চরমনাই পীরের আল্লাহ্‌ তায়ালার সাথে চরম বেয়াদবী ও অশালীন উপমাঃ ৩

লিখেছেন লিখেছেন সাইফুল ইসলাম গাজী ২৭ জুলাই, ২০১৫, ০৩:৫০:০৮ রাত

‘’অতিশয় খুব ছুরাত সুন্দরী পর্দার আড়ালে লুকাইয়া থাকিতে অক্ষম; তুমি তাহাকে পর্দায় রাখার জন্য দরওয়াজা বন্ধ করিলেও তিনি জানালা দিয়া মুখ বাহির করিয়া রুপ দেখাইবেন।

তাই হে মাশুকে হাক্বীক্বী মাওলা! আপনিও আর একা থাকিতে না পারিয়া আমাদিগকে নিজ হাতে পয়দা করিয়া, নিজরুপ দেখাইয়া যখন আশেক বানাইয়াছেন, এখন কেন গোপন থাকিবেন? দয়া করিয়া দেখা দেন, প্রান তো মানে না গো”

সৈয়দ মোহাম্মাদ এছহাক এর রচনাবলী; আল-এছহাক পাবলিকেশন্স; বাংলাবাজার; প্রকাশকাল ফেব্রুয়ারি ২০০৭; আশেক মাশুক পৃষ্ঠা নঃ ১০-১১

===================

পীর সাহেবের কথাগুলো আসলে কিরুপ অর্থ বহন করে?

পীর সাহবে বলেছেনঃ “আপনিও আর একা থাকিতে না পারিয়া আমাদিগকে নিজ হাতে পয়দা করিয়া” অর্থাৎ আল্লাহ আর একা থাকতে না পেরে আমাদের সৃষ্টি করেছেন, অর্থাৎ পীর সাহেবের মতে আল্লাহ একা থাকতে সক্ষম নন তাই বাধ্য হয়ে আমাদের সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু আল্লাহ বলেছেনঃ “তিনি কোন কিছুরই মুখাপেক্ষী নন” (সুরা ইখলাসঃ৪)অর্থাৎ তিনি কোন কিছুরই বাধ্য নন, সুতরাং প্রমানিত হল যে, পীর সাহবে কোরআন এর স্পষ্ট আয়াতের বিরুদ্ধে অবস্থান করছেন।

এছাড়াও পীর সাহেবের অপবিত্র বানীঃ “আপনিও আর একা থাকিতে না পারিয়া আমাদিগকে নিজ হাতে পয়দা করিয়া” দ্বারা প্রমানিত হয় যে, যখন আল্লাহ আর একা থাকতে পারছিলেন না তখন তার একাকীত্ব দূর করার জন্য আমাদের সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু দুর্ভাগ্য এটিও কোরআন এর স্পষ্ট আয়াতের বিরুদ্ধে, মহান ও পবিত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেনঃ “আমি জীন এবং মানব জাতিকে একমাত্র আমার ইবাদাত করার জন্য সৃষ্টি করেছি” কিন্তু পীর সাহেব তো বলছেন ভিন্ন কথা, আসলে তিনি তো তাই বলবেন, কেননা তিনি তো জানেনই না যে তিনি কি মুসলিম নাকি কাফির!!!

পীর সাহেব আরও এগিয়ে বলেছেনঃ “নিজরুপ দেখাইয়া যখন আশেক বানাইয়াছেন”, অর্থাৎ পীর সাহেবকে আল্লাহ তার নিজের রুপ দেখিয়েছেন, সুতরাং পীর সাহবে আল্লাহকে দেখেছেন!!! চিন্তা করেছেন যে, পীর সাহেব কত বড় ব্যক্তি???!!! যেখানে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই পৃথিবীতে অবস্থান কালে আল্লাহকে দেখতে পারেন নি এমন কি মিরাজ এ গিয়েও আল্লাহকে দেখতে পারেন নি সেখানে চরমনাই পীর সাহেব আল্লাহকে দুনিয়াতে বসে দেখেছেন!!! ভণ্ডামির একটা সীমা থাকে কিন্তু পীর সাহবেন সকল সীমা অতিক্রম করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিরাজে গিয়ে আল্লাহকে দেখেছেন কিনা তা নিয়ে মুসলিমরা ইখতিলাম করেছেন, তবে সঠিকমত হলো তিনি আল্লাহকে দেখেন নি যা মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। হাদিসটি রয়েছে সহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, অনুচ্ছেদঃ ৭৪ (ইঃফাঃ), যদি তর্কের খাতিরে মেনেও নেই(আসলে মানছি না) যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহকে দেখেছেন(নাউযুবিল্লাহ) তার পরও তিনি তখন মিরাজে গিয়েছিলেন, কিন্তু পীর সাহেব কি মিরাজে গিয়েছিলেন? না, তাহলে তিনি কিভাবে আল্লাহকে দেখলেন? আল্লাহকে এই পৃথিবীতে দেখা সম্ভব নয়, কেননা মুসা আলাইহি ওয়া সালাম তাঁর রবকে বললেন ‘’হে আমার প্রতিপালক আমাকে দেখা দেও, আমি তোমাকে দেখব। তিনি বললেন, তুমি আমাকে কক্ষনো দেখতে পাবে না, বরং তুমি পাহাড়ের দিকে তাকাও, যদি তা নিজ স্থানে স্থির থাকতে পারে তাহলে তুমি আমাকে দেখতে পাবে।’’ অতঃপর তাঁর প্রতিপালক যখন পাহারে নিজ জ্যোতি বিচ্ছুরিত করলেন, তখন তা পাহারকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিল আর মুসা চৈতন্য হারিয়ে পড়ে গেল ” সুরা আ’রাফঃ ১৪৩ ,

