খলিফা ইয়াজিদ, ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও কারবালা নিয়ে রচিত মিথ্যা ইতিহাস থেকে নিজের ঈমানকে হেফাযত করুন (তৃতীয় পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন রাজাকারের বেয়াই ০৩ নভেম্বর, ২০১৪, ০৩:৪৮:৪৫ দুপুর
দ্বিতীয় পর্বের সারসংক্ষেপ হচ্ছে, মোয়াবীয়া (রাঃ) এর উপর উত্থাপিত অভিযোগ নিছক হিংসার বহিঃপ্রকাশ ও শিয়া জানোয়ারদের বানোয়াট অপপ্রচার। এই পর্বে আমরা আলোচনা করব, কারবালার ট্রাজেডীর মুল হোতা কারা? এবং এই ব্যাপারে ইয়াজিদের দায়বদ্ধতা।
শুরুতেই একটা কথা বলে রাখি, একজন ইমাম হোসাইনের সামনে হাজার হাজার ইয়াজিদ সম্মান ও মর্যাদায় তুলনার অনেক নিম্নমানের। তবে খেলাফত পরিচালনার যেই দায়িত্ব সেটার ব্যাপারে কাতেবে ওহী, রাসুল (সাঃ) এর চাচাতো ভাই, বিশিষ্ট সাহাবায়ী মোয়াবীয়া (রাঃ) ইমাম হোসাইনের তুলনায় তার ছেলে ইয়াজিদকে উপযুক্ত মনে করেছেন। এটার কারন দ্বিতীয় পর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। খেলাফতের দায়িত্ব নেয়ার পর ইয়াজিদ তার আনুগত্যের ঘোষনা দিলে ইমাম হোসাইন (রাঃ) তা অস্বিকার করেন। এবং মনে প্রচন্ড দুঃখ পান। তবে ইমাম হোসাইন (রাঃ) খেলাফতের জন্য কোন আন্দলন কিংবা বিদ্রোহের ডাক দেন নাই। যদি তাঁর ভিতরে খেলাফতের লোভ থাকত তাহলে সারা দুনিয়ায় বিশেষ করে মক্কা ও মদীনায় অসংখ্য সাহাবা ছিলেন যারা ইমাম হোসাইনের (রাঃ) জন্য জিবনের নজরানা পেশ করতে কুন্ঠাবোধ করতেন না। কিন্তু তিনি কাউকে নিজ পতাকার নিচে ডাকেন নাই। ইসলামী খেলাফতের শৃংখলা রক্ষার্তেই তিনি নীরব হয়ে পড়েন। এই দিকে কুফা থেকে উনার কাছে একটা পত্র আসে। যেখানে হোসাইন (রাঃ) কে ইরাক যাওয়ার এবং খেলাফতের দায়িত্ব নেয়ার জন্য নিমন্ত্রন জানানো হয়। এই এরাকী শিয়ারাই আলী (রাঃ) এর সাথে গাদ্দারী করেছিল এমনকি হাসান (রাঃ) এর হত্যার পিছনে ও অনেকেই ইরাকীদের দায়ী করে থাকেন। হোসাইন (রাঃ) পত্র পেয়ে নিজের ঘনিষ্ঠ জনদের সাথে পরামর্শ করলেন। হোসাইন (রাঃ) পত্রের মাধ্যমে বুঝতে পারলেন যে ইরাকীরা ইয়াজিদের তুলনায় আমাকে খেলাফতের জন্য উত্তম মনে করে। এই উত্তম কাজটি প্রতিষ্ঠার জন্য মুলত হোসাইন (রাঃ) ইরাক যাওয়ার ব্যাপারে চিন্তা করলেন। পরামর্শদাতারা উনাকে নিষেধ করলেন, যেহেতু ইরাকীদের পুর্বের বিশ্বাসঘাতকতা তাদের সামনে ছিল। কিন্তু ইরাক থেকে এক এক করে ১৫০ এর অধিক পত্র আসার পর ইমাম মনে করলেন, আসলেই এই উত্তম কাজে আমাকে সাড়া দেয়া দরকার, তবু ও অবস্থা পর্যবেক্ষনের জন্য তিনি মুসলীম ইবনে আকীলকে কুফায় প্রেরণ করেন। যেহেতু সব পত্র ছিল ভুয়া সাক্ষর করা এবং শীয়াদের সাজানো নাটক তাই মুসলীম কুফায় যাওয়ার সাথে সাথে তাকে হত্যা করা হয়। এই সংবাদ হোসাইন (রাঃ) এর নিকট তখন ও আসে নাই, তিনি কুফায় যাওয়ার প্রস্তুতী নিলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস, আব্দুল্লাহ ইবনে উমার, আব্দুল্লাহ ইবনে যোবায়ের (রাঃ) দের সাথে সর্বশেষ পরামর্শ করলেন। কিন্তু সাহাবারা তাঁকে নিষেধ করলেন। এখন আসুন, যদি ইমাম হোসাইন (রাঃ) ইয়াজিদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার জন্য বের হতেন তাহলে সাহাবায়ে কেরাম কখনো তাকে বাধা দিতেন না, কারন জিহাদ থেকে বাধা দেয়া হারাম। যাক, ইমাম বের হয়ে গেলেন নারী ও শিশুদের নিয়ে আর সামান্য কয়েকজন যুবকদের নিয়ে। এখানে ও দেখা যাচ্ছে নারী ও শিশুদের জিহাদে নেয়া হয় না। কিন্তু ইমাম হোসাইন (রাঃ) তাদের সাথে নিলেন। ইয়াজিদ যখন শুনল ইমাম বের হয়ে গেছেন তখন সে কুফার গভর্নর উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদকে নির্দেশ দিল তুমি কুফার দরজা বন্ধ করে দাও, ইমাম যেন ঢুকতে না পারে। হোসাইন (রাঃ) কুফার কাছাকাছি কারবালায় পৌছার পর টের পেলেন যে ইরাকী শীয়ারা তার সাথে গাদ্দারী করেছে। এ দিকে ইয়াজিদ থেকে নির্দেশ আসল ইমামকে যেন তার কাছে জিবীত পৌছে দেয়োয়া হয়। কিন্তু উবায়দুল্লাহর উপর লানত সে ইয়াজিদের কথা শুনলনা, ইমামকে ঘেরাও করে ফেলল। তখন হোসাইন (রাঃ) তাকে ৩টা প্রস্তাব দিলেন। ১) আমাকে ইয়াজিদের কাছে নিয়ে যাও।২) আমাকে ছেড়ে দাও, আমি মদীনায় ফিরে যাই। ৩) অথবা আমি ইসলামী রাষ্টের কোন এক সীমান্তে চলে যাব, আর কখনো লোকালয়ে ফিরবোনা। এখন যদি হোসাইন (রাঃ) জিহাদ করার জন্য যেতেন তাহলে সেখান থেকে ফিরে আসার কথা বলতেন না, কারন জিহাদের ময়দান থে পলায়ন করা কবীরা গুনাহ। যাক, ইবনে যিয়াদ ইমামের কোন কথাই শুনলনা। ইমামকে নির্মম ভাবে শহীদ করে দিল। হোসাইন (রাঃ) এর শাহাদাতে আসমান যমীনে হাহাকার রব উঠলে ও যেই শিয়ারা তাঁকে সেখানে নিয়ে গেল তাদ ইয়া ও আসে নাই। একটা তীর তারা ছুড়লনা ইমামের হেফাজতের জন্য। আজ তারা নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য অন্যের উপর সব কিছু চাপিয়ে দিচ্ছে অথচ তাদের হঠকারীতার কারনেই ইমাম হোসাইন (রাঃ) কে শহীদ হতে হল।
---------------------------
মোবাইলের সমস্যার কারনে এই পর্বের বাকী অংশ থাকছে শেষ পর্বে।
বিষয়: বিবিধ
২৫২০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ভাল লাগলো।
জাযাকাল্লাহ খইর
মন্তব্য করতে লগইন করুন