গতকালের জানাজা, জানাজার আগে এবং পরে অনেকগুলো নজর কাড়া ব্যাপার ছিল
লিখেছেন লিখেছেন অনিবার্য বিপ্লবের ইশতেহার ২৬ অক্টোবর, ২০১৪, ০৬:৪৫:২৪ সন্ধ্যা
জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে যতই আইন ভংগ বা সহিংসতার অভিযোগ আনা হোক না কেন, গতকাল সমবেত হাজার হাজার নেতাকর্মী এটা প্রমান করে দিয়েছে, বুকে কষ্টের পাহাড় বেধেও কিভাবে ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে হয়, তা এই সংগঠনের নেতা-কর্মী জানে। আইনের প্রতি যে শ্রদ্ধা গতকাল জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মীরা প্রদর্শন করেছে, তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বিরল ঘটনা। মগবাজার হয়ে বেইলী রোড, শান্তি নগর হয়ে, কাকরাইল ও পল্টন মোড় পাড়ি দিয়ে লাশবাহী মিছিল বায়তুল মোকাররাম পৌছেছে। আবার জানাজা শেষে একই রোডে ফিরেছে। এত জনবহুল এলাকা দিয়ে মিছিলটি প্রদক্ষিন করলেও একটা ইট পাটকেলও ছোড়া হয়নি। কোন মানুষকে ডিসটার্ব করা হয়নি। কোন পুলিশকে অশ্রদ্ধা করা হয়নি। কোন মিডিয়া কর্মীকে অপমান করা হয়নি। বরং তাদের কাজে সহযোগিতা করা হয়েছে।
আমার মনে হয়, যারা গতকালের জানাজা প্রত্যক্ষ করেছেন, সবাই আমার সাথে একমত হবেন। এমনকি যারা গোলাম আযম বা জামায়াতের আদর্শিক বিরোধী, তারাও কেবলমাত্র বিরোধীতার জন্য বিরোধীতা করেছেন। আমি রাতের টকশোগুলো শুনেছি। গোলাম আযমের জানাজা এত বড় করার সুযোগ দেয়া হলো কেন, সে নিয়ে সরকারের ব্যপারে তাদের অসন্তোষ থাকলেও জানাজা নিয়ে কোন অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ কেউ তুলতে পারেননি। আমার মনে হয়, পুলিশ ও মিডিয়ার ভাই বোনেরাও গতকাল জামায়াত শিবিরের গঠনমুলক কর্মকৌশল ও নেতাদের প্রতি কর্মীদের আনুগত্যের ধরন সম্পর্কে একটু ধারনা পেয়েছেন।
জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা সবাই মামলায় অভিযুক্ত। তারা সরাসরি জানাজায় থাকতে না পারলেও সবকিছুই মনিটর করেছেন পুংখানুপুংখরূপে। যারা বাইরে আসতে পারেন, তারা সবাই ছিলেন জানাজায়। লাশ কোথায় রাখা হবে। কোন রোড দিয়ে বহর যাবে। কখন কোথায় দাফন হবে। কে জানাজা পড়াবেন- প্রতিটি সিদ্ধান্ত গ্রহনে পরিবারের সদস্যদের সাথে জামায়াতের নেতাদেরকে দেখা গেছে। তাদের গাইডলাইন ছাড়া এত সুন্দরভাবে গতকালের আয়োজন করা যেতনা। যারা মনে করছেন, এত নেতা গ্রেফতার হওয়ার পরও জামায়াত কিভাবে আন্দোলন করে, হয়তো তারা গতকালের দলীয় কর্মীদের নিয়ম শৃংখলা দেখে সেই প্রশ্নের উত্তর খুজে পাবেন।
আর ইসলামী ছাত্রশিবিরের কথা তো বলাই বাহুল্য। শিবিরের কার্যকরী পরিষদের অধিকাংশ সদস্য ছিলেন জানাজার ব্যবস্থাপনায়। কেউ হোন্ডায় কউ বা পায়ে হেটে কর্মীদের পাশে ছিলেন। লাশ বাহী মিছিলের গতি কখনো কমিয়ে আবার কখনো বা বাড়িয়ে তারা সুশৃংখলভাবে পুরো জমায়েতকে পরিচালনা করেছেন। অধ্যাপকে গোলাম আযমের পরিবারও শিবিরের এই ভুমিকার মূল্যায়ন করেছে। আর তাই অধ্যাপক গোলাম আযমের কফিন বহন করার দুর্লভ সুযোগ দেয়া হয়েছিল, মরহুম গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী আর শিবিরের উপস্থিত সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিবৃন্দকে।
মহান আল্লাহ সুশৃংখলা আর আনুগত্যের অনুপম নিদর্শন জামায়াতে ইসলামী আর ইসলামী ছাত্রশিবিরকে কবুল করুন। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৫১২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাযাকাল্লাহ খায়ের
মন্তব্য করতে লগইন করুন