আল্লাহকে আখেরাতে দেখা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীসঃ

‘’তোমরা মৃত্যুবরণ করার পূর্বে কিছুতেই তোমাদের মহা প্রভুকে দেখতে পাবে না’’ ফাতহুল বারীঃ ৮৪৯৩

সুতরাং, হয় আল্লাহ এবং রাসুলুল্লাহ সত্য বলেছেন অথবা পীর সাহেব সত্য বলেছেন, মুসলিমরা বলবো যে অবশ্যই আল্লাহ এবং তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্য বলেছেন এবং পীর সাহেব মিথ্যা বলেছে

বিষয়: বিবিধ

১৬১০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

331899
২৭ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৯:৫২
হতভাগা লিখেছেন : কোন মানুষকে যখন তার আশে পাশের লোকজন খুব তোষামোদ করা শুরু করে তখন সে অহংকারী হয়ে ওঠে ,ধরা কে সরা জ্ঞান করে ।

তার কাজে ও কর্মে সৃষ্টিকর্তার প্রতি নাফরমানি প্রকাশ পায় ।
331918
২৭ জুলাই ২০১৫ সকাল ১১:৩০
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : কলেজ জীবনে যে এলাকায় থাকতাম, সেখানে মসজিদের সাথে লাগোয়া বাড়ি ছিল 'নুন ফকিরের'। নূন ফকির নামাজ পড়েন না, তবে আজান হলে নামাজিরা যখন মসজিদে যায় ও নুন ফকিরকে ডাকে সেটা তার জন্য বিব্রতকর ব্যাপার হয়ে উঠে।

ফজরের নামাজে পরিবেশ কোলাহল মুক্ত থাকে, আমরা তার বাসার পাশ দিয়ে যাবার সময় কাশি দিতাম। নুন ফকির খাটে শুয়ে শুয়ে জিকির নিম্নোক্ত কথা গুলো বলত।

- অ খোদা বৈশাখ মাস.....
- প্রথম বৈশাখ....
- পহেলা বৈশাখ....
- একলা বৈশাখ.... (এমন সময় তার ঘরের টিনে আম পাতা পতনের শব্দ হল)
- অ পাতা কেন পড়ছ....
- আহারে পাতা হলুদ হলে....

তিনি বুঝাতে চাইতেন তোমরা মসজিদে গেলেও আমিও ঘুমাইনি। খোদার সাথে ভিন্ন ধরনের এক দীদার নিয়ে মত্ত আছি।

প্রশ্ন করতাম এসব কথার অর্থ কি?

তিনি বলতেন, সেখানেই তো আসল সমস্যা। এসব হল মারেফতি কথা, আমি, আমার মাওলা ও খোদা ছাড়া কেউ তো এই কথার হাকিকত বুঝেনা।
331966
২৭ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০৩:১৫
মুিনর লিখেছেন : আপনি কি আমাকে চরমুনাই পীর সাহেবদের কিছু বইয়ের নাম দিতে পারেন আমি একটু পড়তে চাই। কেননা আমার আশে পাশে পরিবারের অনেকে চরমোনাই পীরের মুরিদ তারা যেভাবে কথা বলে মনে হয় একমাত্র সঠিক ইসলামের প্রবক্তা উনারাই অন্যরা সবাই ভুল পথে। এমন কিছু বইয়ের নাম দিবেন যেগুলো নেটে পাওয়া যাবে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File