসার এল।
সম্ভবত এফ,বি,আই, এর উচ্চ পদস্থ কোন
অফিসার হবে। হঠাৎ আমার পকেটের
দিকে তার নজর পড়ল। বিশাল কিছু
পেয়ে গেছে মনে করে সবাই এদিকে নজর
করল। পকেটে আর কিছুই না, আমার প্রিয়
মিসওয়াক। এখন সব অস্ত্র আমার
দিকে।
ওরা সবাই সতর্ক। যেন এখনই কোন
বোমা বিস্ফোরিত হবে।
মহিলাটি সন্ত্রস্ত অবস্থায় মিসওয়াকটি হাতে নিল। জিজ্ঞেস করল,
What's this? বললাম, This is our
brush,
we use it for cleaning our teeth.
তারা খুবই অবাক হল। পরস্পর মুখ
চাওয়া চাওয়ি করল। এই বিংশ শতাব্দীতে যারা এখনও দাঁত
পরিস্কারের
জন্য গাছের ডাল ব্যবহার কররে,
তারা কি করে টুইন টাওয়ারের
মতো আকাশচুম্বি অট্টালিকা ভূপাতিত
করবে? এসব চিন্তা করে তারা আমাদের
ছেড়ে দিল। রাসুলের সুন্নত মিসওয়াকের
জরিয়ায় আল্লাহ
তায়ালা আমাদের হেফাজত
করলেন। "
আপনি তাবলীগের এজন্য সমালোচনা করেন,
তাবলীগ রাজনীতি করে না, কোন
ইস্যুতেই
রাজপথে নামছে না, আন্দোলন
করছে না,
এমনকি তাদের সম্পর্কে কটুক্তির পরও তারা একটা বিবৃৃতিও দিল না।
আরে ভাই,
তাবলীগের রাজনীতি তো বিশ্ব
রাজনীতি।
সমগ্র বিশ্বের পরিস্থিতি বদলানোর জন্য
এই জামাত মেহনত করে যাচ্ছে। আপনি হয়তো জানেন, বিশ্ব
পরিস্থিতি কাফেরের আমলের উপর
নির্ভর
করে না, নির্ভর করে মুসলমানদের
আমলের
উপর। মুসলমানের আমল নষ্ট হওয়ার কারনেই পৃথিবীতে আযাব আসে।
এজন্য এই
জামাত প্রত্যক্ষভাবে মুসলমানদের
ঈমান ও
আমল, পরোক্ষভাবে সমগ্র মানবজাতির
হেদায়াতের জন্য মেহনত করে যাচ্ছে। এই
মেহনতের মধ্যেই
পরোক্ষভাবে লুকিয়ে আছে ইসলামী খেলাফত,
ইসলামের বিজয় ও মুসলমানদের
নিরাপত্তা।
আপনি কি কোরআনে আল্লাহ তায়ালার ওয়াদা দেখেন নি?
ﺍﻮﻠﻤﻋﻭ ﻢﻜﻨﻣ ﺍﻮﻨﻣﺁ ﻦﻳﺬﻟﺍ ﻪﻠﻟﺍ ﺪﻋﻭ
ﻢﻬﻨﻔﻠﺨﺘﺴﻴﻟ ﺖﺤﻟﺎﺼﻟﺍ
. ﻢﻬﻠﺒﻗ ﻦﻣ ﻦﻳﺬﻟﺍ ﻒﻠﺨﺘﺳﺍ ﺎﻤﻛ ﺽﺭﻻﺍ ﻲﻓ
ﻢﻬﻟ ﻦﻨﻜﻤﻴﻟﻭ
ﻦﻣ ﻢﻬﻨﻟﺪﺒﻴﻟﻭ ﻢﻬﻟ ﻲﻀﺗﺭﺍ ﻱﺬﻟﺍ ﻢﻬﻨﻳﺩ ﻢﻬﻟ ﻢﻬﻓﻮﺧ ﺪﻌﺑ
ﺎﺌﻴﺷ ﻲﺑ ﻥﻮﻛﺮﺸﻳ ﻻ ﻲﻨﻧﻭﺪﺒﻌﻳ . ﺎﻨﻣﺍ . তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান
আনে এবং নেক
আমল করে, তাদেরকে আল্লাহ
তায়ালা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন,
তিনি অবশ্যই তাদেরকে জমিনের
খেলাফত দান করবেন, যেমন তাদের
পূর্ববর্তীদিগকে
খেলাফত দিয়েছিলেন, তিনি অবশ্যই
তাদের
জন্য প্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দ্বীনকে,
যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন, এবং তাদেরকে ভয়ভীতির
পরিবর্তে অবশ্যই
নিরাপত্তা দান করবেন,
তারা আমার ইবাদত
করবে, আমার সাথে কাউকে শরীক
করবে না। সুরা নুর, আয়াত ৫৫।
কি বুঝলেন? খেলাফত কায়েম হওয়া,
ইসলাম
প্রতিষ্ঠিত হওয়া, মুসলমানদের
নিরাপত্তা লাভ করা সবই ঈমান ও
আমলের উপর নির্ভরশীল। কাজেই ঈমান ও
আমল
সংশোধনের মাধ্যমে তাবলীগ জামাত
পরোক্ষভাবে ইসলামী খেলাফত
প্রতিষ্ঠা,
ইসলামের বিজয় ও মুসলমানদের নিরাপত্তার জন্য মেহনত করে যাচ্ছে।
ভাই, আপনি ইসলামী আন্দোলন, করুন,
মিছিলে শ্লোগানে রাজপথ মুখরিত
রাখুন,
ফেইসবুকে বাতিলের বিরুদ্ধে ঝড় তোলুন,
শত্রুর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ুন,
ইসলামী শাসন কায়েমের জন্য
নির্বাচনে অংশ নিন, কিন্তু
মনে রাখবেন,
যদি দূর্বল হয় মুসলমানদের ঈমান ও
আমলের বুনিয়াদ,
যদি অধিকাংশ মুসলমানের
অন্তরে থাকে দ্বীনের প্রতি অনীহা,
যদি মুসলমানদের নব্বই ভাগ হয়
বেনামাজী,
আপনি কস্মিনকালেও সফলতার মুখ দেখবেন
না। আপনার ইসলামী আন্দোলন,
নিজেকে ফেতনা থেকে বাঁচিয়ে রেখে ইসলামের
পক্ষে আপনার ফেইসবুকিং,আপনার
সশস্ত্র
জিহাদ,কোনটাই দ্বীনের মেহনতের বাইরে নয়। আপনি চোখ থাকলে দেখবেন,
আপনার মিছিলে, আপনার জিহাদে,
আপনার
আন্দোলনে আমরা তাবলীগিরাও
শরীক
আছি। ব্যানার তালাশ করেন কেন? তাবলীগের কোন কাজটি ব্যানার
লাগিয়ে করা হয়? এত বড় বিশ্ব
ইজতেমার
পোস্টার কখনও দেখেছেন?
সারা পৃথিবী ব্যাপী রকেট
গতিতে চলমান মেহনতের কোন আপডেট সংবাদ
শিরোনামে চোখে পড়ে? তারপরও এই
মেহনত
এগিয়ে চলছে। ইনশা আল্লাহ
এগিয়ে যাবে।
আপনিও শরীক হোন। সবার জন্য ময়দান খোলা। ইন শা আল্লাহ, আপনিও দিব্য
চোখে ইসলামের আসন্ন বিজয় দেখবেন।
বিষয়: বিবিধ
১৬৬২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন